hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাদীস সংকলনের ইতিহাস

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম (রহ)

১৫৬
জাল হাদীসের কয়েকটি লক্ষণ
পূর্বেই বলিয়াছি জাল হাদীস চিনিয়া লইবার জন্য মনীষিগণ এমন সব নিয়ম নির্দিষ্ট করিয়া দিয়াছেন, যাহা বাস্তবিকই অব্যর্থ ও সর্বতোভাবে নির্ভরযোগ্য। কেননা হাদীস সমালোচনা ও যাচাই পরীক্ষা করার সুদৃঢ় ও তীক্ষ্ণ জ্ঞান এবং প্রতিভা তাঁহাদের মধ্যে পূর্ণমাত্রায় বর্তমান ছিল। এখানে আমরা কয়েকটি নিয়মের উল্লেখ করিতেছিঃ

১. জাল হাদীস বর্ণনাকারীর মধ্যে এমন লক্ষণ দেখা যায়, যাহার ভিত্তিতে সহজেই বুঝিতে পারা যায় যে, বর্ণনাকারী সম্পূর্ণ মিথ্যঅ কথা রচনা করিয়া রাসূলের হাদীস হিসাবে চালাইয়া দিয়াছে।

এখানে দুইটি জাল হাদীসের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করিয়া কথাটিকে স্পষ্ট করিয়া তুলিতে চেষ্টা করা যাইতেছেঃ

(ক) সাইন ইবনে উমর তামামী বলেন, আমি সায়াদ ইবনে জরীফের নিকট উপস্থিত ছিলাম। এই সময় তাহার পুত্র একখানি কিতাব হাতে লইয়া কাঁদিতে কাঁদিতে উপস্থিত হইল। জিজ্ঞাসা করিলঃ তোমার কি হইয়াছে? পুত্র বলিলঃ আমাকে শিক্ষক মারিয়াছেন। তখন সে বলিলঃ ‘আমি আজ তাহাকে নিশ্চয়ই লজ্জিত করিব’। ইবনে আব্বাস হইতে ইকরামা রাসূলের এই কথাটি বর্ণনা করিয়াছেনঃ

তোমাদের বালকদের শিক্ষকগণ তোমাদের মধ্যে অধিক দুষ্ট লোক, ইয়াতীম ছেলেদের প্রতি তাহারা খুবই কম দয়াশীল এবং মিসকীনের প্রতি অন্যন্ত কঠোর।

(খ) মা’মুন ইবনে আহমদ আল হারাভীকে লক্ষ্য করিয়া একজন বলিলঃ শাফেয়ী ও তাঁহার খুরাসানী অনুসরণকারীদের সম্পর্কে তোমার কি ধারণা? নবী করীম (ﷺ) হইতে বর্ণিত হইয়াছেঃ

‘আমার উম্মতের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি হইবে, যাহার নাম হইবে মুহাম্মদ ইবনে ইদরীস। সে আমার উম্মতের পক্ষে ইবলীস হইতেও ক্ষতিকর। আমার উম্মতের মধ্যে আর এক ব্যক্তি হইবে, যাহার নাম আবূ হানীফা, সে আমার উম্মতের জন্য প্রদীপস্বরূপ।

এই হাদীস দুইটির বর্ণনাকারী যে স্বার্থ ও হিংসা-প্রণোদিত হইয়া রাসূলের নামে মিথ্যা কথাকে হাদীস বলিয়াচালাইয়া দিয়াছে তাহা বুঝিতে একটুও কষ্ট হয় না।

২. বর্ণিত হাদীসের মধ্যে এমন লক্ষণ পাওয়া যায়, যাহা হাদীসটির জাল হওয়ার কথা অকাট্যভাবে প্রমাণ করে। যেমন হাদীসের মূল কথায় এমন কোন শব্দের উল্লেখ থাকা, যাহার অর্থ অত্যন্ত হাস্যকর কিংবা শব্দ ও অর্থ উভয়ই বাচালতাপূর্ণ। কেবল শব্দটি যদি হাস্যকর হয় তাহা হইলেই হাদীসটি জাল হইবে এমন কথা সাধারণভাবে বলা যায় না। কেননা হাদীসটি হয়ত মূল অর্থের দিক দিয়া সহীহ, কিন্তু উহার কোন পরবর্তী বর্ণনাকারী শব্দে কিছুটা পরিবর্তন সূচিত করিয়া নিজের ইচ্ছামত কোন শব্দ বসাইয়া দিয়াছে। অথচ মূলতঃ হাদীসটি রাসূলে করীম (ﷺ) হইতে বর্ণিত। তবে বর্ণনাকারী যদি এই দাবি করেন যে, হাদীসের ভাষা ও শব্দসমূহ সবই রাসূলে করীম (ﷺ) হইতে বর্ণিত, তাহা হইলে তাহাকে মিথ্যাবাদী না বলিয়া উপায় নাই। কেননা, নবী করীম (ﷺ) ছিলেন আরবদের মধ্যে অত্যন্ত শুদ্ধ ও মিষ্টভাষী। এইরূপ অবস্থায় হাদীসের একটি শব্দও যদি হাস্যকর বা হালকা ধরনের হয় তাহা অবশ্যই জাল এবং মিথ্যা হইবে।

হাস্যকর অর্থ সম্বলিত একটি জাল হাদীস এইরূপঃ

তোমরা মোরগকে গালাগালি করিও না, কেননা উহা আমার বন্ধু।

[এই গোটা হাদীসটি জাল হইলেও উহার প্রথম অংশ রাসূলেরই কথা। আবূ দাউদ উত্তম সনদে উহা উদ্ধৃত করিয়াছেন নিম্নোক্ত ভাষায়ঃ মোরগকে গাল দিও না, কেননা উহা নামাযের জন্য সজাগ করে। ]

ইহা নবী করীম(ﷺ)-এর কথা হইতে পারে না, তাহা কে-না বুঝিতে পারে?.

৩. হাদীস জাল হওয়ার আল একটি লক্ষণ হইতেছে উহার স্বাভাবিক বুদ্ধি-বিবেকের বিপরীত হওয়া। হাদীস যদি স্বাভাবিক বুদ্ধি ও বিবেকের বিপরীত হয় এবং উহার গ্রহণযোগ্য কোন তাৎপর্য দান সম্ভব না হয়, অথবা উহা যদি সাধারণ অনুভূতি ও পর্যবেক্ষণের বিপরীত হয়, তবে তাহাও জাল বলিয়া প্রতিপন্ন হইবে। যেমন দুই বিপরীত জিনিসকে একত্র করার সংবাদ দান; কিংবা সৃষ্টি কর্তাকে অস্বীকারের কোন কথা। কেননা শরীয়াতের কোন বিধান স্বাভাবিক ও সুষ্থ বিবেকবুদ্ধির বিপরীত হইতে পারে না।

একটি জাল হাদীস এইরূপঃ

আল্লাহ অশ্ব সৃষ্টি করিলেন। উহাকে চালাইলেন। ফলে উহার খুব ঘাম বাহির হইল। অতঃপর উহা হইতে তিনি নিজেকে সৃষ্টি করিলেন।

কোন সুস্থ বুদ্ধির লোক-ই কি এইরূপ হাস্যকর কথা বলিতে পারে?

দ্বিতীয়টি এইরূপঃ

‘বাজেঞ্জান বেগুন সকল প্রকার রোগের ঔষধি’।

ইহা সম্পূর্ণ বাতিল ও ভিত্তিহীন কথা। কেননা পর্যবেক্ষণে প্রমাণিত হইয়াছে যে, বাজেঞ্জান রোগের মাত্রা বৃদ্ধি করে ও উহাকে কঠিন করিয়া দেয়। এই হাদীসটি (?) শুনিলেই সাধারণ বুদ্ধি (common sense) বলিয়া উছে, ইহা মিথ্যা।

৪. হাদীস যদি ক কুরআনের স্পষ্ট বিধানের কিংবা মুতাওয়াতির হাদীস বা অকাট্য ধরনের ইজমার বিপরীত হয়, তবে তাহাকে জাল বা মওজু মনে করিতে হইবে।

এই দৃষ্টিতেই যেসব হাদীসে দুনিয়ার অবশিষ্ট আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হইয়াছে সাত হাজার বৎসর, সে সবকে মিথ্যা বলিয়া ঘোষণা ক রা হইয়াছে। কেননা তাহা কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতের বিপরীত। আল্লাহা তা’আলা বলিয়াছেনঃ

হে নবী! লোকেরা তোমার নিকট জিজ্ঞাসা করে কিয়ামত কখন কায়েম হইবে। তুমি বলিয়া দাও যে, এ সম্পর্কিত জ্ঞান কেবলমাত্র আমার আল্লাহরই আয়ত্ত, তিনিই উহা উহার সঠিক সময়ে উঘাটিত করিবেন।

হাদীসবিদ নিম্নোদ্ধৃত হাদীসটিকে বাতিল ও মওজু ঘোষণা করিয়াছেন।

অবৈধ সন্তান বেহেশতে প্রবেশ করিতে পারিবে না।

কেননা উহা কুরআনের নিম্নোক্ত স্পষ্ট ঘোষণার বিপরীত। আল্লাহ বলিয়াছেনঃ

কোন বোঝা বহনকারীই অপর কাহারো (পাপের) বোঝা বহন করিবে না।

এইভাবে যেসব ‘হাদীস’ এই ধরনের অর্থ প্রকাশ করে যে, যাহার নাম আহমদ কি মুহাম্মদ সে কখনো দোযখে যাইবে না। কেননা এ কথা সর্বজনবিদিত যে, কেবলমাত্র নাম বা উপনাম কি উপাধি কখনই দ্বীন পালনের প্রয়োজন পূর্ণ করিতে পারে না। অতএব কেবল নাম বা উপনাম উপাধির সাহায্যেই কেহ দোযখ হইতে নিষ্কৃতি লাভ করিতে পারে না। তাহা রেহাই পাওয়ার একমাত্র উপায় হইতেছে ‘আমালুস সালেহ’- নেক আমল।

৫. যেসব হাদীসে বিপুল সংখ্যক সাহাবীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত কোন ঘটনার উল্লেখ থাকে; কিন্তু তাহা না সাহাবীদের যুগে ব্যাপক প্রচার লাভ করিতে পারিয়াছে, না অল্প সংখ্যক লোক ব্যতীত অপর কেহ তাহার বর্ণনা করিয়াছে। এইরূপ হাদীস যে জাল, তাহাতে সন্দেহ নাই। এক শ্রেণীর শিয়াদের নিম্নোক্ত দাবিটিও এই পর্যায়ের জাল হাদীসঃ

বিদায় হজ্জ হইতে প্রত্যাবর্তনের সময় গদীরে খাম-এর এক লক্ষেরও অধিক সাহাবীর উপস্থিতিতে নাবী করীম (ﷺ) হযরত আলী (রা)-কে খিলাফত দান করিয়াছিলেন।

দাবি করা হইয়াছে যে, বিপুল সংখ্যক- এক লক্ষেরও অধিক সংখ্যক সাহাবীর উপস্থিতিতে নবী করীম (ﷺ) হযরত আলী (রা)-কে খিলাফত দান করিয়াছিলেন; কিন্তু সাধারণভাবে সাহাবীগণ ইহার কোন গুরুত্বই দিলেন না, নবী করীমের ইন্তেকালের পরে খলীফা নির্ধারণের সময়ে এই কথা কোন সাহাবীর স্মরণই হইল না, ইহা এক অসম্ভব ব্যাপার। কাজেই ইহা সম্পূর্ণ স্বকপোলকল্পিত।

৬. সাধারণ যুক্তি ও সুস্থ বিবেক-বিরোধী কোন কথা কোন হাদীসে উল্লিখিত হইলেও তাহাকে জাল মনে করিত হইবে। যেমন হাদীস বলিয়া পরিচিত একটি কথায় উদ্ধৃত হইয়াছেঃ

না তুর্কিদের জুলুম ভালো, না আরবদের সুবিচার।

কেননা জোর জুলুম সাধারণভাবেই নিন্দিত, যেমন সুবিচার সকল অবস্থায়ই প্রশংসনীয়।

৭. হাদীসের বর্ণনাকারী যদি রাফেযী মতাবলম্বী হয় এবং হাদীসে যদি রাসূলের বংশের লোকদের ফযীলত বর্ণিত হয়, বুঝিতে হইবে যে তাহা জাল। কেননা রাফেযী মতের লোকেরা সাধারণতই রাসূলের বংশের লোকদের অমূলক প্রশংসায় এই ধরনের কথা রাসূলের নামে চালাইয়া দিতে এবং সাহাবীদের গালাগাল ও কুৎসা বর্ণনায় অভ্যস্ত। বিশেষতঃ তাহারা প্রথম দুই খলীফার প্রতি রীতিমত শক্রতা পোষণ করে এবং তাঁহাদিগকে খিলাফতের ব্যাপারে হযরত আলীর অধিকার হরণকারী বলিয়া মনে করে।

৮. কোন হাদীসের উল্লেখিত ঘটনা যদি বিশুদ্ধ নির্ভরযোগ্য ও সপ্রমাণিত ইতিহাসের বিপরীত হয়, তবে বুঝিতে হইবে যে, তাহা নিঃসন্দেহে জাল। যেমন এক হাদীসে বলা হইয়াছে যে, খায়বারবাসীদের উপর হইতে জিযিয়া প্রত্যাহার করা হইয়াছিল হযরত সায়াদ ইবনে মুয়ায- এর শাহাদাতের কারণে। ইহা প্রকৃত ইতিহাসের বিপরীত কথা। কেননা হযরত সায়াদ খন্দক যুদ্ধে শহীদ হইয়াছিলেন এবং তাহা খায়বার যুদ্ধের পূর্বে অনুষ্ঠিত ঘটনা। দ্বিতীয়তঃ ‘জিযিয়া’ খায়বার যুদ্ধকালে বিধিবদ্ধও হয় নাই, বরং তাবুক যুদ্ধের পূর্বে তাহা সাহাবীদের নিকট সম্পূর্ণ অপরিচিতই ছিল। তৃতীয়তঃ উহাতে বলা হইয়াছে যে, উহা মুয়াবিয়া ইবনে আবূ সুফিয়ান লিখিয়াছেন। অথচ মুয়াবিয়া তো মক্কা বিজয়ের সময় ইসলাম কবুল করিয়াছিলেন। খায়বার যুদ্ধকালে তিনি মুসলমানই ছিলেন না।

৯. কেহ যদি আল্লাহর নির্ধারিত সাধারণ আয়ূষ্কালের অধিক আয়ূ লাভের দাবি করে এবং বহু পূর্বকালে অতীত কোন ব্যক্তির সাক্ষাত লাভ করিয়াছে বলিয়া প্রচার করে, বুঝিতে হইবে যে, ইহা সম্পূর্ণ মিথ্যা। যেমন রতনহিন্দীস দাবি করিয়াছে যে, নবী করীম (ﷺ)- এর সাক্ষাৎ পাইয়াছে। অথচ এই ব্যক্তি ব্যক্তি জীবিত ছিল ছয়শত হিজরী সনে। জাহেল লোকদের ধারণা এই যে, এই ব্যক্তি নবী করীমের সহিত একত্রিত হইয়াছিল, তাঁহার নিকট হইতে হাদীস শ্রবণ করিয়াছে এবং রাসূল তাঁহার দীর্ঘায়ু লাভের জন্য দোয়া করিয়াছিলেন। বস্তুতঃ এইরূপ দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, কেননা নবী করীম (ﷺ)- এর সহিত সাক্ষাৎপ্রাপ্ত সাহাবাগণের অধিকাংশই ঊনষাট হিজরী সনের পূর্বেই অন্তর্ধান করেন। তখন কেবলমাত্র হযরত আবূত-তোফাইল জীবিত ছিলেন। আর তিন যখন ইন্তেকাল করেন, তখন লোকেরা এই বলিয়া কাঁদিয়াছিলঃ

নবী করীমের সাক্ষাৎপ্রাপ্ত লোকদের মধ্যে ইনিই সর্বশেষ ব্যক্তি।

১০. সূফীগণ রাসূলের নিকট হইতে কোন ধারাবাহিক সনদ সূত্র ব্যতীত কাশফ বা স্বপ্নযোগে হাদীস লাভ করিয়াছেন, এইরূপ দাবিও সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। দ্বীন-ইসলামের সকল আলিমই এই সম্পর্কে সম্পূর্ণ একমত যে, স্বপ্ন বা কাশফ এর সূত্রে শরীয়াতের কোন সত্য প্রমাণিত হয় না। কেননা তাহা আদৌ নির্ভরযোগ্য নহে। উহা বরং শরীয়াতের মূল বিধানের উপর অমূলক বাড়াবাড়ি মাত্র। কুরআন এবং ধারাবাহিক ও বিশুদ্ধ সনদসূত্রে বর্ণিত হাদীস ব্যতীত শরীয়াতের তৃতীয় কোন ভিত্তি নাই, আছে বলিয়া কেহ মনে করিলেও তাহা মিথ্যা এবং প্রত্যাখ্যানযোগ্য।

[এই পর্যন্তকার দীর্ঘ আলোচনা গৃহীত হইয়াছে গ্রন্হের ৪৭৯-৪৮৫ পৃষ্ঠা হইতে এবং হইতে সাহায্য গ্রহণ করা হইয়াছে।]

হাদীস সমালোচনার পদ্ধতি

হাদীস-সমালোচনা বিজ্ঞানের উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে আমরা জাল হাদীস চিনিবার বিভিন্ন উপায়ের উল্লেখ করিয়াছি। হাদীস জালকরণের এই পরিস্থিতিতে সূক্ষ্ম ও অকাট্য মানদণ্ডের ভিত্তিতে হাদীস যাচাই ও পরীক্ষা করিয়া কোনটি জাল আর কোনটি বিশুদ্ধ তাহা স্পষ্টরূপে যাচাই করার তীব্র প্রয়োজন দেখা দেয়। এই জন্য প্রত্যেকটি হাদীসের সনদ, সনদের সহিত সংশ্নিষ্ট প্রত্যেক ব্যক্তি তাহাদের পারস্পরিক সাক্ষাত, হাদীস শ্রবণ ও গ্রহণ অবস্থা, হাদীসের মূল উৎস প্রভৃতি আঁতিপাতি করিয়া খুঁজিয়া দেখার কাজ ব্যাপকভাবে শুরু হয়। এই সময়ে মুসলিম সমাজের বিশেষজ্ঞদের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত করা হয় যে, কেবলমাত্র বিশুদ্ধ ও নির্ভূল হাদীসই গ্রহণ করা হইবে, তাহা ব্যতীত অপর কোন ‘হাদীস’ই গ্রহণ করা হইবে না। কেননা হাদীস গ্রহণ ও তদানুযায়ী কাজ করা ঠিক তখনই সম্ভব, যখন প্রমাণিত হইবে যে, ইহা প্রকৃতই রাসূলের বানী এবং ইহার হাদীস হওয়ার ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নাই। আর হাদীসের এই প্রমাণ নির্ভর করে উহার বর্ণনা পরম্পরা বা সনদের বিশুদ্ধতার উপর, সনদে উল্লিখিত প্রত্যেক বর্ণনাকারীর বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার উপর, সমালোচনা আঘাতে তাঁহাদের মধ্যে কাহারো ‘আহত’ না হওয়ার উপর। হাদীসের সনদ এইসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইলে দ্বিতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা ও যাচাই করিতে হইবে মূল হাদীসের নিজস্ব গুণাগুণ; মূল বক্তব্যের যথার্থতা ও বিশ্বাস্যতা। হাদীস বিজ্ঞানের পরিভাষায় প্রথম পদ্ধতিকে বলা হয় ‘রিওয়ায়েত’- যাচাই করা। আর দ্বিতীয়টিকে বলা হয় দিরায়েত- বুদ্ধি ও সুস্থ বিবেকের কষ্টিপাথরে মূল কথাটির যাচাই করা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন