hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের স্বচ্ছ ধারণা

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

৭৮
আল্লাহর হুকুম পালন করা দরকার কেন?
পূর্বেই আমরা জেনেছি যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ মেনে চলার নামই ইসলাম এবং মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের ইচ্ছা, বাপ-দাদার কুসংস্কার, দুনিয়ার রাজা-বাদশাহ ও লোকদের আদেশ অনুযায়ী চলা ছেড়ে দিয়ে কেবলমাত্র আল্লাহ ও রসূল (ﷺ) -এর আনুগত্য করবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত কেউই প্রকৃত মুসলিম হতে পারবে না।

আল্লাহর হুকুম পালন করার জন্য কেন এতো জোর দেয়া হয়?

কিন্তু আল্লাহ ও রসূলের হুকুম পালন করার উপর এত জোর কেন দেয়া হয়, এখানে সেই কথারই বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। একজন মানুষ জিজ্ঞেস করতে পারে যে, আল্লাহর আনুগত্য করার দরকারটা কি, তিনি কি আমাদের আনুগত্য পাবার মুখাপেক্ষী? আর সে জন্যই কি আল্লাহ আমাদের কাছে তাঁর নিজের এবং তাঁর রসূলের হুকুম পালন করে চলার দাবী করছেন? দুনিয়ার রাজা-বাদশাহরা যে রকম নিজেদের কর্তৃত্ব চালাবার জন্য লালায়িত, আল্লাহ কি তেমন লালায়িত? দুনিয়ার জনগণ যেমন বলে যে, আমার প্রভুত্ব স্বীকার করো আল্লাহও কি তেমনি বলেন?

আসল কথা এই যে, আল্লাহ মানুষের কাছে তার আনুগত্য দাবী করেন তাঁর নিজের স্বার্থের জন্য নয়। বরং এ মানুষেরই কল্যাণের জন্য তিনি তা চাচ্ছেন। আল্লাহ দুনিয়ার রাজা-বাদশাহর মত নন, দুনিয়ার রাজা ও রাজ-কর্মচারীগণ তো শুধু নিজেদেরই স্বার্থের জন্য লোকদের উপর তাদের আদেশ চালায় লোকদেরকে নিজেদের ইচ্ছার গোলাম বানাতে চেষ্টা করে। কিন্তু আল্লাহর কোনো স্বার্থ নেই, তিনি সকল রকম স্বার্থের নীচতা হতে পবিত্র। আমার কাছ থেকে টাকা আদায় করার কোনো দরকার আল্লাহর নেই। বাড়ি তৈরি করা, গাড়ী ক্রয় করা কিংবা আমাদের টাকা-পয়সা, বিলাস-সামগ্রি বা আরাম আয়েশের সামগ্রী সংগ্রহ করার কোনো প্রয়োজনই তার নেই। তিনি পাক-পবিত্র, তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। দুনিয়ার সবকিছুই তাঁর, সমস্ত ধন-সম্পদের তিনিই একমাত্র মালিক। তিনি আমাদেরকে তাঁর হুকুম মেনে চলতে এবং তাঁর আনুগত্য করতে বলেন, শুধু আমাদেরই মংগলের জন্য-আমাদেরই কল্যাণ করতে চান তিনি।

তিনি মানুষকে ‘আশরাফুল মাখলুকাত করে সৃষ্টি করেছেন, তাঁর এ শ্রেষ্ঠ মাখলুক বা বিরাট সৃষ্টি মানুষেরা শয়তানের গোলামী করুক, কিংবা অন্য মানুষের দাস হোক অথবা দুনিয়ার সামান্য ও হীন জিনিসের সামনে মাথা নত করুক এটা তিনি মাত্রই পছন্দ করেন না। তিনি যে মানুষকে দুনিয়ায় তাঁর প্রতিনিধি বানিয়েছেন, তারা মুখতার অন্ধকারে ঘুরে মরুক এবং পশুর মতো নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী চলে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট প্রাণীতে পরিণত হোক-এটাও তাঁর মনপুত নয়।

“দ্বীন ইসলামের ব্যাপারে কোনো জোর-যবরদস্তি নেই। হিদায়াতের সোজা পথ গোমরাহীর বাঁকা পথ হতে ভিন্ন করে একেবারে পরিষ্কার করে দেখানো হয়েছে। এখন তোমাদের মধ্যে যারাই মিথ্যা প্রভু এবং ভ্রান্ত পথে চালনাকারীদেরকে ত্যাগ করে কেবল এক আল্লাহর প্রতিই ঈমান আনবে, তারা এত মযবুত রঞ্জু ধারণ করতে পারবে, যা কখনই ছিড়ে যাবার নয়। আল্লাহ সবকিছুই শুনতে পান এবং সবকিছুই তিনি অবগত আছেন। যারা ঈমান আনলো তাদের রক্ষাকারী হচ্ছেন আল্লাহ, তিনি তাদেরকে অন্ধকার হতে মুক্তি দান করে আলোকের উজ্জলতম পথে নিয়ে যান। আর যারা আল্লাহকে অস্বীকার করে তাদেরকে রক্ষা করার ভার তাদের মিথ্যা প্রভু ও গোমরাহকারী নেতাদের উপর অর্পিত হয়। তারা তাদেরকে আলো হতে পথভ্রষ্ট অন্ধকারে নিমজ্জিত করে। তারা জাহান্নামে যাবে ও সেখানে তারা চিরদিন থাকবে।” (সূরা বাকারা ২: ২৫৬-২৫৭)

আল্লাহকে ছেড়ে অন্যান্য মিথ্যা প্রভুর হুকুম মানলে ও তাদের আনুগত্য করলে মানুষ কেন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়, আর কেবল আল্লাহর আনুগত্য করলেই কেন আলোকোজ্জল পথ লাভ করা যাবে তা আমাদের বিচার করে দেখা আবশ্যক।

আমরা দেখেছি, দুনিয়ায় আমাদের জীবন অসংখ্য রকম সম্পর্কের সাথে জড়িত। আমাদের প্রথম সম্পর্ক আমাদের দেহের সাথে। হাত, পা, কান, চোখ, জিহ্বা, মন, মগ এবং পেট সমস্তই আল্লাহ আমাদেরকে দান করেছেন আমাদের নিজেদের খেদমত করার জন্য। কিন্তু এগুলো দ্বারা আমরা কিভাবে খেদমত নিবো, তা আমাদেরই বিচার করতে হবে। পেটকে কী খেতে দেবো এবং কী খেতে দিবো না; হাত দ্বারা কী করবো, কী করবো না; পা দু'খানিকে কোন্ পথে চালাবো কোন্ পথে চালাবো না; চোখ ও কান দ্বারা কী কাজ করাবো আর কী কাজ করাবো না; মনে কোন্ কথার খেয়াল রাখবো আর কোন কথার রাখবো না; মন-মগ দিয়ে কোন কথার চিন্তা করবো আর কোন্ কথার চিন্তা করবো না-এসবই আমাকে সবদিক চিন্তা করে ঠিক করতে হবে। এরা সবাই আমার অধীন এদের দ্বারা আমি ভালো কাজও করাতে পারি, আর পাপের কাজও করাতে পারি। এরা আমার কাজ করে আমাকে উচ্চতম মর্যাদার মানুষেও পরিণত করতে পারে আবার এরা আমাকে জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট ও নীচ জীবও বানিয়ে দিতে পারে।

অতঃপর আমার নিকটতম সম্বন্ধ আমার ঘরের লোকদের সাথে বাবা-মা, ভাই বোন, স্ত্রী, ছেলেমেয়ে ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন সকলের সাথে আমাকে রাত দিন সকল সময়ের জন্য সম্পর্ক রেখে চলতে হয়। কিন্তু এদের সাথে আমি কিরূপ ব্যবহার করবো, তা আমাকে বিশেষভাবে চিন্তা করে ঠিক করতে হবে। এদের উপর আমার কী ‘হক (অধিকার) আছে এবং আমার উপরই বা এদের কী অধিকার আছে, তা আমার ভালো করে জেনে নেয়া দরকার। মনে রাখতে হবে, এদের সাথে আমার ব্যবহার সুষ্ঠু হওয়ার উপরই আমার দুনিয়া ও আখিরাতের সুখ-শান্তি ও সফলতা নির্ভর করে। যদি এদের সাথে আমি ভুল ব্যবহার করি তবে দুনিয়াকেই আমি নিজের জন্য জাহান্নামে পরিণত করবো। আর শুধু দুনিয়াই নয়, পরকালেও আমাকে আল্লাহর কাছে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে।

এরপর আসে দুনিয়ার অন্যান্য অগণিত লোকের সাথে আমার সম্পর্কের কথা। অনেক লোক আমার পাড়া-প্রতিবেশী, অনেক লোক আমার বন্ধু, কতগুলো লোক আমার শত্ৰত। বহু লোক আমার খেদমত করে এবং আমি বহু লোকের খেদমত করি। আমি কারো কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করি এবং কাউকে আমি কিছু দেই। কেউ আমার উপর ভরসা করে তার কাজের ভার আমাকে দেয়, আবার আমি কারো উপর ভরসা করে আমার কাজের ভার তার উপর অর্পণ করি। কেউ আমার বিচারক আর আমি অন্য কারো বিচারক। আমি কাউকে হুকুম দেই আবার আমাকে কেউ হুকুম দেয়। ফলকথা, কত সংখ্যক লোকের সাথে আমার রাত-দিন কোনো না কোনো সম্পর্ক রেখেই চলতে হয়, যার হিসাব করে আমি শেষ করতে পারবো না। এ সম্পর্কগুলো আমাকে খুব ভালোভাবেই রক্ষা করতে হয়। দুনিয়ায় আমার সুখ-শান্তি, পছন্দ-অপছন্দ, আনন্দ, সফলতা, মান-সম্মান ও সুনাম অর্জন একান্তভাবে এরই উপর নির্ভর করে। সেগুলোকে খুব ভালোভাবে রক্ষা করতে পারলে আমি দুনিয়ায় সুখ-শান্তি এবং আনন্দ ও গৌরব লাভ করতে পারি, নতুবা পারি না।

অনুরূপভাবে যদি পরকালে আমি আল্লাহর কাছে কারোও অধিকার হরণকারী সাব্যস্ত না হয়ে হাজির হতে পারি, তাহলে আমি তার কাছে সম্মান লাভ করতে পারি এবং সেজন্য আমাকে এমনভাবে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হতে হবে যেন আমি কারো হক নষ্ট করিনি, কারো উপর যুলুম করিনি, কেউ আমার বিরুদ্ধে কোনো নালিশ করেনি, কারো জীবন নষ্ট করার দায়িত্ব আমার উপর নেই এবং কারো জান-মাল ও সম্মান আমি অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করিনি। কাজেই এখন আমাকে এই ফায়সালা করতে হবে যে, এই অগণিত লোকের সাথে সঠিকভাবে সম্পর্ক কিভাবে রাখা যাবে এবং যেসব কারণে এসব সম্পর্ক ছিন্ন, নষ্ট বা তিক্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে তা জেনে নিয়ে তা থেকে আমাকে ফিরে থাকতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন