hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

১৩
হযরত দাউদ ও ইয়াহয়া (আ)-এর মধ্যবর্তী ইসরাঈল বংশীয় নবীগণের ইতিহাস
উপরোক্ত সময়ের মধ্যে আগমনকারী নবীদের মধ্যে হযরত শাইয়া ইবন আমসিয়া ( امصيا ) অন্যতম (বাইবেলের ভাষায় আমোসোর পুত্র যিশাইয়) মুহাম্মদ ইবন ইসহাকের মতে, তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল যাকারিয়া ও ইয়াহয়া (আ)-এর পূর্বে। তিনি সেই সব নবীর একজন, যারা হযরত ঈসা ও মুহাম্মদ (সা) এর আগমনের সুসংবাদ প্রচার করেছিলেন। ঐ সময়ে বায়তুল মুকাদ্দাসে বনী ইসরাঈলের শাসক ছিলেন রাজা হিযকিয়া। যে কোন সংস্কার ও সংশোধনমূলক কাজে তিনি নবী শাইয়ার আদেশ-নিষেধ মেনে চলতেন। বনী ইসরাঈলের মধ্যে তখন ব্যাপক হারে দুর্নীতি, পাপাচার ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তাদের রাজা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাঁর পায়ে একটি ক্ষত সৃষ্টি হয়। এ সুযোগে ব্যাবিলনের রাজা সানহারীব বায়তুল মুকাদ্দাস আক্রমণে উদ্যোগী হয়। ইবন ইসহাক (র) বলেছেন, এ অভিযানে ছয় লক্ষ পতাকাবাহী সৈন্য অংশগ্রহণ করে। তাতে লোকজন অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। রাজা হযরত শাইয়ার নিকট জিজ্ঞেস করেন যে, ‘সানহারীব ও তার সৈন্যবাহিনী সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কী ওহী প্রেরণ করেছেন?’ তিনি বললেন, ‘তাদের সম্পর্কে আমার নিকট কোন প্রকার ওহী আসেনি।’ কিছুদিন অতিবাহিত হবার পর হযরত শাইয়ার নিকট এই মর্মে ওহী আসে যে, অল্প দিনের মধ্যে রাজার মৃত্যু হবে। সুতরাং তিনি যেন তার পছন্দমত কাউকে স্থলাভিষিক্ত করেন। নবীর মাধ্যমে এ সংবাদ পেয়ে রাজা কিবলামুখী হয়ে সালাত ও তাসবীহ পাঠ করে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে ধৈর্যের সাথে কেঁদে কেঁদে এই দোয়া করেনঃ

اللهم رب الارباب واله الالهة يارحمن يارحيم يامن لا تأخذه سنة ولا نوم اذكرني بعلمی و فعلی و حسن قضائی علی بنی اسرائیل وذالك كله كان منك فانت اعلم به من نفسی سمری و اعلاني لك

অর্থাৎ, হে আল্লাহ্, মহা প্রতিপালক, রাজাধিরাজ, দয়াময়, পরম দয়ালু! হে ঐ সত্তা, যাঁকে তন্দ্রা বা নিদ্রা স্পর্শ করে না। আমার জ্ঞান, আমার কার্যাবলী ও বনী ইসরাঈলদের উপর আমার ন্যায়-বিচারের দিকে লক্ষ্য করে আপনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করুন। আমার এ যা কিছু কৃতিত্ব, সবই আপনার করুণার দান। এ সম্পর্কে আপনি সর্বাধিক অবগত। আমার ভিতর ও বাহির সব আপনাতে ন্যস্ত।

আল্লাহ রাজার দোয়া কবুল করে তাঁর প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করেন এবং শাইয়ার (যীশাইও) নিকট ওহীর মাধ্যমে সুসংবাদ দেন যে, তাঁর কান্নাতে আল্লাহ সদয় হযেছেন। তিনি তাঁর আয়ু পনের বছর বৃদ্ধি করেছেন এবং তাঁর শত্রু সানহারীবের কবল থেকে তাকে রক্ষা করেছেন। নবীর নিকট থেকে এ সুসংবাদ শুনে রাজার অন্তর থেকে ভয়-ভীতি ও দুশ্চিন্তা দুরীভূত হয় এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশার্থে সিজদাবনত হয়ে তিনি নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করেন।

اللهم انت الذي تعطي الملك من تشاء وتنزعه ممن تشاء وتعز من تشاء وتذل من تشاء عالم الغيب والشهادة انت الاول والاخر والظاهر والباطن وانت ترحم وتستجيب دعوة المضطرين .

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আপনি সেই মহান সত্তা, আপনি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করেন এবং যার থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নেন; যাকে ইচ্ছা মর্যাদা দান করেন, যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন। দৃশ্য-অদৃশ্য যাবতীয় বিষয়ে আপনি সম্যক অবগত। আপনি আদি ও অন্ত এবং প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য। বিপদগ্রস্তদের আহ্বানে আপনিই সাড়া দেন ও অনুগ্রহ করেন।

সিজদা শেষ হলে আল্লাহ শাইয়ার নিকট ওহী প্রেরণ করেন এবং রাজাকে এ কথা জানিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন যে, তিনি যেন ডুমুরের রস পায়ের ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দেন, তাতে তিনি আরোগ্য লাভ করবেন। রাজা এ নির্দেশ পালন করেন এবং আরোগ্য লাভ করেন। এরপর আল্লাহ সানহারীবের সৈন্যবাহিনীকে ধ্বংস করে দেন। ফলে সানহারীব ও তার পাঁচজন সঙ্গী ব্যতীত তার গোটা সৈন্যবাহিনী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই পাঁচজনের মধ্যে একজন বুখত নসর।[টীকা– একেই নেবুচাদ নেয়ার বা নেবুকাদ নেযার বলা হয়ে থাকে।]

বনী ইসরাঈলের রাজা লোক পাঠিয়ে এদেরকে ধরে এনে বেড়ি পরিয়ে সত্তর দিন পর্যন্ত শহরের অলি-গলিতে ঘুরিয়ে লাঞ্ছিত করেন। প্রত্যহ এদের প্রতি জনকে মাত্র দুটি করে যবের রুটি খেতে দেয়া হতো। এরপর তাদেরকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়। আল্লাহ তখন শাইয়ার নিকট ওহী প্রেরণ করেন। তিনি রাজাকে এদের ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন, যাতে এরা আপন সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিজেদের শাস্তি ও লাঞ্ছনা ভোগের বিবরণ শোনাতে পারে। সানহারীব মুক্তি পেয়ে ফিরে গিয়ে নিজ সম্প্রদায়ের লোকদেরকে সমবেত করে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেয়। প্রতি উত্তরে গণক ও যাদুকররা বলল, ‘আমরা পূর্বেই আপনাকে ইসরাঈলীদের প্রতিপালক ও নবীগণ সম্পর্কে অবহিত করেছিলাম; কিন্তু আপনি আমাদের কথায় কান দেননি। এরা এমন একটি জাতি, যাদের প্রতিপালকের মুকাবিলা করার ক্ষমতা কারও নেই।’ এভাবে সানহারীবের পরিণতি তাই হল, যে সম্পর্কে আল্লাহ পূর্বেই তাদেরকে সাবধান করেছিলেন। এ ঘটনার সাত বছর পর সানহারীবের মৃত্যু হয়। ইবন ইসহাক বলেন, বাদশাহ হিযকিয়ার মৃত্যুর পর বনী ইসরাঈলের মধ্যে পাপ প্রবণতা, অপরাধ, বিশৃংখলা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অত্যধিক বৃদ্ধি পায়। হযরত শাইয়া তখন আল্লাহর প্রত্যাদেশ পেয়ে বনী ইসরাঈলের লোকদেরকে আহ্বান করলেন এবং আল্লাহর আদেশ পালনের জন্যে উপদেশ দান করলেন। নবী তাদেরকে সতর্ক করেছিলেন যে, আল্লাহর আদেশ লঙ্ঘন করলে ও তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করলে তাদের উপর শাস্তি অবধারিত। হযরত শাইয়ার বক্তব্য শেষ হলে উপস্থিত জনগণ তাঁকে আক্রমণ করতে উদ্যত হল এবং হত্যা করার উদ্দেশ্যে তাঁর পশ্চাতে ধাওয়া করল। শাইয়া (আ) আত্মরক্ষার জন্যে সেখান থেকে পালিয়ে যান। এমন সময় তিনি সম্মুখে একটি বৃক্ষ দেখতে পান। বৃক্ষটি নবীকে শত্রুর কবল থেকে রক্ষার জন্যে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। তিনি তাতে প্রবেশ করেন এবং বৃক্ষের ফাটল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু শয়তান তার কাপড় টেনে ধরায় তার আঁচল বাইরে থেকে যায়। ইতিমধ্যে শক্ররা সেখানে এসে উপস্থিত হয়। তারা বৃক্ষের মধ্যে কাপড় আটকা দেখে করাত দ্বারা বৃক্ষটি দ্বিখণ্ডিত করে ফেলে। ফলে হযরত শাইয়ার দেহও দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়--ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজিউন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন