hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৮৩
আমিনা বিনতে ওহব যুহরিয়ার সঙ্গে পুত্র আবদুল্লাহর বিবাহ
ইবন ইসহাক বলেন, ঐতিহাসিকদের মতে, অতঃপর আবদুল মুত্তালিব পুত্র আবদুল্লাহর হাত ধরে বনু আসাদ ইবন আবদুল উযযা ইবন কুসাই এর এক মহিলার নিকট গমন করেন। মহিলাটি হলো ওয়ারাকা ইবন নওফলের বোন। তাঁর নাম ছিল উম্মে কিতাল। সে সময়ে সে কা’বার নিকট অবস্থান করছিল। আবদুল্লাহকে দেখে সে বলল, ‘আবদুল্লাহ! তুমি যাচ্ছ কোথায়?’ আবদুল্লাহ বললেন, ‘আমি আমার আব্বার সঙ্গে যাচ্ছি।’ মহিলাটি বলল, ‘যদি তুমি এই মুহূর্তে আমার সাথে মিলিত হতে সম্মত হও তাহলে আমি তোমার বদলে যে সংখ্যক উট জবাই করা হয়েছে, সে সংখ্যক উট তোমাকে দেব।’ জবাবে আবদুল্লাহ বললেন, ‘আমি আমার আব্বার সঙ্গে আছি। তাকে ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া বা তার মতের বাইরে কিছু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’ আবদুল্লাহকে নিয়ে আবদুল মুত্তালিব ওহব ইবন আবদে মানাফ, ইবন যুহরা ইবন কিলাব ইবন মুররা ইবন কা’ব ইবনে লুওয়াই ইব্‌ন গালিব ইবন ফিহর এর নিকট যান। ওহব ইবন আবদে মানাফ তখন বয়স ও মর্যাদায় বনু যুহরার সর্দার ছিলেন। আলাপ-আলোচনার পর তাঁর কন্য আমিনার সঙ্গে আবদুল্লাহর বিবাহ হয়ে যায়। আমিনাও ছিলেন তার সম্প্রদায়ের মহিলাদের নেত্রী। ঐতিহাসিকদের মতে বাড়িতে নিয়ে আসার পর আমিনার সঙ্গে আবদুল্লাহর বাসর হয়। তাতে রাসূলুল্লাহ (সা) তার গর্ভে আসেন।

অতঃপর আবদুল্লাহ পুনরায় বনু আসাদের উল্লিখিত মহিলার নিকট যান। কিন্তু মহিলাটি এবার তাকে কিছুই বলল না। আবদুল্লাহ বললেন, ‘কী ব্যাপার, আজ যে কোন প্রস্তাবই করছ না, যেমনটি গতকাল করেছিলে?’ মহিলাটি বলল, ‘গতকাল তোমার সঙ্গে যে নূর ছিল, এখন আর তা নেই। তোমাকে এখন আর আমার প্রয়োজন নেই।’ উল্লেখ্য যে, এই মহিলা তার ভাই ওয়ারাকা ইবন নওফলের নিকট শুনেছিল যে, এই উম্মতের মধ্যে একজন নবী আগমন করবেন। তাই তার আকাঙ্খা ছিল যে, সেই নবী তারই গর্ভ থেকে জন্মলাভ করুন। কিন্তু আল্লাহ তাঁকে সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত ও পবিত্র বংশে প্রেরণ করেছেন। যেমনঃ এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ

( ٱللَّهُ أَعۡلَمُ حَیۡثُ یَجۡعَلُ رِسَالَتَهُۥ )

[Surah Al-An’am 124]

“আল্লাহ রিসালাতের ভার কার উপর অর্পণ করবেন, তা তিনিই ভাল জানেন।” (৬ঃ ১২৪)

রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জন্মের বিস্তারিত কাহিনী পরে আলোচনা করা হবে।

উম্মে কিতাল বিনতে নওফল তার ব্যর্থতার জন্যে অনুতাপ প্রকাশ করতে গিয়ে নিম্নোক্ত পংক্তিগুলো আবৃত্তি করেছিলেন। ইবন ইসহাক সূত্রে বর্ণিত বায়হাকীর বর্ণনা থেকে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

عليك بأل زهرة حيث كانوا - وآمنة التي حملت غلاما

تراي المهدي حين نزا عليها-ونورا قد تقمه إماما

فكل الخلق يرجوه جميعا -يسود الناس مهتديا إماما

براه الله من نور صافذه - فأذهب نوره عنا الظلاما

وذاليك صنع ربك اذ حباه - اذا ما سار يواما واقا ما

فيهدي أهل مكة بعد كفر- ويفرض بعد ذالكم الصياما

—শোন, তুমি যুহরার বংশধরদের আঁকড়ে ধরে রাখবে তারা যেখানেই থাকুক। আর আমিনা যে একজন বালককে গর্ভে ধারণ করেছে। হেদায়াতের অগ্রপথিককে দেখতে পাবে যখন সে তার উপর উপগত হবে আর ঐ নূরকে যা তার সম্মুখে পথ প্রদর্শক হিসাবে চলে। সব মানুষ তাঁকে কামনা করে। তিনি হিদায়াত প্রাপ্ত ও ইমাম হয়ে মানুষের নেতা হবেন। আল্লাহ তাঁকে পরিচ্ছন্ন নির্মল নূর দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। তারপর তাঁর নূর আমাদের থেকে অন্ধকার দূরীভূত করেছে।

তা আল্লাহর সৃষ্টি। তিনি তা দান করেছেন। দিনের বেলা যখন তিনি চলমান থাকেন অথবা স্বস্থানে অবস্থান করেন।

কুফরীর পর তিনি মক্কাবাসীদের হেদায়ত দান করবেন। তারপর তিনি তাদের উপর সিয়াম সাধনা ফরয করবেন। আবু বকর মুহাম্মদ ইবন জাফর ইবন সাহল আল খারায়েতী ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, বিবাহ করানোর উদ্দেশ্যে আবদুল মুত্তালিব যখন পুত্র আবদুল্লাহকে নিয়ে রওয়ানা হন তখন তিনি তাবাল’র এক ইহুদী গণক ঠাকুরণীর নিকট যান। এই মহিলাটি বিভিন্ন কিতাব পড়াশুনা করেছিল। তার নাম ছিল ফাতেমা বিনতে মুর আল খাস’আমিয়া। মহিলাটি আবদুল্লাহর চেহারায় নবুয়তের নূর দেখতে পেয়ে বলে উঠল, ‘ওহে যুবক! তুমি কি এই মুহূর্তে আমার সঙ্গে মিলিত হতে পার? তবে তোমাকে আমি একশত উট প্রদান করব।’ জবাবে আবদুল্লাহ বললেনঃ

أما الحرام فا لمات دونه - والحل لا حل فاستينه

فكيف بالأمر الذي تبغيه - يحمي الكريم عرضه ودينه

—এতো হারাম! আর হারামের পরিণতি হচ্ছে ধ্বংস। আমি তো বৈধ পরিণয়ের সন্ধান করছি। কী করে আমি তোমার আহ্বানে সাড়া দিই? সম্ভ্রান্ত মানুষ তো নিজের মান মর্যাদা ও দীন-ঈমান রক্ষা করে চলে!

আবদুল্লাহ পিতার সঙ্গে চলে যান। পিতা আমিনা বিনতে ওহবের সঙ্গে তাঁকে বিবাহ দিলেন। আবদুল্লাহ আমিনার নিকট তিন দিন অবস্থান করেন। অতঃপর এক সময়ে গণক ঠাকুরণীর নিকট গেলে মহিলাটি জিজ্ঞাসা করল, ‘আমার নিকট থেকে গিয়ে তুমি কী করলে?’ আবদুল্লাহ তাকে বিবাহের সংবাদ শুনালেন। শুনে মহিলাটি বলল, ‘আমি চরিত্রহীনা নারী নই। তবে তোমার চেহারায় বিশেষ নূর দেখে চেয়েছিলাম যে, তা আমার মধ্যে আসুক। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ছিল অন্যরকম।’ এই বলে মহিলাটি কয়েকটি পংক্তি আবৃত্তি করেনঃ

إني رأيت مخيلة لمعت - قتلا لأت بحناتم القطر

فلمائتها نورا يضئ له - ما حوله كاضاءة البدر

ورجوتها فخرا أبوء به - ما گل قادح زنده يوري

لله ما زهرية سلبت- ثوبيك ما استلبت وما تدري

—আমি একটি মেঘখণ্ডকে আলোকময় হতে দেখেছি। ফলে মেঘমালা আলোকিত হয়ে উঠেছে। আমি তাকে এমন একটি নূর মনে করলাম। যার কারণে পূর্ণিমার চাঁদের আলোকিত করার ন্যায় তার পার্শ্ববর্তী সবকিছু আলোকিত হয়ে গেল।

আমি তাকে এমন গর্বের বস্তু হিসেবে বরণ করে নিলাম, যাকে আমি নিয়েই আসব।

প্রত্যেক চকমকি প্রজ্জ্বলিতকারী তা প্রজ্জ্বলিত করতে পারে না।

আল্লাহর শপথ, যুহরিয়া গোত্রের নারী তোমার সাধারণ কোন বস্ত্র ছিনিয়ে নেয়নি অথচ তুমি তা জান না। ফাতেমা আরো বলে–

بني هاشم قد غادرت من أخيكم- أمينة أذ للباه يعتركان

كما غادر المصباح عند خموده - قتائل قد میشت له بدهان

وما كل ما يحوي الفتي من تلاده- بحزم ولاما فاته لتواني

فأجمل إذا طالبت إمرأ فإنه - سيكفيكه جدا ان يعتلجان

سيكفيكه إمايد مقفلة - وإما يد مبسوطة نبنان

ولما حوت منه أمينة ماحوت- حوت منه فخرا مالذالك ثان

—হে বনূ হাশিম! আমিনা তোমাদের ভাইকে ধারণ করেছে যখন তারা মধুযামিনী উদযাপন করেছে। যেমনি ভাবে প্রদীপের আলো নির্বাপিত হওয়ার সময় তৈল মিশ্রিত সলতেকে ধারণ করে।

যুবক যা অর্জন করে তা সবটুকু তার পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। আর যা সে নষ্ট করে তা সে উদাসীনতার কারণে নষ্ট করে না। তুমি সৌজন্যমূলক আচরণ করতে থাক যদি তুমি নেতৃত্ব চাও। কারণ তোমার বহু সন্তান-সন্ততির অধিকারী দাদা আর নানাই তোমার নেতৃত্বের জন্য যথেষ্ট। তোমার নেতৃত্বের জন্য যথেষ্ট হবে তুমি কৃপণ হও অথবা দাতাই হও। আমিনা তার থেকে এক মহান সন্তান ধারণ করেছে। তিনি এমন এক গৌরবময় সন্তান ধারণ করেছেন যার তুলনা নাই।

ইমাম আবু নুআয়ম তার দালায়িলুন নবুওয়াতে বর্ণনা করেন যে, ইবন আব্বাস (রা) বলেছেন, আবদুল মুত্তালিব এক শীতের সফরে ইয়ামানে যান। সেখানে তিনি এক ইহুদী পণ্ডিতের সাথে সাক্ষাৎ করেন। আবদুল মুত্তালিবের ভাষায়, তখন জনৈক আহলি কিতাব আমাকে বলল, ‘আপনার অনুমতি পেলে আমি আপনার শরীরের কিছু অংশ দেখতে চাই।’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, দেখতে পার, যদি তা গোপন অঙ্গ না হয়।’ আবদুল মুত্তালিব বলেন, ‘অনুমতি পেয়ে লোকটি এক এক করে উভয় নাকের ভিতরে খুঁটিয়ে দেখল। অতঃপর বলে উঠল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তোমার দুহাতের এক হাতে রাজত্ব আর অপর হাতে রয়েছে নবুওত। আর আমি তা বনূ যুহরায় দেখতে পাচ্ছি। এ কেমন করে হলো?’ আমি বললাম, ‘তা আমি জানি না।’ লোকটি বলল, ‘তোমার কি ‘শাগাহ’ আছে?’ আমি বললাম, ‘শাগাহ’ আবার কী?’ লোকটি বলল, ‘মানে স্ত্রী।’ আমি বললাম, ‘বর্তমানে নেই।’ লোকটি বলল, ‘তাহলে ফিরে গিয়ে যুহরা গোত্রে একটা বিয়ে করে নেবেন।’

আবদুল মুত্তালিব দেশে ফিরে গেলেন এবং হালা বিনতে ওহব ইবন আবদে মানাফ ইবন যাহরাকে বিয়ে করলেন। হালার গর্ভে হামযা ও সাফিয়্যা জন্মগ্রহণ করলেন। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবন আবদুল মুত্তালিব আমিনা বিনতে ওহবকে বিবাহ করেন। আমিনার গর্ভে জন্মলাভ করেন রাসূলুল্লাহ (সা)। আবদুল্লাহ আমিনাকে বিয়ে করার পর কুরাইশরা বলাবলি করতে শুরু করে যে, আবদুল্লাহ তার পিতা আবদুল মুত্তালিবকে সাত করে দিয়েছে।

بسم الله الرحمن الرحيم

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন