hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

১৯
পরিচ্ছেদ
প্রসিদ্ধ মতে উযায়র (আ) ছিলেন বনী ইসরাঈলদের অন্যতম নবী। তিনি দাউদ ও সুলায়মান এবং যাকারিয়া ও ইয়াহয়া (আ)-এর মধ্যবর্তী সময়ে আবির্ভূত হন। কথিত আছে, বনী ইসরাঈলের মধ্যে কারও নিকট যখন তাওরাত কিতাব সংরক্ষিত ছিল না, তখন উযায়রের স্মৃতিপটে আল্লাহ তাওরাত কিতাব জাগরুক করে দেন এবং বনী ইসরাঈলকে তিনি তা পড়ে শুনান। এ সম্পর্কে ওহাব ইবন মুনাব্বিহ (র) বলেছেন, আল্লাহর নির্দেশে একজন ফেরেশতা একটি নূরের চামচ নিয়ে আসেন এবং উযায়রের মুখের মধ্যে তা ঢেলে দেন। অতঃপর তিনি তাওরাতের হুবহু একটি কপি লিখে দেন। ইবন আসাকির লিখেছেন, ইবন আব্বাস (রা) একদা আবদুল্লাহ ইবন সালামের নিকট নিম্নোক্ত আয়াতটি

( وَقَالَتِ ٱلۡیَهُودُ عُزَیۡرٌ ٱبۡنُ ٱللَّهِ )

[Surah At-Tawbah 30]

(ইহূদীরা উযায়রকে আল্লাহর পুত্র বলে থাকে) উল্লেখ পূর্বক জিজ্ঞেস করেন যে, ‘তাঁকে আল্লাহর পুত্র বলার কারণ কি?’ উত্তরে আবদুল্লাহ ইবন সালাম (রা) বললেন, ‘বনী ইসরাঈলের মধ্যে এক সময়ে তাওরাত কণ্ঠস্থকারী একজন লোকও ছিল না। তারা বলত, নবী মূসাও তাওরাত লিখিত আকারে ছাড়া আমাদেরকে দিতে পারেন নি। অথচ উযায়র, নিজের স্মৃতি থেকে অলিখিত তাওরাত আমাদেরকে দিয়েছেন। তাঁর এ বিস্ময়কর প্রতিভা দেখে বনী ইসরাঈলের একদল লোক তাকে আল্লাহর পুত্র বলে আখ্যায়িত করে। এ কারণে অধিকাংশ আলিম বলেছেন, তাওরাত কিতাবের ধারাবাহিকতা উযায়রের সময়ে শেষ হয়ে যায়। তিনি যদি নবী না হয়ে থাকেন, তা হলে এ মন্তব্যটি খুবই প্রণিধানযোগ্য। আতা ইবন আবী রাবাহ এবং হাসান বসরী ও এরূপ মন্তব্য করেছেন।

ইসহাক ইবন বিশর....... বিভিন্ন সূত্রে আতা ইবন আবী রাবাহ্ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ফাতরাত (শেষ নবী ও ঈসা (আ)-এর মধ্যবর্তী বিরতিকাল) যুগের নয়টি বিষয় খুবই। উল্লেখযোগ্য, যথাঃ বুখত নসর, সানআর উদ্যান [সানআর বাগিচাঃ সূরা সাবায় উল্লিখিত ইয়ামানের রাজধানী সানআর ঐতিহাসিক বাগিচা। আল্লাহর নাফরমানির কারণে তা ধ্বংস হয়ে যায়], সাবার উদ্যান [সাবার উদ্যানঃ সাবা ইয়ামানের এক বিখ্যাত পুরুষের নাম। তার ছয় পুত্র ইয়ামানে ও চার পুত্র সিরিয়ায় বসবাস করত। ইয়ামানের রাজধানী সানআ থেকে ৬০ মাইল পূর্বে মাআরিব নগরীতে ছিল সাবা জাতির বসতি। নগরীর দু’প্রান্তে ছিল দুই পাহাড়। পাহাড়ের ঢলের পানি রোধে দু’ পাহাড়ের মধ্যে বিরাট বাঁধ দেয়া হয়। উক্ত বাঁধের দু’পাশে বিশাল উদ্যান গড়ে উঠে। ফলে এই জাতি ধনে-ঐশ্বর্যে অনাবিল শান্তিতে বাস করে। কিন্তু আল্লাহকে ভুলে যেয়ে তারা মূর্তি পূজায় লিপ্ত হয়। তাদের শাস্তির জন্যে আল্লাহ ইঁদুর দ্বারা বাঁধের নিম্নদেশ কেটে দিয়ে পাহাড়ী ঢল দ্বারা বাঁধ ভেঙে দেন। এতে উদ্যানসহ সমস্ত বসতি ধ্বংস হয়ে যায়। (এটা ঈসা (আ)-এর আবির্ভাবের পরের ঘটনা)], আসহাবুল-উখদূদ [আসহাবুল উখদূদঃ অর্থাৎ অগ্নিকুন্ডের জন্যে কুখ্যাত শাসকবর্গ। ইয়ামানের হিময়ারী বাদশাহ আবূ কারিরা ইহুদী ধর্ম গ্রহণ করে নিজ দেশে প্রচার করে। তার পুত্র যু-নুওয়াস ঈসায়ী ধর্মের প্রাণকেন্দ্র নাজরান আক্রমণ করে ঈসরাঈলীদেরকে ইহুদী ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য করে। তারা এতে অস্বীকৃতি জানালে প্রায় বিশ হাজার লোককে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে হত্যা করে। এর প্রতিশোধে রোমের সাহায্য নিয়ে ইথিওপিয়ার খৃষ্টানগণ ইয়ামান আক্রমণ করে দখল করে নেয়। এটা ছিল ৩৪০ খ্রিস্টাব্দের ঘটনা], হাসুরার ঘটনা, আসহাবুল কাহফ [আসহাবুল কাহফঃ (গুহাবাসী) এশিয়া মহাদেশের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত রোমকদের বৃহৎ নগরী আফসুস (পরবর্তীতে তরসূস নামে খ্যাত)-এর মূর্তি পূজারী বাদশাহ্ দাকিয়ানুস (Decius) এর ভয়ে তথাকার সাত জন ঈমানদার যুবক পালিয়ে গিয়ে এক পাহাড়ী গুহায় আত্মগোপন করেন। ক্লান্ত দেহে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। এটা ছিল ২৫০ খ্রিস্টাব্দের ঘটনা। চান্দ্র হিসেবে ৩০৯ বছর (যা সৌর হিসেবে ছিল ৩০০ বছর) ঘুমাবার পর তারা জাগ্রত হন ৫৫০ খ্রিস্টাব্দে। কিছু সময় পর পুনরায় ঘুমালে আল্লাহ তাদেরকে মৃত্যু দান করেন। এর বিশ বছর পর শেষ নবীর জন্ম হয়], আসহাবুল ফীল [আসহাবুল ফীলঃ (হস্তী বাহিনী) ইয়ামানের খৃস্টান বাদশাহ আবরাহা রাজধানী সানআর বায়তুল্লাহর বিকল্প এক গীর্জা নির্মাণ করে। অতঃপর ১৩টি হাতি ও ৬০ হাজার সৈন্য নিয়ে কাবা ঘর ধ্বংস করার উদ্দেশে মক্কার দিকে রওয়ানা হয়। আল্লাহ আবাবিলের সাহায্যে তাকে ধ্বংস করে দেন। রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জন্মের ৫০ দিন মতান্তরে ৫৫ দিন পূর্বে এ ঘটনাটি ঘটে], ইনতাকিয়া নগরী [সূরা ইয়াসীনে উল্লিখিত ঈসায়ী ধর্মের তিনজন মুবাল্লিগকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করায় ও তাদেরকে হত্যা করায় ইনতাকিয়া (এন্টিয়ক) নগর আল্লাহ ধ্বংস করে দেন] ও তুব্বার ঘটনা [তুব্বাঃ ইয়ামানের হিময়ারী শাসকদের উপাধি ছিল ‘তুব্বা’। এরা ইয়ামানের পশ্চিমাংশসহ দীর্ঘ দিন আরব ও ইরাক শাসন করেছে। শক্তিশালী এই রাজবংশ পরবর্তীকালে ইহুদী ধর্ম ত্যাগ করে মূর্তিপূজা শুরু করে। ফলে আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দেন]।

ইসহাক ইবন বিশর..... হাসান থেকে বর্ণনা করেছেন যে, উযায়র ও বুখত নসরের ঘটনা ফাতরাতকালে সংঘটিত হয়। সহীহ্ হাদীছে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন, ‘মরিয়ম পুত্র (ঈসা)-এর নিকটবর্তী লোক আমিই। কেননা আমার ও তার মাঝে অন্য কোন নবী নেই।’

ওহাব ইবন মুনাব্বিহ লিখেছেন, উযায়রের আগমন হয়েছিল সুলায়মান ও ঈসা (আ)-এর মধ্যবর্তী সময়ে। ইব্‌ন আসাকির আনাস ইবন মালিক ও আতা ইবনুস সাইব থেকে বর্ণনা করেছেন যে, উযায়রের আগমন হয়েছিল হযরত মুসা ইবন ইমরান (আ)-এর যামানায়। একদা তিনি আল্লাহর কুদরত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্যে মূসা (আ)-এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করেন। কিন্তু মূসা (আ) সে অনুমতি দেননি। এই ক্ষোভে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন এবং বলেনঃ এক মুহূর্তের লাঞ্ছনার তুলনায় শতবার মৃত্যুবরণ করাও সহজতর। ( مائة موتة اهون منذل ساعة ) এ কথাটি এক কবি বলেছেন নিম্নোক্তভাবেঃ

قد يصبر الحر على السيف - ويأنف الصبر على الحيف

ويؤثر الموت على حالة - يعجز فيها عن قرى الضيف

অর্থাৎ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন স্বাধীনচেতা মানুষ যুদ্ধের ময়দানে তরবারীর আঘাতকে স্বাগত জানায়, কিন্তু স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করাকে ঘৃণা করে। এমন অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করাকে অগ্রাধিকার দেয় যখন সে মেহমানদের আহার্য প্রদানে অপারগ হয়।

ইবন আসাকির প্রমুখ লেখকগণ ইবন আব্বাস, নূফ আল-বিকালী, সুফিয়ান ছাওরী প্রমুখ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, উযায়র (আ) নবীই ছিলেন। কিন্তু মৃতকে জীবিত করার ব্যাপারে আল্লাহর ক্ষমতা সম্পর্কে প্রশ্ন করায় তার নবুওত প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এ বর্ণনাটি মুনকার বা অগ্রহণযোগ্য, এর বিশুদ্ধ হওয়া সম্পর্কে সন্দেহ আছে-সম্ভবত ইসরাঈলী বর্ণনা থেকে এটা গৃহীত হয়েছে। এ বিষয়ে আরও একটি বর্ণনা লক্ষ্যণীয়। তা হল, আবদুর রাযযাক ও কুতায়বা ইবন সা'দ..... নূফ আল-বিকালী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, একদা উযায়র আল্লাহর নিকট একান্তে আবেদন করেনঃ “হে আমার প্রতিপালক! মানুষ তো আপনারই সৃষ্টি, যাকে ইচ্ছা তাকে আপনি পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা তাকে সৎপথে পরিচালিত করেন। আল্লাহর পক্ষ হতে, তাকে বলা হল, তুমি এ কথা থেকে বিরত হও। কিন্তু তিনি পুনরায় একই কথা বললেন। তখন তাঁকে জানান হল, তুমি এ কথা থেকে বিরত থাক। অন্যথায় নবীদের তালিকা থেকে তোমার নাম কেটে দেয়া হবে। জেনে রেখ, আমি যা কিছু করি সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার কারও নেই; কিন্তু মানুষ যা কিছু করবে তার জন্যে তাকে জবাবদিহী করতে হবে। এ বর্ণনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, সতর্ক করার পরও তিনি ঐ কথার পুনরাবৃত্তি করেন নি। সুতরাং নবীদের তালিকা থেকে তাঁর নাম কাটা যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।

ইমাম তিরমিযী ব্যতীত সিহাহ সিত্তাহর অন্যান্য সংকলকগণ..... আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘জনৈক নবী একবার এক বৃক্ষের নিচে অবতরণ করেন। একটি পিঁপড়া তাঁকে দংশন করে। তিনি সেখান থেকে বিদায় হওয়ার জন্যে মালপত্র গুটিয়ে নিতে বলেন। নির্দেশ মতে মালপত্র গুটিয়ে নেয়া হয়। অতঃপর তার হুকুমে পিপাড়দের বাসা পুড়িয়ে ফেলা হয়। তখন আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে তাঁকে বললেন, থাম, একটি মাত্র পিপঁড়ার জন্যে এ কী করছ?’ ইসহাক....মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেন যে, ঐ নবী ছিলেন হযরত উযায়র (আ)। ইব্‌ন আব্বাস ও হাসান বসরী থেকে বর্ণিত যে, তিনি ছিলেন উযায়র (আ)।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন