hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাদীস সংকলনের ইতিহাস

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম (রহ)

১৯৪
আলফ্রেড-এর সন্দেহ
এই প্রসঙ্গে আমরা Alfred Guillame-Fr Islam গ্রন্হ হইতে একটি উক্তি উদ্ধৃত করিতে চাই। তাঁহার উক্ত গ্রন্হের ৮৯ পৃষ্ঠায় তিনি লিখিয়াছেনঃ

Exactly when records of the deeds and words of the Prophet were first written down we do not know; indeed early tradition is at variance with itselt on this very point. Some say that the Prophet authorized the writing of his saying; others assert that the forbade it.

ঠিক কখন যে হযরতের বাণী ও কার্যাবলীর বিবরণ প্রথম লিখিত হয়, তাহা আমরা জানি না। বাস্তবিকপক্ষে প্রথম যুগের হাদীসসমূহ এই বিষয়টি সম্পর্কে স্ববিরোধী। কেহ কেহ বলেন, রাসূল তাহার বাণী লিপিবদ্ধ করার অনুমতি দিয়াছিলেন। আবার অন্যরা দাবি করেন যে, তিনি উহা নিষিদ্ধ করিয়াছেন।

উদ্ধৃত উক্তিতে একই সঙ্গে কয়েকটি আপত্তিকর ইঙ্গিত করা হইয়াছে। ‘হাদীস ঠিক কখন লিপিবদ্ধ করা হইয়াছিল তাহা আমাদের জানা নাই’ বলিয়া লোকদের মনে হাদীসের সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহের উদ্রেক করার ব্যবস্থা করা হইয়াছে। দ্বিতীয়ত রাসূলের ‘নিষেধ’ ও “অনুমতির’ মধ্যে বাস্তত সামঞ্জস্য স্থাপন না করিয়া এক চরম দ্বিধা ও সংশয় জাগাইয়া দেওয়া হইয়াছে। অথচ এই বিরাট গ্রন্হের এতদসংশ্লিষ্ট আলোচনা প্রমাণ করে যে, কুরআনের সহিত হাদীস মিলিয়া মিশিয়া গিয়া মারাত্মক পরিস্থিতির উদ্ভব করিতে না পারে কেবল এই উদ্দেশ্যেই ইসলামী দাওয়াতের একবারে প্রাথমিক স্তরে হাদীস লিখিতে নিষেধ করা হইয়াছিল। কিন্তু অনতিবিলম্বেই এই নিষেধ আদেশে পরিবর্তিত হয় এবং সাহাবিগণ দ্বিধাসংকোচহীন মনে হাদীস লিখিয়া রাখিতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে এই কথাও মনে রাখিতে হইবে যে, একেবারে প্রথম যুগে কুরআন লিখার সঙ্গে সঙ্গে হাদীস লিখিতে নিষেধ করার ফলে উহার লিপিবদ্ধকরণ বন্ধ হইলেও উহার মৌখিক বর্ণনা এবং পারস্পরিক চর্চা ও আলোচনা বিন্দুমাত্র বন্ধ হইয়া যায় নাই। কেননা লিখিতে নিষেধ করা হইয়াছিল মাত্র। পরস্পরের নিকট মৌখিত বর্ণনা করিতে নিষেধ করা হয় নাই।

এতদ্ব্যতীত Goldziher এবং Sprenger নামে দুইজন প্রখ্যাত প্রাচ্যবিদও এই পর্যায়ে জনমেনে সন্দেহের সৃষ্টি করিতে চেষ্টা করিয়াছেন। Goldziher তাঁহার রচিত Muhammadanische Studim নামক গ্রন্হের দ্বিতীয় খণ্ডে পৃষ্ঠা ২৪১-২৫০ বহু সংখ্যক দলীল দিয়া প্রমাণ করিতে চেষ্টা করিয়াছেন যে, হিজরী দ্বিতীয় শতকের শুরুতে হাদীস সংকলিত হইয়াছে। যদিও তিনি এই গ্রন্হেরই প্রথম ভাগে পৃষ্ঠা ১০-১২ এমন কিছু কথাও লিখিয়াছেন, যাহা হইতে রাসূলের যুগেই কতিপয় হাদীস সংকলন-সহীফা-সংকলিত হওয়া সম্পর্কে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কিন্তু একটু পরেই তিনি এই সহীফাসমূহের সত্যতার প্রতি সন্দেহ ও অবিশ্বাষ সৃষ্টিাকারী অনেক তত্ত্বই করিয়াছেন।

তাঁহার এই রূপ ভূমিকার পশ্চাতে দুইটি উদ্দেশ্য নিহিত রহিয়াছে। প্রথম উদ্দেশ্য হইল হাদীস ও সুন্নাতের শুধু মুখস্থ করিয়া রাখার কথা বলিয়া উহার প্রমাণা মর্যদাকে দুর্বল করিয়া তোলা এবং হাদীস দ্বিতীয় হিজরী শতকে লিপিবদ্ধ হইয়াছে বলিয়া জনগণকে এক মারাত্মক বিভ্রান্তিতে নিমজ্জিত করা। আর দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হইল হাদীস সংকলনকারিগণ নিজেদের ধারণা ও অভিমতের সমর্থনে এবং নিজেদের ‘অসদুদ্দেশ্য চরিতার্থ করার মতলবেঃ হাদীস রচনা করিয়াছেন বলিয়া গোটা হাদীস ও সুন্নাহকে অকেজো ও সমর্থন-অযোগ্য প্রমাণ করা। এই প্রাচ্যবিদ হাদীস সংকলনের ইতিহাস জানান উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় দলীলাদি সংগ্রহ করার জন্য কোন কষ্ট স্বীকার করার উদ্দেশ্যেই চিন্তা ও গবেষণা চালাইয়াছেন। আসলে এইরূপ কাজ নিতান্ত স্বার্থবাদী ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত ব্যক্তিদের দ্বারাই সম্ভব হইতে পারে।

স্প্রেংগান তাঁহার Dao Traditious wesen dei den Arabern 1856, 1-17 Dans নামক গ্রন্হে রাসূলের নিকট হইতে নিভূলভাবে হাদীস পৌঁছার কথাকে মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টা পাইয়াছেন। হাদীস সংকলন পর্যায়ে তিনি প্রমাণ করার চেষ্টা করিয়াছেন যে, হাদীস রাসূলের জীবনকার নয়, দ্বিতীয় হিজরী শতকে সংকলিত হইয়াছে। মূলত এই প্রাচ্যবিদের উদ্দেশ্যও শুভ নহে।

অবশ্য ডোজী স্বীকার করিয়াছেন যে, রাসূলের বিপুল সংখ্যক হাদীস মুখস্থ রাখা হইয়াছে এবং তাহা হইতেই গ্রন্হাকারে সংকলিত হইয়াছে। তবে তাহাতে অনেক রচিত ও মিথ্যা ‘হাদীস’ও শামিল হইয়াছে। ডোজীর এইরূপ উক্তিতে অনেক লোকের মনেই হাদীসের সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহের উদ্রেক হইতে পারে। অথচ তাঁহার এই উক্তির পশ্চাতে কোন সদিচ্ছা লুক্কায়িত নাই। বরং হাদীস ও সুন্নাতের ব্যাপারে লোকদের, বিশেষত যাহারা হাদীস সংকলনের নির্ভূল ইতিহাস জানে না তাহাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করাই তাঁহার উদ্দেশ্য।

এই পর্যায়ে আমাদের বক্তব্য হইল, আমাদের অতীতকাল ও মুসলিম সংস্কৃতির প্রাথমিক ইতিহাসের সত্যাসত্য প্রমাণের জন্য তথাকথিত প্রাচ্যবিদদের অসংলগ্ন উক্তি ও ভিত্তিহীন কথাবার্তার প্রতি আমরা মোটেই ভ্রূক্ষেপ করিতে রাযী নহি। রাসূলের জীবনে হাদীস লিপিবদ্ধ ও সংগৃহীত হওয়ার কথা পশ্চিমা পণ্ডিতরা স্বীকার করুক আর না-ই করুক, তাহাতে মুসলমানদের কিছুই আসে যায় না। কেননা ‘ঘরের লোকেরাই ঘরের অবস্থা সম্পর্কে অধিক অবহিত’- নবী করীমের সামনেই হাদীস লিখিত হইয়াছে, সংকলিত হইয়াছে হাদীসের বিপুল সম্পদ- সহীফা আকারে, ব্যক্তিগত নোট বই হিসাবে, একথা অকাট্য প্রমাণসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য গ্রন্হাবলী হইতেই অনস্বীকার্যভাবে প্রমাণিত হইয়াছে। সেকালের সংকলিত সমস্ত হাদীস সম্পদই যে উত্তরকালে গ্রন্হাকারে সংকলিত ও সংযোজিত হইয়াছে, তাহাতে সন্দেহ নাই। দৃষ্টান্তসরূপ বলা যায়, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের ‘মুসনাদ’ গ্রন্হে আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আ’স ও হযরত আবূ হুরায়রার সংকলিত বিপুল হাদীস-সহীফা- পুরাপুরি অন্তভূক্ত হইয়াছে।

অরিয়েন্টালিস্টরা মনে করেন, হাদীস লিখন ও সংকলন কিংবা উহা হইতে নিষেধ করার যেসব বাণী ও উক্তি উদ্ধৃত হইয়াছে, তাহা সবই মুহাদ্দিস ও ফিকাহবিদদের এক ধরনের মত পোষণের ফলে বিরচিত হইয়াছে। তারা নাকি নিজ নিজ মত ও রায়ের সমর্থনে পারস্পরিক দ্বন্দ্বে জয়ী হওয়ার উদ্দেশ্যে হাদীস রচনা করিয়াছেন।

কিন্তু ইহা চরম মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর উক্তি। এই বিভ্রান্তির প্রধান হোতা হইলেন গোল্ডজেহের (Goldziher)। কেননা তাঁহার পূর্ববর্তী প্রাচ্যবিদ স্প্রেংগার খতীব বাগদাদী লিখিত গ্রন্হখানি ১৮৫৫ সনে আবিষ্কার করেন এবং লেখার মূল ও অগ্রগতি (origin and progress of writing) শীর্ষক এক প্রবন্ধ রচনা করেন।(Asiatic Sociaty of Bangal XXV, 303-329) এই প্রবন্ধে তিনি আরব সমাজে লেখা প্রচলন, তদসংক্রান্ত প্রমাণাদির ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছেন যে, রাসূলের যুগে বিপুল সংখ্যক হাদীস লিখিত ও সংকলিত হইয়া থাকিবে।অথচ গোল্ডজেহের এইসব বিবরণকেই অসত্য মনে করিয়া উড়াইয়া দিয়াছেন এবং উত্তরকালে পরস্পরবিরোধী লোকেরা এইসব কথা রচনা করিয়াছেন বলিয়া প্রচার করিয়াছেন।

মূলত নিতান্ত কুমতলবে ও ইসলামের সংস্কৃতি বিকাশের প্রতি বিদ্বেষ পোষণবশত এইরূপ মিথ্যা প্রচারণা চালানো হইয়াছে। নতুবা বাস্তব দৃষ্টিতে বিচার করিলে এই ধরনের উক্তির কোন হেতুই থাকিতে পারে না। বহু সংখ্যক সাহাবী নবী করীমের জীবদ্দশায়ই যে হাদীস লিখন ও সংকলনের কাজ বিশেস গুরুত্ব সহকারে করিয়াছেন, তাহা এক অকাট্য সত্য। এই ব্যাপারে যে কোনরূপ সন্দেহ পোষণের কোনই কারণ থাকিতে পারে না, তাহা বলাই বাহুল্য। তবে এই কথা সত্য যে, সেকালে লিখিত ও সংকলিত সহীফার সংখ্যা খুব বিরাট এবং বেশী কিছু ছিল না। কিন্তু হাদীস যে লিখিত ও সংকলিত হইয়াছিল, তাহাতে সন্দেহ করার কোনই হেতু নাই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন