hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের রুকনসমূহের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

লেখকঃ কতিপয় ছাত্র

৫৭
জুমু‘আর দিনের মুস্তাহাব ও আদবসমূহ:
১- গোসল করা, সাজ-সজ্জা ও সুন্দর কাপড় পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা ও মিসওয়াক করা। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«الْغُسْلُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ»

“জুমু‘আর দিনে গোসল করা প্রত্যেক সাবালক ব্যক্তির ওপর ওয়াজিব”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৪৬।]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,

«غُسْلُ يَوْمِ الْجُمُعَةِ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ، وَسِوَاكٌ، وَيَمَسُّ مِنَ الطِّيبِ مَا قَدَرَ عَلَيْهِ» .

“প্রত্যেক সাবালক ব্যক্তির ওপর কর্তব্য হচ্ছে জুমু‘আ বারে গোসল করা ও মিসওয়াক করা আর সামর্থ্য অনুযায়ী সুগন্ধি স্পর্শ করবে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৪৬।]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,

«مَا عَلَى أَحَدِكُمْ إِنْ وَجَدَ - أَوْ مَا عَلَى أَحَدِكُمْ إِنْ وَجَدْتُمْ - أَنْ يَتَّخِذَ ثَوْبَيْنِ لِيَوْمِ الْجُمُعَةِ، سِوَى ثَوْبَيْ مِهْنَتِهِ»

“তোমাদের কারো পক্ষে বা তোমাদের পক্ষে সম্ভব হলে নিজেদের সচরাচর পরিধেয় বস্ত্র ছাড়া-জুমু‘আর সালাতের জন্য পৃথক দুইটি কাপড়ের ব্যবস্থা করে নেবে”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ১০৭৮।আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১০৯৬।আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর মর্যাদা সম্পর্কে বলেছেন,

«حَقٌّ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ السِّوَاكُ وَغُسْلُ يَوْمِ الْجُمُعَةِ وَأَنْ يَمَسَّ مِنْ طِيبِ أَهْلِهِ إن كان» .

“প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য হলো জুমু‘আর দিনে মিসওয়াক করা, গোসল করা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা (নিজের না থাকলেও) তার স্ত্রীর সুগন্ধি থেকে হলেও”। [মুসনাদ বাযযার, হাদীস নং ৪১৭১। হাদীসটি সহীহ।]

২- তাড়াতাড়ি মসজিদে যাওয়া: জুমু‘আর সালাত আদায় করতে ওয়াক্ত হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই মসজিদে যাওয়া। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الجُمُعَةِ غُسْلَ الجَنَابَةِ ثُمَّ رَاحَ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَدَنَةً، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّانِيَةِ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَقَرَةً، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّالِثَةِ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ كَبْشًا أَقْرَنَ، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الرَّابِعَةِ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ دَجَاجَةً، وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الخَامِسَةِ، فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَيْضَةً، فَإِذَا خَرَجَ الإِمَامُ حَضَرَتِ المَلاَئِكَةُ يَسْتَمِعُونَ الذِّكْرَ»

“যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন জানাবাত গোসলের (ফরয গোসল) ন্যায় গোসল করে এবং সালাতের জন্য আগমন করে সে যেন, একটি উট নৈকট্যের জন্য পেশ করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন, একটি গাভী নৈকট্যের জন্য পেশ করল। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা নৈকট্যের জন্য পেশ করল। চতুর্থ পর্যায়ে আগমন করল সে যেন একটি মুরগী নৈকট্যের জন্য পেশ করল। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন, একটি ডিম নৈকট্যের জন্য পেশ করল। পরে ইমাম যখন খুৎবা প্রদানের জন্য বের হন তখন ফিরিশতাগণ যিকির শোনার জন্য হাযির হয়ে যান (তখন আর কারও নাম লিখেন না)”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৮১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৫০।]

৩- ইমাম মিম্বারে উপবিষ্ট হওয়ার আগে নফল সালাত আদায় করা। তবে ইমাম যখন খুৎবা দেওয়ার জন্য মিম্বারে উপবিষ্ট হবেন তখন নীরবে শুধু ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ এর দু রাকা‘আত সালাত আদায় করে বসে পড়বে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لاَ يَغْتَسِلُ رَجُلٌ يَوْمَ الجُمُعَةِ، وَيَتَطَهَّرُ مَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ، وَيَدَّهِنُ مِنْ دُهْنِهِ، أَوْ يَمَسُّ مِنْ طِيبِ بَيْتِهِ، ثُمَّ يَخْرُجُ فَلاَ يُفَرِّقُ بَيْنَ اثْنَيْنِ، ثُمَّ يُصَلِّي مَا كُتِبَ لَهُ، ثُمَّ يُنْصِتُ إِذَا تَكَلَّمَ الإِمَامُ، إِلَّا غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الجُمُعَةِ الأُخْرَى ما لم يغش الكبائر»

“যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন গোসল করে এবং যথাসাধ্য উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে ও নিজের তেল থেকে ব্যবহার করে বা নিজ ঘরের সুগন্ধি ব্যবহার করে এরপর বের হয় এবং দু‘জন লোকের মাঝে বিচ্ছিন্ন না করে, তারপর তার নির্ধারিত সালাত আদায় করে এবং ইমামের খুৎবা দেওয়ার সময় চুপ থাকে, তাহলে উক্ত জুমু‘আ থেকে পরের জুমু‘আ পর্যন্ত তার যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়, যতক্ষণ না সে কবীরা গুনাহে লিপ্ত হয়”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৮৩।]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন,

«إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَالْإِمَامُ يَخْطُبُ، فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ، وَلْيَتَجَوَّزْ فِيهِمَا»

“তোমাদের কেউ জুমু‘আর দিনে মসজিদে আসার পর ইমামকে খুৎবারত অবস্থায় পেলে সে যেন দু’ রাকা‘আত সালাত (তাহিয়্যাতুল মাসজিদ) পড়ে নেয়, তবে সে যেন উক্ত রাকা‘আতদ্বয় সংক্ষেপে আদায় করে।”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৭৫।]

৪- লোকের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের দিকে যাওয়া ও দু‘জন লোকের মাঝে বিচ্ছিন্ন করা মাকরূহ। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের খুতবারত অবস্থায় এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করলো। সে লোকের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছিলো। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন,

«اجْلِسْ، فَقَدْ آذَيْتَ وَآنَيْتَ»

“তুমি বসো, তুমি (অন্যকে) কষ্ট দিয়েছ এবং অনর্থক কাজ করেছ”। [ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১১১৫।আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]

উপরের হাদীসে এসেছে,

«ثُمَّ يَخْرُجُ فَلاَ يُفَرِّقُ بَيْنَ اثْنَيْنِ ..... إِلَّا غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الجُمُعَةِ الأُخْرَى»

“এবং দু‘জন লোকের মাঝে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি না করে বসে পড়ে... তাহলে উক্ত জুমু‘আ থেকে পরের জুমু‘আ পর্যন্ত তার যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৮৩।]

৫- ইমাম খুৎবার জন্য বের হলে কথাবার্তা বন্ধ রাখা ও পাথরের টুকরা বা অন্য কোনো কিছু হাতে নিয়ে অনর্থক নড়াচড়া না করা। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إِذَا قُلْتَ لِصَاحِبِكَ : أَنْصِتْ، يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَالْإِمَامُ يَخْطُبُ، فَقَدْ لَغَوْتَ»

“জুমু‘আর দিনে ইমামের খুৎবা প্রদানকালে তুমি যদি তোমার সঙ্গীকে বল চুপ থাক, তবে তুমিও অনর্থক কথা বললে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৩৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৫১।]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,

«مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ، وَزِيَادَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، وَمَنْ مَسَّ الْحَصَى فَقَدْ لَغَا»

“যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অযু করার পর জুমু‘আর সালাতে এলো, নীরবে মনোযোগ সহকারেখুৎবা (আলোচনা) শুনলো, তার পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত এবং আরও অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। আর যে ব্যক্তি কঙ্কর স্পর্শ করলো সে অনর্থক কাজ করলো”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৫৭।]

৬- জুমু‘আর আযান হলে বেচা কেনা করা হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَوٰةِ مِن يَوۡمِ ٱلۡجُمُعَةِ فَٱسۡعَوۡاْ إِلَىٰ ذِكۡرِ ٱللَّهِ وَذَرُواْ ٱلۡبَيۡعَۚ ذَٰلِكُمۡ خَيۡرٞ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ٩ ﴾ [ الجمعة : ٩ ]

“হে মুমিনগণ, যখন জুমু‘আর দিনে সালাতের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে”। [সূরা আল-জুমু‘আ, আয়াত: ৯]

৭- জুমু‘আর দিনে ও রাতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি বেশি বেশি সালাত ও সালাম পেশ করা। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«أَكْثِرُوا عَلَيَّ الصَّلَاةَ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ، فَإِنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ يُصَلِّي عَلَيَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلَّا عُرِضَتْ عَلَيَّ صَلَاتُهُ»

“তোমরা জুমু‘আর দিনে আমার প্রতি বেশি বেশি সালাত পেশ করো; কেননা যে কেউ আমার প্রতি জুমু‘আর দিনে সালাত পেশ করবে তার সেটা আমার কাছে পেশ করা হয়”। [মুসতাদরাক লিলহাকিম, হাদীস নং ৩৫৭৭। ইমাম হাকিম বলেন, হাদীসের সনদটি সহীহ। সনদের আবু রাফি হলো ইসমাইল ইবন রাফি। ইমাম বুখারী ও মুসলিম তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেন নি।]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন,

«أَكْثِرُوا الصَّلَاةَ عَلَيَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَلَيْلَةَ الْجُمُعَةِ؛ فَمَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً صَلَّى الله عَلَيْهِ عَشْرًا»

“তোমরা জুমু‘আর দিনে ও রাতে আমার প্রতি বেশি বেশি সালাত পাঠ করো। যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার সালাত পাঠ করবে আল্লাহ তার প্রতি দশবার সালাত পেশ করবেন”। [সুনান আল-বায়হাকী, ৫৯৯৪। হাদীসের সনদটি হাসান।]

৮- সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إِنَّ مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَهُ مِنَ النُّورِ مَا بَيْنَ الْجُمُعَتَيْنِ»

“যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিনে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে তাকে সে জুমু‘আ থেকে পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত নূর দ্বারা আলোকিত করা হবে”। [মুসতাদরাক লিলহাকিম, হাদীস নং ৩৩৯২। ইমাম হাকিম রহ. বলেন, হাদীসের সনদটি সহীহ; কিন্তু বুখারী ও মুসলিম এ সনদে বর্ণনা করেন নি। ইমাম যাহাবী রহ. বলেছেন, নু‘আইম ইবন হাম্মাদ থেকে অনেক মুনকার হাদীস বর্ণিত আছে।]

৯- জুমু‘আর দিনে দো‘আ কবুল হওয়ার সময় বেশি বেশি দো‘আ করা। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إِنَّ فِي الْجُمُعَةِ لَسَاعَةً، لَا يُوَافِقُهَا مُسْلِمٌ، يَسْأَلُ اللهَ فِيهَا خَيْرًا، إِلَّا أَعْطَاهُ إِيَّاهُ»

“জুমু‘আর দিনের মধ্যে অবশ্যই এমন একটি মুহূর্ত আছে কোনো মুসলিম সে সময় আল্লাহর নিকট কোনো কল্যাণ প্রার্থনা করলে নিশ্চয় তিনি তাকে তা দান করেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৫২।]

অন্য হাদীসে এসেছে, এ সময়টি জুমু‘আর দিনের শেষ সময় তথা বিকেল বেলা। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«يَوْمُ الْجُمُعَةِ ثِنْتَا عَشْرَةَ - يُرِيدُ - سَاعَةً، لَا يُوجَدُ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ شَيْئًا، إِلَّا أَتَاهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ، فَالْتَمِسُوهَا آخِرَ سَاعَةٍ بَعْدَ الْعَصْرِ»

“জুমু‘আর দিনের বার ঘন্টার মধ্যে একটি বিশেষ মুহূর্ত আছে, তখন কোনো মুসলিম আল্লাহর নিকট যা-ই চাইবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে তা-ই প্রদান করেন। তোমরাসেটাকে আসরের পরের মুহূর্তে সন্ধান করো”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ১০৪৮।আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]

১০- আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ فِيهِ الشَّمْسُ يَوْمُ الْجُمُعَةِ، فِيهِ خُلِقَ آدَمُ، وَفِيهِ أُهْبِطَ، وَفِيهِ تِيبَ عَلَيْهِ، وَفِيهِ مَاتَ، وَفِيهِ تَقُومُ السَّاعَةُ، وَمَا مِنْ دَابَّةٍ إِلَّا وَهِيَ مُسِيخَةٌ [কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়ার ভয়ে ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত থাকবে।] يَوْمَ الْجُمُعَةِ، مِنْ حِينَ تُصْبِحُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ شَفَقًا مِنَ السَّاعَةِ، إِلَّا الْجِنَّ وَالْإِنْسَ، وَفِيهِ سَاعَةٌ لَا يُصَادِفُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ وَهُوَ يُصَلِّي يَسْأَلُ اللَّهَ حَاجَةً، إِلَّا أَعْطَاهُ إِيَّاهَا»، قَالَ كَعْبٌ : ذَلِكَ فِي كُلِّ سَنَةٍ يَوْمٌ، فَقُلْتُ : «بَلْ فِي كُلِّ جُمُعَةٍ»، قَالَ : فَقَرَأَ كَعْبٌ التَّوْرَاةَ، فَقَالَ : صَدَقَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ : ثُمَّ لَقِيتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ سَلَامٍ، فَحَدَّثْتُهُ بِمَجْلِسِي مَع كَعْبٍ، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلَامٍ : قَدْ عَلِمْتُ أَيَّةَ سَاعَةٍ هِيَ، قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ : فَقُلْتُ لَهُ : فَأَخْبِرْنِي بِهَا، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلَامٍ : هِيَ آخِرُ سَاعَةٍ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ، فَقُلْتُ : كَيْفَ هِيَ آخِرُ سَاعَةٍ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ، وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «لَا يُصَادِفُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ وَهُوَ يُصَلِّي»، وَتِلْكَ السَّاعَةُ لَا يُصَلِّي فِيهَا، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلَامٍ : أَلَمْ يَقُلْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «مَنْ جَلَسَ مَجْلِسًا يَنْتَظِرُ الصَّلَاةَ فَهُوَ فِي صَلَاةٍ حَتَّى يُصَلِّيَ»، قَالَ : فَقُلْتُ : بَلَى، قَالَ : هُوَ ذَاكَ .

“যে সব দিনে সূর্যোদয় হয় তার মধ্যে জুমু‘আর দিনই সর্বোত্তম। এ দিনেই আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছিল, এ দিনই তাঁকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়, এ দিনই তাঁর তাওবা কবুল হয় এবং এ দিনই তিনি মারা যান। এ দিনই কিয়ামত কায়েম হবে, এ দিন জিন ও ইনসান ব্যতীত সমস্ত প্রাণি সুবহে সাদেক হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়ার ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত থাকে। এ দিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে, তখন কোনো মুসলিম বান্দা সালাত আদায়ে থেকে আল্লাহর নিকট যা প্রার্থনা করবে তা-ই প্রাপ্ত হবে। কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, এরূপ দো‘আ কবুলের সময় সারা বছরের মধ্যে মাত্র এক দিন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাঁকে বললাম, বছরের একটি দিন নয়, বরং এটি প্রতি জুমু‘আর দিনের মধ্যে নিহিত আছে। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার প্রমানস্বরূপ তাওরাত পাঠ করে বলেন, আল্লাহর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্য বলেছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, অতঃপর আমি বিশিষ্ট সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবন সালাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথে সাক্ষাৎ করি (যিনি ইয়াহূদীদের মধ্যে বিজ্ঞ আলিম ছিলেন এবং ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন) এবং তাঁকে এ ব্যাপারে অবহিত করি। এ সময় কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আব্দুল্লাহ ইবন সালাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, দো‘আ কবুলের সেই বিশেষ সময় সম্পর্কে আমি জ্ঞাত আছি। তখন আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমাকে ঐ সময় সম্পর্কে অবহিত করুন। আব্দুল্লাহ ইবন সালাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, তা হলো জুমু‘আর দিনের সর্বশেষ সময়। আমি বললাম, তা জুমু‘আর দিনের সর্বশেষ সময় কীরূপে হবে? অথচ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোনো বান্দা সালাতে থেকে উক্ত সময়ে দো‘আ করলে তার দো‘আ কবুল হবে। অথচ আপনার বর্ণিত সময়ে কোনো সালাত আদায় করা যায় না। আব্দুল্লাহ ইবন সালাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেন নি যে, কোনো ব্যক্তি সালাতের অপেক্ষায় বসে থাকলে সালাত আদায় না করা পর্যন্ত তাকে সালাতরত হিসাবে গণ্য করা হয়? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলেন, এটাও সে রকম”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ১০৪৬।আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]

কেউ কেউ বলেন, এ সময়টি হলো ইমাম মিম্বারে বসা থেকে সালাত শেষ করা পর্যন্ত মুহুর্ত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন