hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৬১
লাখনীআ’হ যূশানাতির-এর ইয়ামান আক্রমণ
উপরোক্ত রাজা ২৭ বছর সেখানে রাজত্ব করেন। ইবন ইসহাক বলেন, এরপর হিমইয়ার গোত্রের এক ব্যক্তি ইয়ামানীদের উপর আক্রমণ চালায়। সে মূলত রাজবংশীয় ছিলেন তার নাম ছিল লাখনী আহি ইয়ানূফযু শানাতির। ইয়ামানের সম্ভ্রান্ত লোকদেরকে সে হত্যা করে এবং রাজ পরিবারের অন্তঃপুরবাসীদেরকে নিয়ে রস কৌতুক করে। তার সাথে ছিল একজন অসৎ লোক। সে ছিল লূত সম্প্রদায়ের অপকর্ম সমকামিতায় অভ্যস্ত। সে রাজ পরিবারের অপ্রাপ্তবয়স্ক বালকদেরকে তুলে আনতে নির্দেশ দিত। পরে ঐ ছেলেকে নিয়ে ঘৃণিত সমকামিতা সম্পাদনের জন্যে নির্মিত একটি কক্ষে গিয়ে তার অসদুদ্দেশ্য চরিতার্থ করত। যাতে রাজ পরিবারের কেউ পরবর্তীতে রাজা হতে না পারে। অপকর্ম শেষে নিজের মুখে একটি দাঁতন গুঁজে দিয়ে সে তার প্রহরী ও উপস্থিত সৈন্যদের দিকে তাকিয়ে দেখত, তখন তারা বুঝে নিত যে, সে তার অপকর্ম শেষ করেছে। শেষ পর্যন্ত সে লোক পাঠায় হাসানের ভাই যুর’আ যূ-নুওয়াস ইবন তুব্বান আসআদকে ধরে নিতে। তার ভাই হাসসান যখন নিহত হয় তখন সে ছিল ছোট্ট শিশু পরবর্তীতে সে সুদর্শন, রূপবান ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন যুবক হিসেবে বেড়ে উঠে। পাপাচারী লোকটির প্রতিনিধিকে দেখে সে ঐ ব্যক্তির কুমতলব আঁচ করতে পারে। সে তখন পাতলা, নতুন ও সুতীক্ষ্ণ একটি ছুরি তার দু’পায়ের মাঝখানে জুতোর ভেতর লুকিয়ে রাখে এবং পাপাচারীর নিকট উপস্থিত হয়। এক সময় উভয়ে নির্জন কক্ষে পৌঁছায় পর সে যু-নুওয়াসকে সাপটে ধরে। সাথে সাথে যু-নুওয়াস তার লুকিয়ে রাখা ছুরি নিয়ে তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং আঘাতে আঘাতে তাকে হত্যা করে। তারপর তার মাথা কেটে নিয়ে সেই বাতায়নে রাখে যেখান দিয়ে সে বাহিরে তাকাত। তার মুখের মধ্যে গুঁজে দেয় তার দাঁতন। অতঃপর লোকজনের নিকট বেরিয়ে আসে।

লোকজন বলল, ‘হে যু-নুওয়াস, ব্যাপার কি? তাজা না শুকনো’ ; সে বলে, ‘ওকে জিজ্ঞেস কর, কোন অসুবিধা নেই।’ তখন তারা ঐ বাতায়নের দিকে তাকায়। তারা লাখনী আহ্ এর কর্তিত মুণ্ড দেখতে পায়। এরপর যূ-নুওয়াসের খোঁজে তারা বের হয়। শেষে তারা তাকে খুঁজে পায়। যূ-নুওয়াসকে তারা বলে আপনিই আমাদের রাজা হওয়ার উপযুক্ত ব্যক্তি। আপনিই সক্ষম হয়েছেন আমাদেরকে এই ঘৃণ্য ব্যক্তি কবল থেকে উদ্ধার করতে।

অতঃপর যূ-নুওয়াস তাদের রাজা হন। হিমাইয়ারীদের সকল লোক এবং ইয়ামানী সকল গোত্র তার নেতৃত্ব মেনে নেয়। সে সর্বশেষ হিমইয়ারী রাজা। তাকে ইউসুফ নামে অভিহিত করা হয়। দীর্ঘকাল তিনি ওখানে রাজত্ব করেন। হযরত ঈসা (আ)-এর দীন অনুসারী আসমানী কিতাব ইঞ্জিল আমলকারী কতক লোক তখন নাজরানে বসবাস করছিল। তাদের জনৈক ধর্মগুরু ছিল। তার নাম আব্দুল্লাহ্ ইবন ছামুর।

অতঃপর ইবন ইসহাক (র) নাজরানবাসীগণ কিভাবে খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করল, তার বর্ণনা দেন। তারা “ফাইমিউন” নামের জনৈক খষ্ট ধর্মাবলম্বী লোকের হাতে খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে। তিনি একজন নিষ্ঠাবান ইবাদতকারী লোক ছিলেন। সিরিয়ার কোন এক এলাকায় ছিল তার আস্তানা। তার দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল হত। সালিহ নামে এক লোক তার সাথী হয়। রবিবারে দু’জনে ইবাদতে মশগুল থাকতেন। সপ্তাহের অবশিষ্ট দিনগুলোতে ফাইমিউন নিজ ঘরের মধ্যে আমল করতেন। রোগী ও বিপদগ্রস্ত লোকদের জন্যে তিনি দোয়া করতেন। তার দোয়ার বরকতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সুস্থ ও বিপদ মুক্ত হত।

একদিন এক বেদুইবন তাদের দু’জনকে বন্দী করে নিয়ে যায় এবং নাজরান প্রদেশে নিয়ে তাদেরকে বিক্রি করে দেয়। যে ব্যক্তি ফাইমিউনকে খরিদ করেছিল সে লক্ষ্য করে যে, ফাইমিউন যে ঘরে নামায আদায় করে তার রাত্রিকালীন নামাযের সময় সমগ্র ঘর জ্যোতিতে জ্যোতির্ময় হয়ে উঠে। এতে সে অবাক হয়। সে যুগে নাজরানের লোকজন একটি সুদীর্ঘ খেজুর গাছের পূজা করত। মহিলাদের গহনা-পত্র এনে তারা ঐ গাছে ঝুলিয়ে দিত এবং ওখানে অবস্থান করতো।

একদিন ফাইমিউন তার মালিককে বলেন, ‘আমি যদি আল্লাহ তা’আলার দরবারে এই গাছটি ধ্বংসের জন্যে দোয়া করি এবং এটি ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে কি আপনারা একথা মেনে নিবেন যে, আপনারা যে মতবাদ পোষণ করেন তা বাতিল?’ মালিক বলল, ‘অবশ্যই আমরা তা মেনে নিব।’

অতঃপর সে নাজরানবাসীদেরকে ফাইমিউনের নিকট একত্রিত করে। ফাইমিউন নামাযে দাঁড়ান এবং খেজুর বৃক্ষ ধ্বংসের জন্যে আল্লাহর নিকট দোয়া করেন। আল্লাহ্ তাআলা প্রচণ্ড ঝড় প্রেরণ করেন। প্রচণ্ড ঝঞা এসে গাছটি উপড়ে ফেলে দেয়। এই প্রেক্ষিতে নাজরানের অধিবাসীগণ খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হয় এবং তিনি তাদেরকে আসমানী কিতাব ইবনজীল ভিত্তিক শরীয়ত পালনে উৎসাহিত করেন। এভাবেই তারা খ্রিষ্টধর্ম পালন করে আসছিল। অবশেষে বিশ্বব্যাপী খ্রিষ্ট ধর্মে যে আনাচার প্রবেশ করে তাদের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়। উপরোক্ত প্রেক্ষাপটেই আরব অঞ্চল নাজরানে খ্রিষ্ট ধর্মের সূত্রপাত হয়।

এরপর ইবন ইসহাক (র) ফাইমিউনের হাতে আব্দুল্লাহ ইবন ছামুরের খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ এবং ফাইমিউন ও তার অনুসারীদেরকে অগ্নিকূপে নিক্ষেপ করে রাজা যু-নুওয়াস কিভাবে হত্যা করে এসব বিবরণ উল্লেখ করেছেন।

ইবন হিশাম বলেন, ওদের জন্যে যে অগ্নিকূপ খনন করা হয়েছিল সেটি ছিল আয়তকার গর্তের ন্যায়। ঐ গর্তে আগুন জ্বালানো হয়েছিল এবং ওদেরকে ঐ আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। অবশিষ্ট লোকদেরকে হত্যা করা হয়। তখন প্রায় বিশ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। ইসরাঈলীদের ঘটনা প্রসংগে আমরা তা উল্লেখ করেছি। আমাদের তাফসীর গ্রন্থে সূরা বুরুজেও তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। সকল প্রশংসা আল্লাহর।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন