hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ঈমানের স্বচ্ছ ধারণা

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

৭০
ততকালীন আরবের চিত্র এবং তার পরিবর্তন :
আমরা শুনেছি যে, আরব দেশে মদ পান করার প্রথা খুব বেশী প্রচলিত ছিল। নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ সকলেই মদের জন্য একেবারে পাগল প্রায় ছিল। আসলে মদের প্রতি তাদের অন্তরে গভীর আকর্ষণ বিদ্যমান ছিল। এর প্রশংসা করে কত যে গযল-গান তারা রচনা করেছিল, তার হিসাব নেই। মদের জন্য প্রাণ দিতেও তারা প্রস্তুত হতো। একথাও আমরা জানি যে, একবার মদের নেশা লাগলে তা দূর হওয়া বড়ই মুশকিল। মদখোর ব্যক্তিরা মদের জন্য প্রাণ দিতে পারে, কিন্তু মত ত্যাগ করতে পারে না। কোনো মদখোর যদি মদ না পায় তবে তার অবস্থা কঠিন রোগীর অপেক্ষাও খারাপ হয়ে যায়।

কিন্তু যখন মদ নিষিদ্ধ হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছিল তখন কি অবস্থা হয়েছিল তা কি আমরা কখনও শুনেছি? মদের জন্য পাগল জান দিতে প্রস্তুত সেই আরবরাই এ হুকুম পাওয়ার সাথে সাথে নিজেদের হাতেই মদের বড় বড় পাত্র ভেংগে ফেলেছিল। মদীনার অলিতে গলিতে বৃষ্টির পানির মত মদ বয়ে গিয়েছিল। একটি মজলিসে কয়েকজন লোক একত্রে বসে মদ পান করছিল। ঘোষণাকারী যখন তাদের কাছাকাছি গিয়ে বললো যে, মদ নিষিদ্ধ হয়েছে, তখন যার হাত যেখানে ছিল তা সেখানেই থেমে গেল আর একটুও কেউ অগ্রসর হলো না। যার হাতের পেয়ালা মুখের সাথে লেগেছিল, সে তখনই তা সরিয়ে নিলো। তারপর আর এক বিন্দু মদ তার উদরে প্রবেশ করতে পারেনি। এটাই হচ্ছে সত্যিকার ঈমানের পরিচয়। আর এটাকেই বলা হয় আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য।

ইসলামে ব্যভিচারের শাস্তি কত কঠিন তা তো আমাদের অজানা নয়। তা হচ্ছে পিঠে একশত চাবুক। বস্তুত এর কল্পনা করলেও মানুষের শরীর শিউরে ওঠে। আর ব্যভিচারী বিবাহিত হলে তো তাকে একেবারে পাথর মেরে হত্যা করা হয়। এ কঠিন শাস্তির নাম শুনলেই মানুষ ভয়ে কেঁপে ওঠে। কিন্তু যেসব লোকের খাঁটি ঈমান ছিল, অথচ ভুলবশত তাদের দ্বারা কোনো ব্যভিচারের কাজ হয়ে গিয়েছিল, তাদের অবস্থা কিরূপ ছিল, তা কি আমরা জানি? একজন লোক শয়তানের প্রতারণায় পড়ে ব্যভিচার করে বসলো। তার সাক্ষী কেউ ছিল না, আদালতে ধরে নিয়ে যাবারও কেউ ছিল না, পুলিশকে খবর দেয়ার মতো লোকও কেউ ছিল না। কিন্তু তার মনের মধ্যে ছিল খাঁটি ঈমান। আর সেই ঈমান তাকে বললো-আল্লাহর আইনকে ভয় না করে যখন তুমি নফসের ইচ্ছা পূর্ণ করেছ তখন তাঁর নির্দিষ্ট আইন মতে শাস্তি নিবার জন্য প্রস্তুত হও।

কাজেই সে নিজেই মুহাম্মাদ (ﷺ) -এর সামনে এসে হাযির হলো এবং নিবেদন করলো : “হে আল্লাহর রসূল! আমি ব্যভিচার করেছি, আমাকে এর শাস্তি দিন। মুহাম্মদ, তখন অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। সেই ব্যক্তি আবার সেই দিকে গিয়ে শাস্তি দেয়ার জন্য অনুরোধ করলো এবং বললো, আমি যে পাপ করেছি আমাকে তার উপযুক্ত শাস্তি দিন। এটাকেই বলে ঈমান। এ ঈমান যার মধ্যে বর্তমান থাকবে, খোলা পিঠে একশত চাবুকের ঘা নেয়া এমন কি পাথরের আঘাত খেয়ে মরে যাওয়াও তার পক্ষে সহজ; কিন্তু আল্লাহর নাফরমানী করে আল্লাহর সামনে হাযির হওয়া তার পক্ষে বড়ই কঠিন ব্যাপার।

আমরা এটাও জানি যে, দুনিয়ার মানুষের কাছে তার আত্মীয়-স্বজনই অতিশয় প্রিয়পাত্র হয়ে থাকে। বিশেষ করে পিতা-পুত্র-ভাই মানুষের এত প্রিয় যে, তাদের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতেও মানুষ প্রস্তুত হয়। কিন্তু একবার বদর ও ওহুদের যুদ্ধের কথা চিন্তা করে দেখি যে, তাতে কে কার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। পিতা মুসলিমদের দলে, ছেলে কাফিরদের দলে, ছেলে একদিকে, পিতা অন্যদিকে, এক ভাই ইসলামের পক্ষে অন্য ভাই শত্রর পক্ষে যুদ্ধ করেছে। আর এমনভাবে যুদ্ধ করেছে, যেন তারা কেউ কাউকে চিনেই না। কোনো টাকা পয়সা কিংবা জায়গা জমি অথবা কোনো ব্যক্তিগত শত্রতার জন্য তারা যুদ্ধ করেনি। তারা নিজেদের রক্ত দান করে আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে শুধু আল্লাহ ও রসূলের খাতিরেই যুদ্ধ করেছে। আর আল্লাহ ও রসূলের জন্য বাপ-ভাই-ছেলে। এবং বংশের সকলকেই অকাতরে কুরবানী করার মতো প্রচণ্ড মনোবল তাদের মধ্যে বর্তমান ছিল।

আমাদের একথাও জানা আছে যে, ইসলাম আরব দেশের প্রায় প্রাচীন রীতি নীতি একেবারে বন্ধ করে দিয়েছিল। তখনকার যুগে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান ছিল মূর্তি পূজা। এ প্রথা শত শত বছর ধরে চলে আসছিল। কিন্তু ইসলাম সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করলো, এ মূর্তিগুলো পরিত্যাগ কর। মদ পান, ব্যভিচার, জুয়া, চুরি, ডাকাতি আরব দেশের নিত্যকার ঘটনা ছিল। ইসলাম বললো, এসব ছাড়তে হবে। আরব দেশের নারীরা একেবারে খোলাখুলিভাবে চলাফেরা করতো। ইসলাম আদেশ করলো, এরূপ চলতে পারবে না পর্দার ব্যবস্থা কর। মেয়েদেরকে সেখানে সম্পত্তির অংশ দেয়া হতো না। ইসলাম ঘোষণা করলো, পুরুষদের মতো মেয়েরাও সম্পত্তির অংশ পাবে। পালিত পুত্রকে সেখানে ঠিক আপন ঔরষজাত পুত্রের মতো মনে করা হতো। ইসলাম বললো, এটা হতে পারে না। পরের ছেলে পালন করলেই একেবারে নিজের ঔরষজাত সন্তানের মতো হয়ে যায় না। এমনকি পালিত পুত্র তার স্ত্রীকে তালাক দিলে তাকে বিয়েও করা যেতে পারে। মোটকথা, এ সমস্ত পুরাতন নিয়মকে সেখানে একটি একটি করে চুরমার করে দেয়া হয়েছিল।

যারা আল্লাহ ও রসূল (ﷺ) -এর প্রতি ঈমান এনেছিল, তখন তারা কিভাবে কাজ করেছিল তা কি আমরা জানি? শত শত বছর ধরে যেসব মূর্তিকে তারা এবং তাদের বাপ-দাদার পূজা করেছে, যেসবের সামনে নানা প্রকারের ভেট ও ভোগ হাযির করেছে এবং যেগুলোর সামনে মাথা ঠেকিয়ে সিজদা করেছে, ঈমানদার। ব্যক্তিগণ তা নিজেদেরই হাতে এক একটা করে চূর্ণ করে ফেলেছে। শত শত বছর ধরে যেসব বংশীয় রীতিনীতি ও রসম-রেওয়ায চলে আসছিল তা সবই তারা পরিত্যাগ করেছিল; যেসব জিনিসকে তারা মহান ও পবিত্র বলে ধারণা করতো, আল্লাহর হুকুম পেয়েই তারা তাকে পায়ের তলে দলিত করলো। যেসব জিনিস তারা ঘৃণা করতো আল্লাহর হুকুম পাওয়া মাত্রই তাকে ভাল মনে করে গ্রহণ করতে লাগলো।

চিরকাল যেসব জিনিসকে পাক ও পবিত্র মনে করা হতো, আল্লাহর বিধান মতো সেই সবকে অপবিত্র মনে করতে শুরু করলো। যেসব জিনিস তারা ঘৃণা করতো আল্লাহর হুকুম পাওয়া মাত্রই তাকে ভাল মনে করে গ্রহণ করতে লাগলো। চিরকাল যেসব জিনিসকে পাক ও পবিত্র মনে করা হতো, আল্লাহর বিধান মতো সেই সবকে অপবিত্র মনে করতে শুরু করলো। আর যেসব জিনিসকে অপবিত্র মনে করতো, সহসা তা পবিত্র হয়ে গেল। যেসব কাফিরী চালচলনে তারা আরাম ও সুখ মনে করতো, আল্লাহর হুকুম পাওয়া মাত্রই তা সবই ছেড়ে দিয়েছিল এবং ইসলামের যেসব হুকুম পালন করা মানুষের পক্ষে কষ্টকর বলে মনে হতো তারা সে সবকে সানন্দে কবুল করে নিলো। এরই নাম ঈমান এবং একেই বলা হয় ইসলাম।

কিন্তু ভেবে দেখি, আরব দেশের লোকেরা যদি তখন তাদের বাপ-দাদাদের মতো বলতো, অমুক কাজ আমরা মানব না, কারণ এতে আমাদের ক্ষতি হবে অমুক কাজ আমরা নিশ্চয় করবো কারণ বাপ-দাদার কাল হতেই এটা চলে এসেছে এবং রোম দেশের লোকদের কিংবা ইরান দেশের লোকদের অমুক কাজ আমাদের খুব ভালো লাগে বলে তা আমরা ছাড়তে পারবো না। এরূপে ইসলামের এক একটা হুকুম বাতিল করে দিতো তাহলে দুনিয়ায় এখন একজন মুসলিমও থাকতো কি? আল কুরআনে বলা হয়েছে :

لن تنالوا الي حتى تفقوا مما تحبون

“তোমাদের প্রিয় জিনিসগুলোকে যদি তোমরা আল্লাহর জন্য কুরবানী না কর তাহলে তোমরা প্রকৃত কল্যাণ কিছুতেই লাভ করতে পারবে না।” (সূরা আলে ইমরান ৩ : ৯২)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন