hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৬৬
ইয়ামানে পারসিকদের শেষ পরিণতি
ইবন হিশাম বলেন, ওয়াহরিযের মৃত্যুর পর পারস্য সম্রাট কিসরা ওয়াহরিযের পুত্র মারযুবানকে ইয়ামানের শাসনকর্তা নিযুক্ত করে। মারযুবানের মৃত্যুর পর তদীয়পুত্র তাইনুজানকে তারও মৃত্যুর পর তার পুত্রকে শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে তাইনুজানের পুত্রকে বরখাস্ত করে বাযানকে ইয়ামানের শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হয়। বাযানের শাসন আমলেই রাসূলুল্লাহ্ (সা) নবুওত প্রাপ্ত হন।

ইবন হিশাম বলেন, আমার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, পারস্য সম্রাট কিসরা ইয়ামানের শাসনকর্তা বাযানের নিকট এই মর্মে পত্র লিখেছিল, আমার নিকট সংবাদ এসেছে, কুরায়শ বংশের জনৈক ব্যক্তি মক্কা নগরীতে আত্মপ্রকাশ করেছে এবং সে নিজেকে নবী বলে দাবী করছে। তুমি তার কাছে যাও। তাকে বল সে যেন ঐ দাবী ত্যাগ করে। সে যদি তা ত্যাগ করে তবে তো ভাল; নতুবা তুমি তার ছিন্নমস্তক আমার নিকট পাঠাবে। বাযান তখন সম্রাটের পত্রটি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট প্রেরণ করে। উত্তরে রাসূলুল্লাহ্ (সা) লিখেন, ‘আল্লাহ্ তা’আলা আমার সাথে অঙ্গীকার করেছেন যে, অমুক মাসের অমুক তারিখে কিসরা নিহত হবে।’ রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর উত্তর পেয়ে শাসনকর্তা বাযান উল্লেখিত দিনের জন্যে অপেক্ষা করতে থাকেন। তিনি বলেন উক্ত ব্যক্তি যদি সত্যই নবী হয়ে থাকেন তিনি যা বলেছেন অচিরেই ঘটবে। রাসূলুল্লাহ (সা) কিসরার নিহত হওয়ার যে তারিখ উল্লেখ করেছিলেন ঠিক সে তারিখেই আল্লাহ্ তা’আলা তাকে হত্যা করান।

ইবন হিশাম বলেন, কিসরা নিহত হয় তার পুত্র শের ওয়েহের এর হাতে। কোন কোন ঐতিহাসিক বলেন, তার সকল পুত্রই তার হত্যায় জড়িত ছিল। এই কিসরা হল পারভেয ইবন হরমুখ ইবন নওশেরাওয়া ইবন কুবায। সে-ই রোম সম্রাটকে পরাস্ত করেছিল ( الم غلبت الروم ) “আলিফ, লাম, মীম, রোমকগণ পরাজিত হয়েছে নিকটবর্তী অঞ্চলে” আয়াতে সেই রোম বিজয়ের উল্লেখ রয়েছে। পরবর্তীতে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। সুহাইলী বলেন, নবম হিজরীর জুমাদাল উলা মাসের ১১ তারিখ বুধবারে সে নিহত হয়। কথিত আছে যে, তাকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে তার প্রতি রাসূলুল্লাহ্ (সা) যে পত্র পাঠিয়েছিলেন সেটি পেয়ে সে ভীষণ ক্রুদ্ধ হয় এবং পত্রটি ছিড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে। অতঃপর তার বক্তব্য লিখে ইয়ামানের শাসনকর্তা বাযানের নিকট পত্র পাঠায়।

কোন কোন বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বাযানের প্রতিনিধিকে বলেছিলেন, ‘আমার প্রতিপালক তো এ রাতে তোমার রাজাকে হত্যা করেছেন।’ পরে দেখা গেল, রাসূলুল্লাহ (সা) যা বলেছেন তা-ই হয়েছে। ঠিক ঐ রাতেই সে নিহত হয়েছে। প্রথম দিকে ন্যায়পরায়ণ থাকলেও পরবর্তীতে সে অত্যাচারী হয়ে উঠে। ফলে তার ছেলেরা তাকে সিংহাসনচ্যুত করে এবং হত্যা করে। তারা তার পুত্র শেরওয়েহকে সিংহাসনে বসায়। পিতা নিহত হওয়ার ছয়মাস বা তারও কম সময়ের মধ্যে শেরওয়ের মৃত্যু হয়। এ প্রসংগে কালিদ ইবন হক শায়বাণী বলেনঃ

وكسرى اذ تقسمه بنوه -باسياف كما أقتسم اللحم

—আর কিসরার ব্যাপারটি তার পুত্রগণ তাকে তলোয়ার দ্বারা টুকরো টুকরো করেছে যেমন টুকরো করা হয় গোশত।

تمخضت ألمنون له بيوم - الأ ولكل حاملة تمام

—একদিন তার মৃত্যু এলো এবং প্রত্যেক জীবেরই মৃত্যু আছে।

যুহরী (র) বলেন, এ সংবাদ অবগত হয়ে বাযান নিজের ইসলাম গ্রহণ এবং তার সাথী পারসিকদের ইসলাম গ্রহণের বার্তা সহ রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট প্রতিনিধি প্রেরণ করেন। তখন প্রতিনিধিগণ বলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ (সা)! আমরা কাদের সাথে যুক্ত হবো?’ রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, ‘তোমরা আমাদের পরিবারের সাথে যুক্ত হবে।’ এ প্রসংগে মুহরী (র) বলেন, যে দৃষ্টিকোণ থেকে রাসূলুল্লাহ্ (সা) হযরত সালমান (রা) সম্পর্কে বলেছিলেন ( سلمان منا اهل البيت )- “সালমান রাসূল পরিবারের অন্তর্ভুক্ত।” আমি বলি আলোচ্য বর্ণনা থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, বাযানের ইসলাম গ্রহণের সম্পর্কিত ঘটনা সংঘটিত হয় রাসূলুল্লাহ (সা)-এর মদীনায় হিজরতের পর। এ জন্যে ইয়ামানের লোকজনকে ভাল কাজের শিক্ষা দেয়া এবং আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়ার জন্যে তিনি প্রশাসকগণকে ইয়ামান প্রেরণ করেছিলেন। সর্বপ্রথম প্রেরণ করেন খালিদ ইবন ওলীদকে এবং আলী ইবন আবী তালিব (রা)-কে। তারপর প্রেরণ করেন আবু মুসা আশআরী ও মু’আয ইবন জাবাল (রা)-কে। এ সময়ে ইয়ামানবাসীরা ইসলামের ছায়াতলে আসে। বাযানের মৃত্যু হলে তাঁর পুত্র শাহর ইবন বাযান তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। ভণ্ড নবী আসওয়াদ আনাসী যখন নবুওত দাবী করে তখন সে শাহর ইবন বাযানকে হত্যা করে এবং তার স্ত্রীকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সে ইয়ামানে নিযুক্ত রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর প্রতিনিধিকেও সেখান থেকে বহিষ্কার করে। এ বিষয়ে পরে আলোচনা আসবে। আসওয়াদ আনাসী নিহত হওয়ার পর সেখানে পুনরায় মুসলিম আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ইবন হিশাম বলেন, জ্যোতিষী সাতীহ তার বক্তব্য “পবিত্র নবী, ঊর্ধ্ব জগত থেকে তাঁর ওহী আসবে” দ্বারা এদিকে ইঙ্গিত করেছিল এবং জ্যোতিষী শিক তার বক্তব্য “এবং ঐ রাজত্বে ছেদ পড়বে একজন রাসূলে দ্বারা। তিনি সত্য ও ন্যায় সহকারে আসবেন, তিনি আসবেন দীনদার ও মর্যাদাবান লোকদের মধ্যে অতঃপর কিয়ামত দিবস পর্যন্ত রাজত্ব তার সম্প্রদায়ের মধ্যে থাকবে” দ্বারা এদিকেই ইঙ্গিত করেছে।

ইবন ইসহাক বলেন, ইয়ামান বাসীরা দাবী করে যে, সেখানকার একটি পাথরে যবুর কিতাবের উক্তি লিখিত ছিল। এটি প্রাচীন যুগের লিখিত হয়েছিল। তাতে লেখা ছিল রাজত্বের মালিক হবে শ্রেষ্ঠ হিময়ারীগণ। রাজত্বের মালিক হবে মন্দ লোক হাবশীগণ, রাজত্বের মালিক হবে স্বাধীন পারসিকগণ। রাজত্বের মালিক হবে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় কুরায়শগণ।

একজন কবি এই বিষয়টিকে কবিতায় সন্নিবেশিত করেছেন। মাসউদী তা উল্লেখ করেছেনঃ

حین شدت ذمار قيل لمن أتت - فقالت لحمير الأخيار

—যুদ্ধের প্রস্তুতি যখন সম্পন্ন হল তখন বলা হল তুমি কার পক্ষে? তখন যে বলল শ্রেষ্ট সম্প্রদায় হিমইয়ারীদের পক্ষে।

ثم سئلت من بعد ذلك لمن أتت - فقالت أنا للحبش أخبث الأشرار

তারপর তাকে জিজ্ঞেস করা হল, এবার তুমি কার? তখন সে বলল, মন্দ ব্যক্তি হাবশীদের পক্ষে

ثم قالوا من بعد ذلك لمن أتت - فقالت لفارس الأحرار

—তারপর তারা বলল, এবার তুমি কার পক্ষে? সে বলল স্বাধীন চেতা পারসিকদের পক্ষে।

ثم قالوا من بعد ذلك لمن أتت - فقالت الى قريش التجار

—তারপর বলা হল এবার তুমি কার পক্ষে? সে বলল, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় কুরায়শদের পক্ষে।

কথিত আছে, যে, মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক এখানে যা উল্লেখ করেছেন তা হযরত হুদ (আ)-এর কবরের পাশে লিখিত পাওয়া গিয়েছিল। বায়ু প্রবাহের ফলে ইয়ামানে অবস্থিত তাঁর কবরের মাটি সরে গেলে এটি পাওয়া যায়। রাণী বিলকীসের শাসনামলের অল্প কিছুদিন পূর্বে আমর যিলি ইআ’বের ভাই মালিক যীল মানারের শাসনামলে এ ঘটনা ঘটে। কেউ কেউ বলেন, এটি হযরত হূদ (আ)-এর কবরের উপরের লেখা ছিল এটি তারই বাণী। শেষোক্ত মন্তব্য করেছেন আল্লামা সুহায়লী (র)। আল্লাহই ভাল জানেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন