hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সূরা আলে ইমরান

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৬০
আয়াত : ১০২ – ১০৩ আল্লাহকে ভয় করা এবং তাঁর রশি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরার নির্দেশ
يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ حَقَّ تُقَاتِه وَلَا تَمُوْتُنَّ اِلَّا وَاَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ (১০২) وَاعْتَصِمُوْا بِحَبْلِ اللهِ جَمِيْعًا وَّلَا تَفَرَّقُوْا وَاذْكُرُوْا نِعْمَتَ اللهِ عَلَيْكُمْ اِذْ كُنْتُمْ اَعْدَآءً فَاَلَّفَ بَيْنَ قُلُوْبِكُمْ فَاَصْبَحْتُمْ بِنِعْمَتِه ۤ اِخْوَانًاۚ وَّكُنْتُمْ عَلٰى شَفَا حُفْرَةٍ مِّنَ النَّارِ فَاَنْقَذَكُمْ مِّنْهَاؕ كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللهُ لَكُمْ اٰيَاتِه لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ (১০৩)

শাব্দিক অনুবাদ

১০২. يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا হে ঈমানদারগণ! اِتَّقُوا তোমরা ভয় করো اَللهَ আল্লাহকে حَقَّ যেভাবে উচিত تُقَاتِه  তাকে ভয় করা وَلَا تَمُوْتُنَّ এবং তোমরা মৃত্যুবরণ করো না اِلَّا ব্যতীত وَاَنْتُمْ তোমরা مُسْلِمُوْنَ মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত ।

১০৩. وَاعْتَصِمُوْا আর তোমরা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো بِحَبْلِ রশিকে اَللهِ আল্লাহর جَمِيْعًا সকলে মিলে وَلَا تَفَرَّقُوْا এবং তোমরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। وَاذْكُرُوْا তোমরা স্মরণ করো نِعْمَتَ নিয়ামতকে اَللهِ আল্লাহর عَلَيْكُمْ তোমাদের উপর দেয়া اِذْ যখন كُنْتُمْ তোমরা ছিলে اَعْدَآءً একে অপরের শত্রু, فَاَلَّفَ অতঃপর তিনি বন্ধন সৃষ্টি করে দিলেন بَيْنَ মধ্যে قُلُوْبِكُمْ তোমাদের অন্তরসমূহের। فَاَصْبَحْتُمْ ফলে তোমরা পরস্পর হয়ে গেলে بِنِعْمَتِه  তাঁর অনুগ্রহে اِخْوَانًا ভাই ভাই। وَكُنْتُمْ আর তোমরা তো ছিলে عَلٰى شَفَا একেবারেই ধারপ্রান্তে حُفْرَةٍ গর্তের مِنَ النَّارِ আগুনের, فَاَنْقَذَكُمْ অতঃপর তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিলেন مِنْهَا সেখান থেকে। كَذٰلِكَ এভাবেই يُبَيِّنُ বর্ণনা করেন اَللهُ আল্লাহ لَكُمْ তোমাদের জন্য اٰيَاتِه  তাঁর নিদর্শনসমূহ, لَعَلَّكُمْ যাতে তোমরা تَهْتَدُوْنَ সঠিক পথ লাভ করতে পার।

সরল অনুবাদ

১০২. হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো যেভাবে তাকে ভয় করা উচিত [অর্থাৎ ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান তোমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব, মন-প্রাণ দিয়ে ততটুকুই পালন কর এবং এ ব্যাপারে কোনরূপ সীমালঙ্ঘন করো না। সৎ কাজের আদেশ দাও এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকো, বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদাতের মধ্যে লিপ্ত থাকো, আল্লাহর ছোট খাট হুকুমসমূহও গুরুত্বের সাথে পালন করো ও আল্লাহর দ্বীন মানুষের জন্য একমাত্র জীবনবিধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করো। তবে এদিকেও খেয়াল রেখো যে, আল্লাহর প্রতি ভক্তি দেখাতে গিয়ে তোমরা যেন কাফিরদের কাতারে দাঁড়িয়ে না যাও।] এবং তোমরা মুসলিম অবস্থায় না থেকে কখনো মৃত্যুবরণ করো না। [অর্থাৎ তোমরা এমনভাবে জীবনযাপন করো, যাতে করে জীবনের কোন একটি মুহূর্ত অমুসলিম অবস্থায় অতিবাহিত না হয়। কেননা কার মৃত্যু কখন সংঘটিত হবে- এ ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তা নেই। হয়তোবা এমনও হতে পারে যে, যে সময়টুকু তুমি অমুসলিম অবস্থায় কাটাবে, সেই সময়ের মধ্যেই তোমার নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়ে যাবে। ফলে তুমি তাওবা করারও সুযোগ পাবে না। আর এরূপ মৃত্যু থেকে বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি। তোমরা যদি সর্বদা তাক্বওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে পার, তাহলে আশা করা যায় যে, তোমরা এমন মৃত্যু লাভ করবে, যা তোমাদেরকে জান্নাতে পৌঁছে দিবে।হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘প্রত্যেক বান্দা ঐ অবস্থার উপর পুনরুত্থিত হবে, যে অবস্থার উপর সে মারা যাবে’’- (সহীহ মুসলিম, হা/৭৪১৩)। অপর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘সর্বশেষ আমলের উপর ফলাফল নির্ভরশীল’’- (সিলসিলা সহীহাহ, হা/১১১৪)।]

১০৩. আর তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রশিকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো [এখানে গোটা বিশ্বের মুসলিমদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জীবনযাপন করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আর এটা তখনই প্রদান করা হয়েছে, যখন পূর্ববর্তী আয়াতেই তাক্বওয়া অর্জনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এর দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে যে, তাক্বওয়াবান ব্যক্তিগণ বিশ্বের যেখানেই অবস্থান করুক না কেন, তারা কখনো বিভক্ত হবে না। যদি তারা কখনো কোন কারণে ভুলের মধ্যে পতিত হয়েই পড়ে, তাহলে নিজেদের তাক্বওয়ার তাগিদে সত্যকে সামনে পাওয়ার সাথে সাথেই তা গ্রহণ করতে সদা প্রস্তুত থাকবে। অতঃপর এই আয়াতের শুরুতেই আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরতে বলা হয়েছে। আর এখানে আল্লাহর রজ্জু বলতে ঐ দ্বীনকে বুঝানো হয়েছে, যার অনুসরণ উপরোক্ত আয়াতে বর্ণিত তাক্বওয়াবান ব্যক্তিগণ করে থাকে। এখানে দ্বীনকে রজ্জুর সাথে এজন্যই তুলনা করা হয়েছে যে, এটি এমন একটি সম্পর্ক, যা একদিকে আল্লাহর সাথে ঈমানদারদের সম্পর্ক জুড়ে দেয় এবং অন্যদিকে সমস্ত ঈমানদারকে পরস্পরের সাথে মিলিয়ে একতাবদ্ধ করে। সুতরাং এই রজ্জুকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরার অর্থ হচ্ছে, মুসলিমরা তাদের কর্মজীবনে সর্বদা এই দ্বীনকেই সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করবে, তার ব্যাপারেই আগ্রহ পোষণ করবে, একে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে এবং এরই খেদমত করার জন্য পরস্পর সহযোগিতা করবে।] এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। [এখানে এমন একটি বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে, যা পূর্বোক্ত নির্দেশ পালন না করার ফল হিসেবে সংঘটিত হয়ে থাকে অর্থাৎ অনৈক্য ও পরস্পর দলাদলি। এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, যেখানেই মুসলিমরা দ্বীনের মৌলিক শিক্ষা ও দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়বে এবং তাদের সমগ্র দৃষ্টি ও আগ্রহ ছোটখাট ও খুঁটিনাটি বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে, সেখানেই অনিবার্যভাবে তাদের মধ্যে সেই একই প্রকারের দলাদলি ও মতবিরোধ দেখা দেবে, যা ইতিপূর্বে বিভিন্ন নবীর উম্মতকে তাদের জীবনের আসল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে দুনিয়া ও আখিরাতের লাঞ্ছনার আবর্তে নিক্ষেপ করেছিল। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় হচ্ছে, কুরআন মাজীদে এত স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বর্তমান মুসলিমগণ উপরোক্ত দুটি মূলনীতি তথা আল্লাহভীতি ও আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরা থেকে চরমভাবে বিচ্যূত হয়ে গেছে। ফলে মুসলিম বিশ্বের সর্বত্রই পরস্পর অনৈক্য ও অবিশ্বাস বিরাজ করছে। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, কোন কোন বিষয়ে এক দল মুসলিম আরেক দল মুসলিমকে শত্রু হিসেবে দেখে থাকে। অপরদিকে ইসলামের শত্রুরা মাঝে মাঝে এ বিভেদকে সামান্য উস্কে দিয়ে বেশ উপভোগ করছে। সাহাবী ও তাবেঈদের যুগে কোন মাসআলাতে মতপার্থক্যে জড়িয়ে গেলে সাথে সাথেই তারা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নির্দেশ অনুযায়ী কুরআন ও হাদীসের দিকে ফিরে আসত এবং এ বিষয়ে কোনরূপ দলাদলিতে লিপ্ত হতো না। অতঃপর যখনই এমন যুগের আবির্ভাব ঘটল, যখন মানুষ কুরআন ও হাদীস থেকে বিভিন্ন আলেমদের চিন্তা-গবেষণাকে প্রাধান্য দিতে শুরু করল, তখনই মুসলিমদের আনুগত্য ও আক্বীদার মূল কেন্দ্র পরিবর্তন হয়ে গেল। ফলে নানা দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে গেল এবং একেক দল একেক নাম ধারণ করল। এসব কিছুই হলো মুসলিমদের উপরোক্ত দুটি নির্দেশ অনুসরণ না করার ফল।] তোমাদের উপর আল্লাহর দেয়া নিয়ামতকে স্মরণ করো- যখন তোমরা ছিলে একে অপরের শত্রু, অতঃপর তিনি তোমাদের অন্তরসমূহের মধ্যে বন্ধন সৃষ্টি করে দিলেন। ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে পরস্পর ভাই ভাই হয়ে গেলে। আর তোমরা তো ছিলে এক আগুনের গর্তের প্রান্তে, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে সেখান থেকে মুক্তি দিলেন। [এখানে অনুগ্রহ বলতে ইসলাম ধর্মকে বুঝানো হয়েছে। আর পরস্পর শত্রু বলতে ইসলাম আগমনের পূর্বে আরবের গোত্রসমূহ (বিশেষ করে আউস ও খাজরাজ গোত্র) যারা শত্রুতা ও ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত ছিল এবং চরম অশান্তি ভোগ করছিল, সেই অবস্থাকে বুঝানো হয়েছে। এমন সময় আল্লাহ তা‘আলা ইসলাম নামক মহা অনুগ্রহ অবতরণের মাধ্যমে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে তাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করেন। অত্র আয়াতে এই পরিবর্তনটিকে আগুনের গর্তের দ্বারপ্রান্ত থেকে উদ্ধার করার সাথে তুলনা করা হয়েছে। অর্থাৎ সে সময়ের অশান্তিময় অবস্থাটি ছিল আগুনের গর্তের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে থাকার সমতুল্য। একটি জ্বলন্ত অগ্নিকান্ডের পার্শ্বে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে যে ধরনের কঠিন যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়, তখনকার প্রতিটি মুহূর্ত ছিল সেরূপ যন্ত্রণাময়। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা এই মহা অনুগ্রহের মাধ্যমে তাদেরকে সেখান থেকে উদ্ধার করে পরম প্রশান্তি দান করলেন। অত্র আয়াতে উম্মতে মুহাম্মাদীর পরবর্তী লোকদের জন্য পরোক্ষভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রদান করা হয়েছে। আর তা হলো- দেখো! আল্লাহ তা‘আলা কীভাবে তার অনুগ্রহ দান করেছেন? এখন যতদিন পর্যন্ত তোমরা এই অনুগ্রহটিকে আঁকড়ে ধরে রাখতে পারবে, ততদিন পর্যন্ত তোমরা অনুরূপ প্রশান্তি ভোগ করতে পারবে। কিন্তু যখন থেকেই তোমরা এর থেকে বিচ্যুত হতে শুরু করবে, তখন থেকেই তোমরা অশান্তির আগুনের গর্তের দিকে দ্রুত ধাবিত হবে। অতঃপর যদি তোমরা পুনরায় উক্ত অনুগ্রহটিকে শক্তভাবে ধারণ করতে সক্ষম হও, তাহলে পুনরায় তোমরা অনুরূপ প্রশান্তি লাভ করতে পারবে।] এভাবেই আল্লাহ তাঁর নিদর্শনসমূহ তোমাদের সামনে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা সঠিক পথ লাভ করতে পার।

আয়াতগুলো থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা

১. আল্লাহকে যথাযথ পরিমাণ ভয় করতে হবে।

২. মুসলিম অবস্থায় মৃত্যুবরণ করার জন্য সর্বদা চেষ্টা করতে হবে।

৩. সর্বদা আল্লাহর রশিকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে।

৪. মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না।

৫. কোন মুসলিম অপর মুসলিম থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবে না।

৬. সর্বদা আল্লাহর দেয়া নিয়ামতগুলোকে স্মরণ করতে হবে।

৭. মুসলিমগণ একে অপরের ভাই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন