hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

১৮
হযরত উযায়র (আ)-এর বর্ণনা
ইবন আসাকির হযরত উযায়র (আ)-এর পূর্ব পুরুষদের বংশলতিকা নিম্নরূপ বর্ণনা করেছেনঃ উযায়র ইবন জারওয়া (ভিন্নমতে সুরীক) ইবন আদিয়া ইবন আইয়ূব ইবন দারযিনা ইবন আরী ইবন তাকী ইবন উসব ইবন ফিনহাস ইবনুল আযির ইবন হারূন ইবন ইমরান। কারও কারও বর্ণনায় উযায়র (আ)-এর পিতার নাম বলা হয়েছে সারুখা। কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে উযায়র (আ)-এর কবর দামিশকে অবস্থিত। ইবন আসাকির.... ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘আমার জানা নেই, ঝর্ণাটা কি বিক্রি হয়েছে না বিক্রি হয়নি, আর উযায়র কি নবী ছিলেন কি নবী ছিলেন না।.....’ আবু হুরায়রা (রা) থেকেও এরূপ বর্ণিত হয়েছে। ইসহাক ইবন বিশর..... ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বুখত নসর যাদেরকে বন্দী করে নিয়েছিল, তাদের মধ্যে উযায়রও ছিলেন। তখন তিনি ছিলেন একজন কিশোর। যখন তিনি চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হন তখন আল্লাহ তাকে হিকমত (নবুওত) দান করেন। তাওরাত কিতাবে তার চাইতে ব্যুৎপত্তিসম্পন্ন পন্ডিত আর কেউ ছিল না। অন্যান্য নবীদের সাথে তাকেও নবী হিসেবে উল্লেখ করা হত। কিন্তু যখন তিনি আল্লাহর নিকট তার ক্ষমতা সম্পর্কে প্রশ্ন করেন তখন তাঁর নবুওত প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। কিন্তু এ বর্ণনাটি দুর্বল। সূত্র পরম্পরা বিচ্ছিন্ন ও অগ্রহণযোগ্য।

ইসহাক ইবন বিশর......আবদুল্লাহ ইবন সালাম (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, উযায়র হলেন আল্লাহর সেই বান্দা, যাঁকে তিনি একশ বছর মৃত অবস্থায় রেখে পুনরায় জীবিত করেছিলেন। ইসহাক ইবন বিশর বলেন, বিভিন্ন সূত্রে ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, উযায়র ছিলেন একজন জ্ঞানী ও পুণ্যবান লোক। একদা তিনি তাঁর ক্ষেত-খামার ও বাগ-বাগিচা দেখার জন্যে ঘর থেকে বের হন। সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনকালে দ্বিপ্রহরের সময় একটা বিধ্বস্ত বাড়িতে বিশ্রাম নেন। তার বাহন গাধার পিঠ থেকে নিচে অবতরণ করেন। তার সাথে একটি ঝুড়িতে ছিল ডুমুর এবং অন্য একটি ঝুড়িতে ছিল আঙ্গুর। খাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি একটি পেয়ালায় আঙ্গুর নিংড়িয়ে রস বের করেন এবং শুকনো রুটি তাতে ভিজিয়ে রাখেন। রুটি উক্ত রসে ভালরূপে ভিজে গেলে খাবেন, এই সময়ের মধ্যে বিশ্রামের উদ্দেশ্যে কিছু সময়ের জন্যে চিত হয়ে শুয়ে পড়েন এবং পা দু’খানা দেয়ালের সাথে লাগিয়ে দেন। এ অবস্থায় তিনি বিধ্বস্ত ঘরগুলোর প্রতি লক্ষ্য করলেন, যার অধিবাসীরাও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তিনি অনেকগুলো পুরাতন হাড় দেখতে পেয়ে মনে মনে ভাবলেন, “মৃত্যুর পর আল্লাহ কিরূপে এগুলোকে জীবিত করবেন?” আল্লাহ যে জীবিত করবেন, এতে তার আদৌ কোন সন্দেহ ছিল না। এ কথাটি তিনি কেবল অবাক বিস্ময়ের সাথে ভেবেছিলেন। অতঃপর আল্লাহ মৃত্যুর ফেরেশতাকে পাঠিয়ে তার রূহ কবজ করান এবং একশ’ বছর পর্যন্ত মৃত অবস্থায় রেখে দেন।

একশ’ বছর পূর্ণ হলে আল্লাহ উযায়রের নিকট ফেরেশতা পাঠিয়ে দেন। এ দীর্ঘ সময়ে বনী ইসরাঈলের মধ্যে অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়ে গিয়েছিল এবং তার ধর্মের মধ্যে অনেক বিদআতের প্রচলন করেছিল। যা হোক, ফেরেশতা এসে উযায়রের কালব ও চক্ষুদ্বয় জীবিত করলেন, যাতে কিভাবে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করবেন তা স্বচক্ষে দেখেন ও অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করেন। এরপর ফেরেশতা উযায়রের বিক্ষিপ্ত হাড়গুলো একত্রিত করে তাতে গোশত লাগালেন, চুল পশম যথাস্থানে সংযুক্ত করলেন এবং চামড়া দ্বারা সমস্ত শরীর আবৃত করলেন। সবশেষে তার মধ্যে রূহ প্রবেশ করালেন। তার দেহ এভাবে তৈরি হচ্ছে তা তিনি প্রত্যক্ষ করছিলেন এবং অন্তর দিয়ে আল্লাহর কুদরত উপলব্ধি করছিলেন। উযায়র উঠে বসলেন। ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি এ অবস্থায় কতদিন অবস্থান করলেন?’ তিনি বললেন, ‘এক দিন অথবা এক দিনেরও কিছু কম।’ এরূপ বলার কারণ হল, তিনি দ্বিপ্রহরে দিনের প্রথম ভাগে শুয়েছিলেন এবং সূর্যাস্তের পূর্বে উঠেছিলেন। তাই বললেন, দিনের কিছু অংশ, পূর্ণ দিন নয়। ফেরেশতা জানালেন, ‘না, বরং আপনি একশ’ বছর এভাবে অবস্থান করেছেন। আপনার খাদ্য সামগ্রী ও পানীয় বস্তুর প্রতি লক্ষ্য করুন।’ এখানে খাদ্য বলতে তার শুকনা রুটি এবং পানীয় বলতে পেয়ালার মধ্যে আঙ্গুর নিংড়ানো রস বুঝানো হয়েছে। দেখা গেল এ দুটির একটিও নষ্ট হয়নি। রুটি শুকনা আছে এবং রস অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে।

কুরআনে একেই বলা হয়েছে। ( لم يتسنه ) অর্থাৎ তা অবিকৃত রয়েছে। রুটি ও রসের মত তার আঙ্গুর এবং ডুমুরও টাটকা রয়েছে। এর কিছুই নষ্ট হয়নি। উযায়র ফেরেশতার মুখে একশ’ বছর অবস্থানের কথা শুনে এবং খাদ্যদ্রব্য অবিকৃত দেখে দ্বিধা-দ্বন্দের মধ্যে পড়ে যান, যেন ফেরেশতার কথা তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই ফেরেশতা তাকে বললেন, আপনি আমার কথায় সন্দেহ করছেন, তা হলে আপনার গাধাটির প্রতি লক্ষ্য করুন। উযায়র লক্ষ্য করে দেখলেন যে, তার গাধাটি মরে পচে গলে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। হাড়গুলো পুরাতন হয়ে যত্রতত্র বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। অতঃপর ফেরেশতা হাড়গুলোকে আহ্বান করলেন। সঙ্গে সঙ্গে হাড়গুলো চতুর্দিক থেকে এসে একত্রিত হয়ে গেল এবং ফেরেশতা সেগুলো পরস্পরের সাথে সংযুক্ত করে দিলেন। উযায়র তা তাকিয়ে দেখছিলেন। তারপর ফেরেশতা উক্ত কংকালে রগ, শিরা-উপশিরা সংযোজন করেছেন। গোশত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং চামড়া ও পশম দ্বারা তা আবৃত করেন। সবশেষে তার মধ্যে রূহ প্রবেশ করান। ফলে গাধাটি মাথা ও কান খাড়া করে দাঁড়াল এবং কিয়ামত আরম্ভ হয়ে গিয়েছে ভেবে চীৎকার করতে লাগল।

আল্লাহর বাণীঃ

( وَٱنظُرۡ إِلَىٰ حِمَارِكَ وَلِنَجۡعَلَكَ ءَایَة لِّلنَّاسِۖ وَٱنظُرۡ إِلَى ٱلۡعِظَامِ كَیۡفَ نُنشِزُهَا ثُمَّ نَكۡسُوهَا لَحۡم اۚ ࣱ)

[Surah Al-Baqarah 259]

—এবং তোমার গাধাটির প্রতি লক্ষ্য কর; কারণ তোমাকে মানব জাতির জন্যে নিদর্শনস্বরূপ করব। আর অস্থিগুলোর প্রতি লক্ষ্য কর, কিভাবে সেগুলোকে সংযোজিত করি এবং গোশত দ্বারা ঢেকে দেই। (২ঃ ২৫৯)।

অর্থাৎ তোমার গাধার বিক্ষিপ্ত হাড়গুলোর প্রতি লক্ষ্য কর। কিভাবে সেগুলোকে গ্রন্থিতে গ্রন্থিতে সংযোজন করা হয়। যখন গোশতবিহীন হাড়ের কংকাল তৈরি হল তখন বলা হল, এবার লক্ষ্য কর, কিভাবে আমি এ কংকালকে গোশত দ্বারা আচ্ছাদিত করি। যখন তার নিকট এ বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে গেল তখন তিনি বলে উঠলেন, আমি জানি যে, আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। মৃতকে জীবিত করাসহ যে কোন কাজ করতে তিনি সম্পূর্ণ সক্ষম।

অতঃপর উযায়র (আ) উক্ত গাধার পিঠে আরোহণ করে নিজ এলাকায় চলে যান। কিন্তু সেখানে কোন লোকই তিনি চিনতে পারছেন না; আর তাকেও দেখে কেউ চিনতে পারছে না। নিজের বাড়ি-ঘরও তিনি সঠিকভাবে চিনে উঠতে পারছিলেন না। অবশেষে ধারণার বশে নিজের মনে করে এক বাড়িতে উঠলেন। সেখানে অন্ধ ও পঙ্গু এক বৃদ্ধাকে পেলেন। তার বয়স ছিল একশ বিশ বছর। এই বৃদ্ধা ছিল উযায়র পরিবারের দাসী। একশ’ বছর পূর্বে তিনি যখন বাড়ি থেকে বের হয়ে যান, তখন এই বৃদ্ধার বয়স ছিল বিশ বছর এবং উযায়রকে সে চিনত। বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হলে সে অন্ধ ও পঙ্গু হয়ে যায়। উযায়র জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে বৃদ্ধা! এটা কি উযায়রের বাড়ি?’ বৃদ্ধা বলল, ‘হ্যাঁ, এটা উযায়রের বাড়ি।’ বৃদ্ধা মহিলাটি কেঁদে ফেলল এবং বলল, ‘এতগুলো বছর কেটে গেল, কেউ তার নামটি উচ্চারণও করে না, সবাই তাকে ভুলে গিয়েছে।’ উযায়র নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমিই সেই উযায়র। আল্লাহ আমাকে একশ’ বছর মৃত অবস্থায় রেখে পুনরায় জীবিত করেছেন।’ বৃদ্ধা বলল, ‘কী আশ্চর্য! আমরাও তো তাকে একশ বছর পর্যন্ত পাচ্ছি না, সবাই তার নাম ভুলে গিয়েছে, কেউ তাকে স্মরণ করে না।’ তিনি বললেন, ‘আমিই সেই উযায়র।’ বৃদ্ধা বলল, ‘আপনি যদি সত্যিই উযায়র হন, তা হলে উযায়রের দোয়া আল্লাহ কবুল করতেন। কোন রোগী বা বিপদগ্রস্তের জন্যে দোয়া করলে আল্লাহ তাকে নিরাময় করতেন এবং বিপদ থেকে মুক্তি দিতেন। সুতরাং আপনি আমার জন্যে দোয়া করুন, আল্লাহ আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলে আপনাকে দেখব এবং আপনি উযায়র হলে আমি চিনব।’ তখন উযায়র দোয়া করলেন এবং বৃদ্ধার চোখে হাত বুলিয়ে দিলেন। এতে তার অন্ধত্ব দূর হয়ে গেল।

তারপর তিনি বৃদ্ধার হাত ধরে বললেন, ‘আল্লাহর হুকুমে তুমি উঠে দাঁড়াও।’ সাথে সাথে তার পঙ্গুত্ব বিদূরিত হল, সে লোকের মত উঠে দাঁড়ালো। মনে হল সে বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করেছে। তারপর উযায়রের দিকে তাকিয়ে দেখে বলে উঠল, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনিই উযায়র।’ এরপর ঐ বৃদ্ধা বনী ইসরাঈলের মহল্লায় চলে গেল। দেখল, তারা এক আসরে জমায়েত হয়েছে। সে আসরে উযায়রের এক বৃদ্ধ পুত্রও উপস্থিত ছিল, বয়স একশ আঠার বছর। শুধু তাই না, পুত্রদের পুত্ররাও তথায় উপস্থিত ছিল, তারাও আজ প্রৌঢ়। বৃদ্ধা মহিলা এক পার্শ্বে দাঁড়িয়ে মজলিসের লোকদেরকে ডেকে বলল, উযায়র তোমাদের মাঝে আবার ফিরে এসেছেন। কিন্তু বৃদ্ধার এ কথা তারা হেসে উড়িয়ে দিল। তারা বলল, ‘তুমি মিথ্যুক।’ বৃদ্ধা নিজের পরিচয় দিয়ে বলল, ‘আমি অমুক, তোমাদের বাড়ির দাসী। উযায়র এসে আমার জন্যে আল্লাহর নিকট দোয়া করেছেন। তিনি আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন এবং পঙ্গু পা সুস্থ করে দিয়েছেন। উযায়র বলেছেন, আল্লাহ তাকে একশ’ বছর মৃত অবস্থায় রেখে আবার জীবিত করে দিয়েছেন।’ এ কথা শোনার পর লোকজন উঠে উযায়রের বাড়িতে গেল এবং তাকে ভাল করে দেখল। উযায়রের বৃদ্ধ পুত্র বলল, ‘আমার পিতার দুই কাঁধের মাঝে একটি কাল তিল ছিল।’ সুতরাং সে কাধের কাপড় উঠিয়ে তিল দেখে তাকে চিনতে পারল এবং বলল, ‘ইনিই আমার পিতা উযায়র।’ তখন বনী ইসরাঈলের লোকজন উযায়রকে বলল, ‘আমরা শুনেছি আপনি ব্যতীত অন্য কোন লোকের তাওরাত কিতাব মুখস্থ ছিল না। এ দিকে বুখত নসর এসে লিখিত তাওরাতের সমস্ত কপি আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছে। একটি অংশও অবশিষ্ট নেই। সুতরাং আপনি আমাদের জন্যে একখানা তাওরাত লিখে দিন। বুখত নসরের আক্রমণকালে উযায়রের পিতা সারূখা তাওরাতের একটি কপি মাটির নিচে পুঁতে রেখেছিলেন। কিন্তু সেই স্থানটি কোথায় উযায়র ব্যতীত আর কেউ তা জানত না। সুতরাং তিনি উপস্থিত লোকদেরকে সাথে নিয়ে সেই স্থানে গেলেন এবং মাটি খুঁড়ে তাওরাতের কপি বের করলেন। কিন্তু এতদিনে তাওরাতের পাতাগুলো নষ্ট হয়ে সমস্ত লেখা মুছে গিয়েছে। এরপর তিনি একটি বৃক্ষের নিচে গিয়ে বসলেন, বনী ইসরাঈলের লোকজনও তার পাশে গিয়ে ঘিরে বসল। কিছুক্ষণের মধ্যে আকাশ থেকে দু’টি নক্ষত্র এসে তার পেটের মধ্যে প্রবেশ করনঃ এতে গোটা তাওরাত কিতাব তাঁর স্মৃতিতে ভেসে উঠলো। তখন বনী ইসরাঈলের জন্যে তিনি নতুনভাবে তাওরাত লিখে দিলেন। এ সবের জন্যে অর্থাৎ নক্ষত্রদ্বয়ের অবতরণ ও কার্যক্রম, তাওরাত কিতাব নতুনভাবে লিখন ও বনী ইসরাঈলের নেতৃত্ব গ্রহণের কারণে ইহুদীগণ উযায়রকে আল্লাহর পুত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে। উযায়র হিযকীল নবীর সাওয়াদ এলাকায় অবস্থিত আশ্রমে বসে তাওরাত কিতাবের পুনর্লিখন কাজসম্পন্ন করেছিলেন। যে নগরীতে তিনি ইনতিকাল করেছিলেন তার নাম সাইরাবায ( سايراباذ )। ইবন আব্বাস (রা) বলেন, এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণীঃ

وَلِنَجۡعَلَكَ ءَایَة لِّلنَّاسِۖ

(তোমাকে আমি মানব জাতির জন্যে নিদর্শন বানাবার উদ্দেশ্যে এরূপ করেছি) মানব জাতি বলতে এখানে বনী ইসরাঈলকে বুঝানো হয়েছে। কেননা উযায়র তাঁর পুত্রদের মাঝে অবস্থান করছিলেন। অথচ পুত্রগণ সবাই ছিল বৃদ্ধ, আর তিনি অবশ্য যুবক। এর কারণ, যখন তার মৃত্যু হয় তখন বয়স ছিল চল্লিশ বছর। একশ’ বছর পর আল্লাহ যখন তাঁকে জীবিত করলেন তখন (প্রথম) মত্যকালের যৌবন অবস্থার উপরেই জীবিত করেছিলেন। ইবন আব্বাস (রা) বলেছেন, বুখত নসরের ঘটনার পরে উযায়র পুনর্জীবিত হয়েছিলেন হাসানও এ একই মত প্রকাশ করেছেন। আবু হাতিম সিজিসতানী ইবন আব্বাসের বক্তব্যকে কবিতা আকারে নিম্নলিখিতভাবে রূপ দিয়েছেন।

و اسود رأس شاب من قبله ابنه - ومن قبله ابن ابنه فهو اكبر

يرى ابنه شيخا يدب على عصا - ولحيته سوداء والرأس اشفر

وما لابنه حبل فلافضل قوة - يقوم كما يمئس الصبي فيعئر

يعد ابنه في الناس تسعين حجه - وعشرين لا يجرى ولا يتبختر

و عمرابيه ادبعون امرها ولان ابنه تسعون في الناس عبر

فما هو في المعقول ان کنت داري وان كنت لا تدري فبالجهل تعذر

অর্থঃ তার (উযায়রের) মাথার চুল কালই আছে, কিন্তু এর পূর্বেই তার পুত্র ও পৌত্রের চুল পেকে সাদা হয়ে গিয়েছে। অথচ বড় তো তিনিই।

তাঁর পুত্রকে দেখা যায় বৃদ্ধ–লাঠির উপর ভর দিয়ে চলাফেরা করে; অথচ পিতার দাড়ি এখনও রয়েছে কাল এবং মাথার চুল লাল-খয়েরি।

পুত্রের দৈহিক শক্তি-সামর্থ ক্ষীণ হয়ে গিয়েছে। ফলে সে যখন দাঁড়াতে ও হাঁটতে চায় তখন ছোট শিশুর ন্যায় আছাড় খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়।

সমাজের লোক জানে, তার (উযায়রের) পুত্র নব্বই বছর পর্যন্ত তাদের মাঝে চলাফেরা করেছে। কিন্তু বিশ বছর হল ভালরূপে চলতে ফিরতে পারছে না।

পিতার বয়স চল্লিশ বছর, আর পুত্রের বয়স নব্বই বছর অতিক্রম করেছে। এ এমন একটি বিষয় যা তোমরা বুদ্ধি থাকলে তুমি অনুধাবন করতে পারবে। আর যদি এর মর্ম অনুধাবন করতে ব্যর্থ হও তা হলে তোমার অজ্ঞতা ক্ষমার্হ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন