মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
যাকাত হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে আগত রিযিক বণ্টনের একটি সুষম ব্যবস্থা। এতে বান্দাদের জন্য রয়েছে বহুমুখী কল্যাণ। বান্দা এর মাধ্যমে যেমনিভাবে দুনিয়াতে উপকার লাভ করে থাকে, ঠিক তেমনিভাবে আখিরাতে আরো বেশি উপকার লাভ করতে পারে। অনুরূপভাবে বান্দা যদি এর পূর্ণ বাসত্মবায়ন না করে, তাহলে তাকে উভয় জগতে মারাত্মক পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো :
যাকাত আদায় না করাটা মুনাফিকীর লক্ষণ :
আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে মুনাফিকদের যেসব কার্যকলাপ বর্ণনা করেছেন, তার মধ্যে একটি হচ্ছে যাকাত আদায় না করা। যেমন- তিনি বলেন,
তাদের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর নিকট অঙ্গীকার করেছিল যে, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে দান করলে নিশ্চয় আমরা সাদাকা করব এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হব। অতঃপর যখন তিনি নিজ কৃপায় তাদেরকে তা দান করলেন, তখন তারা এ বিষয়ে কার্পণ্য করল এবং বিরুদ্ধভাবাপন্ন হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিল। পরিণামে তাদের অমত্মরে কপটতা স্থান পেল আল্লাহর সহিত ওদের সাক্ষাৎ দিবস পর্যমত্ম। কেননা তারা আল্লাহর নিকট যে অঙ্গীকার করেছিল, তা ভঙ্গ করেছিল; আর তারা ছিল মিথ্যাচারী। (সূরা তাওবা : ৭৫-৭৭)
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ আমার নিকট আসলেন। এ সময় তিনি আমার হাতে রূপার তৈরি একটি বড় আংটি দেখতে পান। তখন তিনি বলেন, এটা কী- হে আয়েশা? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উদ্দেশ্যে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য এটা তৈরি করেছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এর যাকাত দাও? আমি বললাম, না অথবা আল্লাহর যা ইচ্ছা ছিল। তখন তিনি বললেন, তোমাকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। [আবু দাউদ, হা/১৫৬৭; সুনানে দার কুতনী, হা/১৯৫১; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/৭৭৯৭; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/১৪৩৭; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৭৬৯।]
যাকাত আদায় না করলে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে :
যেদিন তা (যাকাতের মাল) জাহান্নামের অগ্নিতে উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে। সেদিন বলা হবে, এটাই তো সেটা যা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্জীভূত করতে। সুতরাং তোমরা যা পুঞ্জীভূত করেছিলে তার স্বাদ আস্বাদন করো। (সূরা তওবা- ৩৫)
আল্লাহ যাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ হতে কিছু দান করেছেন, অথচ তারা সে বিষয়ে কার্পণ্য করে, তারা যেন এরূপ ধারণা না করে যে, ওটা তাদের জন্য কল্যাণকর; বরং ওটা তাদের জন্য আরো ক্ষতিকর। তারা যে বিষয়ে কৃপণতা করেছে, কিয়ামতের দিন ওটাই তাদের গলার বেড়িতে পরিণত হবে। (জেনে রেখো) আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্বত্ত্বাধিকারী; আর তোমরা যা করছ আল্লাহ সে বিষয়ে পূর্ণ খবর রাখেন। (সূরা আলে ইমরান- ১৮০)
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যাকে আল্লাহ তা‘আলা ধনসম্পদ দান করেছেন; কিন্তু সে তার যাকাত আদায় করেনি, শেষ বিচারের দিন সে ধনসম্পদ এমন বিষধর সাপে পরিণত হবে, যার মাথার উপর থাকবে দু’টি কালো দাগ। এ সাপ সে ব্যক্তির গলায় ঝুলে তার দু’গালে কামড়াতে থাকবে এবং বলবে, ‘‘আমিই তোমার মাল, আমিই তোমার সঞ্চিত সম্পদ।’’ অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ এ আয়াত পাঠ করলেন- ‘‘আল্লাহ তাদেরকে নিজের অনুগ্রহে যা কিছু দান করেছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তারা যেন মনে না করে যে, এটা তাদের জন্য কল্যাণকর হবে; বরং এটা তাদের জন্য ক্ষতিকর। যেসব জিনিসের ব্যাপারে তারা কার্পণ্য করে কিয়ামতের দিন সেসব ধনসম্পদকে বেড়ি বানিয়ে তাদের গলায় পরানো হবে। আর আল্লাহ হচ্ছেন আসমান ও জমিনের পরম সত্ত্বাধিকারী। আর যা কিছু তোমরা কর; আল্লাহ তা‘আলা সে সম্পর্কে জানেন।’’ [সহীহ বুখারী, হা/১৪০৩; বায়হাকী, হা/৭০১৫; শারহুস সুন্নাহ, হা/১৫৬০; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৭৬১; মিশকাত, হা/১৭৭৪।]
পশুর যাকাত আদায় না করলে উক্ত পশু দ্বারাই আযাব দেয়া হবে :
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যেসব ধনাঢ্য ব্যক্তি নিজেদের ধনসম্পদের যাকাত আদায় করে না কিয়ামতের দিন তাদের এ সম্পদ দোযখের আগুনে গরম করে পাত তৈরি করা হবে এবং তা দিয়ে তাদের দেহের উভয় পার্শ্ব ও ললাটে দাগ দেয়া হবে। তার শাসিত্ম বান্দাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যমত্ম চলতে থাকবে। এ সময়কার একটি দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর কেউ পথ ধরবে জান্নাতের দিকে আর কেউ ধরবে জাহান্নামের দিকে। আর যেসব উটের মালিকরা যাকাত আদায় করবে না তাদেরকে একটি সমতল মাঠে উপুড় করে শুয়ে রাখা হবে এবং ঐসব উট স্থূল দেহ নিয়ে আসবে যেমনটি তারা পৃথিবীতে ছিল এবং এগুলো তাদেরকে পা দিয়ে মাড়াতে মাড়াতে অগ্রসর হবে। এভাবে যখনই এর শেষ দলটি অতিক্রম করবে পুনরায় এর প্রথম দল এসে পৌঁছবে। এগুলো তাদেরকে মাড়াতে থাকবে যতক্ষণ পর্যমত্ম আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের বিচার শেষ না করবেন। আর এ কাজ এমন এক দিনে করা হবে, যা পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান হবে। অতঃপর কেউ পথ ধরবে জান্নাতের দিকে আর কেউ ধরবে জাহান্নামের দিকে। আর যেসব ছাগলের মালিকরা তার যাকাত আদায় করবে না তাদেরকে একটি সমতল মাঠে উপুড় করে ফেলে রাখা হবে এবং তার ছাগলগুলো মোটাতাজা অবস্থায় যেমনটি পৃথিবীতে ছিল, সেগুলো এসে তাদের খুর দিয়ে তাকে মাড়াতে থাকবে এবং শিং দিয়ে গুতো মারতে মারতে অগ্রসর হবে। অথচ সেদিন কোন একটি ছাগলই শিং বাঁকা, শিংহীন বা শিং ভাঙ্গা হবে না। যখন এদের শেষ দল অতিক্রম করবে পুনরায় প্রথম দল এসে পৌঁছবে। আর এভাবে আযাব চলতে থাকবে যতক্ষণ না আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের বিচার সমাপ্ত করেন। এ শাসিত্ম এমন এক দিনে হবে, যার পরিমাণ হবে তোমাদের হিসাবানুসারে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর কেউ তার পথ ধরবে জান্নাতের দিকে আর কেউ ধরবে জাহান্নামের দিকে। [সহীহ মুসলিম, হা/২৩৩৯; আবু দাউদ, হা/১৬৬০; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৫৫৩; মুসত্মাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৫৮৭৪; বায়হাকী, হা/৭০১৭।]
যাকাত আদায় না করলে দুনিয়াতে আল্লাহর গযব নাযিল হয় :
বুরাইদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন কোন জাতি যাকাত আদায় না করে তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে দুর্ভিক্ষ ও অনাবৃষ্টিতে আক্রামত্ম করেন। [মু‘জামুল আওসাত লিত তাবারানী, হা/৪৫৭৭; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৭৬৩।]
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের নিকট এসে বললেন, হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আশ্রয় চাচ্ছি তোমরা যেন পরীক্ষার সম্মুখীন না হও। (১) যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্য অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, তখন সে জাতির উপর প্লেগ রোগের আবির্ভাব হয়। (২) যখন কোন জাতি ওজন ও মাপে কম দেয়, তখন সে জাতির উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বালা-মুসিবত এবং অত্যাচারী শাসক তাদের উপর নিপিড়ন করতে থাকে। (৩) যখন কোন জাতি তাদের সম্পদের যাকাত আদায় করে না, তখন তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি চতুষ্পদ প্রাণী না থাকত, তাহলে তাদের উপর বৃষ্টিপাত হতো না। (৪) যখন কোন জাতি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের অঙ্গীকার পূরণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের বিজাতীয় দুশমনকে তাদের উপর বিজয়ী করেন; যারা এসে তাদের হাত থেকে কিছু সম্পদ কেড়ে নিয়ে যায়। (৫) আর যখন তাদের ইমামগণ আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী বিচার-ফায়সালা করে না এবং আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানকে প্রত্যাখ্যান করে, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। [ইবনে মাজাহ, হা/৪০১৯; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৮৬২৩; শু‘আবুল ঈমান, হা/৩০৪২; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১০৬; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৭৬১।]
সরকার তাদের উপর জবরদসিত্ম করতে পারবে :
যদি তারা ইসলামী রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাহলে সরকার তাদের থেকে যাকাত আদায় করার জন্য জবরদসিত্ম করতে পারবে। কেননা হাদীসে এসেছে,
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন সত্যিকার ইলাহ নেই ও মুহাম্মাদ ﷺ আল্লাহর রাসূল, আর সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে। তারা যদি এ কাজগুলো করে, তবে আমার পক্ষ থেকে তারা তাদের ব্যাপারে ও তাদের মালের ব্যাপারে নিরাপত্তা লাভ করল; অবশ্য ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কোন কারণ থাকে (যেমন : কিসাস, রজম ইত্যাদি) তাহলে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার আল্লাহর উপর ন্যসত্ম। [সহীহ বুখারী, হা/২৫; সহীহ মুসলিম, হা/১৩৮; নাসাঈ, হা/৩৯৬৯; ইবনে মাজাহ, হা/৭২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৫২৫; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/২২৪৮; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১৭৫; মুসনাদুল বাযযার, হা/৯৮১০; দার কুতনী, হা/৮৯২; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/১৪২৮; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবরানী, হা/১৪৫৩৮; বায়হাকী, হা/৪৯২০; জামেউস সগীর, হা/২২৫১; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৪০৮; মিশকাত, হা/১২।]
যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে আবু বকর (রাঃ) যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন :
কোন ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করার পরেও যেসব কারণে তার জান-মালের নিরাপত্তা বাতিল হয়ে যায়, তার মধ্যে একটি হচ্ছে যাকাত আদায় করতে অস্বীকার করা। যার কারণে আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। হাদীসে এসেছে,
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ মৃত্যুবরণ করেন, তখন আবু বকর (রাঃ) খলীফা নিযুক্ত হন। এ সময় আরবের একদল লোক (যাকাত অস্বীকার করে) মুরতাদ হয়ে গেল। [আবু বকর (রাঃ) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সংকল্প করলেন] উমর (রাঃ) বললেন, আপনি কিরূপে লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন? অথচ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন : ‘‘আমি (আল্লাহর পক্ষ থেকে) লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যে পর্যন্ত না তারা বলে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ (আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই) আর যে ব্যক্তি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলল, সে তার জান-মাল আমার হাত থেকে রক্ষা করল। অবশ্য আইনের দাবী আলাদা। (অর্থাৎ ইসলামের বিধান অনুযায়ী দন্ডনীয় কোন অপরাধ করলে তাকে অবশ্যই শাস্তি ভোগ করতে হবে)। তবে তার আসল বিচারের ভার আল্লাহর উপর ন্যস্ত। তখন আবু বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! যে ব্যক্তি সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। কেননা যাকাত হচ্ছে মালের (উপর বঞ্চিতের) অধিকার। আল্লাহর কসম! যদি তারা আমাকে একটি রশি প্রদান করতেও অস্বীকৃতি জানায়, যা তারা (যাকাত বাবদ) রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে প্রদান করত, তাহলে আমি এ অস্বীকৃতির কারণে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। এবার উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! ব্যাপারটা এ ছাড়া আর কিছুই নয় যে, আল্লাহ তা‘আলা আবু বকরের হৃদয়কে যুদ্ধের জন্য প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন। আমি স্পষ্টই উপলদ্ধি করলাম, এটাই (আবু বকরের সিদ্ধান্তই) সঠিক এবং যথার্থ। [সহীহ বুখারী, হা/১৩৯৯-১৪০০; সহীহ মুসলিম, হা/১৩৩; আবু দাউদ, হা/১৫৫৮; নাসাঈ, হা/২৪৪৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৩৫; মিশকাত, হা/১৭৯০।]
আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি, যেভাবে পরীক্ষা করেছিলাম বাগানের মালিকদেরকে। যখন তারা এ শপথ করেছিল যে, তারা বাগান হতে প্রত্যুষেই ফল কেটে নেবে; কিন্তু তারা ‘ইনশাআল্লাহ’ বলেনি। অতঃপর সেই বাগানে তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে এক আযাব পতিত হলো, তখন তারা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। ফলে তা পুড়ে ছাই বর্ণ ধারণ করল। এরপর সকালে তারা একে অপরকে ডেকে বলল, তোমরা যদি ফসল কাটতে চাও তবে সকাল সকাল বাগানে চলো। অতঃপর তারা ফিস ফিস করে এ কথা বলতে বলতে চলল- আজ বাগানে যেন তোমাদের নিকট কোন অভাবগ্রস্ত ব্যক্তি প্রবেশ করতে না পারে। অতঃপর তারা (অভাবীদেরকে) প্রতিহত করতে সক্ষম- এই বিশ্বাস নিয়ে সকালে রওয়ানা হলো। কিন্তু তারা যখন ঐ বাগান প্রত্যক্ষ করল তখন তারা বলল, আমরা তো পথ ভুলে গেছি। (না) বরং আমরা বঞ্চিত হয়েছি! অতঃপর তাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলল, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি, যদি তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করতে! তখন তারা বলল, আমরা আমাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি; নিশ্চয় আমরা ছিলাম অত্যাচারী। এভাবে তারা একে অপরকে দোষারোপ করতে লাগল। তারা বলল, হায় দুর্ভোগ! আমরা তো সীমালঙ্ঘনকারী ছিলাম। আমরা আশা রাখি যে, আমাদের রব এর পরিবর্তে আমাদেরকে উত্তম বাগান দান করবেন; আমরা আমাদের রবের দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী। শাস্তি এভাবেই এসে থাকে; আর পরকালের শাস্তি তো আরো কঠিন, যদি তারা জানত। (সূরা ক্বালাম : ১৭-৩৩)
কারূন ছিল মূসার সম্প্রদায়ভুক্ত, কিন্তু সে তাদের প্রতি বাড়াবাড়ি করেছিল। আর আমি তাকে দান করেছিলাম এমন ধনভান্ডার, যার চাবিগুলো বহন করা একদল শক্তিশালী লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ করো, যখন তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, অহংকার করো না, নিশ্চয় আল্লাহ অহংকারীদেরকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ তোমাকে যা দিয়েছেন তার দ্বারা আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান করো এবং দুনিয়ার অংশ লাভ করতে ভুলে যেও না। তুমি অনুগ্রহ করো যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করার চেষ্টা করো না। (কেননা) আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদেরকে ভালোবাসেন না। সে বলল, এ সম্পদ আমি আমার জ্ঞানবলে প্রাপ্ত হয়েছি। সে কি জানত না- আল্লাহ তার পূর্বে বহু মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দিয়েছেন, যারা ছিল শক্তিতে তার চেয়ে প্রবল এবং জনসংখ্যায় ছিল অধিক? অপরাধীদেরকে কি তাদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না? কারূন তার সম্প্রদায়ের সম্মুখে উপস্থিত হয়েছিল জাঁকজমক সহকারে। ফলে যারা পার্থিব জীবন কামনা করত তারা বলতে লাগল যে, হায়! কারূনকে যেরূপ দেয়া হয়েছে আমাদেরকেও যদি সেরূপ দেয়া হতো! প্রকৃতই সে মহাভাগ্যবান। কিন্তু যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছিল তারা বলল, ধিক তোমাদেরকে! যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্য আল্লাহর পুরস্কারই সর্বশ্রেষ্ঠ; আর ধৈর্যশীল ব্যতীত তা কেউ লাভ করতে পারবে না। অতঃপর আমি কারূনকে তার প্রাসাদসহ ভূগর্ভে প্রোত্থিত করলাম। তার স্বপক্ষে এমন কোন দলও ছিল না, যে তাকে আল্লাহর শাস্তি হতে সাহায্য করতে পারত এবং সে নিজেও আত্মরক্ষায় সক্ষম ছিল না। ফলে ইতিপূর্বে যারা তার মতো হতে চেয়েছিল তারা বলতে লাগল, দেখলে তো! আল্লাহ তার বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা তার রিযিক বর্ধিত করেন এবং যার জন্য ইচ্ছা হ্রাস করেন। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় না হতেন তবে আমাদেরকেও ভূগর্ভে প্রোত্থিত করতেন। দেখলে তো! কাফিররা সফলকাম হয় না। (সূরা ক্বাসাস : ৭৬-৮২)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/110/88
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।