hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাদীস সংকলনের ইতিহাস

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম (রহ)

১০
বিষয়বস্তুর দৃষ্টিতে হাদীসের প্রকারভেদ
বিষয়বস্তুর দৃষ্টিতে হাদীস কয়েক প্রকারের রহিয়াছে। ইমাম শাফেয়ী (র) বলিয়াছেনঃ হাদীস তিন প্রকারের। কুরআন মজীদে সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লিখিত যেসব বিষয়ে নবী করীম (ﷺ) নিজ ভাষায় ব্যাখ্যা এবং বিশ্লেষণ দান করিয়াছেন তাহা প্রথম প্র্রকারের হাদীস। কুরআন মজীদে মোটামুটি ও অবিস্তৃতভাবে অনেক আইন ও বিধানের উল্লেখ রহিয়াছে, রাসূলে করীম (ﷺ) তাহার বিস্তৃত রূপ পেশ করিয়াছেন ও উহার ব্যাখ্যা দিয়াছেন। অনেক সংক্ষিপ্ত ও অস্পষ্ট বিষয়কে তিনি মুসলিমদের সম্মুখে নিজ ভাষায় বিস্তারিত ও সুস্পষ্টরূপে তুলিয়া ধরিয়াছেন।ইহা দ্বিতীয় প্রকারের হাদীস। আর তৃতীয় প্রকারের হইতেছে সেসব হাদীস, যাহাতে রাসূলে করীম (ﷺ) কুরআনে অনুল্লিখিত অনেক বিষয়ের উল্লেখ করিয়াছেন। এই তিন প্রকারের হাদীস যেহেতু আল্লাহর নিকট হইতে রাসূলে করীমের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে লব্ধ জ্ঞানের আকর, সে কারণে ইহা সবই কুরআনের মতই নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাস্য।

[কিতাবুর রিসালা-ইমাম শাফেয়ী (র)]

এই পর্যায়ে শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভীর আলোচনার সারাংশ নিম্নে উদ্ধৃত হইলঃ

নবী করীম (ﷺ) হইতে বর্ণিত ও হাদীস-গ্রন্হসমূহে সংকলিত হাদীসসমূহ শরীয়াতী হুকুম গ্রহণের দৃষ্টিতে দুই প্রকারের। রিসালাতের বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য রাসূলে করীম (ﷺ) যত কথাই বলিয়াছেন, তাহা প্রথম প্রকারের। ‘রাসূল যাহা দেন তাহা গ্রহণ কর এবং যাহা হইতে নিষেধ করেন, তাহা হইতে বিরত থাক’- আয়াতটিতে এ প্রকারের হাদীস সম্পর্কেই আল্লাহর নির্দেশ ঘোষিত হইয়াছে। পরকাল ও মালাকুতী জগতের আশ্চর্যজনক বিষয়াদি ও ঘটনাবলী সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) যাহা বলিয়াছেন, তাহাও এই প্রকারের হাদীস। এই হাদীসসমূহ ওহীর সূত্রে প্রাপ্ত জ্ঞান হইতে নিঃসৃত। শরীয়াতের বিধি-বিধান, ইবাদতের নিয়ম-প্রণালী এবং সমাজ ও জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থাপনার ব্যাখ্যা ও উহার পালনের জন্য উৎসাহ দান সম্পর্কিত হাদীসসমূহও এই পর্যায়ের। তবে উহা কিছু অংশ সরাসরি ওহীর সূত্রে প্রাপ্ত এবং কিছু অংশ স্বয়ং নবী করীমের ইজতিহাদ।অবশ্য নবী করীম (ﷺ)-এর রায় কখনো ভুলের উপর স্থায়ী হইয়া থাকিতে পারিত না। তাঁহার ইজতিহাদ আল্লাহর হুকুমের উপরই ভিত্তিশীল হইবে, ইহার কোন প্রয়োজন নাই। কেননা প্রায়ই এমন হইত যে, আল্লাহ তা’য়ালা তাঁহার নবীকে শরীয়াতের উদ্দেশ্য ও লক্ষ জানাইয়া দিতেন; শরীয়াত প্রণয়ন, উহার সহজতা বিধান ও আদেশ-নিষেধ নির্ধারণের নিয়ম-কানুন শিক্ষা দিতেন; নবী ওহীসূত্রে জানা এই আইন ও নিয়ম অনুযায়ী ওহীর সূত্রে লব্ধ উদ্দেশ্যাবলীর ব্যাখ্যা দান করিতেন। যেসব যুক্তিপূর্ণ ও কল্যাণময় বিষয় বিনা শর্তে পেশ করিয়াছেন, যাহার কোন সময় বা সীমা নির্দিষ্ট করা হয় নাই –যেমন উন্নত ও খারাপ চরিত্র-ইহাও রিসালাতের দায়িত্ব পালন পর্যায়ের এবং ইহার অধিকাংশই ওহীর উৎস হইতে গৃহীত। তাহা এই অর্থে যে, আল্লাহ তা’য়ালা রাসূলকে সমাজ ও জনকল্যাণের নিয়ম-কানুন জানাইয়াদিয়াছেন, নবী সে নিয়ম-কানুন হইতে যুক্তি বা দলিল গ্রহণ করিয়াছেন এবং উহাকে মূলনীতি হিসাবে পেশ করিয়াছেন। আমলসমূহের ফযীলত, আমলকারীদের গুণ ও প্রশংসামূলক হাদীসও এই পর্যায়ে গণ্য। আমার মতে ইহার আধিকাংশই ওহীর সূত্রে প্রাপ্ত, আর কিছু অংশ তাঁহার ইজতিহাদের ফসল। দ্বিতীয় প্রকারের হাদীস রিসালাতের দায়িত্ব পালন পর্যায়ের নহে। রাসূলে করীম (ﷺ) বলিয়াছেনঃ

আমি একজন মানুষ মাত্র, অতএব তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে আমি যখন কোন জিনিসের আদেশ করি, তখন তাহা তোমরা গ্রহণ করিও- পালন করিও। আর যদি আমার নিজের মতে কোন কাজের আদেশ করি তবে মনে রাখিও, আমি একজন মানুষ মাত্র।

এ বাণীতে রাসূলে করীম (ﷺ) দ্বিতীয় প্রকারের হাদীসের কথাই বুঝাইয়াছেন। মদীনার মুসলমানদিগকে অত্যাধিক ফসল লাভের আশায় পুরুষ খোরমা গাছের ডাল স্ত্রী খোরমা গাছের মধ্যে প্রবেশ করাইয়া দিতে দেখিয়া নবী করীম (ﷺ) ‘উহা না করিলে কোন ক্ষতি হইবে না’ বলিয়া মত প্রকাশ করিয়াছিলেন এবং বলিয়াছিলেনঃ

তোমরা ইহা না করিলে সম্ভবত ভালই হইত।

কিন্তু ইহা না করার দরুন পরবর্তী বছর অত্যন্ত কম পরিমাণে ফসল উৎপন্ন হয়। তখন নবী করীম (ﷺ) বলিয়াছেনঃ

‘আমি একটা ধারণা পোষণ করিতাম, এবং তাহাই তোমাদিগকে বলিয়াছিলাম (ধারণার ভূল হইলে) তোমরা সেজন্য দোষ ধরিও না। কিন্তু আমি যখন আল্লাহর তরফ হইতে কোন কিছু বর্ণনা করি, তখন তোমরা তাহা অবশ্যই গ্রহণ করিবে। কেননা আমি আল্লাহর সম্পর্কে কোন মিথ্যা কথা বলি না’।

[এই কয়টি হাদীসই মুসলিম শরীফের ২য় খণ্ডের ২৬৪ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত হইয়াছে।

]

চিকিৎসা ও দ্রব্যগুণ ইত্যাদি সম্পর্কে রাসূলে করীম (ﷺ) যাহা কিছু বলিয়াছেন, তাহাও এই পর্যায়ের। তিনি বলিয়াছেনঃ

হালকা সাদা কপোল বিশিষ্ট গাঢ় কৃষ্ণ ঘোড়া তোমরা অবশ্যই রাখিবে।

ইহা রাসূলের বাস্তব অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের আলোকে বলা কথা।

রাসূল (ﷺ) অভ্যাসবশত যাহা করিতেন- ইবাদত হিসাবে নয় কিংবা যাহা ঘটনাবশত করিয়াছেন- ইচ্ছামূলকভাবে নয়, তাহার কোন শরীয়াতী ভিত্তি নাই। হযরত জায়েদ ইবনে সাবিত (রা)-এর নিকট একদল লোক হাদীস শ্রবণের ইচ্ছ প্রকাশ করিলৈ তিনি বলিয়াছেনঃ ‘আমি রাসূলের প্রতিবেশী ছিলাম। তাঁহার প্রতি যখন ওহী নাযিল হইত তখন আমাকে তিনি ডাকিয়া পাঠাইতেন, আমি গিয়া তাহা লিখিয়া লইতাম। তাঁহার অভ্যাস ছিল, আমরা যখন দুনিয়ার বিষয় আলোচনা করিতাম, তখন তিনিও আমাদের সাথে দুনিয়ার কথা বলিতেন। আর যখন পরকালের কথা বলিতাম, তিনিও আমাদের সাথে পরকালের কথা বলিতেন। আমরা যখন খানাপিনার কথা বলিতাম তিনিও আমাদের সাথে তাহাই বলিতেন। এখন আমি কি তোমদিগকে রাসূলের এইসব হাদীস বলিব? এ কথাটি এ প্রসঙ্গেই উল্লেখযোগ্য।

এতদ্ব্যতীত রাসূলের সময়কালীন আংশিক কল্যাণের জন্য অনেক ব্যবস্থা প্রদান করা হইয়াছিল। সমস্ত মানুষের জন্য তাহা কোন চিরন্তীন বিধান ছিল না। ইহার দৃষ্টান্ত এইঃ যেমন কোন বাদশাহ এক সৈন্যবাহিনী সজ্জিত করিয়া উহার কোন নিদর্শন ঠিক করিয়া দেয়। এই দৃষ্টিতে হযরত উমর ফারূক (রা) বলিয়াছিলেনঃ

রমল করার আমাদের কি প্রয়োজন? ইহা আমরা এমন এক শ্রেণীর লোকদিগকে দেখাইবার জন্য পূর্বে করিতাম, যাহাদিগকে আল্লাহ তা’য়ালা ধ্বংস করিয়াছেন।

কিন্তু পরে তিনি স্পষ্ট বুঝিতে পারিলেন যে, ‘রমল’ করার অন্য কারণও থাকিত পারে এবং ইহা কিছুতেই পরিত্যাজ্য নহে।

যুদ্ধের বিশেষ পদ্ধতি এবং বিচার ফয়সালার বিশেষ রীতিনীতি ও ধরণ-ধাারণ সম্পর্কিত হাদীসসমূহও এই পর্যায়ের গণ্য।

[হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা, ১ম খণ্ড, ১০২ পৃষ্ঠা হইতে উদ্ধৃত।]

যথাযথভাবে সত্য প্রমাণিত হইবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নাই। খেজুর গাছ সম্পর্কিত আরব দেশের প্রচলিত নিয়ম সম্পর্কে রাসূলের নিষেধবাণীও এই পর্যায়েরই কথা ছিল। ইমাম নববী এই প্রসঙ্গে আলোচনা করিতে গিয়া লিখিয়াছেনঃ

বিশেষজ্ঞদের মতে নবীর এই কথা কোন বিষয়ে সংবাদ দানের পর্যায়ভুক্ত ছিল না; বরং ইহা তাঁহার একটি ধারণামাত্র ছিল।যেমন এই প্রসঙ্গের হাদীসসমূহে উল্লেখিত হইয়াছে। তারা ইহাও বলিয়াছেন যে, বৈষয়িক ব্যাপারে নবী করীমের মত ও ধারণা আন্যান্য মানুষের মত ও ধারণার মতই। কাজেই এইরূপ ঘটনা সংঘটিত হওয়া- অবাস্তব প্রমাণিত হওয়া- কোন অসম্ভব ব্যাপার নহে এবং ইহাতে কোন ক্রটি বা দোষের কারণ নাই।

[নববী, শরহে মুসলিম ২য় খণ্ড, ২৬৪ পৃষ্ঠ]

রাসূলের ইজতিহাদ সম্পর্কে এই কথাও মনে রাখা আবশ্যক যে, যেসব বিষয়ে ওহী নাযিল হয় নাই, সে বিষয়ে রাসূলে করীম (ﷺ) ইজতিহাদ করিয়াছেন। এই ইজতিহাদ যদি নির্ভূল হইয়া থাকে, তবে আল্লাহ উহাকে প্রতিষ্ঠিত ও কার্যকর হইতে দিয়াছেন; আর যদি তাহাতে মানবীয় কোন ভূল হইয়া থাকে, তবে আল্লাহ সে বিষয়ে রাসূলকে জানাইয়া দিয়াছেন ও সতর্ক করিয়া দিয়াছেন। কাজেই রাসূলের ইজতিহাদও সুন্নাতের পর্যায়ে গণ্য। হাদীসে এ সব ইজতিহাদের বিবরণ রহিয়াছে। অতএব হাদীস ও রাসূলের ইজতিহাদে কোন মৌলিক পার্থক্য বা বিরোধ নাই।

কিন্তু দ্বীন ও শরীঅত সম্পর্কিত ব্যাপারে- আকীদা, ইবাদত, নৈতিক চরিত্র, পরকাল, সামাজিক ও তমদ্দুনিক বিষয়ে- রাসূলে করীম (ﷺ) যাহা কিছু বলিয়াছেন, তাহা সবই ওহীর উৎস হইতে গৃহীত, তাহা চিরন্তন মূল্য ও স্থায়ী গুরুত্ব স’লিত এবং তাহা কোন সময়ই বর্জনীয় নহে।

[হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা, ১ম খণ্ড]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন