hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের স্বচ্ছ ধারণা

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

৯০
তাগুতের পরিচয়
তাগুতকে মানতে অস্বীকার করতে হলে কে কে তাগূত তা জানতে হবে। কুরআনে সন্ধান করলে ৫ প্রকার তাগূত পাওয়া যায়।

১. নাফস ও হাওয়া:

নাফস মানে প্রবৃত্তি, আর হাওয়া মানে কুপ্রবৃত্তি। দেহের যাবতীয় দাবিকে একসাথে নাফস বলা হয়। যে দাবি মন্দ তাকেই হাওয়া বলে। দেহের ভালো ও মন্দের কোনো ধারণা নেই। এ ধারণা আছে বিবেকের। রূহের সিদ্ধান্তই বিবেক। নাফস বা দেহের দাবি মন্দ বলেই ধরে নিতে হবে। বিবেক যাচাই করে বলে দেয় কোন দাবিটা ভালো বা মন্দ। সূরা ইউসূফের ৫৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই নাফস মন্দেরই হুকুম দেয়। আল্লাহর নাফরমানীর জন্য তাগিদ দেয় বলেই নাফস তাগুত।। যদি কেউ সত্যিই আল্লাহর অনুগত বান্দা হতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই নাফসের বিরোধী হতে হবে। কেউ যদি উন্নত চরিত্রের অধিকারী হতে চায় তাহলে প্রথমেই তাকে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমি নাফসের কথা মেনে চলব না-না-না। অর্থাৎ আমি বিবেকের বিরুদ্ধে চলব না-না-না।

এ সিদ্ধান্ত না নিলে সে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা সত্ত্বেও নাফসের গোলামই থেকে যাবে। সে আল্লাহকে ইলাহ বা হুকুমকর্তা স্বীকার করা সত্ত্বেও নাফস বা হাওয়াকে ইলাহ হিসেবেই মেনে চলবে। সূরা জাছিয়া (৪৫)-র ২৩ নং আয়াতে আছে : “তুমি কি তাকে দেখেছ, যে তার কুপ্রবৃত্তিকে ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করেছে?” কুরআনের অনুবাদে অনেকেই তাগুত অর্থ লিখেছেন শয়তান। শয়তান আল্লাহর নাফরমানী করার জন্য উসকে দেয় বলে শয়তান অবশ্যই তাগূত। কিন্তু তাগূত অর্থ শয়তান নয়। যারা তাগুতের অর্থ শয়তান লিখেছেন, তারা তাগুতের সঠিক পরিচয় জানেন না। কারণ শয়তান মানুষের নাফসকে বিভ্রান্ত করেই নাফরমানীর জন্য প্ররোচনা দেয়। তাই প্রথম নম্বর তাগুতের মধ্যেই শয়তান অন্তর্ভূক্ত। সে হিসেবে নাফস ও শয়তানকে একই সাথে তালিকার ১ নম্বরে রাখা যায়।

২. শরীয়াতবিরোধী প্রচলিত কুপ্রথা ও সামাজিক কুসংস্কারও তাগূত (Customs and traditions)

সূরা বাকারায় আল্লাহ বলেন :

وإذا قيل لهم اتبعوا ما أنزل الله قالوا بل نتبع ما ألقيتا عليه آباءنا

“যখন তাদেরকে বলা হলো যে, আল্লাহ যা (ওহীযোগে) নাযিল করেছেন তা মেনে চল, তখন তারা বলল, আমাদের বাপ-দাদাকে যা মেনে চলতে দেখেছি, আমরা তাই মেনে চলব।” (সূরা বাকারা ২: ১৭০)।

সমাজে অনেক কুপ্রথা প্রচলিত আছে যা শরীয়াতবিরোধী। ধর্মের নামেও অনেক শরীয়াতবিরোধী প্রথা চালু আছে। বিয়ে-শাদিতে তো কুপ্রথার ব্যাপক প্রচলন আছে। কুপ্রথাগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী। এসবকে অমান্য করতে গেলে বিরাট বাধার সম্মুখীন হতে হয়। কুপ্রথাগুলো আইনের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। আইন চালু করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার (Law Enforcing Agency) প্রয়োজন হয়। কুপ্রথা নিজের শক্তি বলেই চালু থাকে। আইন করেও তা দূর করা সহজ নয়। এ কারণেই সামাজিক কুসংস্কারগুলোও তাগুত। এসবকে মানতে অস্বীকার না করলে ঈমানের দাবি পূরণ করা যায় না। এগুলো আল্লাহর হুকুমের বিরোধী। এসবকে মেনে চললে আল্লাহকে অমান্য করা হয়।

৩. শাসন-শক্তিও তাগুত

শাসন-শক্তি বললে শুধু গভর্নমেন্টই বোঝায় না। স্বামী-স্ত্রীর সংসারে স্বামীও শাসন-শক্তি। পরিবারে পিতা শাসন-শক্তি। কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধানও শাসন-শক্তি। কিছু লোকের উপর কর্তৃত্ব করার সুযোগ যার আছে, সেই শাসন-শক্তি। একটি দেশে সরকার হলো সবচেয়ে শক্তিশালী শাসন-শক্তি। কুরআনে ফিরাউন ও নমরূদকে শাসন-শক্তি হিসেবেই তাগুত বলা হয়েছে।

আল্লাহ মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে ফিরাউনের নিকট যাওয়ার আদেশ যে ভাষায় দিলেন, সেখানেও ফিরাউনকে সীমালঙ্ঘনকারী বলেই উল্লেখ করেছেন :

“হে মুসা! ফিরাউনের নিকট যাও। নিশ্চয়ই সে সীমালঙ্ঘন করেছে।” (সূরা ত্ব-হা ২০: ২৪)

শাসন-শক্তি প্রয়োগ করে অধীনস্থদের উপর আল্লাহর আইনের বিরোধী নিয়ম-কানুন চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ রয়েছে। তারা আল্লাহর নাফরমানী করায় বাধ্য করতে পারে। তাই এসবও তাগূত। আল্লাহর প্রতি ঈমানের দাবি হলো, আল্লাহর নাফরমানী করতে অস্বীকার করা। তা না করলে ঈমানে দুর্বলতাই প্রকাশ পায়।

৪. রিযক বন্ধ করার ভয় দেখানোর শক্তিও তাগূত

এ তাগূতটি শাসন-শক্তিরই অন্তর্ভূক্ত। চাকরি থেকে সরিয়ে দিয়ে রিযক বন্ধ করার ক্ষমতা যাদের আছে, তারা শাসন-শক্তি প্রয়োগ করে অন্যায়ভাবে বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দিতে পারে ও বিভিন্নভাবে ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু চাকরি থেকে বরখাস্ত করার শাস্তিটি চরম যুলম বলেই রিযক বন্ধ করার ভয় দেখানোর শক্তিকে শাসন শক্তি থেকে আলাদাভাবে গণ্য করা হলো। এ শক্তি প্রয়োগ করে অধীনস্থদেরকে আল্লাহর নাফরমানী করতে বাধ্য করা যায় বলেই এটাও তাগূত।

৫. অন্ধ ভাবে মেনে চলার দাবিদার শক্তিও তাগূত

সমাজে এমন কতক লোক আছে, যারা তাদেরকে অন্ধভাবে মেনে চলার জন্য নৈতিক প্রভাব প্রয়োগ করতে সক্ষম। তাদের দাবি হলো, বিনা যুক্তিতে তাদের কথা মেনে চলতে হবে। বিনা প্রশ্নে তাদের আনুগত্য করতে হবে। বিনা বাক্য ব্যয়ে তাদের হুকুম পালনের অধিকার তারা দাবি করে।

অথচ আল্লাহ ও রসূল (ﷺ) ছাড়া এ দাবি করার আর অধিকার নেই। যেহেতু আল্লাহ নির্ভূল এবং রসূল (ﷺ) আল্লাহর ওহী দ্বারা পরিচালিত বলে তিনিও নির্ভূল, সেহেতু এ দু’সত্ত্বাকে বিনা দ্বিধায় শর্তহীনভাবে মেনে চলতে হবে। এছাড়া আর কারো এ জাতীয় আনুগত্যের দাবিদার হওয়ার অধিকার নেই। তাই যারা এ দাবি করে তারাও তাগূত। সূরা তাওবার ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন:

ادوا أحباسهم ذهبانهم أربابا من دون الله

‘তারা তাদের ওলামা ও পীরদেরকে আল্লাহর বদলে তাদের রব হিসেবে গ্রহণ করেছে।'

হাদীসে এর অর্থ বলা হয়েছে যে, তাদেরকে অন্ধভাবে মেনে নিয়েছে। তারা হালাল ও হারামের ব্যাপারে যে ফায়সালাই দেয় তা অন্ধভাবে স্বীকার করে। নেয়। অন্ধভাবে মেনে নেয়ার দাবিদার শক্তি ধর্মীয় ক্ষেত্রে যেমন আছে, রাজনৈতিক ময়দানেও রয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত, নেতা বা নেত্রীর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক মনে হলেও অন্ধভাবে তা মানতে হয়, না মানলে দল থেকে তাড়িয়ে দিতে পারে, এ ভয়ে মেনে নিতে বাধ্য হয়। তাই এ জাতীয় শক্তিও তাগূত।

তাদের প্রতি অন্ধ আনুগত্যের কারণে দ্বীনের পথে বাঁধার সৃষ্টি হতে পারে। যেমন এক পীর সাহেব মুরীদদেরকে বললেন যে, তোমরা আল কুরআনের তাফসীর পড়বে না। পীরের প্রতি অন্ধ আনুগত্যের কারণে যারা আল কুরআনের তাফসীর পড়লো না, তারা ইকামাতে দ্বীনের পথ চিনতে ব্যর্থ হলো। আবার অনেকে বলেন কুরআনের ব্যাখ্যা বুঝা আমাদের কাজ নয়, এসব বই পড়তে মুরুব্বীরা মানা করেছেন। আবার বলেন যে, এসব বই পড়লে আমরা ‘গুমরাহ’ হয়ে যেতে পারি তাই মুরুব্বিরা তাফসীর পড়তে নিষেধ করেছেন। দুঃখ করে বলতে হয় যে যদি কোনো বই পড়লেই ঈমান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এমন দুর্বল ঈমান কী করে রক্ষা করবো?

৬) অর্থনৈতিক তাগুতঃ যে শক্তি মানুষকে অর্থের পুজারী বানাতে সাহায্য করে। অথচ মানুষের হওয়ার কথা ছিল একমাত্র সৃষ্টিকর্তার পূজারী।

৭) সাংস্কৃতিক তাগুতঃ যে সংস্কৃতি মানুষকে ইসলামী সংস্কৃতি থেকে দূরে নিয়ে আল্লাহ বিরুধী কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ করে এবং মানুষকে নাস্তিকতার পথে ঠেলে দেয়।

এ দীর্ঘ আলোচনায় সাত রকমের তাগুত সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেল। মযবুত ঈমানের জন্য তাগূতকে অস্বীকার করা এ কারণেই অত্যন্ত জরুরি। তাগুতের কাজই হলো, আল্লাহর দাসত্ব থেকে ফিরিয়ে রেখে তার দাসত্ব করতে বাধ্য করা। তাই যারা আল্লাহ দাসত্ব করতে আগ্রহী তাদেরকে সচেতনভাবে। সবরকম তাগূতী শক্তিকে পরিহার করে তাদের থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন