hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

১১৯
আকীকাহ
সন্তান জন্মের পরে-পরেই পিতামাতার কর্তব্য হচ্ছে তারু জন্যে আকীকাহ করা। পিতামাতার প্রতি সন্তানের এ হচ্ছে এক বিশেষ হক। রাসূলে করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

প্রতিটি সদ্যজাত সন্তান তার আকীকার সাথে বন্দী। তার জন্মের সপ্তম দিনে তার নামে পশু যবাই করতে হয় এবং তার মাথা কামিয়ে ময়লা দূর করতে হয়।

অপর এক হাদীসের ভাষা নিম্নরূপঃ

(আরবী)

প্রত্যেকটি সদ্যজাত সন্তান তার আকীকার নিকট বন্দী, তার জন্মের সপ্তম দিনে তার নামে পশু যবাই করা হবে, তার নাম রাখা হবে এবং তার মাথার চুল মুণ্ডন করা হবে।

এ হাদীসদ্বয় থেকে জানা গেল যে, সন্তান জন্মের পরে তার নামে একটি জন্তু যবাই করাকেই আকীকাহ বলা হয়। ইমাম শাওকানী লিখেছেনঃ

(আরবী)

আকীকাহ বলা হয় সেই জন্তুটিকে, যা সদ্যজাত সন্তানের নামে যবাই করা হয়। এর মূল শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ভাঙা, কেটে ফেলা। আর নবজাত শিশুর মুণ্ডিত চুলকেও আকীকাহ বলা হয়।

“নবজাত সন্তান আকীকার কাছে বন্দী” কথাটির ব্যাখ্যায় ইমাম আহমাদ বলেছেনঃ

(আরবী)

শিশু অবস্থায় কোনো সন্তান যদি মারা যায় এবং তার জন্যে আকীকাহ না হয়, তবে সে তার পিতামাতার জন্যে আল্লাহর কাছে শাফায়াত করবে না।

অন্যান্যেল মতে তার মানে-

(আরবী)

আকীকাহ করা একান্তই অপরিহার্য, তা না করে কোনোই উপায় নেই।

যেহেতু যে কোনো বন্ধকের জন্যে বন্দকী জিনিসের প্রয়োজন, এমনিভাবে যে কোনো সদ্যজাত সন্তাজের জন্যে আকীকাহ দরকার। এ কারণেই হাদীসে বলা হয়েছেঃ ‘প্রত্যেক নবজাত সন্তান আকীকার নিকট বন্দী’। আবার কেউ কেউ এরূপ মত প্রকাশ করেছেন যে, ‘প্রত্যেক সদ্যজাত সন্তান আকীকার কাছে বন্দী’। -এর অর্থ আকীকাহ করার আগে কোনো সন্তানের না নাম রাখা যাবে, আর না মাথা মুণ্ডন করা হবে।

বস্তুত আকীকাহ করার রেওয়াজ প্রাচীন সমাজে ব্যাপকভাবে চালু ছিল। এর মধ্যে নিহিত ছিল সামাজিক, নাগরিক মনস্তাত্ত্বিক –সর্বপ্রকারের কল্যাণবোধ। এ কারণেই নবী করীম (ﷺ) আল্লাহর অনুমতিক্রমে এ প্রথাকে চালু রেখেছিলেন। নিজে আকীকাহ দিয়েছেন এবং অন্যদেরও এ কাজে উৎসাহিত করেছেন। শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভীর মতে এর উপকারিকতা অনেক। তার মধ্যে বিশেষ উপকারিতা হচ্ছেঃ

(আরবী)

আকীকার সাহায্যে খুব সুন্দরভাবেই সন্তান জন্মের ও তার বংশ-সম্পর্কের প্রচার হতে পারে। কেননা বংশ পরিচয়ের প্রচার একান্তই জরুরী, যেন কেউ কারো বংশ সম্পর্কে অবাঞ্ছিত কথা বলতে না পারে। আর সন্তানের পিতার পক্ষে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে তার সন্তান হওয়ার কথা চিৎকার করে বলে বেড়ানোও কোনো সুষ্ঠু ও ভদ্র পন্থা হতে পারে না। অতঃপর আকীকার মাধ্যকেই এ কাজ করা অধিকতর সমীচীন বলে প্রমাণিত হলো। এ ছাড়াও এর আর একটি ফায়দা হচ্ছে এই যে, এতে করে সন্তানের পিতার মধ্যে বদান্যতা ও দানশীলতার ভাবধারা অনুসরণ প্রবল ও কার্পণ্যের ভাবধারা প্রশমিত হতে পারে।

জাহিরী মতের আলিমদের দৃষ্টিতে আকীকাহ করা ওয়াজিব। তবে অধক সংখ্যক ইমাম ও মুজতাহিদের মতে তা করা সুন্নাত। যদিও ইমাম আবূ হানীফার মতে তা ফরয-ওয়াজিবও নয়, আর সুন্নাতও নয়, বরং নফল –অতিরিক্ত সওয়াবের কাজ। তবে পূর্বোদ্ধৃত হাদীস থেকে আকীকাহ করা ওয়াজিব প্রমাণিত হয়। কিন্তু এ সম্পর্কে রাসূলে করীম (ﷺ)-এর নিম্নোদ্ধৃত বাণী থেকে মুবাহ ও মুস্তাহাবই মনে করা যেতে পারে। রাসূলে করীম (ﷺ)-কে আকীকাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ

(আরবী)

আকি ‘আকীকাহ’ শব্দ ব্যবহার পছন্দ করি না। তবে যার কোনো সন্তান জন্মগ্রহণ করে, সে যেন তার সন্তানের নামে জন্তু জবাই করে।–[‘আকীকাহ’ শব্দটি শাব্দিক অর্থ ছিন্নকরণ, কর্তন বা কেটে ফেলা। এই শাব্দিক অর্থের দিক দিয়ে নবী করীম (ﷺ) তাঁর অপছন্দের কথা ব্যক্ত করেছেন মাত্র। কিন্তু তাতে মূল কাজটির গুরুত্ব কিছুমাত্র ব্যাহত হয়নি।-গ্রন্থকার] তা-ই আমি পছন্দ করি।

(আরবী)

এ হাদীসে আকীকাহ করাকে ইচ্ছাধীন করে দেয়া হয়েছে। তার মানে, তা করা ওয়াজিব নয়।

অপর এক হাদীসে রাসূলে করীম (ﷺ)-এর নিম্নোক্ত বাণ উদ্ধৃত হয়েছেঃ

(আরবী)

প্রত্যেক সদ্যজাত সন্তানের সঙ্গেই আকীকার কার্যটি জড়িত, অতএব তোমরা তার নামে জন্তু যবাই করে রক্ত প্রবাহিত করো এবং তার মণ্ডক মুণ্ডন করে চুল ফেলে দাও।

সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে আকীকাহ করার কথা বলা হয়েছে এজন্যে যে, জন্ম ও তার আকীকার মাঝ সময়ের কিছুটা ব্যবধান হওয়া আবশ্যক। কেননা নতুন শিশুর জন্ম-লাভের ব্যাপারটিও ঘরের সকলের জন্যেই বিশেষ ঝামেলা ও ব্যস্ততার কারণ হয়ে থাকে। এ থেকে অবসর হওয়ার পরই আকীকার প্রস্তুতি করা যেতে পারে। নবী করীম (ﷺ) তাঁর দৌহিত্র হাসানের নামে আকীকাহ করলেন এবং বললেনঃ

(আরবী)

হে ফাতিমা, এর (হাসানের) মস্তক মুণ্ডন করে ফেল এবং তর মাথার চুলের ওজন পরিমাণ রৌপ্য সাদকা করে দাও।

আর ইমাম মালিক বর্ণনা করেছেনঃ

(আরবী)

হযরত ফাতিমা হাসান, হুসাইন, জয়নব ও উম্মে কুলসুমের মাথা মুণ্ডন করেছিলেন এবং তাদের চুলের ওজন পরিমাণ রৌপ্য সাদকা করে দিয়েছিলেন।

আকীকাহ তো জন্মের সপ্তম দিনে করার নিয়ম। কিন্তু জন্মের পরে পরে যে কাজটা জরুরী, তা হচ্ছে সদ্যজাত পুরুষ শিশুর কর্ণে আযান দেয়া। হযরত হাসানের জন্ম হলে পর নবী করীম (ﷺ) তাঁর কর্ণে আযান ধ্বনি শুনিয়েছিলেন।

হযরত আবূ রাফে বলেনঃ

(আরবী)

হযরত ফামিতা যখন হুসাইনকে প্রসব করলেন, তখন নবী করীম (ﷺ)-কে তাঁর কানে নামাযের আযান শোনাতে আমি দেখেছি।

সন্তানের নাম রাখা সম্পর্কে নিম্নোক্ত হাদীস সময় নির্দেশ করেঃ

(আরবী)

নবী করীম (ﷺ) সপ্তম দিনে সন্তানের নাম রাখতে, মস্তক মুণ্ডন করতে এবং আকীকাহ করতে আদেশ করেছেন।

আকীকায় কার জন্যে কয়টি জন্তু যবাই করা হবে, এ সম্পর্কে নিম্নোক্ত হাদীস থেকে স্পষ্ট নির্দেশ পাওয়া যাচ্ছেঃ

(আরবী)

পুরুষ ছেলের জন্যে দু’টি ছাগল এবং মেয়ে সন্তানের জন্যে একটি ছাগল যবাই করাই যথেষ্ট হবে।

নবজাত শিশু সবার কাছেই বড় আদরণীয়। নবী করীম (ﷺ)-ও এ ধরনের শিশুদের বড্ড আদর-যত্ন করতেন। হযরত আনাস (রা) বলেনঃ উম্মে সুলাইম যখন একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলেন তখন তাঁকে নবী করীম (ﷺ)-এর কাছে উপস্থিত করা হয় এবং তার সাথে কিছু খেজুরও পাঠিয়ে দেয়া হয়। তখন নবী করীম (ﷺ) সে খেজুর নিজের মুখে পুর চিবিয়ে নরম করে নিলেন ও নিজের মুখ থেকে বের করে তা শিশুর মুখে পুরে দিলেন এবং তার নাম রাখলেন আবদুল্লাহ। -বুখারী, মুসলিম

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন