hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

২৭
আসমানী খাঞ্চার বিবরণ
আল্লাহর বাণীঃ-

( إِذۡ قَالَ ٱلۡحَوَارِیُّونَ یَـٰعِیسَى ٱبۡنَ مَرۡیَمَ هَلۡ یَسۡتَطِیعُ رَبُّكَ أَن یُنَزِّلَ عَلَیۡنَا مَاۤىِٕدَة مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِۖ قَالَ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ ۝ قَالُوا۟ نُرِیدُ أَن نَّأۡكُلَ مِنۡهَا وَتَطۡمَىِٕنَّ قُلُوبُنَا وَنَعۡلَمَ أَن قَدۡ صَدَقۡتَنَا وَنَكُونَ عَلَیۡهَا مِنَ ٱلشَّـٰهِدِینَ ۝ قَالَ عِیسَى ٱبۡنُ مَرۡیَمَ ٱللَّهُمَّ رَبَّنَاۤ أَنزِلۡ عَلَیۡنَا مَاۤىِٕدَة مِّنَ ٱلسَّمَاۤءِ تَكُونُ لَنَا عِید ا لِّأَوَّلِنَا وَءَاخِرِنَا وَءَایَة مِّنكَۖ وَٱرۡزُقۡنَا وَأَنتَ خَیۡرُ ٱلرَّ  ٰ⁠ زِقِینَ ۝ قَالَ ٱللَّهُ إِنِّی مُنَزِّلُهَا عَلَیۡكُمۡۖ فَمَن یَكۡفُرۡ بَعۡدُ مِنكُمۡ فَإِنِّیۤ أُعَذِّبُهُۥ عَذَاب ا لَّاۤ أُعَذِّبُهُۥۤ أَحَد ا مِّنَ ٱلۡعَـٰلَمِینَ )

[Surah Al-Ma'idah 112 - 115]

—“স্মরণ কর, হাওয়ারীগণ বলেছিল, হে মারয়াম-তনয় ঈসা! তোমার প্রতিপালক কি আমাদের জন্যে আসমান হতে খাদ্য পরিপূর্ণ খাঞ্চা (মায়িদা) প্রেরণ করতে সক্ষম? সে বলেছিল, আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা মুমিন হও। তারা বলেছিল, আমরা চাই যে, তা থেকে কিছু খাব এবং আমাদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করবে। আর আমরা জানতে চাই যে, তুমি আমাদেরকে সত্য বলেছ এবং আমরা এর সাক্ষী থাকতে চাই। মারয়াম-তনয় ঈসা বলল, হে আল্লাহ, আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্যে আসমান হতে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা প্রেরণ কর; এটা আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্যে হবে আনন্দোৎসব স্বরূপ ও তোমার নিকট হতে নিদর্শন। এবং আমাদেরকে জীবিকা দান কর; তুমিই তো শ্রেষ্ঠ জীবিকাদাতা। আল্লাহ বললেন, আমিই তোমাদের নিকট এটা প্রেরণ করব; কিন্তু এরপর তোমাদের মধ্যে কেউ কুফরী করলে তাকে এমন শাস্তি দিব, যে শাস্তি বিশ্বজগতের অপর কাউকেও দিব না।” (মায়িদাঃ ১১২-১১৫)

তাফসীর গ্রন্থে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আমরা খাঞ্চা অবতারণ প্রসংগে সেই সব হাদীস উল্লেখ করেছি যা হযরত ইব্‌ন আব্বাস, সালমান ফারসী, আম্মার ইবন ইয়াসির প্রমুখ থেকে বর্ণিত হয়েছে। ঘটনার সারসংক্ষেপ এই; হযরত ঈসা (আ) হাওয়ারীগণকে ত্রিশ দিন সওম পালনের নির্দেশ দেন। তারা ত্রিশ দিন সওম পালন শেষে ঈসা (আ)-এর নিকট আসমান থেকে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা অবতীর্ণ করার আবদার জানায়। উদ্দেশ্য ছিল— তারা আল্লাহর প্রেরিত এই খাদ্য আহার করবে। তাদের সওম ও দোয়া আল্লাহ কবুল করেছেন এ ব্যাপারে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করবে, সওমের মেয়াদ শেষে সওম ভংগের দিনে ঈদ উৎসব পালন করবে, তাদের পূর্ব পুরুষ ও উত্তর পুরুষ এবং তা ধনী ও দরিদ্র সকলের জন্যে আনন্দের বিষয় হিসেবে গণ্য হবে। ঈসা (আ) এ ব্যাপারে তাদেরকে অনেক উপদেশ দিলেন। তার আশংকা হল, এরা আল্লাহর এ নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে এবং এর শর্তাদি পূরণ করতে সক্ষম হবে না। কিন্তু তারা তাদের আবদার পূরণ না হওয়া পর্যন্ত উপদেশ শুনতে প্রস্তুত হল না। অবশেষে তাদের পীড়াপীড়িতে বাধ্য হয়ে তিনি আল্লাহর নিকট দোয়া করতে প্রস্তুত হন। তিনি সালাতে দণ্ডায়মান হলেন। পশম ও চুলের তৈরি কম্বল পরিধান করলেন এবং অবনত মস্তকে কান্নায় বুক ভাসিয়ে দিলেন। তিনি আল্লাহর নিকট কাকুতি-মিনতি করে দোয়া করলেন যেন তাদের প্রার্থীত জিনিস তিনি দিয়ে দেন আর আল্লাহ আসমান থেকে খাদ্য ভর্তি খাঞ্চা অবতীর্ণ করেন।

মানুষ তাকিয়ে দেখছিল যে, দু'টি মেঘের মাঝখান থেকে খাঞ্চাটি ধীরে ধীরে নীচের দিকে নেমে আসছে। খাঞ্চাটি যতই পৃথিবীর নিকটবর্তী হচ্ছিল ততই ঈসা (আ) বেশী বেশী করে আল্লাহর নিকট দোয়া করছিলেন, “হে আল্লাহ! একে তুমি রহমত, বরকত ও শান্তি হিসেবে দান কর। শাস্তি হিসেবে দিও না।” খাঞ্চাটি ক্রমান্বয়ে নেমে এসে একেবারে নিকটবর্তী হয়ে গেল এবং ঈসা (আ)-এর সম্মুখে মাটির উপর থামল। খাঞ্চাটি ছিল রুমাল দিয়ে ঢাকা। ঈসা (আ) ( بسم الله خير الرازقين ), বলে রুমালখানা উঠালেন। দেখলেন, তাতে সাতটি মাছ ও সাতটি রুটি আছে। কেউ বলেছেন, এর সাথে সির্কা ছিল। আবার কেউ কেউ বলেছেন, ঐগুলোর সাথে ডালিম এবং ফল ফলাদিও ছিল। উক্ত খাদ্য দ্রব্যগুলো ছিল অত্যন্ত সুগন্ধি। আল্লাহ বলেছিলেন, 'হও’ আর তাতেই তা হয়ে গিয়েছিল। তারপর ঈসা (আ) তাদেরকে খাওয়ার জন্যে আহ্বান করেন। তারা বলল, ‘আপনি প্রথমে খাওয়া আরম্ভ করুন তারপরে আমরা খাব।’ ঈসা (আ) বললেন, ‘এ খাঞ্চার জন্যে তোমরাই প্রথমে আবেদন করেছিলে;’ কিন্তু প্রথমে খেতে তারা কিছুতেই রাজি হল না। হযরত ঈসা (আ) তখন ফকীর, মিসকীন, অভাবগ্রস্ত, রোগাক্রান্ত ও পঙ্গুদেরকে খাওয়ার আদেশ দেন। এ জাতীয় লোকদের সংখ্যা ছিল তেরশ'। সকলেই তা থেকে খেলো। ফলে দুঃখ-দুর্দশা ও রোগ-শোক যার যে সমস্যা ছিল, এই খাদ্যের বরকতে তা থেকে সে নিরাময় লাভ করল। যারা খেতে অস্বীকার করেছিল তা দেখে তারা খুবই লজ্জিত হলো ও অনুশোচনা করতে লাগল। কথিত আছে, এই খাঞ্চা প্রতিদিন একবার করে আসত। লোক এ থেকে তৃপ্তি সহকারে আহার করত। খাদ্য একটুও হ্রাস পেতো না। প্রথম দল যেভাবে আহার করত, শেষের দলও ঐ একইভাবে আহার করত। কথিত আছে, প্রতিদিন সাত হাজার লোক ঐ খাদ্য আহার করত।

কিছু দিন অতিবাহিত হলে একদিন পর পর খাঞ্চা অবতরণ করত। যেমন সালিহ (আ)-এর উটনীর দুধ একদিন পর পর লোকেরা পান করত। অতঃপর আল্লাহ্ হযরত ঈসা (আ)-কে আদেশ দেন যে, এখন থেকে খাঞ্চার খাবার শুধুমাত্র দরিদ্র ও দুর্দশাগ্রস্ত লোকেরাই আহার করবে। ধনী লোকেরা তা থেকে আহার করতে পারবে না। এই নির্দেশ অনেককেই পীড়া দেয়। মুনাফিকরা এ নিয়ে বিরূপ সমালোচনা করতে শুরু করল। ফলে আসমানী খাঞ্চা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেল এবং সমালোচনাকারীরা শূকরে পরিণত হল।

ইবন আবি হাতিম ও ইবন জারীর উভয়ে,... আম্মার ইবন ইয়াসির (রা) থেকে বর্ণনা করেন। নবী করীম (সা) বলেছেনঃ রুটি ও গোশতসহ খাঞ্চা আসমান থেকে অবতীর্ণ হয়েছিল এবং বনী ইসরাঈলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা এর অপব্যবহার করবে না, সঞ্চয় করে রাখবে না ও আগামী দিনের জন্যে ঘরে তুলে নিবে না। কিন্তু তারা এতে খিয়ানত করে সঞ্চয় করে রাখে ও আগামী দিনের জন্যে ঘরে তুলে নেয়। ফলে তাদেরকে বানর ও শূকরে পরিণত করা হয়। ইবন জারীর আম্মার (রা) থেকে বিভিন্ন সূত্রে মওকুফরূপে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং এটাই সঠিক। হাদীসটি যে সূত্রে মারফুরূপে বর্ণিত হয়েছে তা’ মুনকাতা বা বিভিন্ন সূত্রের হাদীস। হাদীসটির মারফু হওয়া নিশ্চিত হলে এ ব্যাপারে এটি হবে চড়ান্ত ফয়সালা। কেননা, খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা আদৌ অবতীর্ণ হয়েছিল কি না সে সম্পর্কে আলিমদের মধ্যে মতভেদ আছে। তবে অধিকাংশের মতে তা অবতীর্ণ হয়েছিল। উপরোক্ত হাদীস ও কুরআনের প্রকাশভংগী থেকে তাই বুঝা যায়।

বিশেষ করে এই আয়াত

( إِنِّی مُنَزِّلُهَا عَلَیۡكُمۡ )

(আমি অবশ্যই তা তোমাদের উপর অবতীর্ণ করব।) ইবন জারীর দৃঢ়তার সাথে এই মর্তের পক্ষে প্রমাণাদি উল্লেখ করেছেন। তিনি বিশুদ্ধ সনদে মুজাহিদ ও হাসান বসরীর মতামত উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন, মায়িদা আদৌ অবতীর্ণ হয়নি। তারা বলেন, এই আয়াত “এরপর তোমাদের মধ্যে কেউ কুফরী করলে তাকে এমন শাস্তি দিব, যে শান্তি বিশ্বজগতের অপর কাউকেও দিব না”। (মায়িদাঃ ১১৫) যখন নাযিল হয় তখন বনী ইসরাঈলরা মায়িদা অবতীর্ণের আবদার প্রত্যাহার করে নেয়। এ কারণেই বলা হয়ে থাকে যে, নাসারাগণ মায়িদার ঘটনা সম্পর্কে অবহিত নয় এবং তাদের কিতাবেও এ ঘটনার বাস্তবে কোন উল্লেখ নেই। অথচ এমন একটি ঘটনা বাস্তবে সংঘটিত হলে তার উল্লেখ না থেকে পারে না। তাফসীর গ্রন্থে এ বিষয়ে আমরা বিশদভাবে আলোচনা করেছি। আগ্রহী ব্যক্তি সেখান থেকে দেখে নিতে পারেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন