hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের স্বচ্ছ ধারণা

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

৯৭
দ্বীন ইসলামের বৈশিষ্ট্য
এক:

দ্বীন ইসলাম যেহেতু আল্লাহ প্রদত্ত এবং রসূল (ﷺ) প্রদর্শিত দ্বীন, তাই এতে কোনো প্রকারের সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ নেই, থাকতে পারে না। এ দ্বীন যার কাছ থেকে এসেছে তার পরিচয় হলো

“তিনি অতীত ও ভবিষ্যত সম্পর্কে জ্ঞাত।” তার জ্ঞানের ক্ষেত্রে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের কোনো পার্থক্য নেই। আল্লাহর দ্বীনের সর্বশেষ রূপ আমরা পেয়েছি শেষ নবীর উপর নাযিলকৃত কিতাব আল-কুরআনের মাধ্যমে। আর সেই কুরআন সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলার ঘোষণা হলো- “এতে কোনো প্রকারের সন্দেহের অবকাশ নেই।”

পক্ষান্তরে, মানুষের মনগড়া দ্বীন, মতবাদ বা আদর্শ কখনও সন্দেহ-সংশয়মুক্ত হতে পারে না। মানব রচিত কোনো দ্বীনের প্রবক্তা এটা দাবিও করতে পারে না যে, কেবল তার উপস্থাপিত দ্বীনই সত্য ও সঠিক, অন্যটা মিথ্যা বা অবাস্তব। কারণ, মানুষ কোনো আদর্শ বা মতবাদ রচনা করতে গিয়ে যে ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞানের আশ্রয় নেয় এটা একান্তই সীমাবদ্ধ। এর মাধ্যমে তারা মানুষের অতীত ইতিহাসের সামান্যতম তথ্যেরও সঠিক বিশ্লেষণ করতে সক্ষম নয়।

বর্তমান অবস্থাকে যা চোখের সামনে ঘটেছে তারও যথার্থ মূল্যায়ন করার জন্য মানুষের জ্ঞান ও বিবেক বুদ্ধি যথেষ্ট নয়। আর ভবিষ্যত তো মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। সুতরাং কোনো অবস্থায়ই মানুষের রচিত মতবাদ নির্ভুল ও সংশয়মুক্ত হবার দাবি করতে পারে না।

দুই :

দ্বীন ইসলাম মানব জীবনের কোনো বিশেষ দিকে সীমাবদ্ধ নয় বরং গোটা দিক ও বিভাগের জন্য সামগ্রিক ও সার্বিক বিধান দিয়েছে। ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন, অর্থনৈতিক জীবন এবং আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক জীবন প্রভৃতির সমন্বয়েই মানুষের সামগ্রিক জীবন গড়ে উঠে এবং পরিচালিত হয়। একযোগে এ সবগুলো দিক ও বিভাগের জন্য যে আদর্শ বা দ্বীন পরিপূর্ণ ও সুসামঞ্জস্যপূর্ণ বিধান দেয় কেবল তাকেই পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান বলা যায়।

এ মাপকাঠিতে বিচার করলে ইসলাম ছাড়া আর যত মতবাদ বা আদর্শ আছে তার কোনো একটিকেও পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা বলা যায় না বরং সেগুলো একমুখি। জীবনের কোনো এক বা দু’টি দিকে সীমাবদ্ধ। অন্যান্য দিক সেখানে উপেক্ষিত অথবা একদিকের সাথে অপরদিক সাংঘর্ষিক বা স্ববিরোধী। যেমন পাশ্চাত্যের ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাতন্ত্রবাদের প্রাধান্য স্বীকৃত এবং প্রতিষ্ঠিত কিন্তু সর্বসাধারণের অর্থনৈতিক মুক্তি ও নিরাপত্তার দিকটি উপেক্ষিত।

অপরদিকে সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক মুক্তি ও নিরাপত্তার শ্লোগানের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত কিন্তু রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাতন্ত্রবাদ চরমভাবে উপেক্ষিত। আর উভয় ব্যবস্থায় মানুষের আত্মিক ও আধ্যাত্মিক দিকটি চরমভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।

এছাড়া কোনো কোনো মহল থেকে পাশ্চাত্যের গণতন্ত্র, চীন-রাশিয়ার সমাজতন্ত্রকে ধর্মের সাথে একটা গোজামিল দেয়ার অপপ্রয়াস চালানো হয়। এদের এ প্রয়াস পরস্পর বিরোধী মতাদর্শের সংঘাতে মানবতাকে আরও বিপর্যস্তই করবে। এরা রাজনীতিতে পাশ্চাত্যের গণতন্ত্র, অর্থনীতিতে সমাজতন্ত্র এবং ব্যক্তি জীবনে ধর্মের কথা বলে। এতে করে রাজনৈতিক জীবনের সাথে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, আবার অর্থ ব্যবস্থার সাথে ধর্মীয় জীবন স্বাভাবিকভাবেই সংঘর্ষমুখর হয়ে উঠে।

সুতরাং মানুষের মগজপ্রসূত কোনো ব্যবস্থাই মানুষের জীবনের সকল দিক ও বিভাগের জন্য পূর্ণাঙ্গ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বিধান দিতে অক্ষম। এ বিশ্লেষণের আলোকে বলতে হয়, ‘ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান’। এ কথাটা যথার্থ নয় এবং যথার্থ কথা হলো ‘ইসলামই মানুষের জন্য একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ও কল্যাণকর জীবন ব্যবস্থা।

তিন :

দ্বীন ইসলামের অপর বৈশিষ্ট্য হলো, এ দ্বীন কোনো ক্ষণস্থায়ী ও ক্ষণভঙ্গুর জীবন ব্যবস্থা নয়। আসমান-যমীনের স্রষ্টা, গোটা বিশ্বজাহানের একক মালিকের কাছ থেকে যে দ্বীন এসেছে তা চিরন্তন, শ্বাশত এবং সর্বকালের ও সর্বযুগের মানুষের জন্য আধুনিকতম ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভে সক্ষম।

পক্ষান্তরে, মানুষের মনগড়া মতাদর্শ কোনো বিশেষ দেশের বিশেষ অবস্থার জন্য তৈরি হয়ে থাকে তা সেই দেশেও বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। কোনো কোনো সমাজ বিজ্ঞানী এক একটা সভ্যতার আয়ুষ্কাল এক শতাব্দীর বেশি নয় বলে নিজেরাই মনে করে থাকেন। বাস্তবে কোনো আদর্শ তার আদর্শ রূপে দুনিয়ার কোথাও একদিনের জন্যও প্রতিষ্ঠা হতে পারে না। তা কেবল মুখরোচক শ্লোগান এবং আবেগ সৃষ্টির হাতিয়ার রূপেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ইসলাম সর্বযুগের ও সর্বকালের জন্য আধুনিক এবং যুগোপযোগী বাস্তবমুখী জীবন ব্যবস্থা হিসেবে টিকে থাকতে পারার রহস্য এর প্রথম ও প্রধানতম উৎস কুরআন আল্লাহর শাশ্বত বাণী। আলিমূল হাকিমের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত এ কিতাবে কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ আসবে আর মানব সমাজের যত সমস্যার জন্ম নেবে সবকিছুর সমাধান করার মত মৌলিক উপাদান রয়েছে পূর্ণরূপেই। এর মৌল উপাদান থেকে সমাধান বের করার প্রধানতম ও একমাত্র নির্ভরযোগ্য মাধ্যম রসূলের সুন্নাহ। এ সুন্নাহ অহিলব্ধ জ্ঞানের বাস্তব প্রয়োগ পদ্ধতির সংকলন বৈ আর কিছুই নয়।

চার :

দ্বীন ইসলামের বৈশিষ্ট্য হলো, এ দ্বীন মানুষের স্বভাব প্রকৃতির সাথে পরিপূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই একে ‘দ্বীন ফিতরাত' বা স্বভাবধর্মও বলা হয়ে থাকে। মানুষের স্রষ্টা জন্মগতভাবে মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতির মধ্যে ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় প্রভৃতির মধ্যে বাছ-বিচার করার যে শক্তি ও যোগ্যতা দিয়েছেন, সেটা ইসলাম মেনে চলার জন্য সহায়ক। ইসলামের বিধি-নিষেধগুলোও মানুষের স্বভাব প্রকৃতির অনুকূলে-প্রতিকূলে না। যুগ যুগ ধরে মানুষের সহজাত প্রকৃতি যেসব ভাল কাজকে ভাল বলে স্বীকার করে আসছে সেই কাজগুলোকেই ইসলাম সৎ কাজ বলে ঘোষণা করেছে। সেই সব সৎ গুণাবলীর বিকাশ ইসলামের কাম্য।

পক্ষান্তরে সর্বযুগে সর্বকালেই মানুষের বিবেক-বুদ্ধি কিছু কার্যকলাপকেই অসৎকাজ নামে আখ্যায়িত করে মানুষের ব্যক্তি ও সমাজ জীবন থেকে তা দূর করার আহবান রেখেছে। তাই তো ইসলামে ভাল কাজকে বলা হয়েছে ‘মারূফ’ অর্থাৎ যা মানুষের বিবেক-বুদ্ধির কাছেও ভাল বলে পরিচিত। আর খারাপ কাজকে ভলা হয়েছে মুনকার'। অর্থাৎ যা মানুষের বিবেক-বুদ্ধির কাছে গ্রহণযোগ্য নয় বরং অস্বীকৃত।

এমনিভাবে ইসলামে যেসব জিনিসকে হালাল বলা হয়েছে কুরআন তাকে তাইয়েবাত' নামে অভিহিত করেছে যার অর্থ সুরুচিপূর্ণ। আর যেসব জিনিসকে হারাম বলা হয়েছে কুরআন তাকে ‘খাবিছাত’ নামে অভিহিত করেছে। যার অর্থ “কুরুচিসম্পন্ন বা রুচি গর্হিত।

পাঁচ :

দ্বীন ইসলামের প্রধানতম বৈশিষ্ট্য হলো, এ দ্বীন যেহেতু সন্দেহ মুক্ত, পূর্ণাঙ্গ, শ্বাশত এবং মানব প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সুতরাং এ দ্বীন কোনো মিথ্যা দ্বীনের অধীনতা স্বীকার করা তো দূরের কথা তার সাথে আপোষ করতেও প্রস্তুত নয়। এ দ্বীন এসেছে তার বিপরীতমুখী যাবতীয় মতবাদ-মতাদর্শের উপর বিজয়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার জন্যেই। আল্লাহ তা'আলার ঘোষণা :

“আল্লাহ সেই মহান সত্তা যিনি রসূল পাঠিয়েছেন হিদায়াত ও দ্বীনে হক (সত্য দ্বীন) সহকারে অন্যান্য দ্বীন বা মতবাদসমূহের উপর এ দ্বীনকে বিজয়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।” (সূরা আস সফ : ৯)

দ্বীন ইসলামের ঘোষণা :

“ইসলামই সত্য আর কুফর অসত্য। সুতরাং ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর কুরআন ঘোষণা দেয়। “সত্য সমাগত মিথ্যা বিতাড়িত, মিথ্যার অবলুপ্তি অনিবার্য।” (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭ : ৮১)

‘ইসলাম হলো আলো আর কুফরী হলো অন্ধকার। আলো-আঁধারের প্রাধান্য স্বীকার করাতো দূরে থাক, এ দুইয়ের সহাবস্থানও সম্ভব নয়। ইসলামের এ আলোকে নিভিয়ে দেবার জন্য ইসলাম বিরোধী শক্তি সদা তৎপর। ইসলামের এ আলোকে নির্বাপিত করে মানবতাকে চির অন্ধকারে নিমজ্জিত রাখার জন্য শয়তানী শক্তিসমূহ বদ্ধপরিকর। কুরআনের ভাষায় :

“এরা ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর। অথচ আল্লাহ তাঁর নূরকে পরিপূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত করেই ছাড়বেন কাফিরদের তা যতই অসহনীয় হোক না কেন।” (সূরা সফ ৬১ : ৮)

ইসলামের মৌখিক ঘোষণা যা কালিমায়ে তাইয়েবার মাধ্যমে আমরা পেয়েছি, তাতেও অন্যের প্রভুত্ব বর্জন করে আল্লাহর প্রভুত্ব বা সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার এক আপোষহীন ও বলিষ্ঠ ঘোষণাই বিবৃত হয়। কালিমার বাস্তবায়নের ঘোষণা কুরআনের ভাষায় :

“যারা তাগুত বা আল্লাহদ্রোহী শক্তিকে অস্বীকার ও অগ্রাহ্য করে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, তারা যেন এক মজবুত রজু আঁকড়ে ধরে, যা কখনও ছিন্ন হবার নয়।” (সূরা আল বাকারা ২: ২৫৬)

দ্বীন ইসলামের এ সর্বশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আরো একটু গভীরভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে যে কেউ বুঝতে সক্ষম হবে যে, ইসলাম স্বয়ং একটি বিপ্লবী আন্দোলন। এ আন্দোলনই হলো ইসলামের প্রাণ সত্ত্বা। এ প্রাণসত্ত্বাকে বাদ দিয়ে ইসলামের অস্তিত্বও কল্পনা করা যায় না। এজন্যেই ইসলামকে বিজয়ী করার, বিজয়ী হিসেবে টিকিয়ে রাখার আন্দোলন কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত গতিতে চলতে থাকবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন