hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সিয়াম ও যাকাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

রমাযান মাসের গুরুত্ব ও ফযীলত
রমাযান মাস অন্যান্য মাস থেকে বিশেষ গুরুত্বের দাবীদার। কেননা রমাযান মাস সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসে যত আলোচনা এসেছে অন্য কোন মাস সম্পর্কে ততটা আসেনি। রমাযান মাস নিয়ে যতবেশি চিন্তা-গবেষণা ও লেখা-লেখি করা হয় অন্য কোন মাস নিয়ে ততটা হয় না। প্রতি বছর রমাযান আসে- রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে। রমাযান মাস যখন ঘনিয়ে আসে তখন মুমিনের হৃদয়ে বিরাজ করে চরম আনন্দ। রমাযানকে পাওয়ার আশায় সবাই থাকে অপেক্ষমান। কী টান! কী আকর্ষণ! এ মাসের জন্য। এর কারণ হচ্ছে রমাযান কুরআনের মাস, দু‘আ কবুলের মাস, জীবনের গোনাহসমূহ থেকে মুক্তি পাওয়ার মাস, বেশি বেশি নেকী অর্জন করার মাস।

রমাযানের এত মর্যাদা কেন ?

যেসব কারণে রমাযানের ফযীলত বেড়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হলো, এ মাসেই আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদ নাযিল করেছেন। বিশ্বের মানুষ যখন অজ্ঞতার অন্ধকারে দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল, বর্বরতার ভয়াল থাবায় মানুষ যখন অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল, ঠিক এমনই মুহূর্তে এসব ভ্রামত্ম জাতিকে সত্যের মশাল দেখানোর জন্য আল্লাহ তা‘আলা মানুষের প্রতি দয়া পরবশ হয়ে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নাযিল করেন, যা ছিল বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ এর জন্য চিরস্থায়ী মু’জিযা। এর মাধ্যমে তিনি অসভ্য ও বর্বর জাতির মধ্য থেকে এমন একদল মর্দে মুজাহিদ তৈরি করেছিলেন, যাঁরা সত্য ও ন্যায়ের পথে নিজেদের জীবন পর্যন্ত বিলিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করতেন না। এ কুরআন দিয়ে তিনি একটি ঐতিহাসিক বিপ্লব সাধন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। যে রাতে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নাযিল শুরু হলো সেই রাতটি হাজার মাস থেকেও উত্তম ও মর্যাদাপূর্ণ। আর সেই রাতটি রমাযান মাসে হওয়াতে পুরো মাসটাই ফযীলতপূর্ণ হলো। এদিকে ইঙ্গিত করেই আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيْۤ اُنْزِلَ فِيْهِ الْقُرْاٰنُ﴾

রমাযান তো সেই মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে। (সূরা বাকারা- ১৮৫)

রমাযান মাসের বহুমুখী কল্যাণ :

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - إِذَا دَخَلَ شَهْرُ رَمَضَانَ فُتِحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِيْنُ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন রমাযান মাস আরম্ভ হয় তখন আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়; আর শয়তানদেরকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রাখা হয়। [সহীহ বুখারী, হা/১৮০০; সহীহ মুসলিম, হা/২৫৪৮; নাসাঈ, হা/২০৯৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৭৬৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩৪৩৪; মুসত্মাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/২১৭২; বায়হাকী, হা/৮২৮৩; মুসনাদুল বাযযার, হা/৯২৫২; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হা/৮৩৮৪; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হা/৮৯৬১; মিশকাত, হা/১৯৫২।]

অত্র হাদীসে মুমিনদেরকে তিনটি সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে। তা হলো-

১। রমাযান মাসের বিশেষ মর্যাদার কারণে আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অপর বর্ণনায় এসেছে, রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। এ মাসে যেহেতু অজস্রধারায় রহীম ও রহমান আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত নাযিল হতে থাকে এবং রহমতের ফেরেশতারা অবিরাম আসা-যাওয়া করে; মূলত এজন্যই এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাদীসের অপর বর্ণনায় এসেছে, এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। কারণ মানুষ এ মাসে বেশি বেশি নেক আমল করে এবং প্রতিটি আমলের জন্য অতিরিক্ত সওয়াব অর্জন করতে সক্ষম হয়, যার ফলে সে জান্নাতের উপযুক্ত হয় এবং জান্নাতের কাছাকাছি চলে যায়।

২। এ মাসে জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। কারণ এ সময় মানুষ অন্য মাসের চেয়ে কম খারাপ কাজ করে, যার ফলে জাহান্নাম থেকে সে দূরে থাকার সুযোগ পায়।

৩। এ মাসে দুষ্ট শয়তানকে বেঁধে রাখা হয়। এজন্য শয়তানী কার্যকলাপ কম হয়। তবে এ মাসে শয়তানকে বেঁধে রাখা হলেও অনেকেই গোনাহের কাজ করে থাকে। এর কারণ হচ্ছে,

 মানুষের নফসে আম্মারা তথা কুপ্রবৃত্তি তাকে পাপের দিকে আকৃষ্ট করে।

 শয়তান যাকে ১১ মাস কুমন্ত্রণা দিতে পারে তাকে একমাস কুমন্ত্রণা না দিলেও সে পাপকাজ করে যায়। কারণ সারা বছর শয়তানের কাজ করলে শয়তানী কাজ অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। এজন্য একমাস শয়তান শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকলেও পূর্বের অভ্যাসের কারণে মানুষ পাপকাজ করে থাকে।

রমাযান বরকতের মাস :

রমাযান মাস বরকতের মাস। এ মাসে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের প্রতি অনেক বরকত নাযিল করে থাকেন। যেমন-

১। এ মাসে আল্লাহ তা‘আলা মুমিনের রিযিক বৃদ্ধি করে দেন। ফলে অন্যান্য মাসের তুলনায় এ মাসে ব্যবসা-বাণিজ্য ও খাওয়া-দাওয়ায় তাদের মধ্যে অনেক স্বচ্ছলতা লক্ষ্য করা যায়।

২। এ মাসে আল্লাহ তা‘আলা শারীরিক শক্তির ক্ষেত্রেও বরকত দান করে থাকেন। ফলে আমাদের পক্ষে অন্যান্য মাসের তুলনায় এ মাসে সারা দিন না খেয়ে থাকাটা অনেক সহজ মনে হয় এবং কষ্টও কম হয়। তাছাড়া অন্যান্য মাসের তুলনায় আমরা খুব কমই অসুস্থতা বোধ করে থাকি।

৩। এ মাসে আল্লাহ তা‘আলা বান্দার ইবাদাতেও বরকত দান করে থাকেন। ফলে আমাদের জন্য অন্যান্য মাসের তুলনায় এ মাসে অধিক হারে ইবাদাত করার সুযোগ লাভ হয়।

৪। এ মাসে আল্লাহ তা‘আলা বান্দাকে সওয়াব প্রদানের ক্ষেত্রেও প্রচুর বরকত দান করে থাকেন। অন্যান্য মাসে আল্লাহ তা‘আলা বান্দাকে ইবাদাতের প্রতিদানস্বরূপ যদি একটি নেকী প্রদান করে থাকেন, তাহলে এই মাসে উক্ত ইবাদাতের কারণে অনেক বেশি নেকী প্রদান করে থাকেন। এরপরেও আরো বিশেষ কিছু ইবাদাতের জন্য বিশেষ সওয়াব তো রয়েছেই। যেমন- লাইলাতুল কদর, উমরা পালন করা ইত্যাদি।

রমাযান ধৈর্যের মাস :

রমাযান আমাদেরকে সবরের (ধৈর্যের) প্রশিক্ষণ দেয়। ভোর থেকে নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদিন খানা-পিনা ও মনের চাহিদা পূরণ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে মুমিন এক চরম ধৈর্য পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। আর ধৈর্য মুমিনের জন্য এমন একটি গুণ, যার প্রতিদান হলো জান্নাত। এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُوْنَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ ﴾

সবরকারীদেরকে অগণিত পুরস্কার প্রদান করা হবে। (সূরা যুমার- ১০)

রমাযান সাম্য ও সমতার মাস :

রমাযান মুসলিম মিল্লাতের মধ্যে সাম্যের হাওয়া বয়ে আনে। সাদা-কালো, ধনী-গরীব, রাজা-প্রজা, সকলকে এক ও একাকার করে দেয়। যারা সর্বদা ভোগ-বিলাসের মধ্যে থাকে তাদেরকেও ঐ সকল লোকদের সাথে শামিল হতে হয়, যারা সকালে খেলে দুপুরে খেতে পায় না। যত বড় রাজা-বাদশাহ-ই হোক না কেন এমনটি কখনো হয় না যে, তার জন্য সাহারীর সময় একটু পেছানোর সুযোগ থাকে অথবা নির্দিষ্ট সময়ের একটু আগে তাকে ইফতারের সুযোগ দেয়া হয়; বরং সকলকে একই সময়ে খাওয়া বন্ধ করতে হয় আবার একই সময়ে খাওয়া শুরু করতে হয়, আবার তারাবীর সালাতে গিয়ে সবাইকে একই কাতারে দাঁড়াতে হয়। এটা সাম্যের এক জ্বলন্ত উদাহরণ।

রমাযান রহমত ও মাগফিরাতের মাস :

আল্লাহ তা‘আলার একটি নাম হচ্ছে ‘রহমান’ তথা অতি দয়ালু। আর আরেকটি নাম হচ্ছে, ‘গাফূর’ তথা ক্ষমাশীল। আল্লাহ তা‘আলা রমাযান মাসে তার এ দুটি নামের পরিপূর্ণ বাসত্মবায়ন ঘটান। একদিকে তিনি এ মাসে বান্দাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে তাদের নেক আমলের সওয়াব বহু গুণে বাড়িয়ে দেন। আর অপরদিকে তিনি তাওবাকারী বান্দাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দিয়ে, তাদেরকে জাহান্নামের কঠিন শাসিত্ম থেকে মুক্তি দান করেন।

রমাযান দু‘আ কবুলের মাস :

আল্লাহ তা‘আলা সিয়াম পালনকারীর দু‘আ কবুল করেন। সূরা বাকারায় রমাযান সংক্রান্ত আলোচনার মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِيْ عَنِّيْ فَإِنِّيْ قَرِيْبٌ أُجِيْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيْبُوْا لِيْ وَلْيُؤْمِنُوْا بِيْ لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُوْنَ﴾

(হে নবী!) আমার বান্দারা যখন আমার সম্পর্কে তোমার কাছে জানতে চায় তখন তুমি জানিয়ে দাও যে, আমি একেবারেই নিকটে। কোন প্রার্থনাকারী যখন আমাকে ডাকে তখন আমি তার প্রার্থনা কবুল করি। সুতরাং তারা যেন আমার কথা মেনে চলে এবং আমার প্রতি বিশ্বাস রাখে, যাতে তারা সৎপথ পেতে পারে। (সূরা বাকারা- ১৮৬)

তাছাড়া হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : ثَلَاثُ دَعَوَاتٍ مُسْتَجَابَاتٌ دَعْوَةُ الصَّائِمِ وَدَعْوَةُ الْمَظْلُوْمِ وَدَعْوَةُ الْمُسَافِرِ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তিন শ্রেণির লোকের দু‘আ ফেরত দেয়া হয় না, ১. রোযাদারের দু‘আ, ২. মাযলুম ব্যক্তির দু‘আ এবং ৩. মুসাফিরের দু‘আ। [দু‘আউ লিত তাবারানী, হা/১৩১৩; জামেউস সগীর, হা/৫৩৪১; মুসনাদুল বাযযার, হা/৮১৪৮।]

এ থেকে বুঝা যায় যে, রমাযান মাসে দু‘আ কবুলের বিশেষ সুযোগ রয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন