মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
খুযাআ গোত্র, আমর ইবন লুহাই এবং আরবদের মূর্তি পূজার সূচনা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/489/70
ইবন ইসহাক (র) বলেন, বনু বকর ইবন আবদ মানাতকে বাদ দিয়ে খুযাআ গোত্রের গাবশান উপপোত্র কাবা শরীফের তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হয়। আমর ইবন হারিছ গাবশানী উক্ত উপগোত্রের দলপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে। কুরায়শ গোত্র তখন পরস্পর বিচ্ছিন্ন ও বনী কিনানার বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল।
ঐতিহাসিকগণ বলেন, ইয়ামান ত্যাগ করে সিরিয়া অভিমূখে যাত্রা কালে আমর ইবন আমিরের বংশধরদের মধ্য থেকে তারা বিচ্ছিন্ন ও পৃথক হয়ে যাওয়ার কারণে এদেরকে খুযাআ (বিচ্ছিন্নতা দল) বলা হয়। মাররুয মাহরান নামক স্থানে এসে তারা বসবাস করতে থাকে।
—আমরা যখন মরু অঞ্চলে অবতরণ করি তখন খুযা’আ গোত্র দলবদ্ধভাবে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
حمت كل واد من تهامة واحتمت - بصم القنا والمرهفات ألبواتر .
—তারা তিহামা অঞ্চলের সকল উপত্যকা সংরক্ষণ করেছে এবং সুকঠিন বর্শা ও সুতীক্ষ্ণ ধার তরবারী দ্বারা নিজেদেরকে রক্ষা করেছে।
আবুল মুতাহহার ইসমাঈল ইবন রাফি আনসারী আওসী বলেনঃ
فلما هبطنا بطن مكة أحمدت - خزاعة دار الأكل المتحامل .
—আমরা যখন মক্কার জমিতে অবতরণ করলাম তখন খুযাআ ঐ বৃক্ষ ভর্তি খেজুরের দেশের প্রশংসা করল।
فحلت أكاديسا وشتت قنابل - عل كل حى بين نجد وساحل .
وشتت و
—অতঃপর তারা দলবদ্ধভাবে সেখানে নেমে পড়ল আর ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে নাজদের উচ্চ ভূমি ও সমুদ্র তীরের মধ্যবর্তী সকল গোত্রের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল।
تفواجزهما عن بطن مكة- واحبتوا بعز خزاعي شديد الكواهل
—তারা মক্কা ভূমি থেকে জুরুহুম গোত্রীয় লোকদেরকে বিতাড়িত করে এবং সুঠামদেহী খুযা’আ গোত্রীয় সম্মানের পোশাক তারা পরিধান করেছে।
বস্তুত খুযা’আ গোত্র তখন বায়তুল্লাহ শরীফের তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হয়। পুরুষানুক্রমে একের পর এক তারা ঐ দায়িত্ব পালন করে। এই পর্যায়ে তাদের শেষ ব্যক্তি ছিল খলীল ইবন হাবিশিয়্যা ইবন সালুল ইবন কা’ব ইবন আমর ইবন রযী’আ খুঈ। কুসাই ইবন কিলাব খলীলের কন্যা হিরীকে বিবাহ করে। এই স্ত্রীর ঘরে তিনি ৪টি পুত্র সন্তান লাভ করেন। তারা। হল আবদুদ্দার, আবদ মানাফ, আবদুল উযযা ও আবদ নামে অপর একজন। অতঃপর বায়তুল্লাহ শরীফের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব আসে কুসাই ইবন কিলাবের হাতে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা যথাস্থানে আসবে ইবনশাআল্লাহ।
খুযা’আ গোত্র একাধিক্রমে প্রায় ৩০০ বছর মতান্তরে ৫০০ বছর বায়তুল্লাহ শরীফ দেখা শোনার দায়িত্ব পালন করে। আল্লাহই ভাল জানেন। তাদের সময়কালে তারা জঘন্য অনাচারে লিপ্ত হয়। কারণ তাদের শাসনামলেই হেজাযে সর্বপ্রথম মূর্তি পূজার প্রচলন ঘটে। এ অপকর্মের মূল হোতা ছিল তাদের নেতা আমর ইবন লুহাই। তার প্রতি আল্লাহর লা’নত হোক! কেননা সেই সর্বপ্রথম তাদেরকে মূর্তি পূজার দিকে আহ্বান করে। সে অগাধ ধন-সম্পত্তির অধিকারী। কথিত আছে যে, সে ২০টি উটের চোখ বিদ্ধ করেছিল। অর্থাৎ সে ২০ হাজার উটের মালিক হয়েছিল। আরব দেশে প্রথা ছিল যে, কেউ এক হাজার উটের মালিক হলে সে একটি উটের চোখ বিদ্ধ করতো। এটি দ্বারা তারা অবশিষ্ট উটগুলোর প্রতি বদনজর প্রতিরোধের ধারণা পোষণ করত। আযরকী এরূপ বলেছেন।
সুহায়লী বলেন, আমর ইব্ন লুহাই কোন কোন সময়ে হজ্জ উপলক্ষে দশ হাজার উট জবাই করত, প্রতিবছর দশ হাজার জোড়া বস্ত্র দান করত। আরবদের জন্যে ভোজের আয়োজন করত। ঘি, মধু এবং ছাতুর দিয়ে হালুয়া তৈরি করত। ঐতিহাসিকগণ বলেন, আরবদের মাঝে তার কথা ও কাজ শরীয়তের মত অনুসরণ করতো। এটি ছিল তার মর্যাদা, অবস্থান ও তাদের প্রতি তার অকাতর বদান্যতার ফল।
ইবন হিশাম (র) বলেন, কতক বিত্তজন আমাকে জানিয়েছেন যে, একদা আমর ইবন লুহাই কোন এক কাজে মক্কা থেকে সিরিয়া গমন করে। বালকা অঞ্চলে মাআব নামক স্থানে গিয়ে সে দেখতে পায় যে, সেখানকার লোকজন প্রতিমা পূজা করছে। ঐ অঞ্চলে তখন বসবাস করত আমালীক সম্প্রদায়। তারা ইসলাক’-এর বংশধর।
কেউ কেউ বলেন, তারা হল আমালীক ইবন লাওয ইবন সাম ইবন নূহ (আ)-এর বংশধর। প্রতিমা পূজায় লিপ্ত দেখে সে বলল, ‘এগুলো কেমন প্রতিমা যে তোমরা এগুলোর উপাসনা করছ?’ তারা বললেন, ‘আমরা এ সকল প্রতিমার উপাসনা করি, অতঃপর আমরা ওগুলোর নিকট বৃষ্টি চাইলে ওরা আমাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণ করে। আমরা ওগুলোর নিকট সাহায্য কামনা করলে ওরা আমাদেরকে সাহায্য করে।’ আমর বলল, ‘তোমরা কি আমাকে একটি প্রতিমা দিবে যে, আমি সেটি নিয়ে আরব অঞ্চলে যাব এবং আরবগণ এটির উপাসনা করবে?’ ওরা তাকে হুবল নামের একটি প্রতিমা দান করে এবং লোকজনকে সেটির উপাসনা করার এবং সেটির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ দেয়।
ইবন ইসহাক (র) বলেন, হযরত ইসমাঈল (আ)-এর বংশধরদের মধ্যে সর্বপ্রথম মূর্তি পূজা প্রচলনের সূচনা সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের ধারণা এই যে, মক্কায় জনজীবন সংকুচিত ও সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে তাদের কোন কাফেলা তা থেকে মুক্তিলাভ ও স্বচ্ছতা অর্জনের আশায় অন্য এলাকায় সফর করত। তখন তারা হারাম শরীফের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও বরকত লাভের আশায় হারাম শরীফের এক একটি পাথর সাথে নিয়ে যেত। তারা যেখানে তাঁবু ফেলত সেখানে ঐ পাথর রাখত এবং কাবা শরীফের তাওয়াফের ন্যায় সেটির চারিদিকে তাওয়াফ করত। এভাবেই তাদের রীতি চলে আসছিল। এক সময় তারা তাদের প্রিয় ও পছন্দের পাথর পেলেই তারা উপাসনা শুরু করে দেয়। অবশেষে আগমন ঘটে তাদের উত্তরসূরীদের। এরা সরাসরি মূর্তি পূজায় লিপ্ত হয় এবং সূচনা পর্বের রীতি ও উদ্দেশ্যের কথা ভুলে যায়।
‘আস সাহীহ’ গ্রন্থে আবু রাজা আতারদী থেকে বর্ণিত আছে... তিনি বলেন, জাহেলী যুগে আমরা এমন ছিলাম যে, কোন পাথর না পেলে আমার মাটির স্তুপ তৈরি করতাম। সেখানে একটি বকরী এনে দুধ দোহন করে ঐ মাটিতে নজরানা দিতাম, অতঃপর সেটির চারিদিকে তাওয়াফ করতাম।
ইবন ইসহাক (র) বলেন, এভাবে তারা হযরত ইবরাহীম (আ) ও ইসমাঈল (আ)-এর দীন বিকৃত করে প্রতিমা পূজায় লিপ্ত হয় এবং তাদের পূর্ববর্তী গোমরাহ ও বিভ্রান্তি উম্মতদের ন্যায় একই উম্মতে পরিণত হয়। হযরত ইবরাহীম (আ)-এর দীনে ছিল না এমন বহু কিছু তার মধ্যে সংযোজন করা সত্ত্বেও তার দীনের কতক নিদর্শন ও রীতিনীতি তাদের মধ্যে বিদ্যমান ছিল। তারা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে সেগুলো ধরে রেখেছিল। যেমন বায়তুল্লাহ শরীফকে সম্মান করা, সেটির তাওয়াফ করা ও ওমরাহ করা, আরাফাত ময়দান ও মুযদালিফাতে অবস্থান করা, উট কুরবানী করা। হজ্জ ও উমরাহ করার জন্যে ইহরাম বাঁধা।
কিনানা ও কুরায়শ গোত্র ইহরাম বাঁধার সময় উচ্চস্বরে বলতঃ
لبيك اللهم لبيك لبيك لا شريك لك الأ شريكا هو لك تملكه وما ملك
“হে আল্লাহর বান্দা হাজির বান্দা হাজির। বান্দা হাজির হে আল্লাহ! আপনার কোন শরীক নেই, তবে একটি শরীক আছে যে আপনারই। আপনি তার এবং তার মালিকানাধীন সবকিছুর মালিক। সে কোন কিছুর মালিক নয়।”
তালবিয়্যা উচ্চারণে তারা প্রথম পর্যায়ে আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি দেয় এরপর তার সাথে তাদের মূর্তিগুলোর কথা উল্লেখ করে এবং সেগুলোর মালিকানা আল্লাহর হাতে ন্যস্ত করে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
“তাদের অধিকাংশ আল্লাহকে স্বীকার করে কিন্তু তার শরীক করে। (১২ ইউসুফঃ ১০৬) অর্থাৎ আমার যথাযথ পরিচিতি জানার প্রেক্ষাপটে তারা আমার একত্ববাদের ঘোষণা দেয় আর সেই সাথে আমারই সৃষ্টি জগতের কাউকে আমার শরীক সাব্যস্ত করে।”
সুহায়লী প্রমুখ বলেন, উপরোক্ত তালবিয়াহ সর্বপ্রথম পাঠ করেছে আমর ইবন লুহাই। একদিন একজন বুযুর্গ লোকের রূপ ধরে ইবলীস এসে তার নিকট হাজির হয়। ইবলীস উচ্চস্বরে এই তালবিয়াহ পাঠ করতে থাকে এবং আমর ইবন লুহাই তা শুনতে থাকে এবং অনুরূপ পাঠ করতে থাকে। অবশেষে মুশরিক আরবগণ আমর ইবন লুহাইর পাঠ অনুসরণে এ তালবিয়াহ উচ্চারণ করে। বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থে উদ্ধৃত রয়েছে যেঃ
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان إذا سمعهم يقولون لبيك لا شريك لك يقول قد قد
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (স) যখন তাদের তালবিয়াহ পাঠ শুনতেন এবং যখন তারা
لبيك لا شريك لك
(বান্দা হাজির আপনার কোন শরীক নেই) পর্যন্ত পাঠ করত তখন রাসূলুল্লাহ (স) বলতেন, ‘থাম, থাম, যথেষ্ট হয়েছে।’
ইমাম বুখারী (র) বলেন, হযরত আবু হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেন, যে নবী করীম (সা) বলেছেনঃ
إن أول من سيب السوائب وعبد الأصنام أبو خزاعة عمروبن عامر واني رأيته يجر أمعاءه في التار .
—সর্বপ্রথম দেবতার নামে পশু উৎসর্গ করেছে এবং মূর্তি পূজা চালু করেছে আবু খুযাআ আমর ইবন আমির। আমি তাকে দেখেছি যে, জাহান্নামে সে তার নাড়িভুড়ি হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে।” আলোচ্য বর্ণনা দ্বারা বুঝা যায় যে, আমর ইব্ন লুহাই হলো গোটা খুযাআ গোত্রের আদি পুরুষ। তার নাম অনুসারেই খুযাআ গোত্রের নামকরণ করা হয়।
ইবন ইসহাক ও অন্যান্যদের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, কতক বংশ বিশারদ এরূপ বলেছেনও বটে। আমরা যদি এতটুকুতেই সীমিত থাকি তবে এটি একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে চিহ্নিত হয়। কিন্তু কোন কোন বর্ণনা এর বিপরীত এসেছে।
যেমন ইমাম বুখারী (র) সাঈদ ইবন মুসায়্যাব (রা) সূত্রে বলেছেন, “বাহীরা হল সেই প্রাণী যার স্তনকে তাগুত বা দেবতার জন্যে সংরক্ষিত রাখা হয়। অতঃপর কেউই তার দুধ দোহন করে না।” সাইবা হল সেই প্রাণী যা তারা তাদের দেবতার নামে ছেড়ে দেয়, অতঃপর তার পিঠে কিছুই চাপানো হয় না।
ইমাম বুখারী (র) আরো বলেন, হযরত আবু হুরায়রা (রা) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) ফরমানঃ
رایت عمروبن عامر الخزاعم يجر قصبه في النار كان أول من سيب السوائب .
“আমি আমর ইবন আমির খুযাঈকে দেখেছি জাহান্নামে সে তার নাড়িভূঁড়ি হেঁচড়িয়ে পথ চলছে। সেই সর্বপ্রথম সাঈবা প্রাণী ছেড়ে দেয়ার রেওয়াজ চালু করে।” ইমাম মুসলিম (র)-ও ভিন্ন সূত্রে এটি উদ্ধৃত করেছেন।
সর্বপ্রথম ইমাম আহমদের এ সংক্রান্ত বর্ণনায় অতিরিক্ত আছে বাহীরা প্রাণী রেওয়াজও সেই চালু করেছে।
উপরোক্ত বর্ণনাসমূহে উল্লিখিত “খুযাই” শব্দ দ্বারা বুঝা যায় যে, আমর ইবন আমির খুযাআ গোত্রের আদি ব্যক্তি নয় বরং সেও ঐ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সে বর্ণনায় তাকে আবু খুযাআ বলা হয়েছে সেটি বর্ণনাকারীর ভ্রমপ্রমাদ হতে পারে যে, তিনি আখু খুযাআ বলতে গিয়ে আবু খুযাআ বলে ফেলেছেন। অথবা এমন ও হতে পারে যে, সে মূলত খুযাআ গোত্রের একজন ছিল এবং তার উপনাম ছিল আবু খুযাআ। এবং তাকে খুযাআ গোত্রের মূল ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া ঐ বর্ণনায় উদ্দিষ্ট ছিল না। আল্লাহই ভাল জানেন।
মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন, মুহাম্মদ ইবন ইবরাহীম হযরত আবু হুরায়রা (রা) সূত্রে বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেছি তিনি আকছাম ইবন জাওন খুবাইকে উদ্দেশ্য করে বলছিলেন, “হে আকছাম! আমি আমর ইবন লুহাই ইবন কামআ ইবন খিনদাককে দেখেছি জাহান্নামে সে তার নাড়িভুড়ি হেঁচড়িয়ে চলছে। তার সাথে তোমার যে সদৃশ্য এবং তোমার সাথে তার সে সাদৃশ্য এমন আমি অন্য কাউকে দেখিনি।’ তখন আকছাম বলল, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ (সা)! তার সাথে আমার যে সাদৃশ্য তাতে আমার কি কোন ক্ষতি হবে?’ রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, ‘না, কোন ক্ষতি হবে না। কারণ তুমি ঈমানদার আর সে কাফির। সেই সর্বপ্রথম ইসমাঈল (আ)-এর ধর্মের বিকৃতি সাধন করেছে, মূর্তি প্রতিমা স্থাপন করেছে, বাহীরা সাইবা, ওসীলা প্রাণী ‘হামী’ প্রাণীকে দেবতার জন্যে সংরক্ষিত রাখার রেওয়াজ চালু করেছে।’
অবশ্য বিশুদ্ধ কিতাবসমূহে এরূপে বর্ণনাটি নেই; ববং ইবন জারীর (র) আবু হুরায়রা (রা)-এর সনদে এরূপ হাদীস উদ্ধৃত করেছেন।
বুখারী তাবারানী (র) ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সা) থেকে প্রায় একই মর্মের হাদীস উদ্ধৃত করেছেন।
বস্তুত আমর ইবন লুহাই আরবদের জন্যে ধর্মের মধ্যে কতক নতুন বিষয়ের প্রচলন ঘটিয়েছে যা দ্বারা সে দীন-ই ইবরাহীমকে বিকৃত করে দিয়েছে। এসব বিষয়ে আরবগণ তার অনুসরণ করেছে। ফলে তারা ন্যক্কারজনক জঘন্যভাবে পথভ্রষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা কুরআন করীমের একাধিক আয়াতে এর নিন্দা করেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ
—আমি ওদেরকে যে রিযক দান করি তারা তার একাংশ নির্ধারিত করে তাদের জন্যে যাদের সম্বন্ধে ওরা কিছুই জানে না। (১৬ নাহলঃ ৫৬)
আল্লাহ যে শস্য ও গবাদিপশু সৃষ্টি করেছেন তা থেকে তারা আল্লাহর জন্যে এক অংশ নির্ধারিত করে এবং নিজেদের ধারণা অনুযায়ী বলে, “এটি আল্লাহর জন্যে এবং এটি আমাদের দেবতাদের জন্যে যা তাদের দেবতাদের অংশ তা আল্লাহর কাছে পৌঁছয় না এবং যা আল্লাহর অংশ তা তাদের দেবতার কাছে পৌঁছায় তারা যা মীমংসা করে তা নিকৃষ্ট।
এভাবে তাদের দেবতারা বহু মুশরিকের দৃষ্টিতে সন্তান হত্যাকে শোভন করেছে তাদের ধ্বংস সাধনের জন্যে এবং তাদের ধর্ম সম্বন্ধে তাদের বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্যে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তারা তা করত না। সুতরাং তাদেরকে তাদের মিথ্যা নিয়ে থাকতে দাও। (৬ আনআমঃ ১৩৬-১৩৭)।
আল্লাহ তা’আলার ঘোষণাঃ
“তারা তাদের ধারণা অনুসারে বলে, এসব গবাদিপশু ও শস্য ক্ষেত্র নিষিদ্ধ। আমরা যাকে ইচ্ছা করি সে ব্যতীত কেউ এসব আহার করতে পারবে না এবং কতক গবাদি পশুর পৃষ্ঠে আরোহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং কতক পশু জবাই করার সময় তারা আল্লাহর নাম নেয় না। এ সকলই তারা আল্লাহ সমন্ধে মিথ্যা রচনার উদ্দেশ্যে বলে, তাদের এই মিথ্যা রচনার প্রতিফল তিনি অবশ্যই তাদেরকে দিবেন। (৬ আন’আমঃ ১৩৮)
“তারা আরও বলে, এ সব গবাদি পশুর গর্ভে যা আছে তা আমাদের পুরুষদের জন্যে নির্দিষ্ট এবং এটি আমাদের স্ত্রীদের জন্যে অবৈধ আর সেটি যদি মৃত হয়, তবে নারী-পুরুষ সকলে সেটিতে অংশীদার। তাদের এরূপ বলার প্রতিফল তিনি তাদেরকে দেবে। তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। যারা নির্বুদ্ধিতার দরুন ও অজ্ঞানতাবশত নিজেদের সন্তানদের হত্যা করে এবং আল্লাহ প্রদত্ত জীবিকাকে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করার উদ্দেশ্য নিষিদ্ধ গণ্য করে তারা তো ক্ষগ্রিস্ত হয়েছে। তারা অবশ্যই বিপথগামী হয়েছে এবং তারা সৎপথ প্রাপ্ত ছিল না। (৬ আন আমঃ ১৩৮-৩৯)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/489/70
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।