hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৫৩
নাপাক ব্যক্তির জন্যে তাওরাত স্পর্শ করা জায়েয নেই
হানাফী ফিকহ্ বিদদের মতে নাপাক অবস্থায় ও বিনা উযূতে তাওরাত স্পর্শ করা জায়েয নেই। আল্লামা হানাতী তাঁর ফাতাওয়া গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, কতক শাফিঈ পন্থী ‘আলিমও উপরোক্ত মত পোষণ করেন। এই মতটি একটি বিরল মত। কতক উলামা উভয় অভিমতের মাঝামাঝি অভিমত পোষণ করেন। তাদের মধ্যে শায়খ ইমাম আল্লামা আবুল আব্বাস ইবন তায়মিয়্যা অন্যতম। তিনি বলেন, যারা এ মত পোষণ করে যে, তাওরাত শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণই পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে এবং এর একটি অক্ষরও আসল অবস্থায় নেই, তাদের এ অভিমত কোনমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। তদ্রুপ যারা এ অভিমত পোষণ করে যে, তাওরাত আদৌ পরিবর্তন করা হয়নি, তাদের অভিমতও গ্রহণযোগ্য নয়। সত্য ও বাস্তবতা এই যে, তাওরাতের কতক শব্দে হ্রাস-বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবর্তন, বিকৃতি ও রূপান্তর সংঘটিত হয়েছে; যেমন বিকৃতি ও পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এর মর্ম ও ব্যাখ্যায়। ভালভাবে চিন্তা করলে এটি অবগত হওয়া যায়। এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার অবকাশ নেই। আল্লাহই ভাল জানেন।

তাদের তাওরাত বিকৃতির একটি উদাহরণ হযরত ইব্রাহীম (আ)-এর পুত্র কুরবানীর ঘটনা। সেখানে আছে ( اذبح ابنك وحيدك ) তোমার একক পুত্রকে কুরবানী কর। তাওরাতের কোন কোন পাঠে আছে ( اذبح ابنك وحيدك بكرك اسحاق ) তোমার একক শিশু পুত্র ইসহাককে কুরবানী কর। এসব কপিতে বর্ণিত ( اسحاق ) শব্দটি নিঃসন্দেহে তাদের নিজেদের সংযোজন। কারণ তখন হযরত ইব্রাহীমের একক ও প্রথম শিশু পুত্র ছিলেন হযরত ইসমাঈল (আ)। হযরত ইসহাক (আ)-এর জন্মের ১৪ বছর পূর্বে ইসমাঈল (আ)-এর জন্ম হয়। তাহলে ইসহাক (আ) একক শিশু পুত্র হন কীভাবে? আরবদের প্রতি তাদের বিদ্বেষের প্রেক্ষিতে আরবদের পূর্ব পুরুষ হযরত ইসমাঈল (আ)-এর জন্যে কুরবানী বিষয়ক সামান নির্ধারণের জন্যে তারা আল্লাহ ও রাসূল (সা) সম্বন্ধে মিথ্যা আরোপ করে ( اسحاق ) শব্দ সংযোজন করে দিয়েছে।

তাদের এই সংযোজনের প্রেক্ষিতে পূর্বের ও পরের অনেক লোক প্রতারিত হয়েছে এবং তাদের সাথে এ মত পোষণ করেছেন যে, কুরবানী বিষয়ক পুত্র হলেন ইসহাক (আ)। সঠিক মতামত এই যে, কুরবানী বিষয়ক পুত্র ছিলেন হযরত ইসমাঈল (আ)। ইতিপূর্বে আমরা তা বর্ণনা করেছি। আল্লাহই ভাল জানেন। সামিরা সম্পাদিত তাওরাতের দশম বাক্যে নামাযে তুর পর্বতের দিকে মুখ করার নির্দেশটি তাদের অতিরিক্ত সংযোজন। ইয়াহুদী ও নাসারাদের অন্যান্য কপিতে এটুকু নেই। হযরত দাউদ (আ)- এর নামে প্রচলিত যাবুরের কপিতে প্রচুর অসংগতি পাওয়া যায়। তাতে এমন সব অতিরিক্ত ও সংযুক্ত বিষয়াদি পাওয়া যায়, যা মূলত যাবূরের ভাষ্য নয়। আল্লাহই ভাল জানেন।

ইয়াহুদীদের নিকট এখন যাবুরের যে আরবী অনুবাদ রযেছে, তার মধ্যে যে প্রচুর বিকৃতি পরিবর্তন, সংযোজন ঘটনার মিথ্যাচারিতা ও স্পষ্ট হ্রাস-বৃদ্ধি রয়েছে, তাতে কোন বিবেকবান মানুষেরই সন্দেহ থাকতে পারে না। এ কপিতে সুস্পষ্ট মিথ্যাচার ও প্রচুর মারাত্মক ভ্রান্তি রয়েছে। তারা নিজেদের ভাষায় যা পাঠ করে এবং নিজেদের কলমে যা লিখে সে সম্পর্কে অবশ্য আমাদের জানা নেই। তবে তারা যে মিথ্যাবাদী, বিশ্বাস ভঙ্গকারী এবং আল্লাহ তাঁর রাসূল ও তাঁর কিতাব সম্পর্কে মিথ্যা আরোপকারী এরূপ ধারণা করার যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। নাসারাদের ইনজীল চতুষ্টয় যা মার্ক, লুক, মথি ও যোহন থেকে বর্ণিত, সেগুলো তওরাতের তুলনায় আরো বেশী পরস্পর বিরোধী ও অসংগতিপূর্ণ।

নাসারাগণ কোন কোন ক্ষেত্রে তাওরাত ও ইনজীল উভয়ের বিধানের বিরোধিতা করে। এ সকল ক্ষেত্রে তারা নিজেরা নিজেদের জন্যে নতুন বিধান তৈরী করে নেয়। এ জাতীয় বিধান সমূহের একটি হল তাদের পূর্বমুখী হয়ে নামায আদায় করা। ইনজীল চতুষ্টয়ের কোনটিতেই সরাসরি এ বিধান নেই এবং এ বিষয়ে তারা আদিষ্ট নয়। অনুরূপ তাদের উপাসনালয়ে মূর্তি স্থাপন, খতনা বর্জন, রোজার সময়কে বসন্তকালে সরিয়ে দেয়া এবং রোযার মেয়াদ ৫০ দিন পর্যন্ত বর্ধিত করণ, শূকরের গোশত খাওয়া, ক্ষুদ্র একটি খিয়ানতকে বড় আমানত বলে গ্রহণ করা, সন্যাসব্রতের প্রচলন করা, সন্যাসব্রত হল ইবাদতে আগ্রহী ব্যক্তির বিয়ে-শাদী বর্জন করা এবং তার জন্যে বিয়ে-শাদী হারাম বলে গণ্য করা এবং ৩১৮ জন ধর্মযাজক কর্তৃক রচিত বিধি-বিধানগুলো লিপিবদ্ধ করা [এখানটি ৩২৫ খ্রীষ্টানদের। এটি খ্রীষ্টান যাজকদের প্রথম কাউন্সিল বলে পরিচিতি] এসবই হচ্ছে তাদের বানানো ও স্বরচিত বিধান। কনস্টান্টিননোপল রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট কনস্টান্টিন ইবন কস্তুন- এর শাসনামলে তারা এগুলো তৈরি করে ও তার প্রচলন ঘটায়। রাজা কনস্টান্টের সময়কাল ছিল হযরত ঈসা (আ)-এর ৩০০ বছর পর। তাঁর পিতা ছিলেন রোমের একজন রাজা। তাঁর পিতা হারবান অঞ্চলে শিকারের উদ্দেশ্যে এক সফরে গিয়ে তাঁর মাতা হায়লানাকে বিবাহ করেন। এই মহিলাটি প্রাচীন সন্যাসব্রতী খৃষ্টান সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন।

কনস্টান্টিন তাঁর বাল্যকালে দর্শনশাস্ত্র শিক্ষা করেন এবং তাতে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। তিনি তাঁর মায়ের ধর্ম খৃষ্টবাদের প্রতি কিছুটা ঝুঁকে পড়েন। নিজে দর্শনের অনুসারী হয়েও খৃষ্টবাদ অবলম্বীদেরকে তিনি মোটামুটি শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। তার পিতার মৃত্যুর পর তিনি রাজ্যের সর্বেসর্বা হয়ে উঠেন। প্রজাদের প্রতি তিনি ন্যায় বিচার করতেন। জনসাধারণও তাঁকে ভালবাসতে থাকে। তিনি তাদের মধ্যে নেতৃত্ব অর্জন করেন এবং সামরিক অভিযান চালিয়ে দ্বীপ সমূহসহ সমগ্র সিরিয়া জয় করে নেন। এতে তার সম্মান ও মর্যাদা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। তিনিই ছিলেন সর্বপ্রথম কায়সার। তাঁর শাসনামলে ত্রিমুখী ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টি হয়। একদিকে নাসারাগণ একদিকে আলেকজান্দ্রিয়ার আকসান্দরূস অন্য দিকে তাদেরই জনৈক পণ্ডিত ব্যক্তি নাম আব্দুল্লাহ ইবন আরইউস। আকসন্দরূস-এর মতে হযরত ঈসা (আ) ছিলেন আল্লাহর পুত্র। আল্লাহ্ তা’আলার শান তার এ মতের অনেক ঊর্ধ্বে।

ইব্‌ন আরইউসের মতে, ঈসা (আ) ছিলেন আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। নাসারাদের একটি ছোট দল তার অনুসরণ করেছিল। তাদের অধিকাংশ লোক তাদের ধর্ম যাজকের অভিমতই গ্রহণ করে। তারা ইবন আরইউস ও তার অনুসারীদেরকে তাদের উপাসনালয়ে প্রবেশে বাধা দেয়। ইবনে আরইউস তার প্রতিদ্বন্দ্বী আকসান্দরূস ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে রাজা কনষ্টান্টইনের নিকট অভিযোগ দায়ের করে। রাজা তার মতবাদ সম্পর্কে জানতে চান। তিনি হযরত ঈসা (আ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল বিষয়ে নিজের অভিমত রাজার নিকট পেশ করেন এবং এ বিষয়ে দলীল- প্রমাণ ও যুক্তি উপস্থিত করেন। এতে রাজা তার প্রতি আকৃষ্ট হন এবং তার বক্তব্যের প্রতি ঝুঁকে পড়েন।

রাজ দরবারে কেউ কেউ প্রস্তাব করে যে, ইব্‌ন আরইউসের বক্তব্য যখন শোনা হল তখন তার প্রতিপক্ষের বক্তব্যও তো শোনা উচিত। রাজা তখন তার প্রতিপক্ষকে উপস্থিত করতে নির্দেশ দিলেন। সাথে সাথে নেতৃস্থানীয় ধর্মভীরু ব্যক্তি, খৃষ্ট ধর্ম সম্পর্কে অভিজ্ঞ সকল লোক এবং বায়তুল মুকাদ্দাস, এন্টিয়ক, রোম ও আলেকজান্দ্রিয়ার ধর্মযাজকদেরকেও উপস্থিত করার নির্দেশ জারী করেন।

কথিত আছে যে, চৌদ্দ মাস সময়ের মধ্যে ২০০০-এর অধিক ধর্মযাজক সমবেত হন। রাজা তাদেরকে একটি মজলিসে উপস্থিত করেন। তাদের তিনটি প্রসিদ্ধ মজলিসের এটি হল প্রথম মজলিস। এরা সবাই পরস্পর প্রচণ্ডভাবে ভিন্ন মতাবলম্বী। তাদের পরস্পরের মধ্যে মতাদর্শগত পার্থক্য প্রচণ্ড ও গুরুতর। ক্ষুদ্র একটি দল এমন মতবাদে বিশ্বাস করে যা অন্য কেউ সমর্থন করে না। এ ৫০ জন হল এক আদর্শে বিশ্বাসী, অপর ৮০ জন অপর এক মতবাদে বিশ্বাসী। অপর দশজন এক মতবাদপন্থী অপর ৪০ জন ভিন্ন এক আদর্শের অনুসারী। ১০০ জন এক প্রকার বিশ্বাসের অনুসারী তো অন্য ২০০ জন অন্য অভিমত পোষণকারী। একদল ইবন আরইউসের মতাবলম্বী তো, অন্যদল অন্য মতাবলম্বী। এসব ধর্মীয় ব্যক্তিদের মতদ্বৈততা ও মতপার্থক্য যখন চরমে পৌঁছে তখন রাজা কনস্টান্টিনোপল হতভম্ব ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। অবশ্য তাঁর পূর্বসূরী গ্ৰীক সাবিইনদের ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মমতের প্রতি তিনি বীতশ্রদ্ধ ছিলেন।

অবশেষে যে অভিমতের পক্ষে সমর্থক সংখ্যা বেশী, তিনি সে দলের প্রতি মনোযোগী হলেন। তিনি দেখতে পেলেন যে, ৩১৮ জন্য ধর্মযাজক আকসিন্দরুম-এর মতের সমর্থক। তাদের সমান সংখ্যক অন্য কোন দল তিনি পেলেন না। তিনি বললেন যে, এরাই সাহায্য পাওয়ার অগ্রাধিকারী। কারণ, তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। আমি তাদেরকে সহায়তা দিব। তিনি তাদের সাথে একান্ত বৈঠকে বসলেন। তিনি তার তরবারী ও ঘোড়া তাদের হাতে অর্পণ করলেন এবং বললেন, আমি ছাড়া আর সবাই রাজাকে সিজদা করল। তিনি তাদেরকে ধর্মীয় বিধান সম্বলিত একটি পুস্তক প্রণয়নের অনুরোধ জানালেন। তিনি এও বললেন যে, উপাসনা যেন পূর্বমূখী হয়ে আদায় করা হয়, কারণ নায়্যিরা নক্ষত্র পূর্বদিক থেকে উদিত হয়। আর তাদের উপাসনালয়ে যেন দেহ বিশিষ্ট মূর্তি স্থাপন করা হয়। তারা সমঝোতায় উপনীত হয় যে, মূর্তি স্থাপন করা হবে উপসনালয়ের প্রাচীরে। এ সব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছার পর রাজা তাদেরকে সাহায্য করতে শুরু করেন। তিনি তাদের মতকে প্রতিষ্ঠিত করতে, বিরুদ্ধবাদীদেরকে কোনঠাসা করতে এবং তাদের মতবাদকে দুর্বল করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। রাজা এ পৃষ্ঠপোষকতায় তারা বিরুদ্ধবাদীদের উপর বিজয় ও প্রতিষ্ঠা পায়। নিজেদের দ্বীনের স্বপক্ষে বহু সংখ্যক উপাসনালয় নির্মাণের জন্যে রাজা তাদেরকে নির্দেশ দেয়। রাজার দীন অনুসরণকারী হিসেবে তারা মালাকামী (রাজতান্ত্রিক সম্প্রদায়) আখ্যায়িত হয়। সম্রাট কন্টাষ্টাটনের আমলে সিরিয়া ও অন্যান্য শহরে ও জনপদে তারা ১২০০-এর অধিক গীর্জা নির্মাণ করে। রাজা নিজেই হযরত ঈসা (আ)-এর জন্মস্থানে বেথেলহাম ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তাঁর মা হায়লানাহ তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী হযরত ঈসা (আ)-এর শূলে চড়ানোর স্থানে বায়তুল মুকাদ্দাসে একটি গম্বুজ নির্মাণ করেন।

ইহুদী ও নাসারাগণ তাদের মূর্খতা ও জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে এ বিশ্বাস পোষণ করে যে, ঈসা (আ) সেখানে শূলবিদ্ধ হয়েছিলেন।

কথিত আছে যে, রাজা কনষ্টান্টাইন উক্ত মতাদর্শের বিরোধীদেরকে হত্যা করেন এবং তাদের জন্যে মাটিতে বড় বড় গর্ত খনন করে। তাতে আগুন জ্বালিয়ে তাদেরকে পুড়িয়ে মারেন। সূরা বুরুজের তাফসীরে আমরা এ প্রসংগে আলোচনা করেছি। রাজা খ্রিষ্ট ধর্মের এই শাখাকে মর্যাদার আসনে আসীন করেন। এবং তার কারণে এ মতাদর্শ অন্যসব মতাদর্শের উপর বিজয় লাভ করে। তিনি এই ধর্মকে এতই বিকৃত করেন, যা কখনো সংশোধন হওয়ার নয়। এগুলো বজায় রেখে ঐ ধর্ম দ্বারা কল্যাণ অর্জনও সম্ভব নয়। তাদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় লোকদের সংখ্যাধিক্যের কারণে তাদের পূজা-পার্বণ অনেক বৃদ্ধি পায়। তাদের সাধু সন্তদের নামে প্রচুর সংখ্যাক গীর্জা স্থাপিত হয়। তাদের কুফরী চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। তারা স্থায়ীভাবে গোমরাহীর শিকার হয় এবং তাদের কুকর্ম বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ্ তাদের অন্তরকে হিদায়াতের দিকে ধাবিত করেননি বা তাদের অবস্থাও সংশোধন করেননি। বরং তাদের অন্তরকে সত্য থেকে বিচ্যুত করেছেন এবং সত্যে অবিচলতা থেকে তাদের দূরে সরিয়ে দিয়েছেন।

এরপর তারা নাসতুরিয়্যা ও ইয়াকুবিয়্যা নামক আরো দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদল অপর দলকে কাফির বলতে থাকে এবং ভিন্ন মতাবলম্বীগণ চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে বলে ধারণা করতে থাকে। কোন উপাসনালয়েই তাদের উভয় পক্ষকে একত্রিত হতে দেখা যেত না। প্রত্যক দলই তিন মূল সত্তার প্রবক্তা ছিল- পিতা, পুত্র এবং কলেমা বা বাণী সত্তা। কিন্তু অতীন্দ্রিয় জগত ও পার্থিব স্রষ্টার অবতাররূপে আগমন অথবা মানবাকৃতির মধ্যে একাত্ম হওয়া বিষয়ে তাদের মধ্যে চরম মতভেদ ছিল। আল্লাহ তাআলা খোদ ঈসা (আ)-এর রূপে অবতরণ করেছিলেন, না কি তাঁর মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন, না আল্লাহ ও ঈসা একীভূত সত্তা ভুক্ত এ বিষয়ে তাদের মতবিরোধ চরমে পৌঁছেছিল। এ কারণে তাদের কুফরী জঘন্য পর্যায়ে পৌঁছেছিল। মূলত তাদের সকল পক্ষই ছিল বাতিল, অসত্যের অনুসারী।

অবশ্য আব্দুল্লাহ্ ইবন আরইউসের অনুসারীগণ যারা বলত যে, হযরত ঈসা (আ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল, আল্লাহর দাসীর পূত্র ও তার বাণী, মারয়ামের প্রতি এ বাণী নিক্ষেপ করেছেন এবং তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে রূহ রূপে আবির্ভূক্ত হয়েছিলেন তারা সত্যপন্থী ছিল। মুসলমানরাও হযরত ঈসা (আ) সম্পর্কে অনুরূপ মত পোষণ করেন। কিন্তু আরইউসী পন্থীগণ যখন এই বিশ্বাসে অনমনীয় থাকে, তখন উপরোক্ত তিন ফিকরা এসে তাদের উপর আক্রমণ করল এবং তাদেরকে মেরেকেটে ছত্রভঙ্গ করে দূরে তাড়িয়ে দিল। ক্রমে ক্রমে তাদের সংখ্যা হ্রাস পেতে পেতে অবশেষে এমন হয়ে গেল যে, এখন ঐ পন্থী কাউকেই দেখা যায় না। আল্লাহই ভাল জানেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন