hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৪০
সাবত(১) বিষয়ক সীমা লংঘনকারী আয়লা অধিবাসীদের ঘটনা
[১] সাবত শব্দের অর্থ শনিবার। ঐটি ইয়াহুদীদের সাপ্তাহিক ইবাদাতের জন্য নির্দিষ্ট ছিল।

সূরা আরাফে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاسْأَلْهُمْ عَنِ الْقَرْيَةِ الَّتِي كَانَتْ حَاضِرَةَ الْبَحْرِ إِذْ يَعْدُونَ فِي السَّبْتِ إِذْ تَأْتِيهِمْ حِيتَانُهُمْ يَوْمَ سَبْتِهِمْ شُرَّعًا وَيَوْمَ لَا يَسْبِتُونَ لَا تَأْتِيهِمْ كَذَلِكَ نَبْلُوهُمْ بِمَا كَانُوا يَفْسُقُونَ (۝) وَإِذْ قَالَتْ أُمَّةٌ مِنْهُمْ لِمَ تَعِظُونَ قَوْمًا اللَّهُ مُهْلِكُهُمْ أَوْ مُعَذِّبُهُمْ عَذَابًا شَدِيدًا قَالُوا مَعْذِرَةً إِلَى رَبِّكُمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ (۝) فَلَمَّا نَسُوا مَا ذُكِّرُوا بِهِ أَنْجَيْنَا الَّذِينَ يَنْهَوْنَ عَنِ السُّوءِ وَأَخَذْنَا الَّذِينَ ظَلَمُوا بِعَذَابٍ بَئِيسٍ بِمَا كَانُوا يَفْسُقُونَ (۝) فَلَمَّا عَتَوْا عَنْ مَا نُهُوا عَنْهُ قُلْنَا لَهُمْ كُونُوا قِرَدَةً خَاسِئِينَ

“তাদেরকে সমুদ্র তীরবর্তী জনপদবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস কর, তারা শনিবারে সীমালংঘন করত। শনিবার উদযাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত। কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদযাপন করত না। সেদিন মাছগুলো তাদের নিকট আসত না। এভাবে তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম, যেহেতু তারা সত্য ত্যাগ করত।

স্মরণ কর, তাদের একদল বলেছিল, আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেনঃ কিংবা কঠোর শাস্তি দিবেন, তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা সাবধান হয় এ জন্যে। যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন সেটি বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎ কার্য থেকে নিবৃত্ত করত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি এবং যারা জুলুম করে তারা কুফরী করত বলে আমি তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেই। তারা যখন নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্য সহকারে করতে লাগল তখন তাদেরকে বললাম, ঘৃণিত বানর হও। (৭ আরাফ ১৬৩-১৬৬)

সূরা বাকারাতে আল্লাহ বলেনঃ

وَ لَقَدۡ عَلِمۡتُمُ الَّذِیۡنَ اعۡتَدَوۡا مِنۡکُمۡ فِی السَّبۡتِ فَقُلۡنَا لَہُمۡ کُوۡنُوۡا قِرَدَۃً خٰسِئِیۡنَ۝فَجَعَلۡنٰہَا نَکَالًا لِّمَا بَیۡنَ یَدَیۡہَا وَ مَا خَلۡفَہَا وَ مَوۡعِظَۃً لِّلۡمُتَّقِیۡنَ

“তোমাদের মধ্যে যারা শনিবার সম্পর্কে সীমালংঘন করেছিল তাদেরকে তোমরা নিশ্চিতভাবে জান। আমি তাদেরকে বলেছিলাম, তোমরা ঘৃণিত বানর হও। আমি এটি তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীগণের শিক্ষা গ্রহণের জন্য দৃষ্টান্ত ও মুত্তাকীদের জন্যে উপদেশ স্বরূপ করেছি।”(২ বাকারা ৬৫,৬৬)।

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

اَوۡ نَلۡعَنَہُمۡ کَمَا لَعَنَّاۤ اَصۡحٰبَ السَّبۡتِ ؕ وَ کَانَ اَمۡرُ اللّٰہِ مَفۡعُوۡلًا

“অথবা সাবতওয়ালাদেরকে সেরূপ লানত করেছিলাম যেরূপ তাদেরকে লানত করার পূর্বে। আল্লাহর আদেশ কার্যকরী হয়েই থাকে।” নিসা-৪৭

ইবন আব্বাস, মুজাহিদ, ইকরীমা, কাতাদা, সুদ্দী (র) ও অন্যান্য মুফাসসিরগণ বলেছেন, এরা ছিল আয়লা বা ঈলা (Elath) অধিবাসী। ইবন আব্বাস (রা) এও বলেছেন যে, স্থানটি মাদয়ান ও তুর এর মধ্যস্থলে অবস্থিত। তাফসীরকারগণ বলেন, সে যুগে তাওরাতের শিক্ষা অনুযায়ী তারা শনিবারে পার্থিব কাজকর্ম হারাম জ্ঞান করত, ফলে মাছ এ দিবসে তাদের পক্ষ থেকে নিরাপদ ও স্বস্তিতে থাকত। কারণ ঐ দিন মাছ শিকার করা তাদের জন্যে হারাম ছিল। সকল প্রকারের কাজ-কর্ম ব্যবসা-বাণিজ্য ও আয়-উপার্জন সেদিনের জন্যে হারাম ছিল। শনিবারে প্রচুর মাছ তাদের সমুদ্র তীরবর্তী আবাসিক এলাকার কাছাকাছি চলে আসত এবং নির্ভয়ে-নিরাপদে এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করত। তারা ওগুলো ধরতও না ওগুলোকে ভীতি প্রদর্শনও করতো না।

یَوۡمَ لَا یَسۡبِتُوۡنَ ۙ لَا تَاۡتِیۡہِمۡ

“যেদিন তারা শনিবার উদযাপন করত না সেদিন তাদের নিকট মাছও আসত না” এ জন্যে যে, শনিবার ব্যতীত অন্যান্য দিনে তারা মাছ শিকার করত। আল্লাহ তাআলা বলেন,

کَذٰلِکَ ۚۛ نَبۡلُوۡہُمۡ

“এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম।” অর্থাৎ শনিবারে প্রচুর মাছের আনাগোনার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে তাদেরকে যাচাই করেছিলাম

بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ

“যেহেতু তারা সত্য ত্যাগ করত।” অর্থাৎ তাদের ইতিপূর্বেকার সত্যত্যাগের কারণে। তারা শনিবারে প্রচুর মাছের সমাহার দেখে শনিবারেই তারা মাছ শিকারের ফন্দি খোঁজে। তারা রশি, জাল ও বড়শী তৈরি করে এবং খালও খনন করে রাখে। ঐ খাল হয়ে পানি যেন তাদের তৈরি শিকার ক্ষেত্রে পৌঁছে। পানির সাথে মাছ তাদের প্রস্তুতকৃত শিকার ক্ষেত্রে গিয়ে পৌঁছলে যেন বের হতে না পারে।

পরিকল্পনা মুতাবিক তারা সব কিছু তৈরি করে নেয়। শুক্রবারে তারা যন্ত্রপাতি ও সকল কৌশল কার্যকর করত। শনিবারে নির্ভয়ে মাছগুলো যখন উপস্থিত হত তখন শিকার ক্ষেত্রের মুখ বন্ধ করে দেয়া হত। শনিবার চলে গেলে তারা মাছগুলো ধরে আনত।

আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাদেরকে লানত দিলেন। কারণ তারা আল্লাহর নির্দেশের বিরুদ্ধে এমন কৌশল অবলম্বন করেছিল বাহ্যিকভাবে তা কৌশলই মনে হবে কিন্তু মূলত সেটি ছিল আল্লাহর নির্দেশের স্পষ্ট বিরুদ্ধাচরণ। তাদের একদল এ সকল কাজ করার পর যারা তা করেনি তারা দু'দলে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল ওদের এ অপকর্ম এবং আল্লাহর নির্দেশের ও তার শরীয়তের বিরোধিতা করাকে প্রত্যাখ্যান করে। অপর দল নিজেরা ঐ অপকর্মে লিপ্ত হয়নি, আবার অপকর্মে লিপ্তদেরকে বাধাও দেয়নি। বরং যারা বাধা দিয়েছিল তারা তাদেরকে তিরস্কার করেছিল। এবং বলেছিলঃ

لِمَ تَعِظُوۡنَ قَوۡمَۨا ۙ اللّٰہُ مُہۡلِکُہُمۡ اَوۡ مُعَذِّبُہُمۡ عَذَابًا شَدِیۡدًا

“আল্লাহ যাদেরকে ধ্বংস করবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দিবেন তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দাও কেন?” অর্থাৎ তাদেরকে বাধা দানে লাভ কি? তারা নিশ্চিতভাবে শাস্তি ভোগের উপযুক্ত হয়েছে। বাধাদানকারী দল উত্তর দিল যে,

قَالُوۡا مَعۡذِرَۃً اِلٰی رَبِّکُمۡ

“তোমাদের প্রতিপালকের নিকট দায়িত্ব মুক্তির জন্যে।” অর্থাৎ আমাদেরকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের বাধাদানের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আল্লাহর শাস্তির ভয়ে আমরা সে দায়িত্বই পালন করছি।

وَ لَعَلَّہُمۡ یَتَّقُوۡنَ

“এবং যাতে তারা সাবধান হয় অর্থাৎ এমনও হতে পারে যে, তারা তাদের অপকর্ম থেকে বিরত হবে। তারা যদি আমাদের উপদেশ গ্রহণ করে এবং অপকর্ম থেকে ফিরে আসে। তবে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন এবং তাঁর আযাব থেকে তাদেরকে রক্ষা করবেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন।

فَلَمَّا نَسُوۡا مَا ذُکِّرُوۡا بِہٖۤ

“যে উপদেশ তাদেরকে দেয়া হয়েছিল তারা যখন তা বিস্মৃত হয়।” অর্থাৎ যারা এ গর্হিত অপকর্ম থেকে বারণ করেছিল তাদের প্রতি কর্ণপাত করেনি।

اَنۡجَیۡنَا الَّذِیۡنَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ السُّوۡٓءِ

“তখন যারা অসৎকর্ম থেকে নিবৃত্ত করত আমি তাদেরকে উদ্ধার করি।” এরা হল সৎ কাজে আদেশ দানকারী ও অসৎকাজে নিবৃত্তকারী দল।

اَخَذۡنَا الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا بِعَذَابٍۭ بَئِیۡسٍۭ

এবং যারা জুলুম করে অর্থাৎ দুষ্কর্ম করেছে আমি তাদেরকে কঠিন শাস্তি দিই।” অর্থাৎ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ

“তারা সীমালঙ্ঘন করত বলে তারপর আল্লাহ তাআলা তাদের উপর আপতিত শাস্তির বিবরণ দিচ্ছেন এই বলে

فَلَمَّا عَتَوۡا عَنۡ مَّا نُہُوۡا عَنۡہُ قُلۡنَا لَہُمۡ کُوۡنُوۡا قِرَدَۃً خٰسِئِیۡنَ

যখন তারা নিষিদ্ধ কার্য ঔদ্ধত্য সহকারে করতে লাগল তখন তাদেরকে বললাম, ঘৃণিত বানর হয়ে যাও” এ সম্পর্কে আরও যে সকল আয়াত এসেছে একটু পরেই আমরা সেগুলো উল্লেখ করব।

মোদ্দাকথা, আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দিলেন যে, যারা জালিম ছিল তিনি তাদেরকে ধ্বংস করেছেন আর তাদের অপকর্ম প্রত্যাখ্যানকারী ঈমানদারদেরকে তিনি রক্ষা করেছেন। কিন্তু নিরবতা অবলম্বনকারী ঈমানদারগণের ব্যাপারে কিছু বলেননি। ফলে নীরবতা অবলম্বনকারী ঈমানদারগণের পরিণতি সম্পর্কে আলিমগণের দু'টি মত রয়েছে, একদল বলেন, এরা উদ্ধার প্রাপ্তদের সাথে উদ্ধার লাভ করেছেন, আর অপর দল বলেন, তারা ধ্বংস প্রাপ্তদের সাথে ধ্বংস হয়েছে। মুহাক্কিক আলিমগণের মতে প্রথম অভিমতটিই সঠিক। শ্রেষ্ঠ তাফসীরকার হযরত ইবন আব্বাস (রা) শেষ পর্যন্ত এ অভিমতটিই গ্রহণ করেছেন। তাঁর আযাদকৃত দাস ইকরামার সাথে যুক্তি তর্কের প্রেক্ষিতে তিনি এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেন। এজন্যে ইকরামা (রা)-কে তিনি এক জোড়া উচ্চ মূল্যের পোশাক দানে সম্মানিত করেন। আমার মতে, নীরবতা অবলম্বনকারী দলকে নাজাত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত উল্লেখ করা হয়নি এ জন্যে যে, তারা অন্তরে ওদের অশ্লীলতাকে অপছন্দ করেছিল বটে, কিন্তু তাদের উচিত ছিল বাহ্যিক দিকটাকেও অন্তরের দিকের ন্যায় মৌখিকভাবে প্রত্যাখ্যানের স্তরে উন্নীত করা। এটি অবশ্য মধ্যম স্তরের অবস্থান। সর্বোচ্চ স্তর হল অন্যায় কাজকে সরাসরি শক্তি প্রয়োগে বাধা দান, এর পরের স্তর হল মুখে প্রতিবাদ করা এবং তৃতীয় স্তর হল অন্তরে ঘৃণা করা।

আলোচ্য নীরবতা অবলম্বনকারী লোকদের কথা যখন স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি তখন নিশ্চয়ই তারা নাজাতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত। কারণ তারা অশ্লীল কাজে অংশ গ্রহণ করেনি বরং অশ্লীলতাকে ঘৃণা করেছিল।

আবদুর রাজ্জাক আতা খুরাসানী (র) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, যারা উল্লেখিত অপকর্ম ও পাপাচারে লিপ্ত হয়েছিল শহরের অন্য অধিবাসীরা তাদেরকে সমাজচ্যুত করেছিল এবং কেউ কেউ তাদেরকে ঐ অপকর্মে বাধাও দিয়েছিল। কিন্তু তারা ঐ উপদেশ গ্রহণ করেনি।

বাধা দানকারীরা একটি পৃথক স্থানে রাত্রি যাপন করত এবং অপরাধী ও নির্দোষদের মাঝে অন্তরায় স্বরূপ স্থাপিত দরজাগুলো রাতে বন্ধ করে রাখত। কারণ, তারা অপকর্মকারীদের ধ্বংসের অপেক্ষায় ছিলেন। একদিন ভোরবেলা দেখা গেল ওদের দিককার দরজা বন্ধ। ওরা দরজা খোলেনি। অনেক বেলা হয়ে গেল। শহরের অধিবাসিগণ একজন লোককে ওদের সিঁড়িতে ওঠে ওপর থেকে তাদের অবস্থা জেনে নিতে নির্দেশ দিল। উপরে উঠে সে দেখতে পেল যে, ওরা সবাই লেজ বিশিষ্ট বানরে পরিণত হয়ে রয়েছে। তারা লাফালাফি ও দৌড়াদৌড়ি করছিল। শেষে ওদের দরজা খোলা হল। বানরেরা তাদের আত্মীয় স্বজন ও ঘনিষ্ঠ লোকদেরকে চিনতে পেরেছিল কিন্তু আত্মীয় স্বজনেরা ওদেরকে চিনতে পারেনি। ওরা অসহায়ভাবে আত্মীয় স্বজনের নিকট আশ্রয় চাচ্ছিল ও কাকুতি-মিনতি করছিল। অপকর্মে বাধা দানকারী লোকেরা ভৎসনার স্বরে বলছিল, আমরা কি তোমাদের অপকর্মে নিষেধ করিনি? মাথা নেড়ে বানররা সায় দিচ্ছিল যে, হ্যাঁ, নিষেধ করেছিলে।

এতটুকু বলে হযরত আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) কেঁদে ফেললেন। তিনি বললেন, আমরা তো এখন বহু অন্যায় ও গর্হিত কাজ দেখছি কিন্তু তা প্রতিরোধও করছি না এবং ঐ বিষয়ে কোন কথাও বলছি না। আওফী (র) হযরত ইবন আব্বাস (রা)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ঐ জনপদের যুবকরা বানরে পরিণত হয়েছিল, আর বৃদ্ধরা পরিণত হয়েছিল শূকরে।

ইবন আবী হাতিম ....ইবন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, তারা অল্প সময় জীবিত থেকেই মরে গিয়েছিল। ওদের আর কোন বংশধর হয়নি।

যাহহাক (র) হযরত ইবন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, বানরে রূপান্তরিত মানুষগুলো তিনদিনের বেশি জীবিত থাকেনি। এদের খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের কোন সুযোগ হয়নি। ওদের কোন বংশধরও হয়নি। সূরা বাকারা ও সূরা আরাফের তাফসীরে আমরা এ সম্পর্কিত বর্ণনাগুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

ইবন আবি হাতিম ও ইবন জারীর.... মুজাহিদ (র) সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন মূলত ঐ লোকগুলোর অন্তঃকরণ সমূহ বিকৃত করে দেয়া হয়েছিল। দৈহিকভাবে বানর ও শূকরে তারা পরিণত হয়নি। বরং এটি একটি রূপক উদাহরণরূপে আল্লাহ তাআলা এটা বর্ণনা করেছেন। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ

کَمَثَلِ الۡحِمَارِ یَحۡمِلُ اَسۡفَارًا

“তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে পুস্তক বহনকারী গর্দভের মত। তার এ বর্ণনার সনদ বিশুদ্ধ হলেও বর্ণনাটি অত্যন্ত গরীব পর্যায়ের। এটি কুরআন মজীদের প্রকাশ্য বর্ণনার বিপরীত এবং এ বিষয়ে বহু প্রাচীন ও আধুনিক উলামা-ই-কিরামের স্পষ্ট বক্তব্যের বিরোধী। আল্লাহই ভাল জানেন।

জনপদ অধিবাসীদের ঘটনা

اِذۡ جَآءَہَا الۡمُرۡسَلُوۡنَ

“যখন তাদের নিকট এসেছিল রাসূলগণ” হযরত মূসা (আ)-এর ঘটনা বর্ণনার পূর্বে ঐ জনপদ অধিবাসীদের ঘটনা আলোচিত হয়েছে। সাবা অঞ্চলের অধিবাসীদের ঘটনা। আরবদের ইতিহাস অধ্যায়ে সাবার অধিবাসীদের কথা আলোচিত হবে, ইনশাআল্লাহ।

কারূণ ও বাল'আমের ঘটনা মূসা (আ)-এর বর্ণনা প্রসঙ্গে পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে। তদ্রুপ খিযির (আ) ফিরআওন ও যাদুকরগণ সম্পর্কে মূসা (আ)-এর বর্ণনা প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। গাভীর ঘটনাটিও মূসা (আ)-এর বর্ণনায় আলোচিত হয়েছে। মৃত্যু ভয়ে যে কয়েক হাজার লোক নিজেদের বাসস্থান ত্যাগ করে চলে গিয়েছিল। তাদের কথা ‘হিযকীল' এর বর্ণনায় আলোচিত হয়েছে। মূসা (আ)-এর পর আগত বনী ইসরাইলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের কথা শামুয়েল (আ)-এর বর্ণনায় আলোচিত হয়েছে। আর জনপদ অতিক্রমকারী ব্যক্তির কথা আলোচিত হয়েছে হযরত উযায়র (আ)-এর বর্ণনায়।  

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন