hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

পরিবার ও পারিবারিক জীবন

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম (র.)

৪২
কাফের ও আহলে কিতাব মেয়ে
কিন্তু এ ছাড়া আরো দু’শ্রেণীর মেয়ে বিয়ে করা সম্পর্কে কথা বলা এখনো বাকী রয়ে গেছে। এক কাফের মেয়ে, আর দ্বিতীয় মুশরেক ও আহলে কিতাব মেয়ে। কাফের মেয়ে যেমন মুসলমানদের জন্যে বিয়ে করা জায়েয নয়, তেমনি কাফের পুরুষের নিকট মুসলিম মেয়ে বিয়ে দেয়। দ্বীনের পার্থক্যের কারণে এ ধরনের বিয়ে স্থায়ীভাবে হারাম করে দেয়া হয়েছে।

কুরআন মজীদে আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেনঃ

(আরবী)

তোমরা মুসলামনরা কাফের মেয়েকে বিয়ের বন্ধনে বেধে রেখো না।

এ আয়াতের ভিত্তিতে ইবনুল আরাবী লিখেছেনঃ

(আরবী)

এ আয়াতে সমস্ত কাফের মুশরেক মেয়ে বিয়ে করতে স্পষ্ট নিষেধবাণী উচ্চারিত হয়েছে।

তিনি আরো লিখেছেন, পূর্বে কাফেররা মুসলিম মেয়ে বিয়ে করত আর মুসলিমরা করত কাফের মেয়ে। এ আয়াত দ্বারা এ উভয় বিয়েকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছেঃ

এ আয়াতের পূর্বের আয়াতে বলা হয়েছেঃ

(আরবী)

মুসলিম মেয়েরা কাফেরদের জন্যে হালাল নয় এবং মুসলিম পুরুষরাও অনুরূপভাবে হালাল নয় কাফের মেয়েদের জন্য।

আর এর কারণ হচ্ছে ইসলাম ও কুফরের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য।

আল্লামা শাওকানী লিখেছেনঃ

(আরবী)

এ আয়াতে প্রমাণ করছে যে, মু’মিন-মুসলিম মেয়ে কাফের পুরুষের জন্যে হালাল নয়।

আর প্রথমোক্ত আয়াদের তাফসীরে লিখেছেনঃ

(আরবী)

এর অর্থ এই যে, যে মুসলমানের স্ত্রী কাফের সে আর তার স্ত্রী থাকেনি। কেননা দ্বীন দুই হওয়ার কারণে এ দুয়ের বন্ধন ছিন্ন হয়ে গেছে।

আহলে কিতাব –ইহুদী ও নাসারা বা খ্রিষ্টান-মেয়ে বিয়ে করার ব্যাপারটি বিস্তারিত আলোচনা সাপেক্ষ। এখানে তা পেশ করা যাচ্ছে।

আল্লামা আবূ বকর আল-জাসসাস লিখেছেনঃ

আহরে কিতাব মেয়ে বিয়ে করার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। একটি মত হচ্ছে এই যে, আহলে কিতাবের আযাদ বংশজাত বা জিম্মী মেয়ে হলে তাদের বিয়ে করা মুসলিম পুরুষদের জন্যে জায়েয, এতে কোনো মতভেদ নেই। যদিও হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) তা পছন্দ করেন না, মকরুহ মনে করেন। তাঁর সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছেঃ

(আরবী)

তিনি আহলে কিতাবের খানা খাওয়ায় কোনো দোষ মনে করতেন না, তবে তাদের মেয়ে বিয়ে করাকে মকরুহ মনে করতেন।

তাঁর সম্পর্কে অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ ইহুদী ও খ্রীষ্টান মেয়ে বিয়ে করা সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ

(আরবী)

আল্লাহ তা’আলা মুসলিমদের জন্যে মুশরেক মেয়ে বিয়ে করাকে স্পষ্ট ভাষায় হারাম করে দিয়েছেন। আর মরিয়ম পুত্র ঈসা কিংবা অপর কোনো আল্লাহর বান্দাকে রব্ব বলে মনে করা অপেক্ষা বড় কোনো শিরক হতে পারে বলে আমার জানা নেই।

আর ইহুদী-নাসারাদের বিশ্বাস ও আকীদা এমনিই, তাই তারাও মুশরিকদের মধ্যে গণ্য। অতএব তাদের মেয়ে বিয়ে করাও জায়েয নয়।

(আরবী)

কেননা আহলে কিতাবও মুশরেক। এজন্যে ইহুদীরা বলেছেঃ উজাইর আল্লাহর পুত্র, আর খ্রিষ্টানরা বলেছেঃ ঈসা আল্লাহর পুত্র। যদিও বদরুদ্দীন আইনী লিখেছেন যে, এ আয়াত মনসুখ হয়ে গেছে।

মায়মুন ইবনে মাহরান হযরত ইবনে উমর (রা)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ আমরা এমন জায়গায় থাকি, যেখানে আহলে কিতাবের সাথে খুবই খোলা-মেলা হয়ে থাকে। এমতাবস্থায় আমরা কি তাদের মেয়ে বিয়ে করতে পারি?

এর জবাবে তিনি নিম্নোক্ত দু’টি আয়াত পাঠ করেনঃ

(আরবী)

এবং আহলে কিতাব বংশের সেসব চরিত্র-সতীত্বসম্পন্না মেয়ে (বিয়ে করা তোমাদের জন্যে জায়েয)।

এবং

(আরবী)

এবং মুশরেক মেয়ে যতক্ষণ না ইসলাম কবুল করছে, ততক্ষণ তোমরা তাদের বিয়ে করো না।

প্রথম আয়াতে আহলে কিতাব মেয়ে বিয়ে করা জায়েয বলা হয়েছে, আর দ্বিতীয় আয়াতে মুশরেক মেয়ে বিয়ে করতে সুস্পষ্ট ভাষায় নিষেধ করা হয়েছে। অন্য কথায়, তিনি এ ব্যাপারে নিজস্ব কোনো ফয়সালা শোনালেন না। শুধু আয়াত পড়ে দিয়েই ক্ষান্ত হয়ে থাকলেন।

আল্লামা আবূ বকর লিখেছেন যে, একমাত্র হযতর ইবনে উমর ছাড়া সাহাবীগণের এক বিরাট জামা’আত যিম্মী আহলে কিতাবের মেয়ে বিয়ে করা জায়েয মনে করতেন। তাঁদের মতে দ্বিতীয় আয়াতটি কেবলমাত্র মুশরেকদের সম্পর্কেই প্রযোজ্য, সাধারণ আহলে কিতাবদের সম্পর্কে নয়।

হাম্মাদ বলেনঃ আমি হযরত সায়ীদ ইবনে জুবাইর (রা)-কে ইহুদী নাসারা মেয়ে বিয়ে করা জায়েয কিনা জিজ্ঞেস করায় তিনি বললেনঃ (আরবী) –তাতে কোনো দোষ নেই। তাঁকে উপরিউক্ত দ্বিতীয় আয়াতটি স্মরণ করিয়ে দেয়া হলে তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে মূর্তিপূজক মেয়েদের সম্পর্কে নির্দেশ, তারা নিশ্চয়ই হারাম।

হযরত ওসমান ইবনে আফফান (রা) ফায়েলা বিনতে ফেরারা নাম্নী এক খ্রিষ্টান মহিলা বিয়ে করেছিলেন। হযরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা)-ও সিরীয় ইহুদী মেয়ে বিয়ে করেছিলেন। হাসান, ইবরাহী, নখয়ী ও শাবী প্রমুখ তাবেয়ী হাদীস-ফিকাহবিদও এ বিয়ে জায়েয বলে মনে করতেন।

কিন্তু এ পর্যায়ে হযরত উমর ফারূক (রা)-এর একটি নির্দেশ চমক লাগিয়ে দেয়। হযরত হুযায়ফা (রা) এক ইহুদী মেয়ে বিয়ে করলে তাকে নির্দেশ পাঠালেনঃ (আরবী) ‘তাঁর পথ ছেড়ে দাও, তাকে ত্যাগ করো’।

তখন হুযায়ফা(রা) প্রশ্ন করে পাঠালেনঃ (আরবী) ‘ইহুদী মেয়ে বিয়ে করা কি হারাম?’

তার জবাবে হযত উমর (রা) লিখলেনঃ

(আরবী)

হারাম নয় বটে, কিন্ত আমি ভয় করছি –আহলে কিতাব বলে তোমরা যদি তাদের বিয়ে করো তাহলে তোমরা তাদের মধ্য থেকে বদকার ও চরিত্র-সতীত্বহীনা মেয়েই বিয়ে করে বসবে।

হযরত উমরের উপরোক্ত নির্দেষ তাৎপর্যপূর্ণ এজন্যে যে, কুরআন মজীদে আহলে কিতাবের মধ্যে কেবলমাত্র (আরবী)-দেরই বিয়ে করা জায়েয করা হয়েছে। আর তার জন্যে দুটি শর্ত অপরিহার্য। একটি হচ্ছে নাপাকীর জন্যে গোসল করা, আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে যৌন অঙ্গকে পূর্ণরূপে সংরক্ষিত রাখা। কিন্তু আহলে কিতাবের কোনো মেয়ে বিয়ের পূর্বে তার যৌন অঙ্গের পবিত্রতা রক্ষা করেছে, তা বাছাই করে নেয়া খুব সহজসাধ্য কাজ নয়। আর দ্বিতীয়ত বিয়ের পর যৌন অঙ্গকে স্বামী ছাড়া অন্য কাউকে ব্যবহার করতে না দেয়ার প্রতি কোনো মেয়ের মনে দৃঢ় প্রত্যয় রয়েছে, তা জানবার কি উপায় হতে পারে? বিশেষত এ কারণে যে, আহলে কিতাব সমাজের লোকেরা এ ব্যাপারে কড়াকড়ি করার খুব বেশী পক্ষপাতী নয়। বরং তাদের পারিবারিক বন্ধন শিথিল হওয়ার কারণে যৌন সংরক্ষণশীলতা নেই বললেই চলে।

এ দুটি দিক সম্পর্কে যদি নিশ্চয়তা লাভ করা সম্ভব নয়, তাহলেই একজন ঈমানদার মুসলিমের পক্ষে একজন আহলে কিতাব মেয়েকে বিয়ে করা জায়েয হতে পারে। অন্যথায় তা সাধারণ কাফের মুশরেক মেয়েদের মতোই মুসলিমদের জন্যে চিরতরে হারাম। তিন আল্লাহতে বিশ্বাসী আহলে কিতাবরা মুশরেকদের মধ্যে গণ্য। তাই তাদের মেয়ে বিয়ে করাও হারাম।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন