hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের স্বচ্ছ ধারণা

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

৭৭
ইসলাম ও অন্যান্য আদর্শের মধ্যে পার্থক্য :
অবশ্য একটি ব্যাপারে ইসলাম ও অন্যান্য আদর্শের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য আদর্শও মানুষের কাছে উল্লেখিত রূপ আত্মসমর্পণ, ঐকান্তিক নিষ্ঠা ও আনুগত্যের দাবী করে বটে, কিন্তু মূলতঃ দাবী করার তাদের কোনোই অধিকার নেই। এটা বরং মানুষের উপর তাদের একটি অন্যায় আবদার মাত্র। পক্ষান্তরে মানুষের প্রতি ইসলামের দাবী অত্যন্ত শাশ্বত ও স্বাভাবিক। একটি আদর্শ যেসব কারণে অন্যান্য মানুষের কাছে তার নিজের সমগ্র জীবন পূর্ণ ব্যক্তি সত্ত্বাকে উৎসর্গ করার দাবী জানায়, মূলতঃ সেসবের মধ্যে একটি জিনিসের জন্য মানুষ তার নিজের কোনো জিনিসকে স্যাক্রিফাইস করতে পারে না।

কিন্তু ইসলাম যে আল্লাহর জন্য মানুষের কাছে পূর্ণ আত্মসমর্পণ ও ঐকান্তিক নিষ্ঠার দাবী করে প্রকৃতপক্ষে সে জন্যই মানুষের উৎসর্গিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, তা সবই আল্লাহর। মানুষ নিজেই আল্লাহর সৃষ্টি। মানুষের কাছে এবং মানুষের মধ্যে যা আছে, সবকিছুই আল্লাহর মালিকানা। মানুষ এ দুনিয়ায় যেসব জিনিস দ্বারা কাজ করে তাও আল্লাহর। কাজেই জ্ঞান-বুদ্ধি ও সুবিচারের দৃষ্টিতে এটাই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে যে, যা আল্লাহর তা আল্লাহরই পথে উৎসর্গ করতে হবে। অপরের জন্য কিংবা নিজ স্বার্থের জন্য মানুষ যে সেকরিফাইস করে তা মূলতঃ খিয়ানত-অন্যায় ব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়। অবশ্য আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী কিছু করলে তা নিশ্চয়ই খিয়ানত হবে না। কেননা আল্লাহর জন্য যা কিছুই উৎসর্গ করা হয়, তা দ্বারা মূলতঃ আল্লাহরই হক আদায় করা হয়।

কিন্তু যারা বাতিল মতবাদ ও আদর্শ এবং নিজেদের মনগড়া ইলাহ ও প্রভুদের জন্য নিজেদের সবকিছু সেকরিফাইস করে এবং সে জন্য অবিচল ও দৃঢ়তা সহকারে ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তাদের কর্মতৎপরতা হতে মুসলিমদের শিক্ষাগ্রহণ করা আবশ্যক। বাতিলের জন্য যখন মানুষ এত নিষ্ঠা ও ঐকান্তিকতা প্রদর্শন করতে পারে তখন সত্যের জন্য যদি তার এক সহস্রাংশ ত্যাগ স্বীকার করা না হয় তবে তা কত পরিতাপের বিষয়। আত্মপরীক্ষা : উল্লেখিত আলোচনা হতে ঈমান ও ইসলামের যে সঠিক মাপকাঠির সন্ধান পাওয়া যায়, তদনুযায়ী আমাদের প্রত্যেককেই আত্মপরীক্ষা করা কর্তব্য। আমি যদি ইসলাম কবুল করার ও ঈমান আনার দাবী করি তবে আমার জীবন ও মৃত্যু একমাত্র আল্লাহর জন্য উৎসর্গীকৃত কিনা, তা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে যাচাই করে দেখা বাঞ্ছনীয়। আমি একমাত্র আল্লাহরই জন্য জীবিত কিনা, আমার মন ও মস্তিষ্কের সমগ্র যোগ্যতা-ক্ষমতা, আমার দেহ ও প্রাণের শক্তি, আমার সময় ও শ্রম একমাত্র আল্লাহর মজী পূরণের জন্য এবং মুসলিম উম্মাতের দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োজিত কিনা তা বিশেষভাবে যাচাই করে দেখা কর্তব্য। আমার ইবাদত ও আনুগত্য আল্লাহরই জন্য কিনা, অন্যদিকে নফসের দাসত্ব এবং পরিবার, গোত্র, বন্ধু-বান্ধব ও সমাজ তথা সরকারের বন্দেগী হতে আমার জীবন সম্পূর্ণরূপে মুক্ত কিনা, তাও সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে পরীক্ষা করে দেখা উচিত। আমার পছন্দ-অপছন্দ আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী নির্ধারিত কিনা তাও বিশেষভাবে লক্ষ্য করার বিষয়।

আরও বিচার করে দেখি, আমি যাকে ভালোবাসি, স্নেহ করি, তা কি একমাত্র আল্লাহর জন্য করি? যার প্রতি ঘৃণা পোষণ করি, তাও কি আল্লাহর জন্য করি? এ ঘৃণা ও ভালোবাসায় আমার নিজের কোনো স্বার্থ কাজ করে না তো? দেয়া না দেয়াও কি আল্লাহরই জন্য হচ্ছে? নিজের মন সহ দুনিয়ায় যাকে যা কিছু আমি দেই, তা দিয়ে কি আমি একমাত্র আল্লাহরই সন্তোষ পেতে চাই? পক্ষান্তরে আমার না দেয়াও কি ঠিব আল্লাহরই জন্য হচ্ছে? আমি কি এজন্য দিচ্ছি না যে, আল্লাহ দিতে নিষেধ করেছেন? এবং না দিয়ে কি আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করছি? এরূপে সবকিছুই আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করার ভাবধারা যদি আমি আমার নিজের মধ্যে বর্তমান দেখতে পাই তবে আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করি। কেননা আল্লাহ সত্যই আমার ঈমানকে পূর্ণতা দান করেছেন। কিন্তু এদিক দিয়ে যদি আমি আমার মধ্যে কোনো প্রকার অভাব অনুভব করি, তবে তা দূর করার জন্য এখনই যত্নবান হওয়া উচিত, সবল চেষ্টা ও তৎপরতা এদিকে মনোযোগ দেয়া উচিত। কেননা এ অভাব পূরণের উপরই আমার ইহকালীন সাফল্য ও পরকালীন মুক্তি নির্ভর করে। দুনিয়ায় আমি কোনো মহাসম্পদ লাভ করলেও তা দ্বারা এ অভাব পূরণ হতে পারে না। কিন্তু এ অভাব যদি আমি পূরণ করে নিতে পারি, তবে দুনিয়ায় আমি কিছু না পেলেও প্রকৃতপক্ষে আমি কোনোরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হবো না।

স্মরণ রাখতে হবে যে, কুরআন হাদীসের এ মাপমাঠিতে অপরকে যাচাই করার জন্য এবং তাকে মু'মিন কিংবা মুনাফিক অথবা মুসলিম কিংবা কাফির বলে ঘোষণা করার জন্য নয়। প্রকৃতপক্ষে নিজেকে বাঁচাবার জন্য এবং পরকালের বিচারালয়ের কাঠগড়ায় দাঁড়াবার পূর্বে এ দুনিয়ায় নিজের ক্রটি জেনে তা সংশোধন করার জন্যই এ মাপকাঠি নির্ধারিত হয়েছে। দুনিয়ার মানুষ আমাকে কী মনে করেছে সেই চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই, মহাবিচারক-গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছুর একমাত্র জ্ঞাতা-আল্লাহ আমাকে কী স্থান দেন তাই আমাকে চিন্তা করতে হবে। দুনিয়ার আদমশুমারীর খাতায় আমি মুসলিম রূপে গণ্য হয়েছি দেখেই আমার নিশ্চিত হয়ে বসে থাকা উচিত নয়। আল্লাহর কাছে আমার কী মর্যাদা দেয়া হচ্ছে সেই সম্পর্কে সতর্ক হওয়া আমার কর্তব্য। সমগ্র পৃথিবী আমাকে ঈমান ও ইসলামের সার্টিফিকেট দিলেও প্রকৃতপক্ষে আমার কোনো লাভ নেই। মূল বিচার যে আল্লাহর হাতে তাঁরই কাছে মুনাফিকের পরিবর্তে মু'মিন; অবাধ্যের পরিবর্তে অনুগত বান্দা রূপে গণ্য হওয়াই আমাদের জীবনের প্রকৃত সাফল্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন