মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সায়ফ ইবনে যী-ইয়াযান-এর বর্ণনা এবং নবী করীম (সা) সম্পর্কে তাঁর সুসংবাদ প্রদান
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/489/92
হাফিজ আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাফর ইবনে সাহল খারাইতি তাঁর ‘হাওয়াতিফুল জান’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, আলী ইবনে হারব আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন, সায়ফ ইবনে যী-ইয়াযান এক সময় হাবশার (ইথিওপিয়া)-এর শাসন ক্ষমতা লাভ করেন। ইবনে মুনযিরের মতে সায়ফ ইবনে যী-ইয়াযানের নাম নুমান ইব্ন কায়স। এটি ছিল রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর জন্মের দু’বছর পরের ঘটনা।
এ উপলক্ষে আরবের প্রতিনিধি ও কবিগণ তাঁকে অভিনন্দন জানাতে এবং তাঁর জনকল্যাণমূলক কর্মতৎপরতায় প্রশংসা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে তাঁর নিকট হাজির হন। কুরায়শ বংশীয় প্রতিনিধি দলে অন্যান্য নেতার মধ্যে আব্দুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম, উমাইয়া ইবনে আবদ শামস আবু আব্দুল্লাহ, আব্দুল্লাহ্ ইব্ন জাদ’আন এবং খুওয়াইলিদ ইবনে আসাদ প্রমুখও ছিলেন। তারা সানআয় গিয়ে সায়ফ-এর সাথে সাক্ষাত করেন। তখন তিনি গামাদান পর্বতের চূড়ায় নির্মিত রাজপ্রাসাদে অবস্থান করছিলেন। কবি উমাইয়া ইব্ন আবী সাত তাঁর নিম্নোক্ত কবিতায় গামাদান পর্বতের কথা উল্লেখ করেছেন।
واشرب هنيئا عليك ألتاج مرتفعا - في رأس غمدان دارا منك محلا لا
“আপনি তৃপ্তি সহকারে পান করুন, আপনার মাথায় আছে সুউচ্চ মুকুট। আপানার অবস্থান হলো গামাদান পর্বতের চূড়ায় অবস্থিত রাজপ্রাসাদে।”
রাজপ্রহরী রাজার নিকট গিয়ে আগন্তুকদের অবস্থান সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করলো। রাজা তাদেরকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। তার নিকটবর্তী হয়ে আব্দুল মুত্তালিব কথা বলার অনুমতি চাইলেন। রাজা বললেন, ‘আপনি যদি আমার সম্মুখে দাঁড়িয়ে কথা বলার যোগ্যতা রাখেন তবে আপনাকে অনুমতি দিলাম। আপনি কথা বলুন।’
আব্দুল মুত্তালিব বলতে শুরু করলেন, ‘হে রাজন! আল্লাহ তা’আলা আপনাকে এমন একটি উচ্চ স্থানে বসিয়েছেন যা অর্জন করা দুষ্কর, যা সুরক্ষিত এবং সুমহান। তিনি আপনাকে এমন বংশের অন্তর্ভুক্ত করেছেন যার উৎস পবিত্র, মূল সুমিষ্ট, শিকড় সুদৃঢ় এবং যার শাখা- প্রশাখা বিস্তৃত হয়েছে সর্বাধিক মর্যাদাবান স্থানে ও পাত্রে।
হে রাজন! আপনি আরবের রাজা এবং তাদের বসন্ত কাল স্বরূপ যার দ্বারা জনপদগুলো সবুজ-শ্যামল হয়েছে। আপনি আরবদের শীর্ষতম ব্যক্তি, আপনার প্রতি মাথা নত করে আরবের শহর-নগরগুলো। আপনি তাদের স্তম্ভ যার উপর তারা নির্ভর করে। আপনি তাদের আশ্রয়স্থল যেখানে এসে লোকজন আশ্রয় লাভ করে। আপনার পূর্বপুরুষগণ ছিলেন অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত। আমাদের জন্যে আপনি তাদের উত্তম উত্তরাধিকারী। তারা যার পূর্বপুরুষ তিনি কখনো নিষ্প্রভ হতে পারেন না এবং আপনি যাদের উত্তর পুরুষ তারা কখনো ধ্বংস হতে পারেন না।
মহারাজ! আমরা মহান আল্লাহর হারাম শরীফের অধিবাসী এবং তাঁর পবিত্র ঘরের তত্ত্বাবধায়ক। আপনার যে বিপদ আমাদের বেদনাহত করে রেখেছিল বিপদ থেকে মুক্তি লাভের মহাউৎসবে আপনাকে অভিনন্দন জানানোর তাগিদে আমরা আপনার নিকট এসেছি। আমরা অভিবাদন জ্ঞাপনকারী দল। দীর্ঘদিন অবস্থান করে আপনার বোঝা হয়ে থাকার দল নই।’
রাজা বললেন, ‘হে সুবক্তা! আপনার পরিচয় কি?’ তিনি বললেন, ‘আমি হাশিমের পুত্র আব্দুল মুত্তালিব।’ রাজা বললেন, ‘আমাদের ভাগে?’ ‘হ্যাঁ,’ তিনি উত্তর দিলেন। রাজা বললেন, “নিকটে আসুন।” অতঃপর তিনি তাকে কাছে টেনে নিলেন। তাকে এবং তাঁর সাথীদেরকে সামনে নিয়ে তিনি বললেন, “মারহাবা! স্বাগতম”—আপনারা এসেছেন মিত্রদেশে, এসেছেন প্রচুর দানশীল রাজার নিকট, তিনি আপনাদেরকে প্রচুর পরিমাণে দান করবেন।
রাজা আপনাদের বক্তব্য শুনেছেন, আপনাদের আত্মীয়তার পরিচয় পেয়েছেন। তিনি আপনাদের পবিত্র উসিলাও গ্রহণ করেছেন। আপনাদের জন্যে সার্বক্ষণিক মেহমানদারীর ব্যবস্থা রয়েছে। যতদিন মন চায় আপনারা এখানে অবস্থান করুন। আপনাদের জন্যে আতিথ্য ও সম্মানের সুব্যবস্থা রয়েছে। বিদায়ক্ষণে আপনাদের জন্যে উপহারের ব্যবস্থা থাকবে।’ এরপর তাঁরা মেহমানখানা ও সম্মানিত অতিথিদের বিশ্রামাগারে গমন করেন। তারা একমাস সেখানে অবস্থান করেন।
ইতিমধ্যে তাঁরাও রাজার সাথে সাক্ষাত করেননি আর রাজাও তাদের বিদায়ের অনুমতি দেননি। একদিন তাদের কথা রাজার স্মরণ হলো। লোক মারফত তিনি আব্দুল মুত্তালিবকে ডেকে পাঠালেন। অতঃপর একান্ত সান্নিধ্যে এনে তাঁকে বললেন, ‘হে আব্দুল মুত্তালিব! আমার জানা কিছু গোপন তত্ত্ব আমি আপনাকে জানাব। আপনার স্থানে অন্য কেউ হলে কিন্তু তাকে আমি তা জানতাম না। আমি আপনাকে দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতার খনিরূপে দেখতে পাচ্ছি। তাই আপনার নিকট তা ব্যক্ত করছি। আল্লাহ্ তা’আলা যতদিন এ সংবাদ প্রকাশের অনুমতি না দিবেন ততদিন যেন এটি গোপন থাকে। আল্লাহ তা’আলা নিশ্চয়ই তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেন।
আমি আমার নিজের পছন্দের গোপন কিতাব ও লুক্কায়িত অভিজ্ঞতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ ও সুমহান বিষয় পেয়েছি যাতে সাধারণভাবে সকল মানুষের জন্যে এবং বিশেষভাবে আপনার সম্প্রদায় ও আপনার নিজের জন্যে মর্যাদার জীবন ও পরিপূর্ণ সম্মানের পূর্বাভাস রয়েছে।’ আব্দুল মুত্তালিব বললেন, ‘আপনার মত লোকেরাই চিরসুখী ও পুণ্যময় জীবনের অধিকারী হয়ে থাকেন। পশু সম্পদের মালিক মরুবাসী দলে দলে আপনার জন্যে কোরবানী হউক! বলুন তো ঐ বিষয়টি কি?’ রাজা বললেন, ‘তেহামা অঞ্চলে একটি শিশুর জন্ম হবে। তাঁর দু’ কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে মোহর অংকিত থাকবে। নেতৃত্ব তারই হবে। কিয়ামত পর্যন্ত তাঁরই বদৌলতে আপনাদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত থাকবে।’
আব্দুল মুত্তালিব বললেন, ‘আল্লাহ্ অনিষ্ট থেকে রক্ষা করুন। একটি প্রতিনিধিদল যত অধিক কল্যাণ নিয়ে দেশে ফিরে যায় তার চাইতে অধিক কল্যাণ নিয়ে আমরা স্বদেশে ফিরছি। মহারাজের পক্ষ থেকে অভয় পেলে আমি আমার সুসংবাদ বিষয়ে এমন আরও কিছু বিষয় জিজ্ঞেস করতাম যা দ্বারা আমার আনন্দ আরো বৃদ্ধি পেত।’ ইবনে যী-ইয়াযান বললেন, ‘এটিই তার আবির্ভাবের সময়। এমনও হতে পারে যে, ইতিমধ্যে তাঁর জন্ম হয়ে গেছে। তাঁর নাম মুহাম্মদ। তার পিতা-মাতা দু’জনেরই মৃত্যু হবে। দাদা ও চাচা তার লালন-পালন করবেন। আল্লাহ্ তাঁকে প্রকাশ্যে প্রেরণ করবেন। আমাদের মধ্য থেকে তাঁর সাহায্যকারী নির্ধারিত করবেন। এসব সাহায্যকারী দ্বারা তিনি তাঁর বন্ধুদেরকে বিজয় দিবেন এবং তাঁর শত্রুদেরকে লাঞ্ছিত করবেন। তাদের দ্বারা মানুষের সম্ভ্রম রক্ষা করবেন। তাদের মাধ্যমে সেরা ভূখণ্ডগুলো জয় করাবেন, মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ফেলবেন, পূজা-অর্চনার অগ্নিকুণ্ড নিভিয়ে দিবেন, দয়াময় আল্লাহর ইবাদত চালু হবে এবং শয়তান বিতাড়িত হবে। তাঁর বক্তব্য হবে সুস্পষ্ট। বিচার মীমাংসায় তিনি হবেন ন্যায়পরায়ণ। তিনি সৎকাজের আদেশ দিবেন এবং নিজে তা আমল করবেন। অসৎকাজে বারণ করবেন এবং নিজে তা বর্জন করবেন।’
আব্দুল মুত্তালিব বললেন, ‘মহারাজ! আপনি সৌভাগ্যবান হউন, আপনার উন্নতি হোক, আপনার রাজত্ব দীর্ঘস্থায়ী হোক এবং আপনি দীর্ঘজীবী হউন। আমি এটুকু বলার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি যে, মহারাজ কি আমাকে গোপনে আরো একটু বিস্তারিত জানাবেন? তিনি তো ইতিমধ্যে আমার নিকট অনেকটা পরিষ্কার করে দিয়েছেন।’
তখন ইবনে যী-ইয়াযান বললেন, ‘গিলাফ আচ্ছাদিত বায়তুল্লাহ শরীফের কসম, কাঁধের চিহ্ন দ্বারা এটা আমার কাছে নিশ্চিত যে, হে আব্দুল মুত্তালিব! আপনিই তার পিতামহ! তাতে এতটুকু মিথ্যা নেই।’ একথা শুনে আব্দুল মুত্তালিব সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন। রাজা বললেন, ‘মাথা তুলুন। আপনার হৃদয় প্রশান্তি লাভ করুক। আপনার মর্যাদা সুউচ্চ হোক! আমি যা বলেছি তা থেকে আপনি কি কিছুটা অনুমান করতে পেরেছেন?’ আব্দুল মুত্তালিব বললেন, ‘মহারাজ! আমার এক পুত্র ছিল। সে ছিল আমার পরম স্নেহের। নিজ বংশের ওহব তনয়া আমিনা নামের এক সম্ভ্রান্ত মহিলার সাথে আমি তার বিবাহ দিয়েছিলাম। তার গর্ভে জন্ম নেয় একপুত্র সন্তান। আমি তাঁর নাম রেখেছি মুহাম্মদ। সে মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় তাঁর পিতা মারা যায়। শৈশবে সে তার মাকে হারায়। আমি নিজে এবং তার চাচা দুজনে তাঁর লালন-পালনের ভার নিয়েছি।’
ইবনে যী-ইয়াযান বললেন, ‘আপনি যা বলেছেন তা যদি ঠিক হয়ে থাকে তবে আপনি আপনার ওই পৌত্রের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন এবং ইহুদীদের পক্ষ থেকে যাতে তার অনিষ্ট হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকবেন। কারণ ওরা তাঁর শত্রু। তবে তার কোন ক্ষতি করবে এমন সুযোগ আল্লাহ তাদেরকে দেবেন না। আমি আপনাকে যা বলেছি আপনার সাথীদের কাছ থেকে আপনি তা গোপন রাখবেন। কারণ আমি নিশ্চিত নই যে, নেতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা তাদের মধ্যে সৃষ্টি হবে না এবং নেতৃত্ব লাভের লোভে তারা আপনার পৌত্রকে বিপদে ফেলবে না। কিংবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ফাঁদ তৈরি করবে না। বস্তুত তারা বা তাদের বংশধরেরা এরূপ করবেই।
তাঁর নবুওত প্রাপ্তির পূর্বে আমার মৃত্যু হবে এটা যদি আমার জ্ঞাত না থাকতো আমি আমার অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনীসহ আমি তাঁর নিকট যেতাম এবং তাঁর রাজধানী ইয়াসরিবে উপস্থিত হতাম। পূর্বাভাস দানকারী গুপ্ত কিতাবে আমি পেয়েছি যে, ইয়াসরিবেই তাঁর রাজত্ব কায়েম হবে। আরবের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ তার অনুসণ করবেন। আয়ু পেলে তার অনুসরণে আমি আরবের সকল স্থানে গমন করতাম। কিন্তু আপনার সাথে যারা রয়েছেন তাঁদের মধ্যে কোন অপরাধ না থাকা সত্ত্বেও আমি এই দায়িত্ব শুধু আপনার উপরই অর্পণ করছি।’
অতঃপর তিনি প্রতিনিধিদলের সকলকে জনপ্রতি দশজন ক্রীতদাস, দশজন দাসী, একশ উট, একজোড়া চাদর, পাঁচ রতল [রতল বা রিতল ৪০ তোলা ওজনের সমপরিমাণ] স্বর্ণ, দশ রতল রৌপ্য এবং পূর্ণ এক রতল করে কস্তুরী উপহার প্রদানের নির্দেশ দিলেন। আবদুল মুত্তালিবের জন্যে তার দশগুণ উপহার প্রদানের নির্দেশ দিলেন। তিনি আবদুল মুত্তালিবকে বললেন, “এক বছর পর আপনি আবার আসবেন।” কিন্তু এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই ইব্ন যী-ইয়াযানের মৃত্যু হয়। আবদুল মুত্তালিব প্রায়ই বলতেন, “রাজার দেয়া রাজকীয় উপহারের কারণে তোমাদের কেউ আমাকে হিংসা করো না। কারণ তা একদিন শেষ হয়ে যাবে বরং তোমরা আমাকে ঈর্ষা করতে পার, তার সেই উপহারের জন্যে যা অবশিষ্ট থাকবে আমার জন্যে এবং আমার বংশধরদের জন্যে। আর তাহলো আমার বংশের সুনাম, মর্যাদা ও গৌরব।’ তাকে যদি জিজ্ঞেস করা হতো কখন আসবে এ মর্যাদা ও সম্মান তখন তিনি বলতেন, ‘অতি সত্বর জানতে পারবে। কিছুটা দেরিতে হলেও।’
এ প্রসংগে কবি উমাইয়া বলেনঃ
جلبنا النصح تحقبه المطايا – على اكوار أجمال ونوق
— আমরা উপদেশ সংগ্রহ করেছি, পালে পালে উট ও উষ্ট্রী চালিয়ে দূর দেশে ভ্রমণ করে এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।
مقلفة مراتعها تعالى – الى صنعاء من فج عميق
— উষ্ট্রীগুলোর চারণ ভূমি সজীব ঘাস লতায় পরিপূর্ণ। সেগুলো দূর দূরান্ত থেকে সানআ রাজ্যে আসে।
تؤم بنا ابن ذي يزن وتفری – بذات بطونها ذم الطريق
— এগুলো আমাদেরকে নিয়ে গিয়েছে ইবনে যী-ইয়াযানের নিকট, উদরস্থ পুষ্টিকর খাদ্য থেকে পাওয়া শক্তিবলে তারা পথের সকল বাধা অতিক্রম করেছে।
وترعى من مخائله بروقا – مواصلة الوميض الى بروق
— ইবনে যী-ইয়াযানের বদান্যতায় সেগুলো লেজ নেড়ে নেড়ে পরম আনন্দে বারূক ঘাস খাচ্ছিল। নিজেদের চোখ ধাঁধানো চমৎকারিত্ব ও চাকচিক্যের সাথে আরো সৌন্দর্য যোগ করছিল।
فلما وصلت صنعاء حلت – بدار الملك والحسب العريق
— সানআ পৌঁছে সেগুলো রাজপ্রাসাদে ও পরম মর্যাদার স্থানে অবতরণ করল।
হাফিজ আবু নুআয়ম ‘আদ দালাইল’ গ্রন্থে এরূপ ঘটনাই বিশদভাবে উদ্ধৃত করেছেন।
আবু বকর খারাইতী.... খলীফা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুহাম্মদ ইবনে উছমান ইবনে রবীআ ইবনে সাওআ ইবনে খাছআম ইবনে সা’দকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘আপনার পিতা আপনার নাম ‘মুহাম্মদ’ রেখেছিলেন কেন?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘আপনি আমাকে যে প্রশ্ন করেছেন আমি আমার পিতাকে সে প্রশ্ন করেছিলাম। তখন আমার পিতা উত্তরে বললেন, বনী তামীমের আমরা চারজন লোক এক সফরে বের হয়েছিলাম। সেই চারজন হলাম আমি উছমান ইবনে রবীআ, সুফয়ান ইবনে মুজাশ ইন দারিম, উসামা ইবনে মালিক ইবনে জুনদুব ইবনে আকীদ এবং ইয়াযিদ ইবনে রবীআ ইবনে কিনানা ইবনে হারদাস ইবনে মাযিন। আমরা যাচ্ছিলাম গাসসানের রাজা ইবনে জাফনার সাথে সাক্ষাত করা উদ্দেশ্যে। সিরিয়ায় পৌঁছে আমরা একটি জলাশয়ের নিকট যাত্রা বিরতি করি। জলাশয়টির আশেপাশে ছিল প্রচুর বৃক্ষরাজি, আমরা সেখানে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করছিলাম, জনৈক ধর্মযাজক আমাদের কথাবার্তা শুনে ফেলেন। তিনি আমাদের নিকট উপস্থিত হলেন এবং বললেন, ‘আপনাদের ভাষা তো এ দেশের ভাষা নয়।’ আমরা বললাম, ‘হ্যাঁ, আমরা মুদার গোত্রের লোক।’ তিনি বললেন, ‘কোন মুদার গোত্রের লোক?’ আমরা বললাম, ‘খানদাফের মুদার গোত্রের লোক।’ তখন তিনি বললেন, ‘অতিসত্বর প্রেরিত হবেন একজন নবী। তিনি হলেন সর্বশেষ নবী। আপনারা তাড়াতাড়ি তাঁর নিকট যাবেন এবং তাঁর থেকে আপনাদের যে কল্যাণ হাসিল করবার তা করবেন, তাহলে আপনারা সৎপথ পাবেন।’ আমরা বললাম, ‘তার নাম কি?’ তিনি বললেন, ‘তাঁর নাম মুহাম্মদ।’ আমার পিতা বললেন, অতঃপর আমরা ইবনে জাফনার সাথে সাক্ষাত শেষে দেশে ফিরে আসি। পরবর্তীতে আমাদের প্রত্যেকের ঘরে একটি করে পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। আমরা তাদের প্রত্যেকের নাম ‘মুহাম্মদ’ রাখি এই আশায় যে, নিজ পুত্রটিই যেন ঐ সুসংবাদ প্রাপ্ত নবী হন।’
হাফিজ আবু বকর খারাইতি.... জাবির ইবনে জিদান সূত্রে বলেছেন, আওস ইবনে হারিছা ইবন..... যখন মৃত্যুশয্যায় তখন তাঁর গাসসান সম্প্রদায়ের লোকজন তাঁর নিকট উপস্থিত হয়। তারা তাকে বলেছিল, ‘আপনি তো দেখতেই পাচ্ছেন যে, আল্লাহর ডাক আপনার প্রতি এসে পড়েছে। যৌবনে বিয়ে করার জন্যে আমরা আপনাকে বলেছিলাম, আপনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই যে আপনার ভাই খাযরাজ তাঁর পাঁচ-পাঁচটি পুত্র সন্তান রয়েছে। অথচ মালিক নামের একটি পুত্র ব্যতীত আপনার কোন সন্তান নেই।’ তিনি বললেন, ‘মালিকের মত পুত্র যে রেখে যাবে সে কখনো ধ্বংস হবে না। যে মহান সত্তা পাথরের সাথে চকমকির ঘর্ষণ থেকে আগুন বের করেন তিনি আমার পুত্র মালিককে বংশধর ও সাহসী উত্তরাধিকারী প্রদানে সক্ষম, সবাইকেই তো মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।’
এরপর তিনি তাঁর পুত্র মালিককে ডেকে বললেন, ‘হে বৎস! অপমান অপেক্ষা মৃত্যুই শ্রেয়, তিরস্কৃত হওয়ার চাইতে শাস্তি পাওয়াই উত্তম। অস্থিরতা অপেক্ষা দৃঢ়তা উত্তম, দারিদ্র্য অপেক্ষা কবর উত্তম। যারা সংখ্যায় কম হয় তারা লাঞ্ছিত হয়। যে বার বার আক্রমণ করে শেষ পর্যন্ত সে পালিয়ে যায়। যে ব্যক্তি মর্যাদাবান মানুষকে সম্মান দেয় সে নিজের পরিজনকে রক্ষা করে। কালের দুটো রূপ, কখনো তোমার পক্ষে থাকবে আর কখনো থাকবে তোমার বিপক্ষে। যখন তোমার পক্ষে থাকবে তখন তুমি গর্ব করো না। যখন তোমার বিপক্ষে যাবে তখন ধৈর্যধারণ করবে। দুটোই অচিরে শেষ হয়ে যাবে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাবে না কোন প্রতাপশালী মুকুট পরিহিত সম্রাট আর না কোন নিম্ন স্তরের নির্বোধ মূর্খ। তোমার কল্যাণকর সময়ের জন্যে আল্লাহ তোমাকে নিরাপদ রাখুন। তোমার প্রতিপালক তোমাকে দীর্ঘজীবী করুন। তারপর তিনি আবৃত্তি করেন তার স্বরচিত কবিতা।
شهدت السبايا يوم أل محرق – وأدرك أمري صيحة الله في الحجر
— মুহরিক বংশের যুদ্ধের দিনে আমি যুদ্ধবন্দীদেরকে দেখেছি। আর হিজর অঞ্চলে (সেখানকার অধিবাসীদেরকে ধ্বংস করার জন্যে) আল্লাহর প্রেরিত বজ্রনিনাদ আমি শুনেছি।
فلم أر ذاملك من الناس واحدا – ولاسوقة الاالى الموت والقبر
— আমি রাজা-বাদশাহ ও মুর্খ-গবেট সবাইকে দেখেছি যে, তারা সুনিশ্চিতভাবে মৃত্যু ও কবরের দিকে অগ্রসরমান।
تعمل الذي آردی ثمودا وجرهما – سيعقب لی نسلا على أخر الدهر
— যে মহান প্রভু ছামুদ ও জুরহুম গোত্র ধ্বংস করেছেন অবিলম্বে তিনি আমাকে এমন বংশধর দান করবেন যারা শেষ যুগ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে আগমন করবে।
تقربهم من أل عمرو بن عامر – ميون لدى الداعي إلى طلب الوتر
— তাদেরকে দেখে আমার পিতৃকুল আমর ইবনে ‘আমির বংশের লোকদের নয়ন জুড়াবে। এমন এক আহ্বানকারীর নিকট তারা থাকবে যে প্রতিশোধ গ্রহণের আহ্বান জানাবে।
فان لم تكن الأيام – أبلين جدتي
وشيبن رأسى – والمشيب مع العمر
— হায়! কালের আবর্তন যদি আমার শক্তিকে জীর্ণশীর্ণ করে না দিত আর আমার মাথাকে সাদা রংয়ে রঙিন করে না দিত। অবশ্য বাস্তবতা তো এই যে, বয়সের কারণে চুল সাদা হয়।
فان لنا ربا علا فوف عرشه – عليما بما يأتي من الخير والشر
— নিশ্চয়ই আমাদের একজন প্রভু রয়েছেন। তিনি আরশের উপর সমাসীন, ভাল-মন্দ কি ঘটছে সে সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণ ওয়াকিফহাল।
ألم يأت قومی ان لله دعوة – يفوز بها أهل السعادة البر
— আমাদের সম্প্রদায়ের নিকট এ সংবাদ কি আসেনি যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে এক আহ্বান ও দাওয়াত রয়েছে। ঐ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভাগ্যবান ও পুণ্যবান ব্যক্তিরা সফলকাম হবে।
اذا بعث المبعوث من أل غالب – بمكة فيما بين مكة والحجر
— যখন মক্কার অধিবাসী গালিব বংশ থেকে রাসূল প্রেরিত হবেন মক্কা ও হিজরের মধ্যবর্তী স্থানে।
هنالك فابغوا لضرة ببلادكم – بني عامر ان السعادة في النصر
— সেখানে তোমাদের শহরে তোমরা তাঁকে সাহায্য করবে, হে আমার পিতৃপুরুষ ‘আমিরের বংশধরগণ! স্মরণ রেখো, তাঁকে সাহায্য করার মধ্যেই তোমাদের কল্যাণ নিহিত।
এর অব্যবহিত পরেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/489/92
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।