hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৭৮
সাবা মু‘আল্লাকার অন্যতম রচয়িতা ইমরুল কায়স ইবন হুজর আল-কিনদী
জাহেলিয়াত আমলের কবিদের কাব্য সংকলন সাব’য়ে মু’আল্লাকার ইমরুল কায়সের অংশটুকু সর্বাধিক উন্নত ও প্রসিদ্ধ— যার প্রথম পংক্তি হলো -

قفا نبك من ذكرى حبيب ومنزل .

–দাঁড়াও, প্রিয়তমা ও তার বাসগৃহের বিরহে একটু কেঁদে নিই।

ইমাম আহমদ (র) হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ “ইমরুল কায়স জাহান্নামগামী কবিদের পতাকাবাহী"। বিভিন্ন সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত হলেও এটির সনদ বিশুদ্ধ।

হাফিজ ইবনে আসাকির বলেছেন, ইমরুল কায়সের বংশ লতিকা হলো, ইমরুল কায়স ইব্‌ন হাজার ইবন হারিছ ইবন আমর ইব্‌ন হুজর ইবনে আমর ইবন মুআবিয়া ইবন হারিছ ইবনে ইয়া’রাব ইব্‌ন ছাওর ইবন মুরতা’ ইবনে মুআবিয়া ইবন কিন্দা। উপনাম আবূ ইয়াযীদ, মতান্তরে আবু ওহাব ও আবুল হারিছ আল কিন্দী। তিনি দামেশক এলাকায় বাস করতেন। তিনি তাঁর কবিতায় ঐ এলাকার বিভিন্ন স্থানের উল্লেখ করেছেন। তার দুটি পংক্তি নিম্নরূপঃ

قفا نبك من ذكرى حبيب ومنزل - بسقط اللوى بين الدخول فحومل

فتوضح فاالمقراة لم بعف رسمها - لما نسجتها من جنوب وشمأل

–“তোমরা দাঁড়াও, এসো, আমরা প্রিয়তমা

ও তার বাসস্থানের বিরহে একটু কেঁদে নিই,

যে বাসস্থান বালির টিলার চূড়ায় দাখূল ও হাওমাল,

তুযিহ ও মাকরাত নামক স্থানের মাঝে অবস্থিত,

উত্তর ও দক্ষিণের বায়ু প্রবাহ সত্ত্বেও যার চিহ্ন মুছে যায়নি।”

এইগুলি হূরান অঞ্চলের প্রসিদ্ধ স্থান।

হাফিজ ইবনে আসাকির অন্য এক সূত্রে বর্ণনা করেন যে আফীফ ইবন মা‘দীকরব বলেছেন, আমরা একদিন রাসূলুল্লাহ (সা)- এর নিকট বসা ছিলাম। সে সময়ে ইয়ামানের একটি প্রতিনিধি দল এসে বলল, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইমরুল কায়সের কবিতার দুটি পংক্তির উসিলায় আল্লাহ্ আমাদের জীবন রক্ষা করেছেন।’ রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, ‘তা কীভাবে?’ তারা বলল, ‘আমরা আপনার সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে আসছিলাম। কিছুদূর এসে আমরা পথ হারিয়ে ফেলি, ফলে সেস্থানে আমাদের তিনদিন অবস্থান করতে হয়। অথচ, আশেপাশে কোথাও পানি পাওয়া যাচ্ছিল না। অগত্যা গাছের ছায়ায় শুয়ে মৃত্যুবরণের উদ্দেশ্যে আমরা এক একজন এক একটি খেজুর গাছ ও বাবলা গাছের নীচে চলে গেলাম। আমাদের প্রাণ যায় যায় দশা। হঠাৎ দেখতে পেলাম, একজন উষ্ট্রারোহী এগিয়ে আসছে। তাকে দেখে আমাদের একজন কবিতা আবৃত্তি করলঃ

والمرأت أن الشريعة همها - و أن البياض من فرائضها دامی .

تيممت العين التى عند ضلر ج -بفي عليها الظل عرمضها طامی

অর্থাৎ প্রিয়া যখন বুঝতে পারল যে, ঘাট-ই তার লক্ষ্যস্থল, আরো বুঝল যে, তার পার্শ্বদেশ আর কাঁধের মধ্যস্থলের গোশত হতে শুভ্রতা বিচ্ছুরিত হচ্ছে, তখন সে জারিজের নিকটস্থ সেই কূপে যেতে মনস্থ করল, যে কূপ ছায়া ও কাঁটাদার বৃক্ষে পরিপূর্ণ।

পংক্তি দুটো শুনে আরোহী বলল, ‘এগুলো কার কবিতা? সে তো আমাদের দুর্দশা দেখে ফেলেছে।’ আমরা বললাম, ‘এগুলো ইমরুল কায়সের কবিতা!’ আরোহী বলল, ‘আল্লাহর শপথ, সে একটুও মিথ্যা বলেনি। তোমাদের পার্শ্ববর্তী এই জায়গাটিই জারিজ।’ সত্যি সত্যি আমরা তাকিয়ে দেখলাম যে, আমাদের ও কূপটির মাঝে দূরত্ব মাত্র পঞ্চাশ হাতের। ফলে আমরা হামাগুড়ি দিয়ে সেখানে গেলাম। দেখলাম, তা ইমরুল কায়সের বিবরণ অনুযায়ী হুবহু ছায়া ও কাঁটাদার বৃক্ষবেষ্টিত একটি কূয়া। এ কাহিনী শুনে রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন,

ذاك رجل مذكور في الدنيا منسي في الاخرة شريف في الدنيا

خامل في الأخرة بيده لواء الشعراء يقودهم إلى النار .

—লোকটি দুনিয়াতে বহুল আলোচিত, পরকালে কেউ তার কথা জিজ্ঞাসাও করবে না, দুনিয়াতে সে সম্ভ্রান্ত, পরকালে লাঞ্ছিত; তার হাতে কবিদের পতাকা থাকবে, তাদেরকে জাহান্নামের দিকে পরিচালিত করবে।"

কালবী লিখেছেন, ইমরুল কায়স একবার পিতৃ হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পতাকা উড়িয়ে বনু আসাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য রওয়ানা হয়। তাবালা নামক স্থানে ছিল যুল-খুলসা নামক একটি মূর্তি। আরবরা তার নিকট লটারী টানত। ইমরুল কায়স সেস্থানে পৌঁছে লটারী টানল। কিন্তু লটারীতে নেতিবাচক তীর উঠে আসে। ফলে সে আরও দু’বার লটারী টানে। তাতেও ঐ একই ফল হয়। ইমরুল কায়স ক্ষিপ্ত হয়ে তীরগুলি ভেঙ্গে যুল- খুলসার মুখের উপর ছুঁড়ে মারে এবং বলে যে, তোর বাবা যদি খুন হতো, তবে তুই আমার কাজে বাধ সাধতি না। এই বলে সে বনু আসাদ গোত্রের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাদের অনেককে হত্যা করে।

ইবনুল কালবী বলেন, এরপর ইসলামের অভ্যুদয় পর্যন্ত ইমরুল কায়স কখনো যুল খুলসার নিকট লটারী টানেনি।

কথিত আছে যে, ইমরুল কায়স কোনো এক যুদ্ধে রোমের বাদশা কায়সারের বিজয়ে তার ভূয়সী প্রশংসামূলক কবিতা রচনা করে। কিন্তু, কাক্ষিত পুরস্কার না পেয়ে পরে সে উল্টো তার নিন্দাসূচক কবিতা রচনা করে। কথিত আছে, রোম সম্রাট বিষ খাইয়ে তাকে হত্যা করে। আসীব নামক একটি পাহাড়ের সন্নিকটে জনৈক মহিলার কবরের পার্শ্বে তাকে সমাধিস্ত করা হয়। পরে সেখানে নিম্নের পংক্তি দু’টি লিখে রাখা হয়েছে—

اجارتنا أن المزار قریب - واني مقيم ما اقام عسيب .

أجارتنا انا غريبان ههنا - و كل غربب للغربب نسيب .

—হে আমার প্রতিবেশিনী! নিঃসন্দেহে আমাদের সাক্ষাতস্থল নিকটেই। আসীব পর্বত যতদিন টিকে থাকবে, আমিও এখানে ততদিন অবস্থান করব। হে প্রতিবেশিনী! তুমি-আমি দু’জন-ই এখানে মুসাফির। আর এক মুসাফির অপর মুসাফির-এর আত্মীয়েরই মত।

ঐতিহাসিকগণ বলেন, সাতটি মুআল্লাকাই কাবা শরীফে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। তার কারণ, আরবদের নিয়ম ছিল যে, তাদের কেউ কোন কবিতা রচনা করলে সে তা কুরায়শদের নিকট পেশ করত। কুরায়শদের অনুমোদন পেলে সম্মানার্থে তা কা’বার গায়ে ঝুলিয়ে রাখা হত। এভাবে একত্রিত হতে হতে এই সাতটি মুআল্লাকা একত্রিত হয়ে যায়। তার প্রথমটি হল ইমরুল কায়স ইবন হজর-এর রচিত, যার প্রথম পংক্তিটি পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় মুআল্লাকা নাবিগা যুবিয়ানীর রচিত, যার নাম ছিল যিয়াদ ইবন মু’আবিয়া, মতান্তরে যিয়াদ ইবন আমর ইবন মু’আবিয়া ইব্‌ন যাবাব ইবন জাবির ইবন ইয়ারবু ‘ইবন গায়য ইবন মুররা ইবন আউফ ইবন সা’দ ইবন যুবইয়ান ইবন বাগীয। তার প্রথম পংক্তি হলোঃ

يادارمية بالعلياء فالسند - اقوت وطال عليها سالف الأيد .

– উলইয়া ও সানাদে অবস্থিত হে আমার প্রিয়ার গৃহ! সে অতীত হয়ে গেছে আর তার বিরহ অনেক দীর্ঘ হয়ে গেল!

তৃতীয় মুআল্লাকার রচয়িতা যুহায়র ইবনে আবু সুলামী রবীয়া ইবনে বিয়াহ আল-মুযানী। যার প্রথম পংক্তিঃ

امن ام او في دمنة لم تكلم - بحومانة الدراج فالمتثلم .

– দাররাজ ও মুতাছাল্লামের কঠিন ভূখণ্ডে অবস্থিত এই নীরব ধ্বংস স্থূপ-ই কি আমার প্রিয়তমা উম্মে আওফার স্মৃতি?

চতুর্থ মুআল্লাকার রচয়িতা হলো, তারফা ইবনুল আবদ ইব্‌ন সুফিয়ান ইবন সা’দ ইবন মালিক ইবন যুবাই’আ ইবন কায়স ইবন ছা’লাবা ইবন উকাবা ইবন সা’ব ইবন আলী ইবন বকর ইবন ওয়ায়েল। যার প্রথম পংক্তিঃ

لخولة أطلال ببرقة ثهمد - تلوح كباقي الوشم في ظاهر اليد .

—ছাহমাদের পাথুরে অঞ্চলে আমার প্রিয়া খাওলার বাসগৃহের স্মৃতি মহিলাদের হাতের অবশিষ্ট উলকি রেখার ন্যায় ঝলমল করছে বলে মনে হয়।

পঞ্চম মুআল্লাকার রচয়িতা আনতারা ইবন শাদ্দাদ ইবন মু’আবিয়া ইবন কুরাদ ইবন মাখযুম ইবন রবীয়া ইবন মালিক ইবন গালিব ইবন কুতায়া’আ ইবন আবাস আল-আবাসী। তাঁর প্রথম পংক্তি হলোঃ

هل غادر الشعراء من متروم - أم هل عرفت الدار بعد توهم .

—আগেকার কবিরা এমন কোন অপূর্ণতা রেখে যাননি, যা পূরণ করা বাকী রয়েছে। তোমাতে অনেক আন্দাজ অনুমানের পর তুমি তো প্রিয়ার গৃহের সন্ধান পেয়েছ।

ষষ্ঠ মুআল্লাকার রচয়িতা বনী তামীমের আলকামা ইবন আবদা ইবন নুমান ইবন কায়স। তাঁর প্রথম পংক্তি হলো,

طحابك قلب في الحسان طروب - بعيد الشباب عصرحان مشيب .

—তোমাকে নিয়ে আমার সৌন্দর্য পিয়াসী প্রাণ উচ্ছসিত হলো যখন যৌবন বিগত প্রায় এবং বার্ধক্য এসে হানা দিলো।

সপ্তম মুআল্লাকার রচয়িতা লাবীদ ইবন মালিক ইবন জাফর ইবন কিলাব ইবন রবীয়া ইবন ‘আমির ইবন সাসাআ ইবন মুয়াবিয়া ইবন বকর ইবন হাওয়াযিন ইবন মনসূর ইবন ইকরিমা ইবন খাসফা ইবন কায়স ইবন ‘আয়লান ইবন মুযার। এই সপ্তম মু‘আল্লাকাকে আসাময়ী প্রমুখ পণ্ডিত সাত মুআল্লাকার অন্তর্ভুক্ত বলে স্বীকার করেন না। তার প্রথম পংক্তি হলোঃ

عفت الديار محلها فمقامها-بمني تأبد غولها فرجامها .

—মিনার যে গৃহে আমার প্রিয় কখনো অল্প সময় কখনো দীর্ঘ সময় অবস্থান করতো, তার চলে যাওয়ার ফলে সব বিরান হয়ে গেছে। মিনার গাওল ও রিজাম নামক স্থানও এখন সম্পূর্ণ জনবসতি শূন্য।

আবু উবায়দা আসমায়ী ও মুবারবাদ প্রমুখ পণ্ডিতগণ অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, আরেকটি কসীদা এমনও রয়েছে, যার রচয়িতা কে তা অজ্ঞাত। তার প্রথম পংক্তিটি হলোঃ

هل بالطلول السائل را- هل لها بتكلم عهد

—টিলাগুলোত প্রশ্নকারী কোন প্রত্যুত্তর প্রায়? নাকি কথা না বলার ব্যাপারে প্রিয়ার কোন শপথ রয়েছে? এটি একটি সুদীর্ঘ অনবদ্য কবিতা। এই পংক্তিমালায় অনেক অনেক সুন্দর ব্যাখ্যা রয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন