hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সিয়াম ও যাকাত

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৭৩
রোযা ও আত্মসংযম
 রোযার নৈতিক ও আধ্যাত্মিক অন্যতম সুফল হলো রোযা মানুষের মধ্যে আত্মসংযমতা তৈরি করে। মানুষের নফস বা প্রবৃত্তি তিন প্রকার :

১. নাফসে আম্মারা : এটি সর্বদা মানুষকে মন্দ কাজের দিকে প্রেরণা দেয়। সূরা ইউসুফের ৫৩ নং আয়াতে এ বিষয়ে উল্লেখ আছে।

২. নাফসে লাওয়ামা : এ নফসের অধিকারী মানুষ খারাপ কাজ করে ফেলে; কিন্তু পরে যখন তার বিবেক সজাগ হয় তখন সে নিজেকে তিরস্কার করে। সূরা কিয়ামার ২ নং আয়াতে এ বিষয়ে উল্লেখ আছে।

৩. নাফসে মুতমাইন্না : প্রশান্ত আত্মা, নফসের উপর চেষ্টা সাধনা করতে করতে যখন এমন স্তরে পৌঁছে যায় যে, তার মধ্যে মন্দ কাজের কোন স্পৃহা থাকে না, গোনাহের কাজে ভয় পায় আর ভালো কাজে খুশি হয় তখন তাকে নাফসে মুতমাইন্না বলা হয়। এ আত্মাকে বলা হবে

﴿يَاۤ أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ اِرْجِعِيْۤ إِلٰى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً فَادْخُلِيْ فِيْ عِبَادِيْ وَادْخُلِيْ جَنَّتِيْ﴾

হে প্রশান্ত আত্মা! তুমি সন্তুষ্ট এবং সন্তোষভাজন হয়ে তোমার প্রভুর দিকে চলো। অতঃপর আমার (নেক) বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং প্রবেশ করো আমার জান্নাতে। (সূরা ফাজর, ২৭-৩০)

 মানুষের নাফস বা আত্মাকে পর্যায়ক্রমে উন্নত করতে হলে এর উপর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্জন করতে হয় এবং একে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী চালাতে হয়। এটাই হচ্ছে সংযমতা বা আত্মাকে সংযত করা।

 মানুষের মন হলো রাজা আর অঙ্গ-প্রতঙ্গ হলো প্রজা, মন যা পরিকল্পনা করে শরীরের অঙ্গগুলো তা বাস্তবায়ন করে। এই মনকে ভালো ও কল্যাণকর পরিকল্পনায় নিয়োজিত না করে যে একে লাগামহীনভাবে ছেড়ে দেয়, তার অবস্থা হয়ে যায় ঐ অশ্বারোহীর মতো যে তার অশ্বকে কাবু করতে পারে না, অশ্ব যেদিকে যেতে চায় তাকে নিয়ে সেদিকে চলে যায়।

 এ পৃথিবীতে মানুষের ইতিহাসে যাঁরা স্মরণীয় ও বরণীয় হয়েছেন তাঁরা তাঁদের আভ্যন্তরীণ শক্তিকে নিজেদের অধীন ও অনুগত করে নিয়েছিলেন। তাঁরা কোন দিনই নাফসের লোভ-লালসা এবং আবেগের গোলাম হননি। তাঁদের ইচ্ছা-বাসনা ছিল মযবুত, সংকল্প ছিল অটল।

 মানুষের প্রকৃতিতে পরস্পর বিরোধী দু’টি স্বভাব সমানভাবে রেখে দেয়া হয়েছে। এর একটি হচ্ছে পশুত্ব, আর অপরটি হচ্ছে মনুষ্যত্ব। যারা পশুত্ব তথা নাফসের দাবি-দাওয়াকে নিয়ন্ত্রণে রেখে আত্মার উন্নতি সাধন করতে পারেন তারাই সফলতা অর্জন করতে পারেন।

 ইসলাম নাফসের দাবিগুলোকে গলা টিপে হত্যা করার নির্দেশ দেয়নি। অথচ একদল লোক মানবদেহ হতে পশুত্বের উপাদানগুলোর বিলুপ্তি ঘটানোর কাজে লিপ্ত। তারা খাওয়া-দাওয়া, নিদ্রা ও যৌন চাহিদা- মানবপ্রকৃতির এ দাবিগুলোকে একেবারে শেষ করতে চান। তারা সাধু, সন্ন্যাসী ও দরবেশরূপে পৃথিবীবাসীর নিকট পরিচিত।

 আরেকদল পশুত্বকে জীবনের চরম সার্থকতা হিসেবে ধরে নিয়েছেন। আহার, নিদ্রা, যৌনসম্ভোগ ও আরাম-আয়েশ এগুলোকেই তারা জীবনের মূল লক্ষ্যে পরিণত করেছেন। কিন্তু আসল সত্য এ দুয়ের মাঝখানে রয়েছে। আর তা হলো- মনের চাহিদাগুলোকে সমূলে ধ্বংস করা যাবে না, আবার মন যা চায় তাই করা যাবে না; বরং মনের চাহিদাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের শিখানো পন্থায় পূরণ করতে হবে। এটাই ইসলামের শিক্ষা।

 মানুষের প্রকৃতিতে যৌন চাহিদা রয়েছে। ইসলাম এটাকে মূলোৎপাটন করে ফেলতে বলেনি। আবার লাগামহীনভাবে যে যার সাথে ইচ্ছা মিলিত হবে এটাকেও সমর্থন করেনি। ইসলাম কিছু বিধিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছে মাত্র। ছেলে বা মেয়ে যখন প্রাপ্তবয়স্ক হবে তখন একে অপরকে পছন্দ করে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এ চাহিদা মিটাবে। এতে একদিকে যেমন মনের চাহিদা মিটবে, অন্যদিকে পরিবারের ভিত্তি স্থাপিত হবে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে স্থায়ী বন্ধনের ফলে ভালোবাসা গাঢ় হবে। সন্তান প্রজন্মের ধারা অব্যাহত থাকবে। মাতৃত্ব, পিতৃত্ব ও বংশের মর্যাদা রক্ষা হবে। এ বিধানকে উপেক্ষা করে যারা যিনা-ব্যভিচারকে লাইসেন্স দিয়ে অবাধে হালাল করে দিয়েছে তাদের চারিত্রিক, পারিবারিক ও সামাজিক পরিস্থিতির কী যে অবনতি ঘটেছে তা ব্যাখ্যা করে বলার প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন দেশগুলোর দিকে নজর দিলেই সেই দৃশ্য ফুটে উঠবে।

 মানুষের প্রকৃতিতে পেটের ক্ষুধা রয়েছে, সময় হলে বাঁচার জন্য খেতেই হয়। এছাড়াও অন্যান্য মৌলিক চাহিদা রয়েছে যা পূরণ করতে হলে টাকা-পয়সার দরকার হয়। তাই উপার্জন করতে হবে। এখন ইসলাম উপার্জনের সকল পথ বন্ধ করে ঘরে বসে থাকতে বলেনি; বরং আরো উৎসাহ দিয়েছে। উপার্জনকারীকে আল্লাহর বন্ধু বলা হয়েছে। ইসলাম উপার্জনের কিছু অবৈধ পন্থাকে নিষিদ্ধ করেছে মাত্র। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি এগুলো যদি হালাল হয়ে যায় তাহলে তো কারো জান-মালের কোন নিরাপত্তাই থাকবে না। সুদ, ঘুষ, ওজনে কম দেয়া, ব্যবসায় প্রতারণা, চাঁদাবাজী, দুর্নীতি, হাইজ্যাক ইত্যাদির কারণে সমাজে আজ কত অশান্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তা সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। মানুষ নাফস বা কুপ্রবৃত্তির অনুসারী হওয়ার কারণেই এমনটি হচ্ছে।

 রোযা মানুষের মনের চাহিদাগুলো মেটানোর ক্ষেত্রে খুবই সুন্দরভাবে আত্মসংযমের প্রশিক্ষণ দেয়। রোযা মানুষকে সম্বোধন করে বলে যে, দেখো! তুমি রোযা থাকার কারণে সারাটি দিন তোমার জন্য খাওয়া-দাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রোযা থাকার কারণে হালাল খাবার পর্যন্ত তোমার উপর হারাম হয়ে গেছে, তাহলে তুমি হারাম পন্থায় কামাই করার চিন্তা কীভাবে করতে পার? রোযা থাকার কারণে দিনের বেলায় তোমার স্ত্রীর সাথেও যৌনমিলন হারাম হয়ে গেছে, তাহলে তুমি যিনা করার চিন্তা কীভাবে করতে পার?

 রোযা আরো বলে যে, ফজরের আযানের সাথে সাথেই তোমাকে খানা-পিনা বন্ধ করে দিতে হবে, আবার সূর্য ডুবার সাথে সাথে খাবার খেতেই হবে, এখন খাওয়ার মধ্যেই কল্যাণ।

 রোযা আরো বলে যে, ইফতারের পরেই তুমি আরামে ঘুমাতে পারবে না; তারাবীর সালাত পড়তে হবে, তবে সারা রাত নয়; মাত্র দেড়-দু’ঘন্টা। তারাবীর পরে তুমি আরামে ঘুমাও, তবে সকাল পর্যন্ত নয়; ভোর রাতে উঠে তোমাকে সাহারী খেতে হবে এরপর আবার ফজরের সালাত পড়তে হবে।

এভাবে রোযা মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে এবং মানুষের জীবনকে উন্নত ও কল্যাণকর করতে সাহায্য করে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন