hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাদীস সংকলনের ইতিহাস

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম (রহ)

১৫৪
হাদীস জালকরণের প্রতিরোধ ব্যবস্থা
খাওয়ারিজগণ প্রথমত নিজেদের গরজে হাদীস জাল করিতে শুরু করিলেও ইহা বেশী দূর চলিতে পারে নাই। খাওয়ারিজদের নিজস্ব আকীদা বিশ্বাসই তাহাদিগকে এই পথে বেশী দূর অগ্রসর হইতে দেয় নাই।

১. খাওয়ারিজদের আকীদা ছিলঃ যে লোক মিথ্যাবাদী যে কাফির! ফলে তাহাদের মধ্যে মিথ্যা কথা ও হাদীস জালকরণের প্রবণতা আপনা হইতেই খতম হইয়া যায়।

২. খাওয়ারিজগণ ছিল বেদুঈন, স্বভাবত কঠোর ও রূঢ় প্রকৃতির। তাহারা অন্যান্য জাতি বা গোত্রের কোন কথা গ্রহণ করিতে প্রস্তুত ছিল না। এই কারণে পারস্যবাসী ও ইয়াহুদীদের- যাহারা প্রধানত শিয়া মত গ্রহণ করিয়াছিল ও জাল হাদীস রচনা করিয়াছিল- কোন কথাই তাহাদের নিকট কোন গুরুত্ব লাভ করিতে পারে নাই।

৩. খাওয়ারিজগণ প্রতিপক্ষের সহিত লড়াই করার ব্যাপারে তাহাদের নিজেদের বীরত্ব, শক্তি-সামথ্য ও অস্ত্রশসস্ত্রের উপর অধিক নির্ভরশীল ছিল। এইজন্য তাহারা মিথ্যা কথার আশ্রয় লইতে কখনো প্রস্তুত হয় নাই। আর প্রতিপক্ষকে তাহারা কাফির মনে করিত বলিয়া মিথ্যার আশ্রয় লওয়ার কোন প্রয়েঅজন বোধ করে নাই। কেননা কাফিরদিগকে দমন করার জন্য তরবারির ব্যবহার ভিন্ন অন্য কোন হাতিয়ার ব্যবহার করা যায় বলিয়া তাহারা মনেই করিত না।

এই তিনটি কারণেই অন্যান্য ফাসাদ ও বিপর্যয়কারী উপদল অপেক্ষা খাওয়ারিজ দের দ্বারা খুব কম সংখ্যকই জাল হাদীস রচিত হইয়াছে। আর যে দুই চারটি হাদীস তাহারা জাল করিয়াছে, ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ মুসলিম সমাজ তাহা সহজেই চিনিতে ও উহা প্রত্যাহার করিতে সমর্থ হইয়াছে। ফলে এই পর্যায়ে হাদীস জালকরণের কাজ যতটুকুই হইয়াছে তাহা তেমন কোন বিপদের কারণ হইয়া দেখা দেয় নাই।

কিন্তু পরবর্তীকালে শিয়া সম্প্রদায়ের রচিত হাদীসসমূহ মুসলিম সমাজে মারাত্মক পরিস্থিতির উদ্ভব করে। অবশ্য আল্লাহর অপরিসীম অনুগ্রহ এই পর্যায়ে মুসলিমদের ঈমান ও দ্বীন রক্ষার সুষ্ঠু ব্যবস্থা করিয়া দেয়। খাওয়ারিজ, শিয়া ও তাহাদের মত অন্যান্য ভ্রান্ত ও অসৎ প্রকৃতির দল-উপদল ছিল একদিকে- ইসলামের মূলোৎপাটনে আত্ম নিয়োজিত; কিন্তু ইহার বিপরীত দিকে অচলায়তন হইয়া দাঁড়াইয়াছিল সুসংবদ্ধ মুসলিম সমাজ ও ইসলামী জনতা। তাহাদিগকে খাওয়ারিজ ও শিয়াদের ভ্রান্ত মতবাদ ও অমূলক প্রচারণা কিছুমাত্র প্রভাবান্বিত করিতে পারে নাই। বরং তারা অত্যন্ত দৃঢ়তাসহকারে কুরআন ও সহীহ হাদীসকে আঁকাড়াইয়া ধরিয়া থাকে। সেই সঙ্গে তারা বিশুদ্ধ ও সহীহ হাদীসসমূহের ব্যাপক শিক্ষা দান ও প্রচারে নিযুক্ত হন। এই সময় পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক সাহাবী বাচিঁয়াছিলেন, তাঁহাদের সঙ্গে ছিল উহাদেরই সর্বপ্রযত্নে তৈরী করা ইসলামী জ্ঞানে দীক্ষিত তাবেয়ীনের এক বিরাট জামা’আত। তারা সকলেই সমবেতভাবে হাদীস জালকরণের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করিয়াছেন, ইসলামের স্বচ্ছ বিধানে গোলক ধাঁধা সৃষ্টির সকল ষড়যন্ত্রের জাল তারা ছিন্ন ভিন্ন করিয়া দেন এবং মিথ্যাবাদীদের মিথ্যাকে একটি একটি করিয়া জনসমক্ষে উজ্জ্বল করিয়া তুলিয়া ধরেন।

এই সময় মুসলিম সমাজ ‘হাদীস’ নামে কোন কথা গ্রহণের ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ ও সচেতন হইয়া উঠে। কেবলমাত্র বর্ণনা সূত্রে বর্ণিত হইলেই কোন কথাকে হাদীস বলিয়া গ্রহণ করিতে তারা আদৌ প্রস্তুত ছিলেন না। বরং তারা উহার সনদ সূত্রকে যাচাই করিতে শুরু করেন, উহাতে উল্লিখিত প্রত্যেকটি ব্যক্তি চরিত্র, তাকওয়া, ইলম, স্মরণশক্তি ও বর্ণনাকারীদের পারস্পরিক সাক্ষাৎ সম্পর্কে সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে খোঁজ-খবর লইতে শুর করেন।

ইমাম মুসলিম সহীহ মুসলিমের ভূমিকায়

[১১ পৃষ্ঠা] ইবনে সিরিন তাবেয়ীর এই উক্তিটি উদ্ধৃত করিয়াছেনঃ

মুসলমানগণ পূর্বে হাদীসের সনদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করিতেন না, কিন্তু পরে যখন ফিতনা ও বিপর্যয় দেখা দেয়, তখন তারা বলিতে শুরু করেনঃ বর্ণনাকারীদের নাম বল, তাহাদের মধ্যে যাহারা আহলে সুন্নাত, তাহাদের নিকট হইতে হাদীস গ্রহণ করা হইবে; আর যাহারা বিদয়াতপন্হী, তাহাদের বর্ণিত হাদীস প্রত্যাখ্যান করা হইবে।

এইভাবে তাবেয়ী মুহাদ্দিসগণ সাহাবীদের নিকট হাদীস বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করিতেন। ভাল-মন্দের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য করা ও অন্ধভাবে সব কথা গ্রহণ না করাই ছিল এই জিজ্ঞাসাবাদের মূল উদ্দেশ্য।

এই সময় গোটা মুসলিম সমাজ হাদীসের ব্যাপরে অত্যন্ত কঠিন ও অনমনীয় হইয়া উঠে। মিথ্যা কথা প্রচারকারী লোক হাদীস শ্রবণের উদ্দেশ্যে মসজিদে সাহাবীদের নিকট আসিয়া বসিত, তখন সাহাবিগণ তাহাদিগকে কঠোর ভাষায় ভৎসনা করিতেন ও মসজিদ হইতে বিতাড়িত করিয়া দিতেন। অনেক সময় এই ধরনের লোকদিগকে তাড়াইবার জন্য পুলিশের সাহায্যও গ্রহণ করা হইত।

একবার একজন কিসসা-কাহিনী বর্ণনাকারী ব্যক্তি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা)-এর নিকটে আসিয়া বসে। তিনি তখন তাহাকে সেখান হইতে উঠিয়া যাইতে বলেন। কিন্তু সে উঠিয়া যাইতে অস্বীকার করে। তখন হযরত ইবনে উমর (রা) পুলিশ ডাকিয়াপাঠান ও তাহার সাহায্যে তাহাকে বিতাড়িত করেন।

এই ধরনের অনেক ঘটনারই উল্লেখ পাওয়া যায় হাদীসের কিতাবসমূহে। তাহা হইতে প্রমাণিত হয় যে, সাহাবী ও তাবেয়ীনের যুগে হাদীস জালকারী ব্যক্তিগণ সাধারণ্যে পরিচিত ও চিহ্নিত ছিল। তারা ইহাদের শয়তানী তৎপরতা ধরিয়া ফেলিতেন, ফলে জনসাধারণ তাহাদের বিভ্রান্তির জালে কখনোই জড়াইয়া পড়িতে পরিত না।

এই সময়কার হাদীসবিদগণ কেবল মিথ্যাবাদী ও হাদীস জালকারীদের ষড়যন্ত্র জাল ছিন্ন করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই; বরং এই গ্রন্হের পূর্ববর্তী আলোচনা প্রমাণ করে যে, এই সময় অপর দিকে তারা সহীহ হাদীসসমূহ নির্ভরযোগ্য সূত্রে সংগ্রহ ও সংকলনের কাজেও পূর্ণরূপে আত্মানিয়োগ করিয়াছিলেন।

শুধু তাহাই নয়, এই সময় হাদীস সমালোচনা করা এবং যাচাই ও পরীক্ষা করিয়া প্রত্যেকটি হাদীস গ্রহণের জন্য স্থায়ী মানদণ্ডও নির্ধারিত হয়। ইহার ফলেই হাদীস সমালোচনা-বিজ্ঞানের উৎপত্তি হয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন