hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৮৫
রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জন্ম
রাসূলুল্লাহ (সা) সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করেন। ইমাম মুসলিম তার সহীহ মুসলিমে আবু কাতাদা (র) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, এক বেদুইন জিজ্ঞাসা করল, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! সোমবার দিনের রোযা সম্পর্কে আপনি কী বলেন?’ জবাবে রাসুলুল্লাহ (সা) বললেনঃ “ঐ দিনেই তো আমার জন্ম এবং ঐ দিনেই আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণ হয়।”

ইমাম আহমদ (র) ইবন আব্বাস (রা)-এর বরাতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা) জন্মগ্রহণ করেছেন সোমবার দিন, নবুওত পেয়েছেন সোমবার দিন, মদীনা হিজরতের উদ্দেশ্যে মক্কা ত্যাগ করেছেন সোমবার দিন, মদীনায় পৌঁছেছেন সোমবার দিন, তার ওফাত হয়েছে সোমবার দিন এবং হাজরে আসওয়াদ স্থাপন করেছেন সোমবার দিন।’ অপর এক বর্ণনায় আছে, সূরা মায়িদার আয়াত

( ٱلۡیَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِینَكُمۡ )

[Surah Al-Ma’idah 3]

(আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম) এর অবতরণ এবং বদর যুদ্ধও এই সোমবার দিন সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু এই অভিমতটি সঠিক নয়। কারণ, ইবন আসাকিরের মতে নির্ভরযোগ্য অভিমত হলো, বদর যুদ্ধ ও আলোচ্য আয়াতের অবতরণ শুক্রবার দিন হয়েছে। তার অভিমতটিই যথার্থ। আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা) সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সোমবার দিনই ইন্তিকাল করেছেন। এভাবে ভিন্ন সূত্রে ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সোমবার দিনই ইন্তিকাল করেছেন। এভাবে ভিন সূত্রে ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) সোমবার দিন জন্ম গ্রহণ করেছেন, তাঁর সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করার ব্যাপারে কারও কোন দ্বিমত নেই। যিনি বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) রবিউল আউয়াল মাসের সতের তারিখ শুক্রবার দিন জন্মগ্রহণ করেছেন, তিনি মারাত্মক ভুল করেছেন। হাফিজ ইবনে দিহইয়া জনৈক শিয়ার ‘ইলামুর রাবী বি-ইলামিল হাদী’ নামক গ্রন্থ থেকে এরূপ একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেন। তিনি একে যয়ীফ বলে মন্তব্য করেছেন। এটা আসলেও দুর্বল।

জমহুর আলিমগণের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত যে, রাসূলুলাহ (সা) জন্মের মাসটি হলো রবিউল আউয়াল মাস। তারিখের ব্যাপারে নানা অভিমত রয়েছে। ইবন আবদুল বার তার ইসতিয়াব গ্রন্থে রবিউল আউয়াল মাসের ২ তারিখের কথা উল্লেখ করেছেন। ওয়াকিদীও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হুমায়দী ইবন হাযম থেকে ৮ তারিখের কথা উল্লেখ করেছেন। মালিক, আকীল ও ইউনুস ইবন ইয়াযীদ প্রমুখ যুহরী মুহাম্মদ ইবন জুবায়র ইবন মুৎইম সূত্রে এই অভিমত বর্ণনা করেছেন। ইবন আবদুল বার বর্ণনা করেছেন যে, ঐতিহাসিকগণ এই অভিমতকে সঠিক বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। হাফিয মুহাম্মদ ইবন মুসা আল-খাওয়ারেযমী এই অভিমতটি অকাট্য বলে দাবি করেছেন। হাফিয আবুল খাত্তাব ইবন দিহইয়া তাঁর ‘আত তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীরিন নাযীর’ গ্রন্থে এই অভিমতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। কারও কারও মতে, রবিউল আউয়াল মাসের দশ তারিখ। ইবন দিহইয়া তার কিতাবে এই অভিমত উদ্ধৃত করেছেন। ইবন আসাকির আবু জাফর আল-বাকির থেকে এবং মুজালিদ (র) শা’বী থেকে এই অভিমত উদ্ধৃত করেছেন। কারও কারও মতে রবিউল আউয়াল মাসের বার তারিখ। ইবন ইসহাক এ অভিমতের পক্ষে সুস্পষ্ট বক্তব্য পেশ করেছেন।

ইবন আবু শায়বা তাঁর ‘মুসান্নাফ’ গ্রন্থে হযরত জাবির (রা) এবং ইবন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) হাতির ঘটনার পর রবিউল আউয়াল মাসের আঠার তারিখ সোমবারে জন্মগ্রহণ করেন। এই দিনেই তিনি নবুওত লাভ করেন। এই দিনেই তাঁর মিরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়, এই দিনেই তিনি হিজরত করেন এবং এই দিনেই তাঁর ওফাত হয়। জমহুরের নিকট এই অভিমতই প্রসিদ্ধ। আল্লাহই সম্যক জ্ঞাত।

কারও কারও মতে, রবিউল আউয়ালের সতের তারিখ। ইবন দিহইয়া কোন কোন শিয়া আলিম থেকে এটি উদ্ধৃত করেছেন। কেউ কেউ বলেন, রবিউল আউয়ালের ৮ দিন বাকী থাকতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ইবন দিহইয়া ইবন হাযম থেকে এই অভিমত উদ্ধৃত করেছেন। তবে ইবন হাযম থেকে বিশুদ্ধভাবে বর্ণিত দু’টি মতের বিশুদ্ধতর প্রথমটি হচ্ছে নবী করীম (সা)-এর জন্ম রবিউল আউয়ালের আট তারিখে। তা থেকে বর্ণিত দ্বিতীয় অভিমতটি হচ্ছে এই যে, রাসূলুল্লাহ (সা) রমযান মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন। এটি অত্যন্ত গরীব পর্যায়ের বর্ণনা। এই অভিমতের ভিত্তি এই যে, যেহেতু সর্বসম্মত মতে কোনও এক রমযান মাসে নবী করীম (সা)-এর প্রতি প্রথম ওহী নাযিল হয় আর তা ছিল তাঁর চল্লিশ বছর বয়সে, কাজেই তার জন্মও রমযান মাসেই হয়ে থাকবে। তবে এই অভিমতটিতে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে।

খায়ছামা ইবন সুলায়মান..... ইবন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুৱাহ (সা) রবিউল মাসে সোমবার দিন জন্মগ্রহণ করেন। রবিউল আউয়াল মাসের শুরুর দিকে সোমবার তিনি নবুওত লাভ করেন এবং ঐ মাসেরই সোমবার তার প্রতি সূরা বাকারা নাযিল হয়। ইবন আসাকিরের এ বর্ণনা অত্যন্ত গরীব পর্যায়ের। যুবায়র ইবন বাক্কার বলেন, নবী করীম (সা)-কে তার মা আবী তালিবের গিরিসঙ্কটে দ্বিতীয় জামরার নিকট আইয়ামে তাশরীকে গর্ভে ধারণ করেন এবং রমযান মাসের বার তারিখে তিনি সেই রাতেই ভূমিষ্ঠ হন, যা পরবর্তীতে হাজ্জাজ ইবন ইউসুফ এর ভাই মুহাম্মদ ইবন ইউসুফ-এর বাড়ি বলে পরিচিত হয়।

হাফিজ ইবন আসাকির বর্ণনা করেন যে, রাসূল (সা) মুহররমের দশ তারিখে মায়ের গর্ভে আসেন এবং রমজান মাসের বার তারিখ সোমবার জন্মগ্রহণ করেন। এটি ছিল বাড়ীর ঘটনার ২৩তম বছরে। কথিত আছে যে, খলিফা হারূনুর রশীদ এর মা খায়জারান যখন হজ্জে যান, তখন উক্ত বাড়িটিকে মসজিদে পরিণত করার আদেশ দেন। পরবর্তীকালে ঐ বাড়িটি তাঁরই নামে পরিচিত হয়।

সুহায়লী উল্লেখ করেন, রাসুলুল্লাহ (সা)-এর জন্ম ছিল নয়সান তথা এপ্রিলের বিশ তারিখে। ননসান হলো সময় ও ঋতুর দিক থেকে সর্বাপেক্ষা ভারসাম্যপূর্ণ। পঞ্জিকাবিদদের মতে এটি যুলকারনায়ন-এর আটশত বিরাশি বছর পরের ঘটনা।

ইবন ইসহাক বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা)-এর জন্মের ঘটনাটি ঘটেছিল হস্তী বাহিনীর বায়তুল্লাহ আক্রমণের বছর। জমহুরের নিকট এটাই প্রসিদ্ধ অভিমত। ইবরাহীম ইবন মুনযির হিযামী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) যে হস্তীবাহিনীর ঘটনার বছর জন্মগ্রহণ করেছেন এবং এর চল্লিশ বছরের মাথায় নবুওত লাভ করেছেন, তাতে আমাদের আলিমগণের কারও কোনও সংশয় নেই। বায়হাকী ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা) হস্তীবাহিনীর ঘটনার বছর জন্মলাভ করেছেন। ইবন ইসহাক বর্ণনা করেন যে, কায়স ইবন মাখরামা (রা) বলেছেন, আমি এবং রাসূলুল্লাহ (সা) হস্তীবাহিনীর ঘটনার বছর জন্মগ্রহণ করি। আমাদের জন্য একই সময়ে। উছমান (রা) বনী ইয়ামুর ইবন লায়ছ গোত্রের কুবাছ ইবন। আশইয়ামকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘আপনি বড়, নাকি রাসূলুলাহ (সা) বড়?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘বড় তো রাসূলুল্লাহ (সা)-ই।’ তবে আমি তাঁর আগে দুনিয়াতে এসেছি। হস্তীবাহিনীর ধ্বংসলীলা আমি স্বচক্ষে দেখেছি। ইবন ইসহাক বলেন, উকায-এর বছর রাসূলুল্লাহ (সা)-এর বয়স ছিল বিশ বছর।

ইবন ইসহাক বলেন, ফিজার যুদ্ধের ঘটনা হস্তী বাহিনীর ঘটনার বিশ বছর পর সংঘটিত হয়েছে। কা’বা পুনঃনির্মাণের ঘটনা ঘটেছে ফিজারের পনের বছর পর। আর রাসূলুল্লাহ (সা) নবুওত লাভ করেন কা’বা পুনঃনির্মাণের পাঁচ বছর পর। মুহাম্মদ ইবন জুবায়র ইবন মুতইম বলেন, উকায মেলা বসেছিল হস্তির ঘটনার পনের বছর পর। কা’বা পুনঃনির্মাণ হয়েছে উকাযের দশ বছর পরে। আর রাসূলুল্লাহ নবুওত লাভ করেন কা’বা পুনঃনির্মাণের পনের বছর পর।

হাফিজ বায়হাকী বর্ণনা করেন যে, আবুল হুওয়ায়রিছ বলেন, আমি শুনেছি যে, আবদুল মালিক ইবন মারওয়ান কুবাছ ইবন আহশাম কিনানীকে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘কুবাছ! তুমি বড়, না রাসূলুল্লাহ (সা) বড়?’ জবাবে কুবাছ বললেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা) আমা অপেক্ষা বড়। তবে আমার বয়স তার চাইতে বেশি। রাসূলুল্লাহ (সা) হস্তির ঘটনার বছর জন্মগ্রহণ করেছেন। আর স্পষ্ট মনে আছে যে, আমার মা আমাকে নিয়ে হাতির বিষ্টার নিকট গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আর রাসূলুল্লাহ (সা) জন্মের চল্লিশ বছরের মাথায় নবুওত লাভ করেন।’

ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান বর্ণনা করেন যে, সুওয়াইদ ইবন গাফালা বলেছেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সমবয়সী। হস্তির ঘটনার বছর আমার জন্ম।’ বায়হাকী বলেন যে, সুওয়াদ ইবন গাফালা সম্পর্কে এও বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর দু’বছরের ছোট।’ মুহাম্মদ ইবন জুবায়র ইবন মুতইম বলেন, হাতীর ঘটনার বছর রাসূলুল্লাহ (সা) জন্মগ্রহণ করেন। এর পনের বছর পর অনুষ্ঠিত হয় উকায মেলা। পঁচিশ বছর পর কাবা পুনঃনির্মিত হয়। চল্লিশ বছরের মাথায় নবী করীম (সা) নবুওত লাভ করেন।

সারকথা, জমহুর-এর অভিমত অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সা) হস্তির ঘটনার বছর জন্মগ্রহণ করেছেন। কারও মতে হস্তির ঘটনার একমাস পরে। কারও মতে চল্লিশ দিন পরে, অপর কারও মতে পঞ্চাশ দিন পরে। পঞ্চাশ দিনের অভিমতই সর্বাধিক প্রসিদ্ধ।

আবু জাফর বাকের (র) থেকে বর্ণিত যে, হস্তি বাহিনীর আগমনের ঘটনা মুহাররমের মধ্য ভাগে ঘটেছিল আর রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জন্মের ঘটনা ঘটে তার পঞ্চান্ন দিন পরে। অন্যরা বলেন, না বরং হস্তির ঘটনা ঘটেছে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জন্মের দশ বছর আগে। ইবন আবযা এরূপ বলেছেন। কারও কারও মতে, তেইশ বছর আগে। কেউ কেউ বলেছেন, ত্রিশ বছর পরে। মূসা ইবন উকবা যুহরী থেকে এই অভিমত ব্যক্ত করেন এবং তিনি ওই অভিমত সমর্থনও করেছেন। আবু যাকারিয়া আজলানী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জন্ম হস্তির ঘটনার চল্পিশ বছর পরের ঘটনা। ইবন আসাকিরের এই বর্ণনা অত্যন্ত গরীব পর্যায়ের। ইবন আব্বাস (রা) থেকে একটি বর্ণনা আছে যে, তিনি বলেছেন রাসূলুল্লাহ (সা) হস্তির ঘটনার পনের বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন। তবে এই বর্ণনাটি গরীব, মুনকার ও দুর্বল। তবে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জন্ম হস্তির ঘটনার বছরে হওয়ার বিষয়টি প্রায় সর্বসম্মত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন