hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সিয়াম ও যাকাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩৮
তারাবীর সালাত কত রাক‘আত
তারাবীর সালাতের রাক‘আত নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেছেন বিশ রাক‘আত আবার কেউ বলেছেন আট রাক‘আত। এ ছাড়াও আরো অনেক মতামত রয়েছে। তবে বর্তমানে ২০ রাক‘আত ও ৮ রাকা‘আতের আমলই চালু আছে।

২০ রাক‘আতের দলীল :

عَن أَبُو الْخَصِيْبِ قَالَ : كَانَ يَؤُمُّنَا سُوَيْدُ بْنُ غَفَلَةَ فِىْ رَمَضَانَ فَيُصَلِّىْ خَمْسَ تَرْوِيْحَاتٍ عِشْرِيْنَ رَكْعَةً

আবুল খাসিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সুওয়াইদ বিন গাফলাহ রমাযান মাসে পাঁচ বৈঠকে বিশ রাক‘আত তারাবীহ পড়িয়েছেন। [সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৪৮০৩।]

عَنْ أَبِىْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ السُّلَمِىِّ عَنْ عَلِىٍّ قَالَ : دَعَا الْقُرَّاءَ فِى رَمَضَانَ ، فَأَمَرَ مِنْهُمْ رَجُلًا يُصَلِّىْ بِالنَّاسِ عِشْرِيْنَ رَكْعَةً . قَالَ : وَكَانَ عَلِىٌّ يُوْتِرُ بِهِمْ .

আবু আবদুর রহমান আস সুলামী (রহ.) আলী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি রমাযান মাসে কুররাদেরকে (হাফেযদেরকে) ডাকলেন এবং তাদের মধ্য থেকে একজনকে আদেশ দিলেন সে যেন লোকদেরকে নিয়ে ২০ রাক‘আত সালাত আদায় করে। (বর্ণনাকারী বলেন) আলী (রাঃ) তাদের বেতরের ইমামতি করতেন। [সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৪৮০৪।]

عَنْ عَبْدِ الْعَزِيْزِ بْنِ رُفَيْعٍ ، قَالَ : كَانَ أُبَيّ بْنُ كَعْبٍ يُصَلِّيْ بِالنَّاسِ فِيْ رَمَضَانَ بِالْمَدِيْنَةِ عِشْرِيْنَ رَكْعَةً وَيُوْتِرُ بِثَلَاثٍ .

আবদুল আযীয বিন রুফাই‘ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উবাই ইবনে কা‘ব (রাঃ) মদিনাতে রমাযান মাসে লোকদেরকে নিয়ে ২০ রাক‘আত সালাত আদায় করতেন এবং বেতর পড়তেন তিন রাক‘আত। [মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হা/৭৭৬৬।]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ  : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ كَانَ يُصَلِّيْ فِيْ رَمَضَانَ عِشْرِيْنَ رَكْعَةً وَالْوِتْرَ .

ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ রমাযান মাসে ২০ রাক‘আত সালাত আদায় করতেন এবং বেতরের সালাতও আদায় করতেন। [মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হা/৭৭৭৪।]

৮ রাক‘আতের দলীল :

عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَنَّه سَأَلَ عَائِشَةَ ، رَضِيَ اللهُ عَنْهَا ، كَيْفَ كَانَتْ صَلَاةُ رَسُوْلِ اللهِ فِيْ رَمَضَانَ فَقَالَتْ مَا كَانَ يَزِيْدُ فِي رَمَضَانَ ، وَلَا فِيْ غَيْرِهَا عَلٰى إِحْدٰى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُصَلِّيْ أَرْبَعًا فَلَا تَسَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُوْلِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّيْ أَرْبَعًا فَلَا تَسَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُوْلِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّيْ ثَلَاثًا ، فَقُلْتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ أَتَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوْتِرَ قَالَ يَا عَائِشَةُ إِنَّ عَيْنَيَّ تَنَامَانِ ، وَلَا يَنَامُ قَلْبِيْ

আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান (রহ.) হতে বর্ণিত। একদা তিনি আয়েশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, রমাযানের রাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সালাত কেমন ছিল? তিনি বললেন, রমাযান মাসে অথবা অন্য সময়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ ১১ রাক‘আতের চেয়ে বেশি সালাত আদায় করতেন না। তিনি প্রথমে ৪ রাক‘আত সালাত আদায় করতেন, যার সৌন্দর্য এবং দীর্ঘতা সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। তারপর এমন ৪ রাক‘আত সালাত আদায় করতেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে তুমি জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর তিনি ৩ রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। আয়েশা (রাঃ) আরো বলেন, আমি একদিন বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি বিতর আদায়ের পূর্বে ঘুমান? তিনি বললেন, হে আয়েশা! আমার চক্ষু ঘুমালেও হৃদয় ঘুমায় না। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হা/২৬৩; সহীহ বুখারী, হা/২০১৩; সহীহ মুসলিম, হা/১৭৫৭; আবু দাউদ, হা/১৩৪৩; তিরমিযী, হা/৪৩৯; নাসাঈ, হা/১৬৯৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪১১৯।]

উক্ত হাদীসের আলোকে এটা প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ রমাযান মাসের রাতে বিতর সহ মোট ১১ রাক‘আত সালাত আদায় করতেন।

525 عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ ، قَالَ : صَلّٰى بِنَا رَسُوْلُ اللهِ فِيْ شَهْرِ رَمَضَانَ ثَمَانِ رَكَعَاتٍ وَأَوْتَرَ ، فَلَمَّا كَانَتِ الْقَابِلَةُ اجْتَمَعْنَا فِي الْمَسْجِدِ وَرَجَوْنَا أَنْ يَخْرُجَ ، فَلَمْ نَزَلْ فِيْهِ حَتّٰى أَصْبَحْنَا ، ثُمَّ دَخَلْنَا ، فَقُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللهِ ، اجْتَمَعْنَا الْبَارِحَةَ فِي الْمَسْجِدِ ، وَرَجَوْنَا أَنْ تُصَلِّيَ بِنَا ، فَقَالَ : إِنِّيْ خَشِيْتُ أَنْ يُكْتَبَ عَلَيْكُمْ

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ রমাযান মাসে আমাদেরকে নিয়ে ৮ রাক‘আত সালাত আদায় করলেন এবং বিতরও আদায় করলেন। অতঃপর আমরা পরবর্তী দিন মসজিদে একত্রিত হলাম এবং আশা করলাম যে, তিনি ঘর থেকে বের হবেন; কিমত্মু তিনি বের হলেন না। ফলে আমরা সুবহে সাদিক পর্যমত্ম বসে থাকলাম। তারপর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে গেলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা গত রাতে মসজিদে একত্রিত হয়েছিলাম এবং আশা করেছিলাম যে, আপনি আমাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করবেন। তখন তিনি বললেন, আমি তোমাদের উপর ফরয হয়ে যেতে পারে সেই ভয় করছিলাম। [জামেউস সগীর, হা/৫২৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/২৪০৯; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১০৭০।]

এই হাদীসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাধান উল্লেখ রয়েছে। কেননা তারাবীর সালাত সম্পর্কে সকলেই একমত যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ একরাত বা কয়েক রাত সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে জামা‘আতে আদায় করেছেন। পরবর্তীতে ফরয হয়ে যাওয়ার ভয়ে তা আর করেনি। কিমত্মু তিনি সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে কত রাক‘আত আদায় করেছিলেন তার বর্ণনা ঐ হাদীসে পাওয়া যায় না। কিমত্মু এই হাদীসে বলা হয়েছে, আমাদের নিয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ আট রাক‘আত সালাত আদায় করেছেন এবং বিতর আদায় করেছেন।

সুতরাং যারা বিশ রাক‘আত তারাবীর প্রবক্তা তাদের পক্ষে এই হাদীসের এই ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয় যে, এটি তাহাজ্জুদের সালাত ছিল আর তারাবীহ ভিন্ন সালাত। কেননা, তাহাজ্জুদের সালাত ফরয হয়ে যাওয়ার ভয়ে এক বা কয়েক রাত আদায় করে ত্যাগ করেছেন- একথা আজ পর্যমত্ম কোন মুহাদ্দিস বা ফকীহ বলেননি। সুতরাং যে সালাতটি ফরয হয়ে যাওয়ার ভয়ে জামা‘আতে আদায় করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন সেটি অন্য কোন সালাত নয় বরং সেটি ছিল তারাবীর সালাত। আর তা ছিল ৮ রাক‘আত।

অন্য হাদীসে এসেছে,

عَنْ مَالِكٍ ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يُوْسُفَ ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيْدَ ، أَنَّهٗ قَالَ : أَمَرَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ أُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ وَتَمِيْمًا الدَّارِيَّ أَنْ يَقُوْمَا لِلنَّاسِ بِإِحْدٰى عَشْرَةَ رَكْعَةً قَالَ : وَقَدْ كَانَ الْقَارِئُ يَقْرَأُ بِالْمِئِيْنَ ، حَتّٰى كُنَّا نَعْتَمِدُ عَلَى الْعِصِيِّ مِنْ طُوْلِ الْقِيَامِ ، وَمَا كُنَّا نَنْصَرِفُ إِلَّا فِيْ فُرُوْعِ الْفَجْرِ

ইমাম মালিক (রাঃ) মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফের সূত্রে সায়েব ইবনে ইয়াযিদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ), উবাই ইবনে কাব এবং তামীম দারী (রাঃ) লোকদেরকে নিয়ে ১১ রাক‘আত সালাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। সায়েব (রহ.) বলেন, অথচ কোন কোন সময় ক্বারী ২০০ আয়াত পর্যমত্ম তিলাওয়াত করতেন। আর দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে আমরা লাঠির উপর ভর করতাম এবং আমরা ফজর উদিত না হওয়া পর্যমত্ম সালাত থেকে প্রত্যাবর্তন করতাম না। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হা/২৫১; সুনানুল কুবরা বায়হাকী, হা/৪৮০০; মিশকাত, হা/১৩০২।]

সুতরাং সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো, উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) ২০ রাক‘আত তারাবীহ পড়ানোর নির্দেশ দেননি। বরং তিনিও ৮ রাক‘আত তারাবীহ পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।

২০ রাক‘আতের হাদীসগুলোর অবস্থান :

২০ রাক‘আতের হাদীসগুলো সহীহ সনদে বর্ণিত হয়নি যদিও হাদীসের সংখ্যা অনেক বেশি। দেওবন্দের উসত্মাদ এবং ভারত বিখ্যাত মণীষী আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী (রহ.) বলেন, ২০ রাক‘আত সম্পর্কে যতগুলো হাদীস আছে সবগুলোর সনদই যঈফ। ঐগুলোর যঈফ হওয়া সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণ একমত। [আল আরফুশ শাযী ৩০৯ পৃঃ]

হেদায়া কিতাবে বর্ণিত হাদীসসমূহের ভুল-ত্রুটি যাচাইকারী পন্ডিত আল্লামা যায়লায়ী (রহ.) বলেন ২০ রাক‘আতের হাদীস যঈফ হওয়ার সাথে সাথে আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত সহীহ হাদীসের বিরোধী। [নাসবুর রায়হ ২/১৫।]

নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ.) তার প্রসিদ্ধ ‘তামামূল মিন্নাহ’ নামক কিতাবে বলেন, উসমান (রাঃ) এর থেকে ২০ রাক‘আত তারাবীহ সম্পর্কে দুর্বল সনদেও কোন হাদীস বর্ণিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আর উমর ও আলী (রাঃ) থেকে যে হাদীসগুলো বর্ণনা করা হয়েছে তার সবগুলোই দুর্বল। [তামামুল মিন্নাহ ২/২৬৫।]

তাছাড়া জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ সাহাবায়ে কেরামদেরকে নিয়ে আট রাক‘আত তারাবীর সালাত আদায় করেছিলেন। তারপর বিতর আদায় করেছিলেন।

মতবিরোধের মূল কারণ :

এখানে মতবিরোধের মূল কারণ হলো, তারাবীহ ও কিয়ামুল লাইল কি একই সালাতের দুটি নাম? নাকি উভয়টি ভিন্ন ভিন্ন সালাত?

যারা ২০ রাক‘আত তারাবীর প্রবক্তা তারা তারাবীর সালাত ও কিয়ামুল লাইলকে ভিন্ন ভিন্ন সালাত হিসেব করে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসকে তাহাজ্জুদের সালাত সম্পর্কে ধরে নিয়েছেন।

আর যারা তারাবীহ ও কিয়ামুল লাইলকে এক ও অভিন্ন মনে করেন, তারা আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের মাধ্যমে ৮ রাক‘আতের দলীল পেশ করেন। আর ২০ রাক‘আতের হাদীসগুলোকে দুর্বল সনদের কারণে গ্রহণযোগ্য নয় বলে বাতিল করে দেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন