hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৫৯
রবীআ আন নাসর লাখমীর বিবরণ
এই রবী’আ পূর্বোল্লেখিত রবী’আ লাখমী বলে ইবন ইসহাক বলেছেন। সুহায়লী বর্ণনা করেন, ইয়ামানের বংশ বিশারদগণ বলেন, ইনি হলেন নাসর ইবন রবী’আ ইবন নাসর ইবন হারিক ইবন নুমারা ইবন লাখম। যবিয়ান ইবন বাক্কার বলেন, ইনি হলেন রবী’আ ইবন নাসর ইবন মালিক ইবন শুউয ইবন মালিক ইবন আজম ইবন আমর ইবন নুমারা ইবন লাখম। লাখম ছিলেন জুযামের ভাই।

লাখম শব্দটির অর্থ হচ্ছে চপোটাঘাত করা। আপন ভাইকে চপোটাঘাত করায় তার নাম পড়ে দিয়েছিল লাখম। আর চপোটাঘাতকারীর হাত কামড়ে ধরেছিল বলে অপর ভাইয়ের নাম হল জুযাম। জুযাম মানে দংশন করা।

রবী’আ ছিলেন তুব্বা উপাধিধারী হিমইয়ারী সম্রাটদের অন্যতম। শাক্ ও সাতীহ নামের দুজন গণকও রাসূলুল্লাহ (সা)-এর আগমন সম্পর্কে তাদের নিকট সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন। গণক সাতীহ এর নাম ও বংশ পরিচয় হল রাবী ইবন রাবী’আ ইবন মাসউদ ইবন মাযিন ইবন যিব ইবন আদী ইবন মাযিম গাসসান। আর শাক্ এর বংশ পরিচয় হল; শাক ইবন সাব ইবন ইয়াশকুর ইবন রুহম ইবন আকরক ইবন কায়স ইবন আবকর ইবন আনমার ইবন নেযার। মতান্তরে আনমার ইবন আরাশ ইবন লিহয়ান ইবন আমর ইবন গাওছ ইবন নাবিত ইবন মালিক ইবন যায়দ ইব্‌ন কাহলান ইবন সাবা।

কথিত আছে যে, সাতীহ লোকটির কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিল না। সে ছিল ছাদের ন্যায় সমান। তার মুখমন্ডল ছিল পিঠের উপর। ক্রোধ এলে সে ফুলে যেত এবং বসে যেত। শাক লোকটি ছিল সাধারণ মানুষের অর্ধাংশ। বলা হয় যে, খালিদ ইবন আবদুল্লাহ বিননুল কাসরী তারই অধঃস্তন পুরুষ।

সুহায়লী বলেন, ওরা দুজন একই দিন জন্মগ্রহণ করেছিল। দিনটি ছিল তরীফা বিনত খায়র হিমইয়ারীর মৃত্যু দিবস। বর্ণিত আছে যে, তাদের জন্মের পর সে তাদের প্রত্যেকের মুখে থুথু ছিটিয়েছিল। তাতে তারা তার জ্যোতিষ বিদ্যার উত্তরাধিকার পেয়েছিল। তরীফা ছিল পূর্বোল্লেখিত আমর ইবন আমিরের স্ত্রী। আল্লাহই ভাল জানেন।

মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন, রবী’আ ইবন নাসর ছিলেন ইয়ামানের তুব্বা উপাধিধারী সম্রাটদের অন্যতম। একদা তিনি এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে আতংকগ্রস্ত ও অস্থির হয়ে পড়েন। অতঃপর তার রাজ্যের সকল জ্যোতিষী যাদুকর ও জ্যোতির্বিদকে তাঁর দরবারে একত্রিত করে বললেন, ‘আমি এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখেছি, যা আমাকে ভীত ও শঙ্কিত করে তুলেছে। আপনারা আমাকে স্বপ্ন ও তার তাৎপর্য বলে দিন।’ তারা বলল, ‘আপনি স্বপ্নটা আমাদেরকে বলুন; আমরা তার ব্যাখ্যা বলে দিব।’ সম্রাট বললেন, “না তা নয়, আমি যদি স্বপ্ন বলে দিই তারপর আপনারা তার ব্যাখ্যা দেন, সেই ব্যাখ্যায় আমি আস্থা রাখতে পারব না। কারণ এ স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা সেই ব্যক্তিই দিতে পারবে, আমার বলা ছাড়া যে স্বপ্নটা জানতে পারবে।’ একজন বলল, ‘ঠিক আছে, সম্রাট যদি তাই চান তবে ব্যাখ্যার জন্যে শাক ও সাতীহের নিকট লোক পাঠিয়ে দেয়া হোক। এই শাস্ত্রে তাদের চেয়ে অভিজ্ঞ কেউ নেই। তারাই সম্রাটের ইচ্ছা মুতাবিক ব্যাখ্যা বলতে পারবে।’ লোক পাঠিয়ে তাদেরকে আনা হল। শাকের পূর্বে সাতীহের সাথে কথা বললেন সম্রাট। তিনি বললেন, ‘ আমি এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখেছি, যা আমাকে ব্যতিব্যস্ত ও অস্থির করে তুলেছে। আগে বল, সে স্বপ্নটি কি? তুমি যদি স্বপ্নটি ঠিক ঠিক বলতে পার তবে তোমার ব্যাখ্যাও সঠিক হবে।’ সাতীহ বলল, ‘ঠিক আছে, আমি তাই করছি। আপনি একটি কালো বস্তু দেখেছেন যা অন্ধকার থেকে বের হয়েছে। অতঃপর সমুদ্র উপকুলবর্তী নিচু ভূমিতে গিয়েছে। এবং যেখানে মাথা ভূমিতে গিয়েছে এবং সেখানে মাথা বিশিষ্ট যা পেয়েছে তার সব কিছু খেয়ে ফেলেছে।’ সম্রাট বললেন, ‘সাতীহ! তুমি একটুও ভুল বলনি। এখন বল দেখি তোমার মতে এর ব্যাখ্যা কী?’

সে বললঃ ‘দু’শিলা ভূমির মাঝে অবস্থিত সকল পশু-পাখীর শপথ করে বলছি, হাবশি জাতি আপনাদের রাজ্যে অবতরণ করবে এবং আবয়ান থেকে জারশ পর্যন্ত এলাকায় রাজত্ব করবে।’ সম্রাট বললেন, ‘সাতীহ! এতো এক অনাকাংখিত ও বেদনাদায়ক ব্যাপার, কবে নাগাদ তা ঘটবে; আমার রাজত্বকালে, না আরও পরে?’ সে বলল, ‘আপনার পিতার শপথ, বরং আপনার পরে আরো ৬০/৭০ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর।’ সম্রাট বললেন, ‘তাদের রাজত্ব কি চিরস্থায়ী হবে? না কি পতন ঘটবে?’ সে বলল, ‘৭৩ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে তাদের পতন ঘটবে। তারপর তাদেরকে হত্যা করা হবে এবং তারা সেখান থেকে পালিয়ে যাবে।’ তিনি বললেন, ‘কে তাদেরকে হত্যা ও বিতাড়িত করবে?’ সে বলল, ‘ইরামসী ইয়াযিন। এডেন থেকে সে আসবে এবং ওদের কাউকে ইয়ামানে অবশিষ্ট রাখবে না।’

সম্রাট বললেন, ‘তার রাজত্ব কি চিরস্থায়ী হবে? নাকি তার পতন ঘটবে?’ সে বলল, ‘বরং পতন ঘটবে।’ সম্রাট বললেন, ‘কার হাতে তার পতন ঘটবে?’ সে বলল, ‘একজন পুণ্যবান নবীর হাতে ঊর্ধাকাশ থেকে তার নিকট ওহী আসবে।’ সম্রাট বললেন, ‘নবী কোন বংশের সন্তান হবে?’ সে বলল, ‘গালিব ইবন ফিহর ইবন মালিক ইবন নজরের অধঃস্তন পুরুষ। আখেরী যামানা পর্যন্ত রাজত্ব তার সম্প্রদায়ের মধ্যে থাকবে।’ সম্রাট বললেন, ‘যুগেরও কি আবার শেষ আছে?’ সে বলল, ‘হ্যাঁ, যুগের শেষ হল এমন একটি দিন, যেদিনে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সবাইকে একত্রিত করা হবে। সৎকর্মশীলগণ হবে ভাগ্যবান আর পাপাচারীগণ হবে ভাগ্যাহত।’ সম্রাট বললেন, ‘তুমি যা বলছ তা কি ঠিক?’ সে বলল, ‘অন্তরাগ, অন্ধকার এবং উদ্ভাসিত প্রত্যুষের শপথ করে বলছি, আমি আপনাকে যা জানিয়েছি তা অবশ্যই সত্য।’

বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর জ্যোতিষী শাক সম্রাটের নিকট আসল। সাতীহকে যা বলেছিলেন তিনি তাকেও তাই বললেন। উভয়ের বক্তব্য একরূপ হয়, নাকি ভিন্ন ভিন্ন, তা দেখার জন্যে সাতীহের বক্তব্য তিনি শাকের নিকট প্রকাশ করলেন না। শাক বলল, ‘আপনি দেখেছেন একটি কালো বস্তু। সেটি বেরিয়ে এসেছে অন্ধকার থেকে। তারপর উদ্যান ও ফলবাগানে গিয়ে পতিত হয়েছে। অতঃপর সেখানে যত প্রাণী ছিল সব খেয়ে ফেলেছে।’ এতটুকু বলার পর সম্রাট বুঝলেন যে, উভয়ের বক্তব্য অভিন্ন। সম্রাট বললেন, ‘হে শাক! তুমি একটুও ভুল বলনি। এখন তোমাদের এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী?’ সে বলল, ‘দু’শিলা ভুমির মাঝে অবস্থিত মানব সম্প্রদায়ের শপথ করে বলছি, আপনাদের রাজ্যে অবশ্যই কৃষ্ণাঙ্গরা অবতরণ করবে। সকল অধিবাসীর উপর তারা বিজয় লাভ করবে এবং আলায়্যান থেকে নজরান পর্যন্ত তাদের শাসনাধীন হবে।’ সম্রাট বললেন, ‘হে শাক! তোমার পিতার শপথ, এটি তো আমাদের জন্যে ক্ষোভ ও দুঃখের ব্যাপার। তবে এটি কবে ঘটবে? আমার আমলে, নাকি এর পরবর্তী যুগে?’ সে বলল, ‘না, বরং এর কিছুকাল পরে।

তারপর একজন প্রতাপশালী ব্যক্তি আপনাদেরকে ওদের হাত থেকে মুক্ত করবে এবং ওদেরকে চরম অপমান ও লাঞ্চিত করবে।’ তিনি বললেন, ‘ঐ প্রতাপশালী ব্যক্তিটি কে?’ সে বলল, ‘একটি বালক-গ্রামবাসীও নয়, শহরবাসীও নয়। যী ইয়াযান-এর বংশ থেকে বেরিয়ে সে তাদের উপর আক্রমণ করবে।’ তিনি বললেন, ‘তার রাজত্ব কি চিরস্থায়ী হবে, নাকি তার পতন ঘটবে?’ সে বলল, ‘বরং তার রাজত্বের পতন ঘটবে জনৈক রাসূলের হাতে, যিনি দীনের প্রচারক ও মর্যাদাশীল হবেন এবং সত্য ও ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে আসবেন। বিচার দিবস পর্যন্ত রাজত্ব তার সম্প্রদায়ের হাতে থাকবে।’

সম্রাট বললেন, ‘বিচার দিবস আবার কী?’ সে বলল, ‘যে দিবসে সকল কর্মের প্রতিদান দেয়া হবে। সেদিন আকাশ থেকে ঘোষণা দেয়া হবে। জীবিত মৃত সবাই সে ঘোষণা শুনবে। নির্দিষ্ট স্থানে তখন লোকজন সমবেত হবে। যারা তাকওয়া ও সংযম অবলম্বন করেছে, তারা তখন সফলতা ও কল্যাণ লাভ করবে।’ তিনি বললেন, ‘তুমি যা বলছো, তা কি সত্য?’ সে বলল, ‘হ্যাঁ, আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিপালকের শপথ এবং এ উভয়ের মাঝে উঁচু-নীচু যা কিছু আছে, তার সবগুলোর শপথ, আমি যা বলছি তা সত্য। তাতে কোন ব্যত্যয় নেই।’ ইবন ইসহাক বলেন, সাতীহ শাক-এর বক্তব্য রাবী’আ ইবন নাসরের মনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। তিনি তাঁর ছেলে-মেয়ে ও পরিবার-পরিজনকে ইরাকে পাঠিয়ে দিলেন এবং সাবুর ইবন খারজাম নামের জনৈক পারসিক রাজাকে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথা লিখে দিলেন। সে তাদের হীরা রাজ্যে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিল। ইবন ইসহাক বলেন, রবী’আ ইবন নাসরের অধঃস্তন বংশধর হলেন নুমান ইবন মুনযির ইবন নুমান ইবন মুনযির ইবন আমর ইবন আদী ইবন রবীআ ইবন নাসর। এই নুমান পারস্য রাজ্যের প্রতিনিধিরূপে হীরা শাসন করতেন। আরবগণ তার নিকট যেত এবং তার প্রশংসা করত। মুহাম্মদ ইবন ইসহাক যা বলেছেন যে, নুমান ইবন মুনযির রবীআ ইবন নাসরের অধঃস্তন পুরুষ, অধিকাংশ ঐতিহাসিক তা সমর্থন করেছেন।

ইবন ইসহাক বর্ণনা করেন যে, নুমান ইবন মুনযিরের তরবারী হযরত উমর ইবন খাত্তাবের (রা) নিকট আনয়ন করা হলে তিনি জুবায়র ইবন মুতইম (রা)-কে জিজ্ঞেস করলেন যে, ‘সে কার বংশধর?’ জুবায়র (রা) বললেন, ‘সে কানাস ইবন মা’আদ ইব্‌ন আদনানের বংশধর। ইবন ইসহাক বলেন, ‘সে যে কোন বংশের ছিল তা আল্লাহই ভাল জানেন।’

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন