মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নয় বছর মদিনায় অবস্থান করেন এবং এ সময়কালের মধ্যে হজ করেন নি। অতঃপর দশম বর্ষে লোকদের মধ্যে ঘোষণা দেওয়া হলো যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বছর হজে যাবেন। মদিনায় বহুলোকের আগমণ হলো। তাদের প্রত্যেকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করতে এবং তার অনুরূপ আমল করতে আগ্রহী ছিলো। আমরা তাঁর সঙ্গে রওনা হলাম। আমরা যখন যুল-হুলায়ফা নামক স্থাস্থানে পৌছলাম, আসমা বিনত উমায়স রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা মুহাম্মাদ ইবন আবু বকরকে প্রসব করলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট লোক পাঠিয়ে জানতে চাইলেন এখন আমি কি করবো? তিনি বললেন, তুমি গোসল করো, একখণ্ড কাপড় দিয়ে পট্টি বেঁধে নাও এবং ইহরামের পোশাক পরিধান করো। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর “কাসওয়া” নামক উষ্ট্রীতে আরোহণ করলেন। অতঃপর বায়দা নামক স্থানে তাঁর উষ্ট্রী যখন তাঁকে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াল, আমি সামনের দিকে যতদূর দৃষ্টি যায় তাকিয়ে দেখলাম লোকে লোকারণ্য, কতক সওয়ারীতে; কতক পদব্রজে অগ্রসর হচ্ছে। ডান দিকে, বাম দিকে এবং পেছনেও একই দৃশ্য। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝখানে ছিলেন এবং তার ওপর কুরআন নাযিল হচ্ছিল। একমাত্র তিনিই এর আসল তাৎপর্য জানেন এবং তিনি যা করতেন, আমরাও তাই করতাম। তিনি আল্লাহর তাওহীদ সম্বলিত এ তালবিয়া পাঠ করলেন: ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা, লাব্বাইকা না শারীকা লাকা লাব্বাইকা, ইন্নাল-হামদা ওয়ান-নি মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা শারীকা লাক’। অর্থ: “আমি তোমার দরবারে হাযির আছি হে আল্লাহ, আমি তোমার দরবারে হাযির, আমি তোমার দরবারে হাযির, তোমার কোনো শরীক নাই, আমি তোমার দরবারে উপস্থিত। নিশ্চিত সমস্ত প্রশংসা, নি‘আমত তোমারই এবং সমগ্র রাজত্ব তোমার, তোমার কোনো শরীক নেই”। লোকেরাও উপরোক্ত তালবিয়া পাঠ করল যা (আজকাল) পাঠ করা হয়। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর থেকে বেশি কিছু বলেন নি। আর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপরোক্ত তালবিয়া পাঠ করতে থাকলেন। জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা হজ ছাড়া অন্য কিছুর নিয়ত করি নি, আমরা উমরার কথা জানতাম না। অবশেষে আমরা যখন তাঁর সঙ্গে বাইতুল্লাহতে পৌঁছলাম, তিনি রুকন (হাজারে আসওয়াদ) স্পর্শ করলেন, তারপর সাতবার কা‘বা ঘর তাওয়াফ করলেন; তিনবার দ্রুতগতিতে এবং চারবার স্বাভাবিক গতিতে। এরপর তিনি মাকামে ইবরাহীমে পৌঁছে এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন,
“তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে সালাতের স্থাস্থানরূপে গ্রহণ কর” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১২৫]। তিনি মাকামে ইবরাহীমকে তাঁর ও বায়তুল্লাহর মাঝখানে রেখে দু’রাকা‘আত সালাত আদায় করলেন। (জাফর রহ. বলেন, আমার পিতা (মুহাম্মাদ) বলতেন, আমি যতদূর জানি, তিনি (জাবির) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি দু’রাকা‘আত সালাতে ‘সূরা কুল হুআল্লাহু আহাদ’ ও ‘কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন’ পাঠ করেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজারে আসওয়াদের কাছে প্রত্যাবর্তন করলেন এবং তাতে চুমো খেলেন। তারপর তিনি দরজা [অর্থাৎ বনী মাখযূম এর দরজা। যা সাফা দরজা নামেও খ্যাত। কারণ তা সাফা পাহাড়ের কাছে।] দিয়ে সাফা পাহাড়ের দিকে বের হলেন এবং সাফার নিকটবর্তী হয়ে তিলাওয়াত করলেন:
“নিশ্চয় সাফা-মারওয়া আল্লাহর দু’টি নিদর্শনসমূহের অন্যতম”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫৮] এবং আরো বললেন, আল্লাহ তা‘আলা যে পাহাড়ের উল্লেখ করে আরম্ভ করেছেন, আমিও তা দিয়ে আরম্ভ করবো। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাফা পাহাড় থেকে শুরু করলেন এবং তারপর এতটা উপরে আরোহণ করলেন যে, বায়তুল্লাহ শরীফ দেখতে পেলেন। তিনি কিবলামুখী হলেন, আল্লাহর একত্ব ও মাহাত্ম্য ঘোষণা করলেন এবং বললেন,
“আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো শরীক নেই। তাঁর জন্য রাজত্ব এবং তাঁর জন্য সমস্ত প্রশংসা, তিনি প্রতিটি জিনিসের ওপর শক্তিমান। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি এক, তিনি নিজের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন”। তিনি এ দো‘আ পড়লেন এবং তিনি অনুরূপ তিনবার বলেছেন। প্রতিবারের মাঝখানে দো‘আ করেছেন।
অতঃপর তিনি নেমে মারওয়া পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হলেন- যখন তাঁর পা মুবারক উপত্যকার সমতল ভূমিতে গিয়ে ঠেকলো তখন তিনি দ্রুত চললেন, যতক্ষণ যাবত না উপত্যকা অতিক্রম করলেন। মারওয়া পাহাড়ে উঠার সময় হেঁটে উঠলেন। অতঃপর এখানেও তাই করলেন যা তিনি সাফা পাহাড়ে করেছিলেন। সর্বশেষ তাওয়াফে যখন তিনি মারওয়া পাহাড়ে পৌছলেন, তখন (লোকদের সম্বোধন করে) বললেন, যদি আমি আগেই ব্যাপারটি বুঝতে পারতাম, তাহলে আমি সাথে করে কুরবানীর পশুও আনতাম না এবং হজের ইহরামকে উমরায় পরিবর্তন করতাম। অতএব, তোমাদের মধ্যে যার সাথে কুরবানীর পশু নাই, সে যেন ইহরাম খুলে ফেলে এবং একে উমরায় পরিণত করে। এ সময় সুরাকা ইবন মালিক ইবন ‘জু‘শুম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ ব্যবস্থা কি আমাদের এ বছরের জন্য, না সর্বকালের জন্য? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের আংগুলগুলো পরস্পরের ফাঁকে ঢুকালেন এবং দু’বার বললেন, উমরা হজের মধ্যে প্রবেশ করেছে। আরও বললেন, না; বরং সর্বকালের জন্য, সর্বকালের জন্য।
এ সময় আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ইয়েমেন থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য কুরবানীর পশু নিয়ে এলেন এবং যারা ইহরাম খুলে ফেলেছে, ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত দেখতে পেলেন। তিনি রঙ্গিন কাপড় পরিহিত ছিলেন এবং চোখে সুরমা দিয়েছিলেন। আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তা অপছন্দ করলেন। ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বললেন, আমার পিতা আমাকে এরূপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, পরবর্তীতে আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ইরাকে থাকা অবস্থায় বলতেন, অতপর ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা যা করেছেন তার প্রতি অন্তুষ্ট হয়ে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানালাম যে, আমি তার এ কাজ অপছন্দ করেছি। তিনি যা উল্লেখ করেছেন, সে বিষয়ে জানার জন্য আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলাম। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ফাতিমা সত্য বলেছে, সত্য বলেছে। তুমি হজের ইহরাম বাঁধার সময় কী বলেছিলে? আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন আমি বলেছি, ইয়া আল্লাহ! আমি ইহরাম বাঁধলাম, যেরূপ ইহরাম বেঁধেছেন আপনার রাসূল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার সঙ্গে হাদী (কুরবানীর পশু) আছে, অতএব, তুমি ইহরাম খুলবে না। জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ইয়েমেন থেকে যে পশুরপাল নিয়ে এসেছেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সঙ্গে করে যে সব পশু নিয়ে এসেছিলেন, সর্বসাকুল্যে এর সংখ্যা দাঁড়ালো একশত। অতঃপর, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং যাদের সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল তারা ব্যতীত আর সকলেই ইহরাম খুলে ফেললেন এবং চুল কাটলেন। তারপর যখন তারবিয়ার দিন (৮ যিলহজ) আসল। লোকেরা পুনরায় ইহরাম বাঁধল এবং মিনার দিকে রওনা হলো। আর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বাহনে সাওয়ার হয়ে গেলেন এবং সেখানে যোহর, আসর, মাগরিব, ‘ইশা ও ফজরের সালাত আদায় করলেন। তারপর তিনি সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন। নামিরা নামক স্থানে গিয়ে তার জন্য একটি তাঁবু খাটানোর নির্দেশ দিলেন এবং নিজেও রওনা হয়ে গেলেন। কুরাইশগণ নিঃসন্দেহ ছিল যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাশ‘আরুল হারামের কাছে অবস্থান করবেন যেমন জাহেলী যুগে কুরাইশগণ করতো। কিন্তু তিনি সামনে অগ্রসর হলেন, তারপরে ‘আরাফাতে পৌঁছলেন এবং দেখতে পেলেন নামিরায় তাঁর জন্য তাঁবু খাটানো হয়েছে। তিনি এখানে অবতরণ করলেন। তারপর যখন সূর্য ঢলে পড়ল, তখন তিনি তাঁর কাসওয়া (নামক উষ্ঠী) কে প্রস্তুত করার নির্দেশ দিলেন। তার পিঠে হাওদা লাগান হলো। তখন তিনি বাতনে ওয়াদীতে এলেন এবং লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন: “তোমাদের রক্ত ও তোমাদের সস্পদ তোমাদের জন্য হারাম যেমন তা হারাম তোমাদের এ দিনে, তোমাদের এ মাসে এবং তোমাদের এ শহরে”। সাবধান! জাহিলী যুগের সকল ব্যাপার (অপসংস্কৃতি) আমার উভয় পায়ের নীচে। জাহেলী যুগের রক্তের দাবিও বাতিল হলো। আমি সর্ব প্রথম যে রক্তপণ বাতিল করছি, তা হলো আমাদের বংশের রবী‘আ ইবন হারিসের পুত্রের রক্তপণ। সে শিশু অবস্থায় বানু সা‘দ এ দুগ্ধপোষ্য ছিল। তখন হুযাইল গোত্রের লোকেরা তাকে হত্যা করে। জাহেলী যুগের সুদও বাতিল হলো। আমি প্রথমে যে সুদ বাতিল করছি তা হলো আমাদের বংশের আব্বাস ইবন আব্দুল মুত্তালিরের সুদ। তার সমস্ত সুদ বাতিল হলো। তোমরা স্ত্রীলোকদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। তোমরা তাদের আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর কালেমার মাধ্যমে তাদের লজ্জাস্থান নিজেদের জন্য হালাল করেছ। তাদের ওপরে তোমাদের অধিকার এ যে, তারা যেন তোমাদের শয্যায় এমন কোনো লোককে স্থান না দেয় যাকে তোমরা অপছন্দ করো। যদি তারা এরূপ করে তবে হালকাভাবে প্রহার করো। আর তোমাদের ওপর তাদের ন্যায়সঙ্গত ভরণ-পোষণের ও পোশাক-পরিচ্ছেদের হুকুম রয়েছে। আমি তোমাদের মাঝে এমন এক জিনিস রেখে যাচ্ছি- যা দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরে থাকলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব। আমার সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসিত হলে, তখন তোমরা কি বলবে?” তারা বলল, আমরা সাক্ষ্য দিব যে, আপনি আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়েছেন, আপনার হক আদায় করেছেন এবং সদুপদেশ দিয়েছেন। তারপর তিনি তর্জনী আকাশের দিকে তুলে লোকদের ইশারা করে বললেন, “ইয়া আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাকো, তিনি তিনবার এরূপ বললেন। তারপর (মুয়াযযিন) আযান দিলেন ও ইকামত দিলেন এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের সালাত আদায় করলেন। এরপর ইকামত দিলেন এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাত আদায় করলেন। তিনি এ দুই সালাতের মাঝখানে অন্য কোনো সালাত আদায় করেন নি। তারপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ার হয়ে মাওকিফ (অবস্থানস্থল) এ এলেন, তাঁর কাসওয়া উষ্ট্রীর পেট পাথরের স্তূপের দিকে করে দিলেন এবং লোকদের একত্র হওয়ার জায়গা সামনে রেখে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ালেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তিনি এভাবে অবস্থান করলেন। হলদে আভা কিছু দূরীভূত হলো; এমনকি সূর্য গোলক সষ্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেলো। উসামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে তাঁর বাহনের পেছন দিকে বসালেন এবং কাসওয়ার নাকের দড়ি সজোরে টান দিলেন- ফলে তার মাথা মাওরিক (সওয়ারী ক্লান্তি অবসাদের জন্য যাতে পা রাখে) স্পর্শ করল। তিনি ডান হাতের ইশারায় বলেন, হে মানবমণ্ডলী! ধীরে সুস্থে, ধীরে সূস্থে অগ্রসর হও। যখনই তিনি বালুর স্তূপের নিকট পৌঁছতেন, কাসওয়ার নাকের রশি কিছুটা ঢিল দিতেন যাতে সে উপরদিকে উঠতে পারে। এভাবে মুযদালিফায় পৌঁছলেন এবং এখানে একই আযানে ও দুই ইকামতে মাগরিব ও ‘ইশার সালাত আদায় করলেন। এ সালাতের মাঝখানে অন্য কোনো নফল সালাত আদায় করেন নি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুয়ে পড়লেন যতক্ষণ যাবত না ফজরের ওয়াক্ত হলো। অতঃপর ভোর হয়ে গেলে তিনি আযান ও ইকামতসহ ফজরের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি কাসওয়ার পিঠে আরোহণ করে মাশ‘আরে হারাম নামক স্থাস্থানে আসলেন। এখানে তিনি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর নিকট দো‘আ করলেন, তার মহাত্ম্য বর্ণনা করলেন, কালেমা তাওহীদ পড়লেন এবং তাঁর একত্ব ঘোষণা করলেন। দিনের আলো যথেষ্ট উজ্জ্বল না হওয়া পর্যন্ত তিনি দাঁড়িয়ে এরূপ করতে থাকলেন। সূর্যোদয়ের পূর্বে তিনি আবার রওনা করছিলেন এবং ফযল ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সাওয়ারীতে তাঁর পেছনে বসলেন। তিনি ছিলেন যুবক এবং তার মাথার চুল ছিল অত্যন্ত সুন্দর। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন অগ্রসর হলেন- পাশাপাশি একদল মহিলাও যাচ্ছিলো। ফযল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাদের দিকে তাকাতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের হাত ফযলের চেহারার ওপর রাখলেন এবং তিনি তার মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেন এবং ফযল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অপরদিক থেকে দেখতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় অন্যদিক থেকে ফযল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর মুখমণ্ডলে হাত রাখলেন। তিনি আবার অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে দেখতে লাগলেন। “বাতনে মুহাসসার- নামক স্থানে পৌছলেন এবং সওয়ারীর গতি কিছুটা দ্রুত করলেন। তিনি মধ্যপথে অগ্রসর হলেন, যা জামরাতুল কুবরার দিকে বেরিয়ে গেছে। তিনি বৃক্ষের নিকটের জামরায় এলেন এবং নিচের খালি জায়গায় দাঁড়িয়ে এখানে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করলেন এবং প্রত্যেকবার ‘আল্লাহু আকবার’ বললেন। অতঃপর সেখান থেকে কুরবানীর স্থানে এলেন এবং নিজ হাতে তেষট্টী পশু যবেহ করলেন। তারপর আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বাকীগুলো যবেহ করতে বললেন এবং তিনি তাকে কুরবানীর পশুতে শরীক করলেন। অতঃপর তিনি প্রতিটি পশুর গোশতের কিছু অংশ নিয়ে একত্রে রান্না করার নির্দেশ দিলেন। অতএব তাই করা হলো। তারা উভয়ে এ গোশত থেকে খেলেন এবং ঝোল পান করলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ার হয়ে বাইতুল্লাহর দিকে রওয়ানা হলেন এবং মক্কায় পৌঁছে যোহরের সালাত আদায় করলেন। অতঃপর বনু আব্দুল মুত্তালিব-এর লোকদের কাছে আসলেন, তারা লোকদের যমযমের পানি পান করাচ্ছিলো। তিনি বললেন: হে আব্দুল মুত্তালিবের বংশধরগণ! পানি তোলো। আমি যদি আশংকা না করতাম যে, পানি পান করানোর ব্যাপারে লোকেরা তোমাদের পরাভূত করে দেবে, তবে আমি নিজেও তোমাদের সাথে পানি তুলতাম। তখন তারা তাঁকে এক বালতি পানি দিলো এবং তিনি তা থেকে কিছু পান করলেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/15/152
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।