hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের স্বচ্ছ ধারণা

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

২৬
উম্মতে মুহাম্মাদীর মধ্যে মুশৱিক
শিরক এমন এক মহামারী পাপ যা সকল নবীর উম্মতের মধ্যে ছিল। তা শেষ নবী (ﷺ) -এর উম্মতদেরকেও ছাড়েনি। যার বাস্তবতা অহরহ দেখা যাচ্ছে।

অধিকাংশ লোক ঈমান আনা সত্ত্বেও মুশরিক

সাওবান (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমার উম্মাতের কিছু গোত্র মুশরিকদের সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত এবং কিছু গোত্র মূর্তি পূজা না করা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। (আবু দাউদ)।

পীর-দরবেশ, অলী-আউলিয়া এবং কবরে শায়িত ব্যক্তির নিকট দু'আ করার মাধ্যমে মুশরিক

আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকবে না, যে তোমার উপকার করতে পারবে না ও অপকারও করতে পারবে না। যদি তুমি অন্যকে ডাক তাহলে তখন তুমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (সুরা ইউনুস ১০ : ১০৬)

ইলমে গায়িৰ দাবী করার মাধ্যমে মুশরিক

হে নবী বলে দিন, আল্লাহ ব্যতীত আসমান ও যমীনের মধ্যে যা কিছু আছে সে গায়েবের খবর কেউ-ই জানে না। (সূরা আন-নামল ২৭ : ৬৫)

মাজার বা কবরের নিকট সমাবেশ, ওরস, মেলা, আগরবাতি, মোমবাতি ইত্যাদি জ্বালানোর মাধ্যমে মুশরিক

ইবনে মাসুদ বর্ণনা করেছেন যে, রসূল (ﷺ) বলেছেন, মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট তারা যারা শেষ দিনে (কিয়ামতের আগে) জীবিত থাকবে এবং যারা কবরকে ইবাদতের স্থান করে নেবে। (আহমদ, আত-তাইয়ালাসী)।

দলে দলে মাযহাবে-মাযহাবে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে মুশরিক

তোমরা সবাই আল্লাহ মুখী হয়ে যাও এবং তাঁকে ভয় করো, সলাত কায়িম করো এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। আর মুশরিক তারাই যারা তাদের দ্বীনকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আর প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উল্লাসিত। (সূরা আর-রূম ৩০ : ৩১-৩২)

পীর-দরবেশ, অলী-আউলিয়ার কথা মানার মাধ্যমে মুশরিক

তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তোমরা তার অনুসরণ করো এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অলী-আউলিয়াদের অনুসরণ করো না। তোমরা অল্পসংখ্যক লোকই তা স্মরণ রাখো। (সূরা আল-আ'রাফ ৭ : ৩)

জাদু করার মাধ্যমে মুশরিক

তারা ভাল করেই জানে যে, যে কেউ যাদু অবলম্বন করে তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। (সূরা আল-বাকারা ২: ১০২)

অসুখ, বালা-মুসীবতে তাবীজ-কবজ, বালা-চুরী ইত্যাদি ব্যবহার করার মাধ্যমে মুশরিক

আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আমি রসূল (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি ঝাড়-ফুঁক, তাবীজ এবং যাদুটোনা করা কি। (আবু দাউদ)।

কবর পাকা করা বা বাধানো, কবরে লিখা, গম্বুজ তৈরী করা এবং বাতি জ্বালানো হারাম

জাবির (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রসূল (ﷺ) কবর চুনকাম অর্থাৎ - পাকা করতে, কবরের উপর বসতে এবং কবরের উপর গম্বুজ তৈরী করতে নিষেধ করেছেন। (সহীহ মুসলিম)

এছাড়া কবর, মাযার, দরগা, খানকা ইত্যাদিতে দান বা ভোগ দেয়ার মাধ্যমে মুশরিক (মুসনাদে আহমাদ) গাছে সুতা বাঁধা বা কোন কিছুর মাধ্যমে কিছু পাওয়ার আশায় মুশরিক (তিরমিযী)।

তাগুতের অনুকরণ করা শিরক ও কুফরী

আমি প্রত্যেক উম্মাতের (জাতির) মধ্যেই রসূল পাঠিয়েছি। যেন তাঁরা আল্লাহর ইবাদত করে এবং তাগুত থেকে বেঁচে থাকে। (সূরা আন-নাহল ১৬ : ৩৬)

কোন অলী বা পীরের অসীলা অন্বেষণ করা এবং পীর ধরা নাযায়েজ

হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো; তার নিকট অসীলা অন্বেষণ করো এবং তার পথে জিহাদ করো। যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সূরা মায়িদা ৫: ৩৫)

তাকলীদ বা অন্ধ অনুকরণ, পূর্ববর্তীদের দোহাই বাপ-দাদার দোহাই দেয়া মুশরিকের নীতি

যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তোমরা তাঁর অনুকরণ করো। তখন তারা বলে। বরং আমরা তো সে বিষয়েরই অনুকরণ করব যে বিষয়ে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে পেয়েছি। যদিও তাদের বাপ-দাদারা কিছুই জ্ঞান রাখে না এবং তারা সঠিক পথপ্রাপ্তও নয়। (সূরা বাকারা ২:১৭০)

আল্লাহ ব্যতীত গাইরুল্লাহ তথা পীর, আওলিয়া ও দরগায় যাবাহ করা শির্ক

হে নবী! আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমার সলাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মরণ সবকিছুই কেবলমাত্র সমগ্রবিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি (কোন রূপ শরীক না করার জন্যই) আদিষ্ট হয়েছি এবং মুসলিমদের মধ্যে আমিই প্রথম। (সূরা আনআম ৬ : ১৬৪)

কবরবাসী জীবিতদের ডাকে সাড়া দিতে অক্ষম। আপনি কবরে শায়িত ব্যক্তিদেরকে শোনাতে পারবেন না।(সূরা নামল ২৭: ২২)

গণকের নিকট যাওয়া, গণকের কথা বিশ্বাস করা শির্ক

সাফিয়্যাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) নবী (ﷺ) -এর স্ত্রীদের কোন স্ত্রী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গণকের নিকট আসে এবং তাকে কিছু জিজ্ঞেস করে এবং তা বিশ্বাস করে তার চল্লিশ রাত্রের ইবাদত কবুল হয় না। (সহীহ মুসলিম)।

স্বেচ্ছায় অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা শির্ক

যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন মু'মিনকে হত্যা করে তার বিনিময় হচ্ছে জাহান্নাম, তাতে সে সর্বদা অবস্থান করবে এবং আল্লাহ তার প্রতি রাগান্বিত হয়েছেন এবং লা'নাত করেছেন। আর তার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন বিরাট শাস্তি। (সূরা নিসা ৪:৯৩)

বংশের বড়াই ও মৃত ব্যক্তির প্রতি বিলাপ করা হারাম

আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : দু’টি বিষয়ে মানুষ কুফরী করে, আর তা হলো : ১) বংশের দোষারোপ করা; ২) মৃত ব্যক্তির উপর বিলাপ করা। (সহীহ মুসলিম)।

আল্লাহ ব্যতীত বাপ-দাদা, মাতা-নানী, পীর-দরবেশ কিংবা শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গের নামে শপথ করার মাধ্যমে মুশরিক

আব্দুর রহমান বিন সামুরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা তাগুতের নামে এবং বাপ-দাদার নামে কসম বা শপথ করো না। (সহীহ মুসলিম)

রিয়া বা লোক দেখানো ‘আমাল করা শির্ক

মাহমূদ বিন লাবীদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের জন্য আমি সবচেয়ে অধিক ভয় করি শির্কে আসগার বা ছোট শির্কের। বলা হলো, হে আল্লাহর রসূল সেটা কি? তিনি বললেন, রিয়া বা লোক দেখানো ‘আমাল। (বায়হাকী, আহমাদ)।

যুগ বা সময়কে গালি দেয়া শির্ক

আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : নবী (ﷺ) বলেছেন : মহান আল্লাহ বলেন : “আদম সন্তান দাহার বা সময়কে গালী দিয়ে আমাকে কষ্ট দেয়। অথচ আমি নিজেই দাহার বা সময়। আমার হাতেই সকল কর্ম। রাত ও দিনকে আমিই পরিবর্তন করি। (সহীহ বুখারী)

যেমন অনেক সময় আমরা বলে থাকি। এ বছরটি-ই খারাপ বা আজকের দিনটি-ই মন্দ বা আজকের আবহাওয়াটা খুবই খারাপ ইত্যাদি বলা যাবে না।

ছবি ও মূর্তি বানানো মুশরিকী কাজ

আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : মহান আল্লাহ বলেন : “ঐ ব্যক্তির থেকে কে বড় যালিম হতে পারে, যে আমার মত মাখলুক সৃষ্টি করতে চায়? (এতই যদি পারে) তাহলে তারা যেন অণু সৃষ্টি করে অথবা একটি শস্য তৈরী করে অথবা যেন একটি যব তৈরী করে।” (সহীহ বুখারী)।

সলাত পরিত্যাগ করা শির্ক

জাবির বিন আব্দুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, মুসলিম ব্যক্তি এবং মুশরিক ও কাফিরের মধ্যে পার্থক্য হল সলাত পরিত্যাগ করা। অর্থাৎ সলাত পরিত্যাগকারী মুশরিক ও কাফির। (সহীহ মুসলিম)।

নিজের মত বা প্রবৃত্তি অনুসরণ করা শির্ক

আপনি কি তাকে দেখেন না, যে তার প্রবৃত্তিকে প্রভুরূপে গ্রহণ করেছে? তবুও কি তার যিম্মাদার হবেন? (সূরা ফুরকান ২৫ : ৪৩)।

পিতা না হওয়া সত্ত্বেও পিতা দাবী করা কুফরী ও হারাম

সায়াদ ও আবূ বাকরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) হতে বর্ণিত; উভয়ে বলেন আমার দু'কান শুনেছে এবং আমার অন্তর সংরক্ষণ করেছে, মুহাম্মাদ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি অপরকে স্বীয় পিতা বলে দাবি করে অথচ সে ভালোভাবেই জানে যে সে তার পিতা নয় তার জন্য জান্নাত হারাম। (সহীহ মুসলিম)

পিতা-মাতাকে গালি দেয়া এবং তাদের নাফরমানী করা সবচেয়ে বড় অপরাধ

আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : কোন ব্যক্তি পিতা-মাতাকে গালি দিলে তা কবীরা বা বড় গুনাহের অন্তর্ভূক্ত হবে। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল কোন ব্যক্তি কি তার পিতা-মাতাকে গালী দেয়? রসূল (ﷺ) বললেন, হ্যা, লোক কোন ব্যক্তির পিতাকে গালি দেয় আর সে তার পিতাকে গালি দেয় এবং তার মাতাকে গালি দেয়, সেও তার মাতাকে গালি দেয়। (সহীহ মুসলিম)

কারও সম্মানে দাঁড়ানো

আবু উমামাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) লাঠির উপর ভর করে বের হলেন। আমরা তার জন্য দাঁড়ালাম। তিনি বললেন, অনারবগণ একে অপরকে সম্মান করার জন্য যেভাবে দাঁড়ায় তোমরা সেভাবে দাঁড়িও না। (আবু দাউদ)

গানের মাধ্যমে শির্ক

এক শ্রেণীর মানুষ গানের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে শরীক করে থাকে, তারা গানের মাধ্যমে নবী (ﷺ) -কে স্রষ্টার আসনে বসিয়ে দেয়। তারা গানের মাধ্যমে বলে:

নবী মোর পরশমণি নবী মোর শোনার খনি

নবী নাম জপে যে জন, সেই তো দোজাহানের ধনী

প্রিয় পাঠক! জপ বা যিকর শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। আর এই জপ নবীগণের জন্য নয়। কেউ যদি আল্লাহর নামের ন্যায় নবীগণের নাম ধরে জপ বা যিকর করে তবে সে অবশ্যই আল্লাহর সাথে শির্ক বা অংশীদার স্থাপন করল এবং সে মুশরিক বলে পরিগণিত হল।

তেমনিভাবে কেউ যদি বলে:

আহমাদেরই মীমের পর্দা তুলে দেরে মন

দেখবি সেথা বিরাজ করে আহাদ নিরাঞ্জন

অর্থাৎ তারা বলতে চায় আহমাদ শব্দের থেকে মীম অক্ষরটি বাদ দিলে আহাদ শব্দ থাকে। আর আহাদ হল আল্লাহর নাম। তারা বলতে চায় আহমাদ ও আহাদ একজনই। এভাবে তারা সৃষ্টিকে মুহাম্মাদ -কে] স্রষ্টার আসনে বসিয়ে স্পষ্ট শির্ক করে থাকে। অথচ মহান আল্লাহ নবী (ﷺ) -কে লক্ষ্য করে বলেছেন : বল! আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি ওয়াহী প্রেরিত হয় যে, তোমাদের রব তো একই রব। সুতরাং যে ব্যক্তি তার রবের সাক্ষাৎ লাভের আশা রাখে সে যেন নেক কাজ করে এবং তার রবের ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক না করে। (সূরা কাহফ : ১১০)

নবী (ﷺ) -কে নূরের তৈরী মনে করা শির্ক

এক শ্রেণীর মানুষ বলে, নবী -কে তৈরী না করলে আল্লাহ কিছুই তৈরী করতেন না। আল্লাহ নবী (ﷺ) -কে তাঁর নিজের নূর দিয়ে তৈরী করেছেন, নবী (ﷺ) নূরের তৈরী। আর নবী (ﷺ) -এর নূরে সমস্ত জগত তৈরী। সর্বপ্রথম আল্লাহ নবী (ﷺ) -কে তাঁর নূর দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, এভাবে তারা আল্লাহর সাথে শির্ক করে থাকে। সহীহ হাদীসে রয়েছে আল্লাহ সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করে তাকে লিখতে বলেন।

আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন : আল্লাহ সর্বপ্রথম কলম ও মাছ সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর কলমকে বলেছেন: লিখ, কলম বলল কি লিখব? আল্লাহ বললেন, কিয়ামত পর্যন্ত যা সংঘটিত হবে সব লিখ। (আহমাদ, তিরমিযী)।

আর নবী (ﷺ)-কে আল্লাহ মাটির তৈরী আদমের থেকে স্বাভাবিক মানুষটির যে নিয়ম আল্লাহ করেছেন সে পদ্ধতিতেই মা আমিনার গর্ভে আব্দুল্লাহর ঔরষের মাধ্যমে পৃথিবীতে আগমন ঘটিয়েছেন। তিনি মাটির তৈরী বলেই অন্যান্য মানুষের মতই ভূমিষ্ট হয়েছেন। তবে আল্লাহ তাঁকে চল্লিশ বৎসর বয়সে শেষ নবী ও রসূল বানিয়েছেন, রিসালাতের দায়িত্ব দিয়েছেন। তাঁর নিকট আল্লাহর ওয়াহী আসত, কুরআন মাজীদ তাঁর প্রতি নাযিল হয়েছে। তাঁর পরও তিনি মানুষ ছিলেন এবং আল্লাহর একজন বান্দা ছিলেন। যার স্বীকৃতি আমরা সর্বদা দিয়ে থাকিতিনি আল্লাহর বান্দা ও রসূল। মহান আল্লাহ বলেনঃ

বল! আমি তোমাদের মতই একজন মাটির মানুষ। আমার নিকট ওয়াহী আসে, তোমাদের রবই একমাত্র রব। (সূরা কাহফ ১৮ : ১১০)

মিলাদে শির্ক:

একদল মানুষ নবী (ﷺ) -এর নামে মিলাদ নামক বিদ’আত অনুষ্ঠানের মধ্যে চেয়ার খালি রাখে এবং ধারণা রাখে যে, নবী (ﷺ) এসে চেয়ারে বসেন। আবার তারা হঠাৎ করে মিলাদের মাঝে দাঁড়িয়ে পড়েন এবং ধারণা রাখে যে, নবী (ﷺ) -এর রুহ মোবারক মিলাদ মাহফিলে হাযির হয়ে থাকে। তাই দাঁড়াতে হয়। একই দিনে একই সাথে হাজার স্থানে মিলাদ হয়ে থাকে সকল স্থানে যাওয়ার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহরই, তিনি ব্যতীত এ ক্ষমতা আর কারও নেই। মহান আল্লাহ বলেন :

নিশ্চয় আল্লাহ সকল বিষয়ে ক্ষমতা রাখেন। (সূরা বাকারা ২ : ১০৯)

আর রসূল (ﷺ) তো মৃত্যুবরণ করেছেন, যার মৃত্যুকে প্রথমে ওমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)ও অতিরিক্ত ভালোবাসার কারণে মানতে পারেননি। অতঃপর আবু বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এসে নবী (ﷺ)-এ মৃত্যুর স্বপক্ষে এ আয়াত পাঠ করেন।

মুহাম্মাদ একজন রসূল ছাড়া কিছু নয়, তাঁর পূর্বে বহু রসুল গত হয়েছেন, যদি তিনি মারা যান কিংবা নিহত হন তবে কি তোমরা পশ্চাদবরণ করবে? এবং কেউ পিছুটান হলে কখনো সে আল্লাহর ক্ষতি করতে সামান্যও সক্ষম হবে না; আল্লাহ কৃতজ্ঞদের সত্ত্বর পুরস্কার দিবেন। (সূরা আলে ইমরান ৩: ১৪৪)

অতএব যারা নবী (ﷺ) -কে মিলাদে উপস্থিত মনে করবে তারা অত্র আয়াতকে অস্বীকার করবে। রসূলকে আল্লাহর মত সকল স্থানে উপস্থিত হওয়ার ক্ষমতা মেনে নেয়া শির্ক হবে। আর নবী (ﷺ) তো জানেন না যে, কোথায় কোথায়। মিলাদ হচ্ছে। কেননা তিনি গায়েবের খবর জানেন না। মহান আল্লাহর কুরআন মাজীদে রসূল (ﷺ) -এর দ্বারা ঘোষণা করান :

আমি যদি ইলমে গায়েব জানতাম, তাহলে আমি অধিক কল্যাণ অর্জন করে নিতাম এবং অকল্যাণ আমাকে স্পর্শ করত না। (সূরা আ'রাফ ৭ : ১৮৮)

হে নবী বল! আসমানসমূহ ও যমীনের মধ্যে যা আছে আল্লাহ ব্যতীত তাদের গায়েব কেউ জানে না। (সূরা আন নামল ২৭ : ৬৫)।

হে রসূল! এদেরকে বল, ভবিষ্যতে আমার ও তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে আমি তা জানি না। (সূরা আহকাফ ৪৬ : ৯)।

রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন : আল্লাহর শপথ! আমি জানি না, আমি আল্লাহর রসূল। হওয়া সত্ত্বেও আমার সাথে কি করা হবে। মুসনাদে আহমাদ, বুখারীর বর্ণনায় রয়েছে- আমি আল্লাহর রসূল হওয়া সত্ত্বেও কি করা হবে তা আমি জানি না। অতএব গায়েবের ইলম বা জ্ঞান একমাত্র আল্লাহই জানেন। এ ইলম নবী (ﷺ) -এর সাথে সম্পৃক্ত করলে আল্লাহর সাথে শরীক হবে এবং শির্ক করা হবে।

এমনিভাবে মিলাদে কিয়াম করলে উক্ত আয়াতের অস্বীকারের দরুন কাফির হতে হবে এবং রসূলকে সবস্থানে হাযির জানার মাধ্যমে শির্ক হবে এবং কিয়ামের মধ্যে এ ধরনের কিয়াম তথা শের বা কবিতা বলা শির্ক। যেমন বলা হয়ে থাকে তিনি তো আরশে এসে খোদারূপে ছিলেন, মদীনায় নেমে মোস্তফা হয়ে গেলেন। (নাউযুবিল্লাহ) অর্থাৎ যিনি আল্লাহ ছিলেন, তিনি মদিনায় এসে মুস্তফা হয়ে গেলেন। (নাউযুবিল্লাহ)। এ ধরনের কবিতা গান ইত্যাদি মিলাদের মধ্যে শির্ক সংঘটিত হয়ে থাকে। আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন। আমীন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন