hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

১০
হযরত দাউদ (আ)-এর ইনতিকাল
হযরত আদম (আ)-এর জন্ম বৃত্তান্ত আলোচনা প্রসংগে পূর্বোল্লেখিত হাদীসে বর্ণনা করা হয়েছে যে, আল্লাহ যখন আদমের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাঁর সন্তানদের বের করেন তখন হযরত আদম (আ) তাঁদের মধ্যে সকল নবীকে দেখতে পান। তাদের মধ্যে একজনকে অত্যন্ত উজ্জ্বল চেহারা বিশিষ্ট দেখে তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহ! ইনি কে?’ আল্লাহ জানালেন, ‘এ তোমার সন্তান দাউদ।’ আদম (আ) জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! তার আয়ু কত?’ আল্লাহ তা'আলা জানালেন, ‘ষাট বছর।’ আদম (আ) বললেন, ‘হে পরোয়ারদিগার! তার আয়ু বাড়িয়ে দিন।’ আল্লাহ জানালেন, ‘বৃদ্ধি করা যাবে না; তবে তোমার নিজের আয়ু থেকে নিয়ে বাড়িয়ে দিতে পারি।’ হযরত আদমের নির্ধারিত আয়ু ছিল এক হাজার বছর। তা থেকে নিয়ে দাউদ (আ)-এর আয়ু আরও চল্লিশ বছর বাড়িয়ে দেয়া হল। যখন হযরত আদমের আয়ু শেষ হয়ে আসে তখন মৃত্যুর ফিরিশতা আসেন। আদম (আ) বললেন, ‘আমার আয়ুর তো এখনও চল্লিশ বছর বাকী।’ দাউদ (আ)-কে দেয়া বয়সের কথা তিনি সম্পূর্ণ ভুলে গিয়েছিলেন। এভাবে আল্লাহ আদম (আ)-এর আয়ু এক হাজার বছর এবং দাউদ (আ)-এর আয়ু একশ পূর্ণ করে দেন। এ হাদীসটি ইমাম আহমদ.... ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী, ইবন খুযায়মা, ইবন হিব্বান ও হাকিম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিরমিযী একে সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন এবং হাকিম একে মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী আছে বলে উল্লেখ করেছেন। আদম (আ) -এর আলোচনা প্রসঙ্গে এ সম্পর্কে বিশদভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইবন জারীর লিখেছেন, কোন কোন আহলে কিতাবের মতে হযরত দাউদ (আ)-এর আয়ু ছিল সাতাত্তর বছর। কিন্তু এটা ভুল ও প্রত্যাখ্যাত। তাঁদের মতে হযরত দাউদের রাজত্বের মেয়াদ ছিল চল্লিশ বছর। তাঁদের এ মত গ্রহণযোগ্য। কেননা আমাদের কাছে এর পক্ষে বা বিপক্ষে কোন প্রমাণ নেই।

হযরত দাউদ (আ)-এর ইনতিকাল সম্পর্কে ইমাম আহমদ তার মুসনাদ গ্রন্থে আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ দাউদ (আ) ছিলেন অত্যন্ত ব্যক্তিত্ব ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন। যখন তিনি বাইরে যেতেন তখন ঘরের দরজা বন্ধ করে যেতেন, যাতে তিনি ফিরে আসা পর্যন্ত অন্য কেউ তাঁর ঘরে প্রবেশ করতে না পারে। এভাবে একদিন তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়া হল। এ সময় তাঁর স্ত্রী উঁকি দিয়ে দেখলেন যে, একজন পুরুষ লোক ঘরের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি প্রহরীকে জিজ্ঞেস করলেনঃ ‘এ লোকটি কে? তালাবদ্ধ ঘরে কিভাবে প্রবেশ করল? কসম আল্লাহর! নবী দাঊদ (আ)-এর কাছে আমরা লজ্জায় পড়ব!’ এমনি সময় হযরত দাউদ (আ) ফিরে এলেন এবং দেখলেন ঘরের মধ্যখানে একজন পুরুষ লোক দাঁড়িয়ে আছে। দাউদ (আ) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কে?’ লোকটি বলল, ‘আমি সেইজন, যে কোন রাজা বাদশাহকে তোয়াক্কা করে না এবং কোন আড়ালই তাকে আটকাতে পারে না।’ দাউদ (আ) বললেন, ‘আল্লাহর কসম! তা হলে আপনি নিশ্চয়ই মালাকুল মওত? আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্যে আপনাকে স্বাগতম!’ এর অল্পক্ষণ পরেই তাঁর রূহ কব করা হল। অতঃপর তাকে গোসল দেয়া হলো ও কাফন পরান হলো। ইতিমধ্যে সূর্য উদিত হল। তখন সুলায়মান (আ) পাখীদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘তোমরা দাউদ (আ)-এর উপর ছায়া করে রাখ।’ পাখীরা তাই করল। সন্ধ্যা হলে হযরত সুলায়মান (আ) পাখীদেরকে বললেন, ‘তোমরা এখন পাখা সংকুচিত করে নাও।’ আবু হুরায়রা (রা) বলেন, ‘পাখীরা কিভাবে তাদের পাখা মেলেছিল এবং কিভাবে বন্ধ করেছিল, তা তিনি নিজের হাত দিয়ে আমাদেরকে দেখাতে লাগলেন।’ দাউদ (আ)-এর উপর ঐদিন ছায়াদানে দীর্ঘ ডানা বিশিষ্ট বায পাখীর ভূমিকাই প্রধান ছিল। ইমাম আহমদ একাই এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এর সনদ উত্তম এবং বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য। সুদ্দী ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন, দাউদ (আ) আকস্মিকভাবে ইনতিকাল করেন তার মৃত্যুর দিন ছিল শনিবার। পাখীরা তার দেহের উপর ছায়া দান করে।

ইসহাক ইবন বিশর ..... হাসান থেকে বর্ণনা করেন যে, দাউদ (আ) একশ বছর বয়সে হঠাৎ এক বুধবারে ইনতিকাল করেন। আবুস সাকান আল-হাজারী বলেছেন, হযরত ইবরাহীম খলীল, হযরত দাউদ ও তদীয় পুত্র হযরত সুলায়মান (আ) তিন জনেরই মৃত্যু আকস্মিক ভাবে হয়েছিল। এ বর্ণনাটি ইবন আসাকিরের। কারো কারে বর্ণনায় আছে যে, একদা হযরত দাউদ (আ) মিহরাব থেকে নীচে অবতরণ করছিলেন, এমন সময় মৃত্যুর ফিরিশতা তার সম্মুখে এসে উপস্থিত হন। হযরত দাউদ (আ) তাকে বললেন, ‘আমাকে নীচে নামতে বা উপরে উঠতে দিন!’ তখন ফিরিশতা বললেন, ‘হে আল্লাহর নবী! আপনার জন্যে নির্ধারিত বছর, মাস, দিন ও রিযিক শেষ হয়ে গিয়েছে।’ এ কথা শুনেই দাঊদ (আ) সেখানেই একটি সিঁড়ির উপরে সিজদায় লুটিয়ে পড়েন এবং সিজদারত অবস্থায়ই তাঁর রূহ কবয করা হয়। ইসহাক ইবন বিশর ওহাব ইবন মুনাব্বিহ সূত্রে বর্ণনা করেন, গ্রীষ্মকালে রৌদ্রতাপের মধ্যে লোকজন হযরত দাউদ (আ)-এর জানাযায় শরীক হয়। সে দিন তার জানাযায় এত বেশী লোক সমাগম হয় যে, সাধারণ লোক ছাড়া কেবল যাজকদের সংখ্যাই ছিল চল্লিশ হাজার। এরা সবাই ছিল লম্বাটুপী (বুরনুস টুপী) পরিহিত। মূসা ও হারূন (আ)-এর পরে বনী ইসরাঈলের মধ্যে কারো জন্যে দাঊদ (আ)-এর জন্যে যে শোক-তাপ প্রকাশ করা হয়, তা আর কারো জন্যে করা হয়নি। জানাযায় উপস্থিত লোকজন রৌদ্র তাপে কষ্ট পাচ্ছিল। তাই রৌদ্র থেকে বাঁচার জন্যে তারা সুলায়মান (আ)-কে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায়। সুলায়মান (আ) বের হয়ে পক্ষীকুলকে আহ্বান করেন। পক্ষীকুল তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়। তিনি লোকদেরকে ছায়া দানের জন্যে তাদেরকে নির্দেশ দেন। ফলে পক্ষীকুল পরস্পর মিলিত হয়ে পাখা মেলে চারদিকে এমনভাবে ঘিরে দাঁড়াল যে, সে স্থানে বাতাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি লোকজন শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার উপক্রম হয়। তারা এ অবস্থা থেকে মুক্তি লাভের জন্যে চিৎকার করে সুলায়মান (আ)-কে ফরিয়াদ জানাল। সুলায়মান (আ) বের হয়ে পাখীদেরকে ডেকে বললেন, তোমরা সূর্যের তাপ যে দিক থেকে আসছে সে দিকে ছায়া দাও, আর যে দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে সে দিক থেকে সরে যাও। পাখীরা তাই করল। তখন লোকজন এক দিকে ছায়ার নীচে থাকে এবং অন্য দিকে তাদের উপর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হতে থাকে। এটাকেই মানুষ সুলায়মান (আ)-এর কর্তৃত্বের প্রথম নিদর্শন হিসেবে দেখতে পায়। হাফিজ আবূ ইয়ালা.... আবুদ দারদা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ আল্লাহ হযরত দাউদ (আ)-কে তাঁর সংগীদের মাঝ থেকে তুলে নেন, তারা কোন ফিৎনায় পতিত হয়নি এবং দাউদের দীনকেও পরিবর্তন করেনি। আর মাসীহর শিষ্যরা তার বিধান ও প্রদর্শিত পথের উপর দু'শ বছর বহাল ছিল। এ হাদীস গরীব পর্যায়ের। এটা মারফু কিনা এ ব্যাপারে সন্দেহ আছে। এর সনদে ওয়াদীন ইবন ‘আতা হাদীস বর্ণনায় দুর্বল।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন