hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৯৬
নবীজী (সা)-এর সাথে খাদীজা বিনতে খুওয়ায়লিদের বিবাহ
ইবন ইসহাক বলেন, খাদীজা বিনতে খুওয়ায়লিদ একজন সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী মহিলা ছিলেন। লাভে অংশীদারিত্বের চুক্তিতে পুরুষদেরকে তিনি তাঁর ব্যবসায় নিয়োগ করতেন। রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সত্যবাদিতা, বিশ্বস্ততা ও সচ্চরিত্রতার কথা জানতে পেরে তিনি তাঁর নিকট প্রস্তাব পাঠালেন, যেন তিনি ব্যবসায় পণ্য নিয়ে সিরিয়া সফর করেন। বিনিময়ে তিনি তাঁকে অন্যদের তুলনায় অধিক মুনাফা প্রদানের প্রস্তাব করেন। সঙ্গে থাকবে খাদীজার গোলাম মায়সারা। রাসূলুল্লাহ (সা) খাদীজার এই প্রস্তাবে সম্মত হন এবং পণ্যসামগ্রী নিয়ে সিরিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হন। তাঁর সঙ্গে খাদীজার গোলাম মায়সারাও রওয়ানা হন। সিরিয়া পৌঁছে রাসূলুল্লাহ (সা) জনৈক পাদ্রীর গির্জার নিকট একটি গাছের ছায়ায় অবস্থান গ্রহণ করেন। পাদ্রী মায়সারাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘গাছের নিচে অবতরণকারী ব্যক্তিটি কে?’ মায়সারা বললেন, ‘ইনি হারমবাসী কুরায়শী বংশের এক ব্যক্তি।’ পাদ্রী বললেন, ‘এ যাবত এই গাছের নিচে নবী ব্যতীত কেউ অবতরণ করেনি।’ তারপর রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর নিয়ে আসা ব্যবসা-পণ্য বিক্রি করলেন এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়ে তার পছন্দমত অন্য মাল ক্রয় করলেন। এরপর মায়সারাকে নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন।

ঐতিহাসিকদের ধারণা, মায়সারা লক্ষ্য করেন যে, সূর্যের তাপ প্রখর হওয়ার সাথে সাথে দু’জন ফেরেশতা মুহাম্মদ (সা)-কে ছায়া প্রদান করছেন। তখন তিনি উটের পিঠে চড়ে এগিয়ে চলছিলেন। মক্কায় এসে খাদীজাকে তিনি তাঁর পণ্য বুঝিয়ে দেন। খাদীজা দ্বিগুণ বা প্রায় দ্বিগুণ মূল্যে তা বিক্রি করেন। মায়সারা খাদীজার নিকট পাদ্রীর মন্তব্যর কথা এবং নবীজী (সা)-কে দুই ফেরেশতার ছায়াদানের কথা ব্যক্ত করেন। আর খাদীজা ছিলেন একজন দৃঢ়চেতা, সম্ভ্রান্ত ও বুদ্ধিমতী মহিলা।

মায়সারা ঘটনার ইতিবৃত্ত শুনালে খাদীজা (রা) রাসূলুল্লাহ (সা)-কে ডেকে পাঠালেন। ঐতিহাসিকদের ধারণা, হযরত খাদীজা (রা) রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলেন, ‘চাচাতো ভাই! আপনার সুখ্যাতি, আপনার বিশ্বস্ততা, আপনার উত্তম চরিত্র, সত্যবাদিতা—এ সবের কারণে আমি আপনার প্রতি আকৃষ্ট।’ তারপর তিনি সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন। উল্লেখ্য যে, খাদীজা (রা) কুরায়শ মহিলাদের মধ্যে বংশগতভাবে অতিশয় সম্ভ্রান্ত, মর্যাদায় সকলের সেরা ও শ্রেষ্ঠ বিত্তবতী মহিলা ছিলেন। তাঁর সম্প্রদায়ের প্রত্যেকেই সুযোগ সাপেক্ষে তাঁর প্রতি লালায়িত ছিল। রাসূলুল্লাহ (সা) বিষয়টি তাঁর চাচাদের গোচরে দেন। শুনে চাচা হামযা (রা) রাসূলুল্লাহ (সা)-কে নিয়ে খুওয়াইলিদ ইবনে আসাদ-এর নিকট গমন করেন। খুওয়াইলিদ-এর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর খাদীজার সঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বিবাহ সম্পাদন করেন।

ইবনে হিশাম বলেনঃ মহর হিসাবে তাঁকে তিনি বিশটি উট প্রদান করেন। এটিই ছিল রাসূলুল্লাহ (সা)-এর প্রথম বিবাহ। খাদীজা (রা)-এর মৃত্যু পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সা) আর কোন বিবাহ করেন নি।

ইবনে ইসহাক বলেনঃ ইবরাহীম ব্যতীত রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সকল সন্তান খাদীজার গর্ভেই জন্ম লাভ করেন। তাঁরা হলেন, ১. কাসিম (রাসূলুল্লাহ (সা)-এর আবুল কাসিম উপনামটি এই কাসিম-এর নামেই ছিল) ২. তায়্যিব ৩, তাহির ৪, যায়নাব ৫. রুকাইয়া ৬. উম্মে কুলসুম ৭. ফাতিমা (রাদিয়াল্লাহু আনহা)।

ইবনে হিশাম বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর পুত্রদের মধ্যে কাসিম ছিলেন সকলের বড়। তারপর তায়্যিব। তারপর তাহির। আর কন্যাদের মধ্যে বড় হলেন, রুকাইয়া। তারপর যায়নাব, তারপর উম্মে কুলসুম, তারপর ফাতিমা (রা)।

বায়হাকী বলেন, আমি আবু বকর ইবনে আবু খায়ছামার একটি লিপিতে পড়েছি; তাতে উল্লেখ আছে যে, মুস‘আব ইবনে আব্দুল্লাহ যুবায়রী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম কাসিম, তারপর যায়নাব, তারপর আব্দুল্লাহ, তারপর উম্মে কুলসূম, তারপর আব্দুল্লাহ। তারপর ফাতিমা। তারপর রুকাইয়া। আর তাঁদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইনতিকাল করেন কাসিম। তারপর আব্দুল্লাহ্। আর খাদীজা (রা) আয়ু পেয়েছিলেন পঁয়ষট্টি বছর। মতান্তরে পঞ্চাশ বছর। এ অভিমতটিই বিশুদ্ধতর। অন্যদের মতে কাসিম বাহনে আরোহণের উপযুক্ত এবং বুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নবুওত লাভের পর মারা যান। কেউ কেউ বলেন, কাসিম যখন মারা যান তখন তিনি দুগ্ধপোষ্য শিশু। তাঁর মৃত্যুর পর রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছিলেনঃ “ওর জন্য জান্নাতে স্তন্যদাত্রী রাখা আছে। সে তার দুধ পানের মেয়াদ পূর্ণ করবে।” তবে প্রসিদ্ধ মতে, রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর এ উক্তিটি ছিল ইবরাহীম সম্পর্কে।

ইউনুস ইবন বুকায়র...... ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, খাদীজার গর্ভে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর দুই পুত্র সন্তান এবং চার কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। ১. কাসিম ২. আব্দুল্লাহ, ৩. ফাতিমা ৪. উম্মে কুলসুম ৫. যায়নাব ৬. রুকাইয়া। যুবায়র ইবনে বাক্কার বলেন, আব্দুল্লাহ তায়্যিব ও তাহিরও বলা হতো। কারণ তিনি হযরতের নবুয়ত প্রাপ্তির পর জন্মলাভ করেছিলেন।

যাহোক, নবী করীম (সা)-এর অন্য পুত্রগণ তাঁর নবুওত লাভের আগেই মারা যায়। অবশ্য কন্যাগণ নবুওতের যুগ লাভ করেন। তারা ইসলাম কবুল করেন এবং রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর সঙ্গে হিজরত করেন। ইবনে হিশাম বলেন, ইবরাহীম-এর জন্ম মারিয়া কিবতিয়ার গর্ভে। আলেকজান্দ্রিয়া-অধিপতি মুকাওকিস মারিয়াকে রাসূল (সা)-এর খেদমতে উপহাররূপে পাঠিয়েছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সকল সহধর্মিনী ও সন্তানগণের ব্যাপারে আমরা ইনশাআল্লাহ স্বতন্ত্রভাবে সীরাত অধ্যায়ের শেষে আলোকপাত করব।

ইবনে হিশাম বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) যখন খাদীজা (রা)-কে বিবাহ করেন, তখন তার বয়স ছিল পঁচিশ বছর। একাধিক আলিম আমার নিকট এরূপ বর্ণনা দিয়েছেন। তন্মধ্যে আবু আমর আল-মাদানী বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

ইয়াকূব ইবন সুফিয়ান এক সূত্রে বর্ণনা করেন যে, “আমর ইবন আসাদ যখন খাদীজাকে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট বিবাহ দেন তখন রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বয়স ছিল পঁচিশ বছর। কুরায়শরা তখন কা‘বা নির্মাণ করছে।”

অনুরূপভাবে বায়হাকী হাকিম থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) যখন খাদীজা (রা)-কে বিবাহ করেন, তখন তার বয়ষ ছিল পঁচিশ বছর। আর খাদীজার বয়স তখন পঁয়ত্রিশ, মতান্তরে পঁচিশ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন