মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
১. শিরকে আকবার, আল্লাহর সাথে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন কিছুর ইবাদত করা। অথবা যে কোন প্রকারের ইবাদতকে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর জন্য নিবেদন করা যেমন- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশ্যে প্রাণী জবেহ করা ইত্যাদি। যদি কোন ব্যক্তি ইবাদতের কিছু অংশে গাইরুল্লাহকে শরীক করার মুহূর্তে আল্লাহর ইবাদত করে তবুও তা শিরক।
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ তার সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করবেন না। তবে শিরক ছাড়া অন্যান্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।” (সুরা নিসা ৪ : ৪৮)।
২. শিরকে আসগার বা ছোট শিরক : রিয়া অর্থাৎ লোক দেখানোর উদ্দেশ্য নিয়ে আমল করা ইত্যাদি। আল্লাহ বলেন :
“অতএব দুভোর্গ সে সব মুসল্লীর যারা তাদের সলাত সম্পর্কে বে-খবর যারা তা লোক দেখানোর জন্য করে।” (সূরা মাউন ১০৭ : ৪-৬)
রসূল (ﷺ) বলেন, আল্লাহ বলেন : “আমি অংশিদারিত্ব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। যে ব্যক্তি কোন কাজ করে আর এ কাজে আমার সাথে অন্য কাউকে শরীক করে, আমি ঐ ব্যক্তিকে তার শিরকে ছেড়ে দেই।” (সহীহ মুসলিম)
কাবীরা গুনাহ ২ - সলাত ত্যাগ করা
আল্লাহ কুরআনে ইরশাদ করেছেন : “তাদের পর আসলো (অপদার্থ) বংশধর। তারা সলাত নষ্ট করল ও লালসার বশবর্তী হল, সুতরাং তারা অচিরেই কু-কর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। কিন্তু তারা নয় যারা তওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে।” (সূরা মারইয়াম ১৯ : ৫৯-৬০)
হাদীসে বর্ণিত, রসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন : “কোন মু'মিন ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হল সলাত ত্যাগ করা।” (সহীহ মুসলিম)।
রসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন : “আমাদের ও তাদের মধ্যে পার্থক্য হল সলাত, যে তা পরিত্যাগ করল সে কাফির হয়ে গেল।” (আহমাদ)
কাবীরা গুনাহ ৩ - যাকাত আদায় না করা
আল্লাহ বলেন :
“আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের যা দান করেছেন, তাতে যারা কৃপণতা করে। এই কার্পণ্য তাদের জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে তারা যেন ধারণা না করে। বরং এটা তাদের পক্ষে একান্তই ক্ষতিকর হবে। যাতে তারা কার্পণ্য করবে সে সকল ধন-সম্পদ কিয়ামতের দিনে তাদের গলায় বেড়ী বানিয়ে পরানো হবে।” (সূরা আলে ইমরান ৩: ১৮০)
কবীরা গুনাহ ৪ - সঙ্গত কারণ ছাড়া রমাদানের সওম ভঙ্গ করা বা না রাখা
রসূল (ﷺ) বলেন : “ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
(১) এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্যিকার উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রসূল।
(২) সলাত প্রতিষ্ঠা করা
(৩) যাকাত দেয়া
(৪) হাজ্জ করা
(৫) রমাদান মাসের সওম রাখা।”
(সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৫ - সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হাজ্জ না করা
আল্লাহ রব্বুল আলামীন বলেন :
“আর এ ঘরের হাজ্জ করা সে সকল মানুষের জন্য অবশ্য কর্তব্য যারা সেথায় যাওয়ার সামর্থ্য রাখে। আর যে প্রত্যাখ্যান করবে সে জেনে রাখুক আল্লাহ সারা বিশ্বের কোন কিছুরই মুখাপেক্ষী নয়।” (সূরা আলে-ইমরান ৩: ৯৭)।
কবীরা গুনাহ ৬ - মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া
রসূল (ﷺ) বলেন : “আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় গুনাহ কি তা বলে দিব না? আর তা হল আল্লাহর সাথে শরীক করা, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা কথা বলা।” (সহীহ বুখারী)
কবীৱা গুনাহ ৭ - ব্যভিচার করা
আল্লাহ বলেন : “তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল কাজ ও অতি মন্দ পথ।” (সূরা ইসরা ১৭ : ৩২)।
রসূলে কারীম (ﷺ) বলেন : “যখন কোন মানুষ ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তখন তার থেকে ঈমান বের হয়ে যায়। ঈমান তার মাথার উপর ছায়ার মত অবস্থান করে। যখন সে বিরত থাকে ঈমান আবার ফিরে আসে।” (তিরমিযী)
রসূলে কারীম (ﷺ) বলেন : আদম সন্তানের উপর ব্যভিচারের কিছু অংশ লিপিবদ্ধ হয়েছে সে অবশ্যই তার মধ্যে লিপ্ত হবে। দুই চক্ষুর ব্যভিচার হল দৃষ্টি এবং তার দুই কানের ব্যভিচার শ্রবণ, মুখের ব্যভিচার হল কথা বলা, হাতের ব্যভিচার হল স্পর্শ করা ও পায়ের ব্যভিচার হল পদক্ষেপ আর অন্তরে ব্যভিচারের আশা ও ইচ্ছার সঞ্চার হয়, অবশেষে লজ্জাস্থান একে সত্যে অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ৮ - মানুষ হত্যা করা
আল্লাহ বলেন :
“এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের ইবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। আর যারা এসব কাজ করে তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে। কিয়ামত দিবসে তাদের শাস্তি দ্বিগুণ হবে এবং লাঞ্চিত অবস্থায় সেথায় তারা চিরকাল বসবাস করবে। কিন্তু তারা নয়, যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সঙ্কর্ম করে।” (সূরা আল ফুরকান ২৫ : ৬৮-৭০)
উল্লিখিত আয়াতে আল্লাহ হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। আর যারা হত্যা করে তাদের জন্য কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন।
কবীরা গুনাহ ৯ - পেশাব থেকে বেঁচে না থাকা
ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : “নবী কারীম (ﷺ) দু'টি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন এবং বলেন, এ দুই কবরবাসীকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কোন বড় ধরনের কাজের জন্যে শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তাদের একজনের অভ্যাস ছিল সে প্রসাব থেকে পবিত্রতা অর্জন করতো না। আর অন্য জন মানুষের একজনের দোষ অন্যের কাছে বলে বেড়াত।” (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)
আল্লাহ বলেন : “এবং তোমার কাপড়কে তুমি পবিত্র কর।” (সূরা আল মুদ্দাসসির ৭৪ : ৪)।
নোট : কাপড়ে ও শরীরে যেন পেশাব না লাগে। যদি কোন কারণে লেগে যায় তাহলে তা সাথে সাথে পবিত্র করে নেয়া উচিত।
কবীরা গুনাহ ১০ - সমকাম
এক স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করা আল্লাহ বলেন :
“এবং লুতকেও পাঠিয়েছিলাম, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছ যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে কেউ করেনি। তোমরা তো কাম-তৃপ্তির জন্য নারী বাদ দিয়ে পুরুষের নিকট গমন কর, তোমরা তো সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।” (সূরা আ'রাফ ৭ : ৮০-৮১)
রসূল (ﷺ) বলেন : “আল্লাহ ঐ ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টি দিবেন না, যে কোন পুরুষের সাথে সমকামিতায় লিপ্ত হয় অথবা কোন মহিলার পিছনের রাস্তা দিয়ে সহবাস করে।” (তিরমিযী)
কবীরা গুনাহ ১১ - সুদ
আল্লাহ বলেন :
“যারা সুদ খায় তারা দাঁড়াবে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে দেয়।” (সূরা বাকারা ২: ২৭৫)
রসূলে কারীম (ﷺ) বলেছেন : “সুদের গুনাহের ৭৩টি স্তর রয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে হাল্কা হল নিজ মাতাকে বিবাহ করা। সর্বনিম্ন স্তর হলো কোন মুসলিমের ইজ্জত সম্ভ্রম হরণ করা।” (হাকেম, আল জামে)।
কবীরা গুনাহ ১২ - আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং নিকট আত্মীয়দের পরিত্যাগ করা
আল্লাহ বলেন :
“ক্ষমতা লাভের পর সম্ভবতঃ তোমরা পৃথিবীতে ফ্যাসাদ করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। এদের প্রতিই আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন, অতঃপর তাদেরকে বধির ও দৃষ্টিহীন করেছেন।” (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭ : ২২-২৩)
রসূলে কারীম (ﷺ) বলেন : “আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ১৩ - এতিমের সম্পদ আত্মসাত করা
আল্লাহ বলেন :
যারা এতিমের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করেছে এবং সত্তরই তারা অগ্নিতে প্রবেশ করবে।” (সূরা নিসা ৪:১০)
কীৱাগুনাহ ১৪ - যাদু
আল্লাহ বলেন :
“কিন্তু শয়তানেরা কুফরী করে মানুষকে যাদু শিক্ষা দিত।” (সূরা বাকারা ২ : ১০২)
রসূলে কারীম (ﷺ) বলেছেন : “তোমরা সাতটি ধবংসাত্মক বিষয় থেকে বেঁচে থাকবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রসূলুল্লাহ (ﷺ) ধবংসাত্মক বিষয়গুলি কী? তিনি জবাবে বলেন :
১. আল্লাহর সাথে শরিক করা
২. যাদু করা
৩. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা যা আল্লাহ হারাম করে দিয়েছেন
৪. সুদ খাওয়া
৫. এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা
৬. জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা
৭. সতী সাধবী মু'মিন মহিলাকে অপবাদ দেয়া।”
(সহীহ বুখারী : ২৫৬)
কবীরা গুনাহ ১৫ - দুনিয়ার লক্ষ্যে ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা এবং সত্যেকে গোপন করা
আল্লাহ বলেন :
“আমি যে সব স্পষ্ট নিদর্শন ও পথনির্দেশ অবতীর্ণ করেছি মানুষের জন্য কিতাবে তা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করার পরও যারা তা গোপন রাখে আল্লাহ তাদের অভিসম্পাত দেন এবং অভিশাপকারীরাও তাদের অভিশাপ দেয়। কিন্তু যারা তওবা করে ও নিজেদের সংশোধন করে আর সত্যকে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে। তাদেরই প্রতি আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা বাকারা ২: ১৫৯-১৬০)
রসূল কারীম (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি জ্ঞানীদের উপর প্রাধান্য বিস্তার করার লক্ষ্যে অথবা মূর্থের সাথে বিতর্কের উদ্দেশ্যে অথবা মানুষের দৃষ্টি তার প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করে আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন।” (ইবনে মাজাহ)
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি দ্বীনি এলেম শিক্ষা করল ধন সম্পদ লাভের উদ্দেশ্যে, সে কিয়ামতের দিন জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।” (আবু দাউদ)
কবীরা গুনাহ ১৬ - আল্লাহ এবং তার রসূলের উপর মিথ্যা আরোপ করা
আল্লাহ বলেন :
“যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে কিয়ামতের দিন আপনি তাদের মুখ কাল দেখবেন।” (সূরা যুমার ৩৯ : ৬০)।
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে সে যেন তার অবস্থান জাহান্নাম করে নেয়।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ১৭ - শাসক কর্তৃক জনগণকে ধোকা দেয়া ও অত্যাচার করা
আল্লাহ বলেন :
“শুধু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” (সূরা আশ-শূরা ৪২ : ৪২)।
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে আমাদেরকে ধোকা দেয় সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।” (সহীহ মুসলিম) “অত্যাচার কিয়ামতের দিন চরম অন্ধকার হবে।” (সহীহ বুখারী) “যে শাসক তার অধীনস্থদের ধোকা দেয়, তার ঠিকানা জাহান্নাম।” (ইবনে আসাকির, আল জামে)
যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব করার দায়িত্ব পান, অতঃপর সে তাদের অভাব-অনটন ও প্রয়োজনের সময় নিজেকে গোপন করে রাখে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার অভাব দূরকরণের প্রতি লক্ষ্য রাখবেন না।” (আবু দাউদ)
নবী (ﷺ) বলেন : “তোমরা যুলুম করা থেকে বেঁচে থাক, কারণ যুলুম কিয়ামতের দিন গভীর অন্ধকারে পরিণত হবে” (সহীহ মুসলিম)।
নোট : যুলুম বিভিন্নভাবে হতে পারে। মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করা, অন্যায়ভাবে প্রহার করা, গালি দেয়া, তাদের উপর বাড়াবাড়ি করা, দুর্বলদের উপর চড়াও হওয়া ও অন্যান্য যে সকল কাজে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা সবই যুলুম।
কবীরা গুনাহ ১৯ - চাদাবাজী ও অন্যায় টোল আদায়
নোট : বাস্তবিক পক্ষে এটি এক ধরনের ডাকাতি, কারণ এতে মানুষের উপর এক ধরনের জরিমানা নির্ধারণ করা হয়। চাঁদা উসূলকারী, লেখক এবং গ্রহণকারী গুনাহের মধ্যে সমানভাবে শামিল। এরা সবাই হারাম ভক্ষণকারী। চাঁদাবাজ মূলতঃ যুলুমের বড় সহযোগি শুধু তাই নয় বরং সে যুলুমকারী ও অত্যাচারী।
আল্লাহ বলেন :
“ব্যবস্থা নেয়া হবে শুধু তাদের বিরুদ্ধে যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে করে বেড়ায়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” (সূরা আশ-শুরা ৪২ : ৪২)
নবী কারীম (ﷺ) বলেন : “তোমরা কি জান প্রকৃত দরিদ্র কে আমার উম্মতের মধ্যে? প্রকৃত দরিদ্র ঐ ব্যক্তি, যে কিয়ামতের দিন অনেক সলাত, সওম, যাকাত, নিয়ে উপস্থিত হবে। তবে সে দুনিয়াতে কাউকে হত্যা করেছে, মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কাউকে গাল-মন্দ করেছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কাউকে মেরেছে অথবা কাউকে প্রহার করেছে। কিয়ামতের দিন এ ব্যক্তির নেক আমল বা সওয়াব তাদের (তার দ্বারা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে) দেয়া হবে। যদি তার নেক আমলের সওয়াব পাওনাদারদের পাওনা পরিশোধ করার পূর্বেই শেষ হয়ে যায় তখন তাদের গুনাহগুলোকে তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে এবং তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।” (সহীহ মুসলিম)।
কবীরা গুনাহ ২০ - আপন স্ত্রীকে ব্যভিচারে সুযোগ দেয়া
রসূল (ﷺ) বলেন : “তিন ব্যক্তির জন্য আল্লাহ জান্নাত হারাম করেছেন, (১) যে মদ তৈরী করে (২) যে মাতা-পিতার নাফরমানী করে (৩) ঐ চরিত্রহীন ব্যক্তি যে নিজ স্ত্রীকে অশ্লীলতা ও ব্যভিচারে করতে সুযোগ দেয়।” (আহমাদ)।
নোট : দাইয়ুস ঐ ব্যক্তিকে বলে যে তার স্ত্রী অশ্লীল কাজ বা ব্যভিচার করলে সে ভাল মনে করে গ্রহণ করে অথবা প্রতিবাদ না করে চুপ থাকে।
“নিশ্চয় আল্লাহ অহংকারীকে পছন্দ করেন না।” (সূরা নাহল ১৬ : ২৩)।
রসূল (ﷺ) বলেন : “যার অন্তরে এক বিন্দু পরিমাণ অহংকার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। জনৈক ব্যক্তি বললেন, কোন ব্যক্তি চায় তার জামা কাপড়, জুতা-সেন্ডেল সুন্দর হোক তাহলে এটাও কি অহংকার? রসূল (ﷺ) উত্তর দিলেন, আল্লাহ নিজে সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। (অথাৎ এগুলি অহংকারের অন্তর্ভুক্ত নয়) অহংকার হলো সত্যকে গোপন করা আর মানুষকে অবজ্ঞা করা।” (সহীহ মুসলিম)
আল্লাহ বলেন :
“অহংকার বশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে অহংকারের সাথে পদচারণা করো না। কখনো আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না।” (সূরা লুকমান ৩১ : ১৮)
রসূল বলেন : “আল্লাহ বলেন মহত্ব আমার পরিচয় আর অহংকার আমার চাদর, যে ব্যক্তি এ দুটি নিয়ে টানা হেচড়া করবে আমি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবো।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ২২ - হারাম খাওয়া, তা যে কোন উপায়ে হোক না কেন
আল্লাহ বলেনঃ
“তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না।” (সূরা আল বাকারা ২ : ১৮৮)
রসূল (ﷺ) বলেনঃ “কোন ব্যক্তি দীর্ঘপথ অতিক্রম করলো, বিক্ষিপ্ত চুল, ধূলা বালিযুক্ত শরীর, দুই হাত আসমানের দিকে উঠিয়ে দু'আ করতে থাকে আর বলতে থাকে। হে প্রভু! হে প্রভু! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোষাক হারাম এবং হারাম দ্বারা শক্তি সঞ্চয় করা হয়েছে। তাহলে কিভাবে তার দু’আ কবুল করা হবে?” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ২৩ - আত্মহত্যা করা
আল্লাহ বলেন :
“তোমরা নিজেদের হত্যা করো না, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। আর যে কেউ সীমালংঘন কিংবা যুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে তাকে খুব শীঘ্র আগুনে নিক্ষেপ করা হবে।” (সূরা আন-নিসা ৪ : ২৯-৩০)
রসূল (ﷺ) বলেন : “হত্যা করে সে উক্ত অস্ত্র দ্বারা দোযখের আগুনে নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে। সে চিরদিন এই জাহান্নামে অবস্থান করবে। যে বিষ পান করে নিজেকে হত্যা করল সে চিরদিন জাহান্নামে অবস্থানকালে হত্যা করতে থাকবে। আর যে নিজেকে পাহাড় থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করবে সেও চিরদিন জাহান্নামে অবস্থান করবে এবং পাহাড় থেকে নিক্ষিপ্ত হতে থাকবে।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ২৪ - অধিকাংশ সময় মিথ্যা বলা
নবী (ﷺ) বলেন : “মিথ্যা পাপাচারের দিকে পথ দেখায়। আর পাপাচার জাহান্নামে নিয়ে যায়। মানুষ মিথ্যা বলতে থাকলে আল্লাহর নিকট মিথুক হিসাবে তার নাম লেখা হয়।” (সহীহ বুখারী)
আল্লাহ বলেনঃ
“এবং তাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত যারা মিথ্যাবাদী।” (সূরা আলে-ইমরান ৩: ৬১)
কবীরা গুনাহ ২৫ - মানব রচিত বিধানে দেশ পরিচালনা ও বিচার করা
আল্লাহ বলেন : “এবং যারা আল্লাহর বিধান অনুসারে বিচার কার্য পরিচালনা করে না তারা কাফির। এবং যারা আল্লাহর বিধান অনুসারে বিচার কার্য পরিচালনা করে না তারা যালিম। যারা আল্লাহর বিধান অনুসারে বিচার কার্য পরিচালনা করে না তারা ফাসিক।” (সূরা আল-মায়িদা ৫: ৪৪-৪৭)
কবীরা গুনাহ ২৬ - বিচার ফায়সালার ক্ষেত্রে ঘুষ গ্রহণ করা
আল্লাহ বলেন :
“তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না এবং জনগণের সম্পদের কিয়দাংশ জেনেশুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারকগণের কাছে পেশ করো না।” (সূরা বাকারা ২: ১৮৮)
রসূল (ﷺ) বলেন : “আল্লাহ ঘুষ দাতা ও গ্রহীতা উভয়ের উপর অভিশাপ করেছেন।” (আহমাদ)
“যদি কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের জন্য কোন বিষয় সুপারিশ করে, পরে তার জন্য হাদিয়া বা উপঢৌকন প্রেরণ করা হয়, সে তা গ্রহণ করে। তা হলে উক্ত ব্যক্তি এক মারাত্মক ধরনের সুদের দ্বারে প্রবেশ করল।” (আহমদ)
কবীরা গুনাহ ২৭ - মহিলা পুরুষের বেশ এবং পুরুষ মহিলার বেশ ধারণ করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “আল্লাহ পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলাদেরকে অভিশাপ করেছেন এবং মহিলাদের বেশ ধারণকারী পুরুষের উপর অভিশাপ করেছেন।” (আবুদাউদ)
কবীরা গুনাহ ২৮ - মিথ্যা সাক্ষী দেয়া
আল্লাহ বলেন :
“তারা মিথ্যা ও বাতিল কাজে যোগদান করে না।” (সূরা ফুরকান ২৫ : ৭২)
রসূল (ﷺ) বলেনঃ “আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে অবগত করব না? তা হল আল্লাহর সাথে শিরক করা, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া, মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ২৯ - মাদক দ্রব্য সেবন করা
আল্লাহ বলেন :
“হে মুমিনগণ! এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ, এসব শয়তানের অপবিত্র কাজ ছাড়া আর কিছু নয়। অতএব এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণ প্রাপ্ত হও।” (সূরা আল-মায়িদা ৫ : ৯০)।
রসূল (ﷺ) বলেন : “প্রত্যেক নেশা জাতীয় দ্রব্য হল মদ আর সকল প্রকার মদ হারাম।” (সহীহ মুসলিম)
“আল্লাহ মদ পানকারী, বিক্রেতা, ক্রেতা, প্রস্তুতকারী, বহনকারী এবং যার জন্য বহন করা হয় সকলকে অভিসম্পাত দিয়েছেন।” (আবু দাউদ)
কবীরা গুনাহ ৩০ - জুয়া খেলা
আল্লাহ বলেন :
“হে মুমিনগণ! এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ, এসব শয়তানের অপবিত্র কাজ ছাড়া আর কিছু নয়। অতএব তোমরা এগুলো থেকে বেঁচে থাক- যাতে তোমরা কল্যাণ প্রাপ্ত হও।” (সূরা মায়িদা ৫:৯০)
কবীরা গুনাহ ৩১ - সতী সাধ্বীনারীর প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ দেয়া
আল্লাহ বলেন : “যারা সতী সাধ্বী ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহকাল ও পরকালে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।” (সূরা আন নূর ২৪ ও ২৩)
কবীরা গুনাহ ৩২ - গনীমতের মাল আত্নসাৎ করা
আল্লাহ বলেন :
“আর যে ব্যক্তি গনীমতের মালে খিয়ানত করল সে কিয়ামতের দিবসে সেই খিয়ানতকৃত বস্তু বহন করে উপস্থিত হবে।” (সূরা আলে ইমরান ৩ : ১৬১)
নোটঃ শুধু যুদ্ধলব্ধ সম্পদে নয় এমন সকল সম্পদ যাতে অন্যের অধিকার আছে তা আত্নসাৎ বা তাতে খিয়ানত এ শাস্তির অন্তর্ভুক্ত।
কবীরা গুনাহ ৩৩ – চুরি করা
আল্লাহ বলেন :
“যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে তাদের হাত কেটে দাও এটা তাদের কৃতকর্মের ফল ও আল্লাহর নির্ধারিত আদর্শ দন্ড, আল্লাহ পরাক্রান্ত জ্ঞানময়।” (সূরা মায়িদা ৫: ৩৮)
বিশেষ নোটঃ এই শাস্তি দেয়ার দায়িত্ব ইসলামী রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের। কেউ এই আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারবে না।
কবীরা গুনাহ ৩৪ - ডাকাতি করা
আল্লাহ বলেন :
“আর যারা আল্লাহ, তার রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে, তাদেরকে হত্যা করা হবে, অথবা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে, অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে। কিংবা দেশান্তর করা হবে। এটা হল তাদের পার্থিব লাঞ্ছনা, আর পরকালের তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।” (সূরা আল-মায়িদা ৫: ৩৩)
নোট : অর্থাৎ মানুষের সম্পদ ছিনতাই এবং চুরি করা অথবা বল প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের থেকে নিয়ে নেয়া। বা তাদের পিছু নিয়ে তাদের ইজ্জত সম্রম। বিনষ্ট করা। এই শাস্তি দেয়ার দায়িত্ব ইসলামী রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের। কেউ এই আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারবে না।
কবীরা গুনাহ ৩৫ - মিথ্যা শপথ
নবী কারীম (ﷺ) বলেনঃ “যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করে এবং তা দ্বারা কোন মুসলিমের সম্পদকে অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করে সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে এমন অবস্থায় যে, আল্লাহ তার উপর ক্রোধান্বিত।” (সহীহ বুখারী)
“কবীরা গুনাহ হল আল্লাহর সাথে শরীক করা। মাতা-পিতার নাফরমানী করা, হত্যা করা ও মিথ্যা শপথ করা”। (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৩৬ - হালালকারী এবং যার জন্য হালাল করা হয় উভয়ে গুনাহগার
রসূল (ﷺ) বলেন : “হালালকারী এবং যার জন্য হালাল করা হয় উভয়ের প্রতি আল্লাহ অভিশাপ করেছেন।” (আহমাদ)
নোট : কেউ কারো তিন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে এ শর্তে বিবাহ করে যে, সে সহবাস করে আবার তালাক দিয়ে দিবে, যাতে প্রথম স্বামী পুণরায় বিবাহ করতে পারে, এই ব্যক্তিকে মুহাল্লিল বা হালালকারী বলে। এবং শুধু মাত্র কাগজ পত্রে বিয়ে দেখালে হবে না, সত্যি সত্যি বিয়ে হতে হবে।
কবীরা গুনাহ ৩৭ - আমানত খিয়ানত করা
আল্লাহ বলেন :
“ঈমানদারগণ আল্লাহ ও তার রসূলের সাথে খিয়ানত করো না এবং জেনেশুনে নিজেদের পারস্পরিক আমানতের খিয়ানত করো না। (সূরা আনফাল ৮: ২৭)।
রসূল (ﷺ) বলেন : “যার আমানতদারী নাই, তার ঈমান নাই, আর যার প্রতিজ্ঞা পূরণ নাই তার ধর্ম নাই।” (আহমদ)।
রসূল (ﷺ) বলেন : “চারটি দোষ যার মধ্যে পাওয়া যাবে সে হবে প্রকৃত মুনাফিক। আর যার মধ্যে এর একটি পাওয়া যাবে তার মধ্যে নিফাকের একটি দোষ পাওয়া গেল, যতক্ষণ না সে ঐ দোষ বর্জন করবে (১) যখন তার নিকট আমানত রাখা হয় সে, খিয়ানত করে।” (সহীহ বুখারী)।
কবীরা গুনাহ ৩৮ - খোটা দেয়া
আল্লাহ বলেন :
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান-সদাকাকে ধ্বংস করো না।” (সূরা বাকারা ২ : ২৬৪)
রসূল (ﷺ) বলেন : “তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ কিয়ামতের দিন কোন কথা বলবেন না, তাদের প্রতি অনুগ্রহের দৃষ্টি দিবেন না, তাদেরকে গুনাহ হতে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (১) যে ব্যক্তি পরিধেয় কাপড় টাখনুর (গিরার) নীচে ঝুলিয়ে দেয়, (২) খোটা দানকারী, যে কোন কিছু দান করে খোটা দেয় (৩) যে মিথ্যা শপথ করে দ্রব্যসামগ্রী বিক্রি করে।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ৩৯ - তাকদীরকে অস্বীকার করা
রসূল কারীম (ﷺ) বলেন : “যদি আল্লাহ আসমান ও যমীনের সকল অধিবাসীকে আযাব দেন তাহলে তার আযাব দেয়াটা কোন প্রকার অন্যায় হবে না। আর যদি দয়া করেন তবে তা তাদের আমলের তুলনায় অনেক বেশী হবে। যদি কোন ব্যক্তির নিকট ওহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকে এবং তা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে আল্লাহ তার এ দান বিন্দু পরিমাণ ও গ্রহণ করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তাকদীরের প্রতি ঈমান আনয়ন করবে আর এ কথা বিশ্বাস করবে যে, কোন ব্যক্তি সঠিক কাজ করল সে তা তাকদীর অনুযায়ী করেছে এটা ভুল করা তার জন্য নির্ধারিত ছিল না। আর যে ভুল করল এটা সঠিকভাবে করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। যদি তুমি এ বিশ্বাসের বাইরে মৃত্যুবরণ কর তাহলে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (কিতাবুস সুন্নাহ : ইবনে আবী আসিম আশ-শায়বানী)
কবীরা গুনাহ ৪০ - মানুষের নিকট অন্যের গোপন তথ্য ফাস করা
রসুল (ﷺ) বলেনঃ “যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের লোকের কথা শ্রবণ করার চেষ্টা করে তাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও, তাহলে কিয়ামতের দিন তার কানে গলিত সীসা ঢালা হবে, আর যে ব্যক্তি কোন জীবজন্তুর ছবি অংকন করে তাকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। তাকে বলা হবে তুমি এ ছবিতে প্রাণ সঞ্চার কর, কিন্তু সে পারবে। আর যে ব্যক্তি এমন স্বপ্ন বর্ণনা করল যা সে দেখেনি তাকে শাস্তি হিসেবে দু'টি যবের দানাকে একত্রে জোড়া লাগাতে বলা হবে। কিন্তু তা সে মোটেই পারবে না।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৪১ - পরনিন্দা করা
আল্লাহ বলেন :
“আপনি এমন লোকের কথা মেনে নেবেন না, যে কসম খেয়ে বেড়ায় (এবং যে) অধম; যে নিন্দুক ও চোগলখোরি করে বেড়ায়।” (সূরা আল কলম ৬৮ : ১০-১১)
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) দু'টি কবরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং বললেন, এ কবরবাসীদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে। তবে কোন বড় ব্যাপারে নয়, তাদের একজন এমন ব্যক্তি যে একের কথা অন্যের নিকট লাগাতো। (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৪২ - অভিশাপ করা
রসূল বলেন : “মুসলিমদের অভিশাপ করা অন্যায় এবং তাকে হত্যা করা কুফর।” (সহীহ বুখারী)।
রসূল (ﷺ) বলেন : “কোন লোক যখন অন্য কাউকে অভিশাপ করে তখন অভিশাপটি আকাশে উঠতে চেষ্টা করে। কিন্তু তার জন্য আকাশের দরজাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। অতঃপর যমীনের দিকে অবতরণ করে। কিন্তু জমিনের দরজাগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। অতঃপর অভিশাপটি ডানে বামে ঘুরতে থাকে। কোথাও যাওয়ার সুযোগ না পেয়ে যার উপর করা হল তার নিকট যায়, যদি সে অভিশাপের উপযুক্ত হয়। অন্যথায় অভিশাপকারীর উপর প্রত্যাবর্তন করে।” (আবু দাউদ)
নোটঃ যে কারণেই হোক কোন মুসলিম ভাইয়ের উপর অভিশাপ করা সম্পূর্ণ হারাম। খারাপ দোষে দুষ্ট ব্যক্তিদের উপর তাদের দোষ উল্লেখ করে অভিশাপ করা যায়। যেমন অত্যাচারীদের উপর আল্লাহর অভিশাপ, কাফিরদের উপর আল্লাহর অভিশাপ, প্রাণীর ছবি অংকনকারীদের উপর আল্লাহর অভিশাপ ইত্যাদি।
কবীরা গুনাহ ৪৩ - গাদ্দারী করা, ওয়াদা পালন না করা
রসূল কারীম (ﷺ) বলেন : “চারটি দোষ যার মধ্যে পাওয়া যাবে সে খাঁটি মুনাফিক হবে। আর যার মধ্যে এর একটি পাওয়া যাবে তার মধ্যে মুনাফিকীর একটি চরিত্র পাওয়া গেল। যতক্ষণ পর্যন্ত যে উক্ত অভ্যাস ত্যাগ না করে। যখন আমানত রাখার হয় সে খিয়ানত করে আর যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, যখন প্রতিজ্ঞা করে তখন গাদ্দারী করে আর যখন ঝগড়া করে তখন গালি দেয়।” (সহীহ বুখারী)
রসূল (ﷺ) বলেন : “প্রত্যেক ওয়াদা ভঙ্গকারীর জন্যে কিয়ামতের দিন একটি নিদর্শন থাকবে তার গাদ্দারীর পরিমাণ অনুযায়ী তাকে উচ্চ করা হবে। তবে জনগণের সাথে প্রতারণাকারী শাসকের চেয়ে বড় গাদ্দার আর কেউ হবে না।” (সহীহ মুসলিম)।
কবীরা গুনাহ ৪৪ - গণক ও জ্যোতির্বিদদের বিশ্বাস করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি গণক বা জ্যোতিষীর নিকট আসলো এবং তারা যা বললো তা সত্য বলে গ্রহণ করলো সে মূলতঃ মুহাম্মাদ (ﷺ) -এর উপর যা নাযিল করা হয়েছে তাকেই অস্বীকার করলো।” (আহমাদ)
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি কোন গণকের নিকট আসলো তারপর তাকে ভাগ্য সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞাসা করল চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার সলাত কবুল হবে। না।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ৪৫ - কোন সাহাবীকে গালি দেয়া
রসূল (ﷺ) বলেন : “তোমরা আমার সাহাবীদেরকে গালি দিও না। যদি তোমাদের কেউ ওহুদ পাহাড় পরিমাণ আল্লাহর রাস্তায় দান করে তবুও তাদের কারো একটি মুঠি বা আধা মুঠি পরিমান দানের সমান হবে না।” (সহীহ বুখারী)
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি আমার সাহাবীকে গালি দেয় তার উপর আল্লাহ, ফিরিশতা এবং সমস্ত মানুষের অভিশাপ।” (তাবারানী, আল জামে)
কবীরা গুনাহ ৪৬ - অন্যায় বিচার
রসূল (ﷺ) বলেন : “দু’জন বিচারক জাহান্নামে যাবে এবং একজন বিচারক জান্নাতে যাবে। যে বিচারক মূল সত্যকে উদঘাটন করে এবং তদনুসারে বিচার করে সে জান্নাতে যাবে। আর একজন বিচারকার্যে সত্যকে উদঘাটন করার পর জেনেশুনে অন্যায়ভাবে বিচার করছে সে জাহান্নামে যাবে। অথবা যে না। জেনেশুনে বিচার করে সে জাহান্নামে যাবে।” (জামে আত তিরমিযী)
কবীরা গুনাহ ৪৭ - স্বামীর অবাধ্য হওয়া
আল্লাহ বলেন :
“আর তাদের স্ত্রীদের মধ্যে অবাধ্যতার আশংকা কর তাদের সদুপদেশ দাও তাদের শয্যা ত্যাগ করো এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা অনুগত হয়ে যায় তবে তাদের জন্যে কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপরে শ্রেষ্ঠ।” (সূরা নিসা ৪ : ৩৪)
রসূল কারীম (ﷺ) বলেন : যদি কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে আর স্ত্রী অস্বীকার করার ফলে স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রিযাপন করে তখন ঐ স্ত্রীর উপর ফিরিশতারা অভিশাপ করতে থাকে।” (সহীহ বুখারী)
রসূল (ﷺ) বলেন : “যদি তাদেরকে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করার আদেশ দিতাম তাহলে নারীদের প্রতি আদেশ দিতাম তারা যেন তাদের স্বামীদের সিজদা করে। ঐ সত্তার শপথ করে বলছি যার হাতে আমার জীবন, মহিলারা ঐ পর্যন্ত আল্লাহর হক আদায় করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে স্বামীর হক আদায় না করে, এমনকি স্বামী যদি যাত্রা পথে ঘোড়ার পৃষ্ঠে থেকেও আহবান করে তখনও তাকে বাধা না দেয়।” (আহমাদ)
সুতরাং তাদেরকে আল্লাহর ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করার আদেশ দিতাম তাহলে নারীদের প্রতি আদেশ দিতাম তারা যেন তাদের স্বামীদের সিজদা করে। ঐ সত্তার শপথ করে বলছি, যার হাতে আমার জীবন, মহিলারা ঐ পর্যন্ত আল্লাহর হক আদায় করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে স্বামীর হক আদায় না করে, এমনকি স্বামী যদি যাত্রা পথে ঘোড়ার পিঠেও তাকে আহবান করে তখনও তাকে বাধা না দেয়।” (আহমাদ, সহীহ আল জামে)
নোট : সুতরাং নারীদের কর্তব্য, তারা সর্বাবস্থায় স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট হবে এবং তার অসন্তুষ্টি হতে বেঁচে থাকবে, কখনো স্বামীকে জৈবিক চাহিদা পূরণে বাধা দেবে না। তবে যদি শরয়ী কোন আপত্তি থাকে তবে যেমন - হায়েয। নেফাস অথবা ফরয সওম ইত্যাদি অবস্থায় শুধু সহবাস হতে নিষেধ করতে পারে। মহিলাদের জন্য কর্তব্য হল সর্বদা স্বামীর নিকট লজ্জাবতী হওয়া, তার আদেশের আনুগত্য করা, তার সকল প্রকার অপছন্দনীয় কাজ হতে বিরত থাকা।
রসূল (ﷺ) বলেন : “আমি জান্নাতে উকি মেরে দেখি, জান্নাতে অধিকাংশ অধিবাসী দরিদ্র এবং জাহান্নামে উকি মেরে দেখি, তার অধিকাংশ অধিবাসী মহিলা।” (সহীহ বুখারী)
নোট : অত্র হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম হাফিয শামসুদ্দিন আয-যাহাবী বলেন, মহিলাদের আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি আনুগত্যের অভাব। স্বামীর অবাধ্যতা এবং পর্দাহীনতাই এর মূল কারণ। মহিলারা যখন ঘর থেকে বের হয় তখন সর্বোচ্চ সুন্দর পোশাক পরে বিশেষ সাজ-সজ্জা অবলম্বন করে, যা মানুষকে ফিনায় পড়তে বাধ্য করে। সে নিজে নিরাপদে থাকলেও মানুষ তার থেকে নিরাপদ থাকে না। রসূল কারীম (ﷺ) বলেনঃ “তোমরা মেয়েদের সাথে ভাল ব্যবহার করবে। তাদেরকে বাম পাজরের হাড় হতে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাজরের হাড় সবচেয়ে বাকা হয়, যদি তুমি সোজা করতে চেষ্টা কর ভেঙ্গে যাবে, আর যদি ছেড়ে তাও তাহলে সর্বদা বাকা থাকবে। সুতরাং তাদের সাথে সৎ ব্যবহার করতে থাক।” (সহীহ বুখারী)।
নোট : তাদের সাথে সৎ ব্যবহার হল, আল্লাহর আদেশের আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়া এবং নিষেধ কাজ হতে বিরত থাকতে আদেশ করা। এগুলি। তাদেরকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়। রসূল (ﷺ) বলেন : “মহিলারা হল আবরণীয়, তারা যখন ঘর হতে বের হয় তখন শয়তান তাদেরকে মাথা উচু করে দেখে। তারা যত বেশী ঘরের কোণে অবস্থান করবে ততই আল্লাহর নৈকট্য লাভ করবে।” (তিরমিযী, আল জামে)
রসূল (ﷺ) বলেন : “আমার পরে পুরুষদের উপর মহিলাদের মত ক্ষতিকর আর। কোন ফিত্না আমি রেখে যাইনি।” (সহীহ মুসলিম)।
নোট : মহিলাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ তার ঘরে অবস্থান করা। আল্লাহর ইবাদত, স্বামীর আনুগত্য, তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকা, স্বামীর উপর কোন প্রকার বাড়াবাড়ি না করা এবং আপন চরিত্রে কোন প্রকার কলংক না জড়ানো। উল্লেখিত প্রতিটি হাদীসে স্ত্রীর কাছে স্বামীর অধিকার যে কত বড় তা বুঝানো হয়েছে। বাস্তবিক পক্ষে এ বিষয়টি বিশ্লেষণ করার কারণ, বর্তমানে এটি মহিলাদের জন্যে মহা প্রলয়ংকারী বিপদে পরিণত হয়েছে।
কবীরা গুনাহ ৪৮ - কাপড়, দেয়াল ও পাথর ইত্যাদিতে প্রাণীর ছবি আঁকা
নবী কারীম (ﷺ) বলেন : “যারা চিত্রাংকন করে তাদেরকে কিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে। আর তাদেরকে বলা হবে তোমরা যা সৃষ্টি করেছিলে তাদের আত্ম ও জীবন দান কর।” (সহীহ বুখারী)
আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ “একদিন রসূল কারীম (ﷺ) আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন ঘরের দরজায় এমন একটি পদা টানানো ছিল যার মধ্যে প্রাণীর ছবি আঁকা ছিল। তিনি দেখা মাত্র পদাটি ছিড়ে ফেললেন ও তার চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। তিনি বললেন, হে আয়িশা! কিয়ামতের দিন সবচেয়ে বেশী শাস্তি দেয়া হবে ঐ সব লোকদের যারা আল্লাহর সৃষ্টির সাথে সাদৃর্শ অবলম্বন করে কিছু তৈরী করে। আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, আমি উক্ত পর্দা কেটে একটি অথবা দুটি বালিশ তৈরী করি।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৪৯ - শোক প্রকাশার্থে চেহারায আঘাত করা, মাতম করা, কাপড় ছেড়া, মাথা মুখনো বা চুল উঠানো, বিপদের সময় ধ্বংসের জন্য দুআ করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “শোক প্রকাশ করতে যেয়ে যে চেহারার উপর প্রহার করে এবং কাপড় ছিড়ে ফেলে এবং জাহিলিয়্যাতের অভ্যাসের অনুসরণ করে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৫০ - অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করা
আল্লাহ বলেন :
“ব্যবস্থা নেয়া হবে কেবল তাদের বিরুদ্ধে যারা মানুষের উপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।” (সূরা আশ-শুরা ৪২: ৪২)
রসূল (ﷺ) বলেন : “আল্লাহ আমার নিকট ওহী প্রেরণ করেন যে, তোমরা বিনয়ী হও, কেউ যেন কারো উপর গর্ব না করে আর কেউ যেন কারো উপর অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ না করে।” (আবু দাউদ)
“আত্মীয়তা ছিন্ন করা এবং অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করা এমন দুটি মারাত্বক অপরাধ যার শাস্তি আখিরাতে নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও দুনিয়াতে দেয়া হবে।” (আহমাদ)।
কবীরা গুনাহ ৫১ - দুর্বল, কাজের লোক ও স্ত্রীর উপর অত্যাচার করা
রসূলে কারীম (ﷺ) বলেনঃ “যে ব্যক্তি তার গোলামকে শাস্তি দিল এমন কোন অভিযোগে যা সে করে নাই, তার প্রতিকার হলো তাকে মুক্ত করে দেয়া।” (সহীহ মুসলিম)
“আল্লাহ ঐ সব লোকদের শাস্তি দিবেন যারা দুনিয়াতে মানুষদের কষ্ট দিত।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ৫২ - প্রতিবেশীদের কষ্ট দেয়া
রসূল বলেন : “ঐ ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না যার প্রতিবেশী তার অত্যাচার থেকে নিরাপদ থাকে না।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ৫৩ - মুসলিমদের কষ্ট দেয়া ও গালি দেয়া
আল্লাহ বলেন :
“যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মু'মিন নারীদের কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে।” (সূরা আল আহযাব ৩৩ : ৫৮)
রসূল (ﷺ) বলেন : “কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে মর্যাদার দিক দিয়ে ঐ ব্যক্তি সর্ব নিকৃষ্ট, যাকে মানুষ তার অনিষ্টতা হতে বাঁচার লক্ষ্যে এড়িয়ে চলে।” (সহীহ বুখারী)।
কবীরা গুনাহ ৫৪ - অহংকার করে টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “গোড়ালির নীচে যে কাপড় পরা হবে, তা জাহান্নামে যাবে।” (সহীহ বুখারী) “কিয়ামতের দিন আল্লাহ ঐ ব্যক্তির দিকে রহমতের দৃষ্টি দিবেন না যে অহংকার করে কাপড় পরিধান করে।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৫৫ - স্বর্ণ রৌপ্যের পাত্রে পানাহার করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি স্বর্ণ ও রূপার প্লেটে খায় বা পান করে সে মূলতঃ তার পেটে জাহান্নামের আগুনকেই স্থান দেয়।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৫৬ - পুরুষের স্বর্ণ ও রেশমী কাপড় পরিধান করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “দুনিয়াতে যে ব্যক্তি রেশমী কাপড় পরে তার জন্যে আখিরাতে কোন অংশই নেই। (সহীহ বুখারী)।
কবীরা গুনাহ ৫৭ - আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উদ্দেশ্যে পশু যবেহ করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর জন্য জবেহ করে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ।” (সহীহ মুসলিম)।
গাইরুল্লাহর জন্য জবেহ করার দৃষ্টান্ত যেমন - কেউ জবেহ করার সময় বলে, আমি মাযারের নামে জবেহ করছি, অথবা দেব-দেবীর নামে অথবা পীর সাহেবদের নামে জবেহ করছি ইত্যাদি।
কবীরা গুনাহ ৫৮ - ওযনে ও মাপে কম দেয়া
আল্লাহ বলেন :
“যারা মাপে কম দেয় তাদের জন্য দুর্ভোগ।” (সূরা মুতাফফিফীন ৮৩ : ১)
কবীরা গুনাহ ৫৯ - মৃত ব্যক্তির জন্য আনুষ্ঠানিক ও উচ্চ শব্দে কান্নাকাটি করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “দু'টি দোষ মানুষের মধ্যে কুফর সমতুল্য:
(১) বংশের কুৎসা রটানো।
(২) মৃত ব্যক্তির জন্য আনুষ্ঠানিক কান্নাকাটি করা।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ৬০ - আল্লাহর পাকড়াও হতে নিশ্চিত হওয়া
রসূল কারীম (ﷺ) এ কথাটি বেশী বলতেন : “হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আপনি আমাদের অন্তরকে আমাদের দ্বীনের উপর অটল রাখুন। অতঃপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! এ আমি কি আমাদের ঈমানের ব্যাপারে আশংকা করি? রসূল (ﷺ) উত্তর দিলেন, মানুষের অন্তর দয়াময় আল্লাহরই দুই আঙ্গুলের মাঝে, তিনি যেভাবে ইচ্ছা করেন সেভাবে পরিবর্তন সুতরাং হে মুসলিম ভাইয়েরা! আমাদের ঈমান, আমল, সলাত, ও সকল প্রকার নেক আমল যতই বেশী ও সুন্দর হোক না কেন অহংকার করবো না। কারণ এগুলো আল্লাহর দয়া ছাড়া আর কিছু নয়। যদি কোন না কোন সময় তিনি এগুলি আমার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান তখন আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবো। আমি আমার আমলের কারণে গর্ব করা হতে বিরত থাকব এবং এমন কথা বলবো না যা অজ্ঞ ও মূখরা বলে, যেমন আমরা অমুকের চেয়ে ভাল। আমার আল্লাহ তো মানুষের অন্তরের গোপন-প্রকাশ্য সকল বিষয়ে অবগত। আমরা দুর্বলতা, গুনাহের আধিক্য, আমল কম হওয়ার অনুভুতি অন্তরে স্থান দিয়ে সর্বদা আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকব এবং এমন একটি অবস্থায় থাকব যে অবস্থার বর্ণনা রসূল (ﷺ) হাদীসে দিয়েছেন, “তোমার সংসারে ব্যস্ততা সত্ত্বেও তুমি জিহবাকে সংযত রাখবে, গুনাহের কাজের উপর কান্নাকাটি করবে।” (তিরমিযী)
ঐসব লোকদের মতো হয়ো না যাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন : “তারা কি? আল্লাহর পাকড়ায়ের ব্যাপারে নির্ভয় হয়ে গেছে? ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ব্যতীত কেউ আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিভয় হয় না।” (সূরা আ'রাফ ৭: ৯৯)
কবীরা গুনাহ ৬১ - মৃত জন্তু, প্রবাহিত রক্ত এবং শুকরের গোস্ত খাওয়া
আল্লাহ বলেন :
“আপনি বলে দিন, যে বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌছেছে, তন্মধ্যে আমি কোন ভক্ষণকারীর জন্যে কোন হারাম খাদ্য পাইনি। মৃত ও প্রবাহিত রক্ত এবং শুকরের গোস্ত ব্যতীত। এটা অপবিত্র।” (সূরা আল আন'আম ৬ : ১৪৫)
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি চওসর (দাবা জাতীয়) খেলায় প্রবৃত হয়, সে যেন তার হাতকে শুকরের রক্তে রঞ্জিত করার মত অন্যায় করে।” (সহীহ মুসলিম)
নোট : রসূল ও শুকরের রক্ত-গোস্ত হাতে নেয়াকে গুনাহ সাব্যস্ত করেছেন শুধু, তাই নয় বরং বড় গুনাহ বলে অভিহিত করেছেন। সুতরাং শুকরের গোস্ত খাওয়া যে কত বড় গুনাহ তা সহজেই অনুমান করা যায়।
কীর গুনাহ ৬২ - জুমুআ ছেড়ে দিয়ে বিনা কারণে একা একা সলাত আদায় করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “যদি মানুষ জুমু’আর সলাত পরিত্যাগ করা থেকে বিরত না থাকে তাহলে আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দিবেন যার ফলে তারা অলস ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (দারমীঃ ১৫২৪)
“যে ব্যক্তি আযান শুনল অথচ কোন প্রকার ওজর ছাড়া সলাতের জামাতে উপস্থিত হল না তার সলাত আল্লাহর নিকট কবুল হয় না।” (ইবনে মাজাহ)।
কবীরা গুনাহ ৬৩ - জেনে শুনে অন্যকে পিতা বলে স্বীকৃতি দেয়া
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি জেনে শুনে নিজের পিতাকে বাদ দিয়ে অন্যকে পিতা বলে ঘোষণা দেয় তার উপর জান্নাত হারাম করা হয়েছে।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৬৪ - তর্ক-বির্তক, ঝগড়া একশত্রুতা পোষণ করা
রসূল (ﷺ) বলেনঃ “যে ব্যক্তি অনর্থক কোন বিষয়ে জেনে শুনে বিতর্ক করে সে ঐ পর্যন্ত আল্লাহর অসন্তুষ্টি জীবনযাপন করে যতক্ষণ না সে বিতর্ক থেকে ফিরে আসে।” (আবু দাউদ)।
রসূল (ﷺ) বলেন : “কোন জাতি সঠিক পথের উপর থাকার পর পথভ্রষ্ট হয় নাই, কিন্তু যখনই তারা বিতর্কে লিপ্ত হয়েছে তখনই পথভ্রষ্ট হয়েছে।” (তিরমিযী)
নোট : অর্থাৎ সত্য অন্বেষণ বা উদঘাটনের জন্য নয়, বিতর্ক করার জন্য বিতর্কে লিপ্ত হয়।
কবীরা গুনাহ ৬৫ - আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া
আল্লাহ বলেন :
“তোমরা আল্লার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ রহমত হতে একমাত্র কাফির সম্প্রদায়ই নিরাশ হয়।” (সূরা ইউসুফ ১২:৮৭)
রসূলে কারীম (ﷺ) বলেন : “তোমাদের কেউ যেন আল্লাহর প্রতি ভাল ধারণা পোষণ ছাড়া মৃত্যুবরণ না করে।” (সহীহ মুসলিম)।
কবীরা গুনাহ ৬৬ - মুসলিমকে কাফির বলে আখ্যায়িত করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি তার কোন মুসলিম ভাইকে বলে, হে কাফির! এর পরিণাম তাদের কোন না কোন একজনের উপর বর্তাবেই।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৬৭ - ষড়যন্ত্র করা এক ধোকা দেয়া
আল্লাহ বলেন : “কুচক্রের শাস্তি কারও উপর পতিত হয় না, কুচক্রীর উপরই পতিত হয়।” (সূরা ফাতির ৩৫:৪৩)
রসূল (ﷺ) বলেন : “কুচক্রী এবং ধোকাবাজীর স্থান জাহান্নাম।” (বায়হাকী)
কবীরা গুনাহ ৬৮ - জমিনের সীমানা উঠিয়ে ফেলা বা পরিবর্তন করা
রসূল (ﷺ) বলেনঃ “আল্লাহর অভিশাপ করেছেন ঐ ব্যক্তির উপর যে জমিনের সীমানা পরিবর্তন করে।” (সহীহ মুসলিম : ৩৬৫৭)
কবীরা গুনাহ ৬৯ - অপসংস্কৃতি ও কু-প্রথারপ্রচলন করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন কুপ্রথা বা বিদ’আত চালু করল সে নিজেতো গুনাহগার হবেই এবং তারপরে যে ব্যক্তি ঐ কুপ্রথার উপর আমল করবে তার গুনাহ ও তার উপর বর্তাবে, তবে এ কারণে ঐ ব্যক্তির গুনাহের অংশ বিন্দু পরিমাণ ও কমানো হবে না।” (সহীহ মুসলিম)।
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি কোন গোমরাহীর প্রতি মানুষকে আহবান করে ঐ ব্যক্তি গুনাহের মধ্যে ঐ পরিমাণ অংশীদার হবে যে পরিমান গুনাহ ঐ গোমরাহীর অনুসারীদের হবে। তবে এ কারণে তাদের গুনাহের পরিমাণ একটুও কমানো হবে না।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ৭০ - নারী পরচুলা ব্যবহারকরা,শরীরে উলকি আকা, উপড়ানো, দাঁত ফাক করা
রসূল কারীম (ﷺ) বলেন : “আল্লাহ অভিশাপ করেছেন এমন সব নারীদের যারা অন্যের অঙ্গ খোদাই করে নিজের শরীরে তা করতে চায়, যারা ভ্রু উঠিয়ে ফেলে এবং যারা সৌন্দর্যের জন্য দাঁত সরু ও উহার ফাক বড় করে, যারা আল্লাহর সৃষ্টিকে বদলে নেয়।” (সহীহ মুসলিম)
তিনি আরো বলেনঃ “সে নারীর উপর আল্লাহর অভিশাপ যে অন্য নারীর মাথায় কৃত্রিম চুল স্থাপন করে কিংবা নিজ মাথায় মেকী চুল স্থাপন করে এবং যে অন্যের গাত্রে উল্কি করে অথবা নিজের গাত্রে উল্কি করায়।” (সহীহ বুখারী)
কবীরা গুনাহ ৭১ - ধারালো অস্ত্র দিয়ে কারো দিকে ইশারা করা
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি তার কোন ভাইয়ের দিকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা ইশারা করে ফিরিশতাগণ তার উপর অভিশাপ করতে থাকে, যদিও সে তার আপন ভাই হয়।” (সহীহ মুসলিম)।
অন্য একটি হাদীসের কঠোর ধমকির কারণ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রসূল (ﷺ) বলেন, “হতে পারে শয়তান তার হাতে থেকে অস্ত্র নিয়ে ব্যবহার করবে। ফলে সে জাহান্নামের গুহায় নিপতিত হবে।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ৭২ - হারাম শরীফে ধর্মদ্রোহী কাজ করা
আল্লাহ বলেন :
“এবং মসজিদে হারাম যা আমি করেছি স্থায়ী ও বহিরাগত সকলের জন্য সমান। আর তাতে যে অন্যায়ভাবে কোন ধর্মদ্রোহী কাজ করার ইচ্ছা করে, আমি তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাবো।” (সূরা হাজ্জ ২২ : ৭৫)
“তোমরা কি জান আমার উম্মতের মধ্যে দরিদ্র কে? মনে রাখবে আমার উম্মতের মধ্যে দরিদ্র হল ঐ লোক যে কিয়ামতের দিন অনেক সলাত, সিয়াম, ও যাকাত নিয়ে উপস্থিত হবে অথচ সে দুনিয়াতে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ ভক্ষণ করেছে আবার কাউকে রক্তাক্ত বা প্রহার করেছে, অতঃপর আল্লাহ তার পুণ্য হতে তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত, অত্যাচারিত ব্যক্তিদের পাওনা আদায় করে দিবেন। যখন পাওনাদারদের পাওনা পরিশোধ করার পূবেই তরা পুণ্য শেষ হয়ে যাবে, তখন তাদের পাপগুলি তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে, তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।” (সহীহ মুসলিম)
কবীরা গুনাহ ৭৩ - মুসলিমদের ত্রুটি - বিচ্যুতির সন্ধান করা এবং তাদের গোপন তথ্য প্রকাশ করা
আল্লাহ বলেনঃ
“আপনি আনুগত্য করবেন না ঐ ব্যক্তির যে কথায় কথায় শপথ করে, যে লাঞ্ছিত, যে অন্যকে দোষারোপ করে ও পশ্চাতে নিন্দা করে, যে একের কথা অপরের নিকট বলে বেড়ায়।” (সূরা আল-কলম ৬৮ : ১০-১১)
রসূল (ﷺ) বলেন : “যে ব্যক্তি কোন মু'মিন সম্পর্কে এমন দোষ বর্ণনা করে যা তার মধ্যে আদৌ নেই, আল্লাহ জাহান্নামীদের নির্গত পচা গলা পুজের মধ্যে তার স্থান নির্ধারণ করে দিবেন। সে যা বলেছে তা বের করে দিতে চাবে, কিন্তু পারবে না” (আবু দাউদ)
কবীরা গুনাহ ৭৪ - ঝগড়া করার সময় অতিরিক্ত গালি দেয়া
রসূল (ﷺ) বলেন : “চারটি দোষ যার মধ্যে পাওয়া যাবে সেই প্রকৃত মুনাফিক। যার মধ্যে এর একটি পাওয়া যাবে তার নিকট মুনাফিকের একটি চরিত্র পাওয়া গেল। যখন আমানত রাখা হয় সে খিয়ানত করে, যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, যখন চুক্তি করে তা ভঙ্গ করে আর যখন ঝগড়া করে গাল মন্দ করে।” (সহীহ বুখারী)।
কবীরা গুনাহ ৭৫ - কোন কংশ বা তার লোকদের খারাপ গুলে অভিহিত করা
রসূল (ﷺ) বলেন, “দু'টি দোষ মানুষের মধ্যে কুফর সমতুল্য। (১) বংশের কুৎসা রটানো। (২) মৃত ব্যক্তির জন্য আনুষ্ঠানিক কান্নাকাটি করা।” (সহীহ মুসলিম)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/22/120
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।