মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
হযরত উমর ইবনে আবদুল আযীয (র) ৯৯ হিজরী সনে খলীফা নির্বাচিত হন। তিনি খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করিয়াই হাদীসের বিরাট বিক্ষিপ্ত সম্পদ সংকলনের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভব করেন। তিনি স্পষ্ট বুঝিতে পারিলেন, ইসলামী জীবন যাপন ও খিলাফত পরিচালনার জন্য হাদীস এক অপরিহার্য সম্পদ। অনতিবিলম্বে ইহার সংকলন ও পূর্ণ সংরক্ষিত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করিলে এই সম্পদ হইতে গোটা উম্মতের বঞ্চিত হওয়ার আশংকা। সাহাবায়ে কিরামের প্রায় সকলেই দুনিয়া হইতে বিদায় লইয়াছেন। তাঁহাদের নিকট শিক্ষাপ্রাপ্ত তাবেয়ীদেরও অধিক সংখ্যক লোক তাহাদেরই অনুগামী হইয়াছেন। এখনও যাহারা জীবিত আছেন, তারা আরও দীর্ঘদিন বাঁচিয়া থাকিবেন- তাহার নিশ্চয়তা কিছু নাই। অতএব অনতিবিলম্বে এই মহান সম্পদ সংগ্রহ ও সংকলন এবং উহাকে সুবিন্যাস্তকরণ একন্তই আবশ্যক।
অতঃপর তিনি ইসলামী রাজ্যের কেন্দ্রে নিম্নোক্ত ভাষায় ফরমান লিখিয়া পাঠাইলেনঃ
রাসূলে করীমের হাদীসের প্রতি অনতিবিলম্বে দৃষ্টি দাও এবং তাহা সংগ্রহ ও সংকলন করিতে শুরু কর।
মদীনার শাসনকর্তা ও বিচারপতি আবূ বকর ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হাযমকেও নিম্নোক্ত মর্মে এক ফরমান লিখিয়া পাঠানঃ
রাসূলের হাদীস, তাঁহার সুন্নাত কিংবা হযরত উমরের বাণী অথবা অনুরূপ যাহা কিছু পাওয়া যায়, তাহার প্রতি দৃষ্টি দাও এবং আমার জন্য লিখিয়া লও। কেননা আমি ইলমে হাদীসের ধারকদের অন্তর্ধান ও হাদীস সম্পদের বিলুপ্তির আশংকা বোধ করিতেছি।
আর হাদীসে- রাসূল ছাড়া আর কিছুই যেন গ্রহণ করা না হয়। লোকেনা যে এই ইলমে হাদীসকে ব্যাপকভাবে প্রচার করে। হাদীস শিক্ষাদানের জন্য যেন মজলিস অনুষ্ঠিত হয়, যাহারা জানে না, তাহারা যেন শিখিয়া লইতে পারে। কেননা ইলম গোপন করা হইলেই তাহা বিনাশপ্রাপ্ত হয়।
রাসূলের যেসব হাদীস তোমার নিকট প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত, তাহা এবং হযরত উমরের হাদীসসমূহ আমার নিকট লিখিয়া পাঠাও। কেননা আমি ইলমে হাদীস বিনষ্ট ও হাদীসবিদদের বিলীন হইয়া যাওয়ার আশংকা বোধ করিতেছি।
ঐতিহাসিক ইবনে সায়াদ উমর ইবনে আবদুল আযীযের ফরমানের আর একটি অংশেরও উল্লেখ করিয়াছেন। তাঁহার উদ্ধৃত অংশটুকু এইরূপঃ
উমর ইবনে আবদুল আযীয আবূ বকর ইবেন হাযমকে উমরা বর্ণিত হাদীসসমূহও লিখিয়া তাহার নিকট পাঠাইয়া দিবার জন্য ফরমান পাঠাইয়াছিলেন।
ইবনে সায়াদের বর্ণনা হইতে ইহাও জানা যায় যে, উমর ইবনে আবদুল আযীয হযরত আয়েশা (রা)-এর বর্ণিত হাদীসসমূহও লিখিয়া পাঠাইতে বলিয়াছেন। আর উমরা বিনতে আবদুর রহমানের বর্ণিত হাদীস সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করিয়া পাঠাইবার জন্য এই কারণেই তাকিদ করিয়াছিলেন। কেননা মুসলমানের আকাইদ ও ব্যবহরিক জীবনের জন্য জরুরী হুকুম-আহকাম হযরত আয়েশা (রা) বর্ণিত হাদীসসমূহেই বিশেষভাবে উল্লেখিত হইয়াছে।
আর এই উমরা হযরত আয়েশা (রা)-এর ক্রোড়েই লালিত পালিত হইয়াছিলেন এবং তাঁহার নিকট হাদীসের শিক্ষা পূর্ণমাত্রায় লাভ করিয়াছিলেন। উমর ইবনে আবদুল আজীজ নিজেই তাঁহার সম্পর্কে বলিয়াছেনঃ
হযরত আয়েশার বর্ণিত হাদীস সম্পর্কে উমরা অপেক্ষা বড় আলিম আর কেহ অবশিষ্ট নাই।
ইমাম জুহরীও তাঁহার সম্পর্কে বলিয়াছেনঃ
আমি তাহাকে হাদীস জ্ঞানের এক অফুরন্ত সমুদ্রের মত পাইয়াছি।
ইমাম মালিক বলিয়াছেন, উমর ইবনে আবদুল আযীয আবু বকর ইবনে হাজমকে উমরা বিনতে আবদুর রহমানের সঙ্গে সঙ্গে কাসেম ইবনে মুহাম্মদ বর্ণিত হাদীসও লিখিয়া পাঠাইতে আদেশ করিয়াছিলেন।
এই কাসেম কে ছিলেন? ইমাম বুখারী তাঁহার সম্পর্কে লিখিয়াছেনঃ
তাঁহার পিতা নিহত হইলে তিনি তাঁহার ফুফু-আম্মা হযরত আয়েশার ক্রোড়ে লালিত-পালিত হন এবং তাঁহার নিকট দ্বীন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লাভ করেন।
ইবনে হাব্বান এই কাসেম সম্পর্কে লিখিয়াছেনঃ
কাসিম তাবেয়ী এবং তাঁহার যামানার লোকদের মধ্যে হাদীস ও দ্বীনের জ্ঞানের দিক দিয়া সর্বোত্তম ও সর্দার ব্যক্তি ছিলেন।
আবূ বকর ইবনে হযম সম্পর্কে পূর্বে বলা হইয়াছে যে, তিনি মদীনার শাসনকর্তা ছিলেন। সেই সঙ্গে বিচারপতির দায়িত্বও তাঁহাকেই পালন করিতে হইত। তিনি তদানীন্তন মদীনার একজন প্রধান ফকীহ ছিলেন। ইসলামী আইন-কানুনে তাঁহার অতুলনীয় পারদর্শিতা ছিল। পূর্বোক্ত উমরা বিনতে আবদুর রহমানের নিকট হযরত আয়েশা বর্ণিত যাবতীয় হাদীস পূর্বেই লিপিবদ্ধ করিয়া নিজের নিকট রাখিয়া দিয়াছিলেন। উমরা তাহার আপন খালা হইতেন।
কাযী আবূ বকর খলীফা উমর ইবনে আবদুল আযীযের আদেশানুক্রমে বিপুল সংখ্যক হাদীস সংগ্রহ ও হাদীসের কয়েকখানী খণ্ড গ্রন্হ সংকলন করিয়া লইয়াছিলেন। কিন্তু খলীফার ইন্তেকালের পূর্বে তাহা ‘দারুল খিলাফতে’ পৌঁছানো সম্ভবপর হইয়া উঠে নাই। এ সম্পর্কে আল্লামা সুয়ূতী ইবনে আবদুল বার লিখিত ‘আত-তামহীদ’ গ্রন্হের সূত্রে উল্লেখ করিয়াছেনঃ
ইবনে হাযম কয়েক খণ্ড হাদীস- গ্রন্হ সংকলন করেন; কিন্তু তাহা খলীফা উমর ইবনে আবদুল আযীযের নিকট পাঠাইয়া দেওয়ার পূর্বেই ইন্তেকাল করেন।
কিন্তু অতঃপর এই হাদীস- সংকলনসমূহের পরিণাম কি হইল? এই সম্পর্কে ইমাম মালিক বলিয়াছেনঃ আমি এই হাদীস গ্রন্হসমূহ সম্পর্কে কাযী আবূ বকরের পুত্র আবদুল্লাহর নিকট জিজ্ঞাসা করিলে তিনি বলিলেনঃ তাহা সব বিনষ্ট হইয়া গিয়াছে।
কিন্তু ইহা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কেননা খলীফা ইন্তেকাল করিয়া গিয়াছেন বলিয়াই সরকারী ব্যবস্থাপনায় তৈয়ার করা হাদীস সংকলনসমূহ বিনষ্ট হইয়া যাইবে, তাহার রক্ষণাবেক্ষণের কোন ব্যবস্থাই হইবে না- এমন কথা হইতে পারে না। নিশ্চয়ই উহা জনগণের নিকট রক্ষিত ছিল এবং পরবর্তীকালে উহার ভিত্তিতে জনগণের মধ্যে হাদীসের প্রচার করা হইয়াছে।
কোন কোন বর্ণনা হইতে এ কথা জানা যায় যে, খলীফা উমর ইবনে আবদুল আযীয মদীনায় আবু বকর ইবনে হাযম ছাড়া সালেম ইবনে আবদুল্লাহকেও হাদীস সংগ্রহ করিয়া পাঠাইতে আদেশ করিয়াছিলেন। আল্লামা সুয়ূতী ইমাম জুহুরীর সূত্রে লিখিয়াছেনঃ
উমর ইবনে আবদুল আযীয সালেম ইবনে আবদুল্লাহকে হযরত উমরের যাকাত ও সদকা সম্পর্কে রীতিনীতি লিখিয়া পাঠাইবার জন্য আদেশ করিয়াছিলেন।
ইমাম সুয়ুতী সালেম সম্পর্কে অতঃপর লিখিয়াছেনঃ
সালেম যে বিষয়ে আদিষ্ট হইয়াছিলেন, তাহা তিনি পুরাপুরি লিখিয়া পাঠাইয়া দিয়াছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি (সালেম) তাঁহাকে ইহাও লিখিয়া পাঠাইয়াছিলেন যে, হযরত উমর (রা) তাঁহার আমলেও তদানীন্তন লোকদের মধ্যে অনুরূপ কাজ করেন তবে আপনি আল্লাহর নিকট উমর ফারূক হইতেও উত্তম ব্যক্তি বলিয়া বিবেচিত ও পরিগণিত হইবেন।
এই সম্পর্কে মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রহমান আনসারী বলেনঃ
উমর ইবনে আবদুল আযীয যখন খলীফা নির্বাচিত হইলেন, তখন তিনি মদীনায় রাসূলে করীমের ও হযরত উমরের যাকাত ইত্যাদি সংক্রান্ত লিখিত দস্তাবেজ সংগ্রহের জন্য তাকীদ কারিয়া পাঠাইলেন। পরে আমর ইবনে হাযমের বংশধরদের নিকট রাসূলে করীমের লিখিত বস্তাবেজ এবং হযরত উমরের বংশধরদের নিকট রাসূলে করীমের অনুরূপ লিখিত দস্তাবেজ পাওয়া গেল।
উমর ইবনে আবদুল আযীয ইমাম জুহরীকে বিশেষভাবে হাদীস সংকলনের কাজে নিযুক্ত করিয়াছিলেন।
ইমাম জুহরী সম্পর্কে উমর ইবনে আবদুল আযীয নিজেই বলিয়াছেনঃ
সুন্নাত ও হাদীস সম্পর্কে যুহরী অপেক্ষা বড় আলিম বিগত কালের আর একজনও বাঁচিয়া নাই।
এ সম্পর্কে ইমাম ইবনে শিহাব যুহরী (র) নিজেই বলেনঃ
উমর ইবনে আবদুল আযীয আমাদিগকে হাদীস সংগ্রহ ও সংকলন করার জন্য আদেশ করিলেন। এই আদেশ পাইয়া আমরা হাদীসের বিরাট গ্রন্হ লিখিয়া তাঁহার নিকট পাঠাইয়া দিলাম। অতঃপর তিনি নিজেই তাঁহার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি প্রদেশে এক-একখানি গ্রন্হ পাঠাইয়া দিলেন।
সংগৃহীত হাদীস সম্পদ যে কিছুমাত্র বিনষ্ট হয় নাই, এই কথা হইতে তাহা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয়।
ইমাম মালিক (রা) বলিয়াছেনঃ
সর্বপ্রথম যিনি হাদীস সংকলন করেন, তিনি হইলেন ইবনে শিহাব যুহরী।
ইমাম আবদুল আযীয দারাওয়ার্দী নামক অপর এক মনীষীও এই কথারই সমর্থন করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেনঃ
হাদীস সংকলনও উহা লিপিবদ্ধকরণের কাজ সর্বপ্রথম করিয়াছেন ইবনে শিহাব যুহরী।
ইমাম যুহরী এই গৌরবের দাবি করিয়া নিজেই বলিয়াছেনঃ
আমার পূর্বে ইলমে হাদীস আর কেহ সংকলিত করেন নাই।
উমর ইবনে আবদুল আযীয কেবল হাদীস সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করণেরই নির্দেশ দেন নাই, বরং সর্বত্র উহার ব্যাপক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করার জন্যও তিনি সুস্পষ্ট ফরমান পাঠাইয়াছিলেন।
অপর একজন শাসনকর্তার নামে নিম্নোক্ত ভাষায় এক ফরমান প্রেরিত হইয়াছিলঃ
হাদীসবিদ ও বিদ্বান লোকদিগকে আদেশ করুন, তারা যেন মসজিদে মসজিদে হাদীসের শিক্ষাদান ও উহার ব্যাপক প্রচার করেন। কেননা হাদীসের জ্ঞান প্রায় বিলীন হইয়া যাইবার উপক্রম হইতেছে।
উপরিউক্ত উদ্ধৃতি ও ঐতিহাসিক দলীল- প্রমাণের ভিত্তিতে এই কথায় কোনই সন্দেহ থাকে না যে, উমর ইবনে আবদুল আযীযের হাদীস-সংগ্রহ সম্পর্কিত ফরমান বিশেষ একটি মাত্র স্থানে প্রেরিত হয় নাই, বরং ইসলামী রাজ্যের সর্বত্রই এই ফরমান পাঠানো হইয়াছিল এবং উহার ফলে সর্বত্রই হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের অভিযান সুষ্ঠুভাবে শুরু হইয়া গিয়াছিল। এই অভিযানের অনিবার্য ফলস্বরূপ সর্বত্রই হাদীস সংকলিত হয়। সেই সময় জীবিত প্রায় সকল হাদীসবিদই হাদীস সংকলনের মহৎ কাজে আত্মনিয়োগ করিয়াছিলেন এবং তাঁহাদের সংকলিত বিরাট বিপুল সম্পদ মুসলিম সমাজের নিকট চিরকালের অমূল্য ধনরূপে গণ্য ও সংরক্ষিত হইয়া রহিয়াছে।
উমর ইবনে আবদুল আযীয (র) অন্য লোকদিগকে আদেশ করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই, তিনি নিজেও হাদীস লিখিয়া লইবার কাজ শুরু করিয়াছিলেন, এইরূপ উল্লেখ পাওয়া যায়।
প্রসিদ্ধ তাবেয়ী ও হযরত আনাস হইতে হাদীস বর্ণনাকারী আবূ কালাবা
বলিয়াছেনঃ
উমর ইবনে আবদুল আযীয একদা জুহরের নামাযের জন্য মসজিদে আসিলে আমরা তাঁহার হাতে কিছু কাগজ দেখিতে পাইলাম। পরে আসরের নামাযের জন্য বাহির হইয়া আসিলেও তাঁহার সহিত সেই কাগজই দেখিলাম। আমি জিজ্ঞাসা করিলামঃ হে আমীরুল মুমিনীন! এই লিখিত জিনিসটি কি? জওয়াবে তিনি বলিলেনঃ আওন ইবনে আবদুল্লাহ আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন, উহা আমার খুব পছন্দ হইয়াছে, আমি তাহা লিখিয়া লইয়াছি। তাহার মধ্যে এই হাদীসটিও রহিয়াছে।
ইমাম যুহরীর পরবর্তী সময়ে যাঁহারা ইসলামী রাষ্ট্রের বিভিন্ন কেন্দ্রে হাদীস সংকলন ও গ্রন্হ প্রণয়নের কাজ করিয়াছেন, তাঁহাদের মধ্যে নিম্নোক্ত মনীষিগণ উল্লেখযোগ্যঃ
উপরে প্রত্যেক নামের সঙ্গে উল্লিখিত সন তারিখ হইতে স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায় যে, তারা সকলেই সমসাময়িক ও প্রায় একই যুগের লোক ছিলেন এবং একই সময়ের বিভিন্ন স্থানে থাকিয়া রাসূলে করীম (ﷺ)-এর হাদীস সম্পদ সংগ্রহ ও হাদীস গ্রন্হ সংকলন করিয়াছেন। কাজেই এই ব্যাপারে তাঁহাদের মধ্যে সর্বপ্রথম কে এই কাজ করিয়াছেন, তাহা নিশ্চিত করিয়া বলার উপায় নাই। কিন্তু আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী তাঁহাদের মধ্যে অগ্র-পরের একটি বিন্যাস কায়েম করিয়া দিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেনঃ
সর্বপ্রথম হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের কাজ করেন রুবাই ইবনে সুবাইহ ও সাদ ইবনে আবূ আরূবা এবং তাঁহাদের ছাড়া আরো কেহ কেহ। তারা হাদীসের প্রত্যেকটি অধ্যায়কে স্বতন্ত্রভাবে গ্রন্হাবদ্ধ করিতেন।
এই পর্যায়ে ইমাম মকহুলের নামও উল্লেখযোগ্য। কেননা তিনি গ্রন্হ প্রণয়নের কাজ ব্যাপকভাবে শুরু হওয়ার পূর্বেই ‘কিতাবুস সুনান’ নামে হাদীসের একখানি গ্রন্হ প্রণয়ন করেন।
কূফা নগরে ইমাম শা’বী একই বিষয় সম্পর্কিত হাদীসসমূহ একই স্থানে সন্নিবদ্ধ করার কাজে সর্বপ্রথম হাত দেন।
প্রথমত তিনি হাদীস লিখন ও হাদীস গ্রন্হ প্রণয়নের পক্ষপাতী ছিলেন না, কিন্তু কেবলমাত্র খলীফাতুল মুসলিমীন উমর ইবনে আবদুল আযীযের নির্দেশ পাইয়াই হাদীস গ্রন্হ প্রণয়ন শুরু করেন। কেননা তিনি কূফা প্রদেশে উমর ইবনে আবদুল আযীযের নিযুক্ত বিচারপতি ছিলেন।
একই বিষয় সম্পর্কিত হাদীসসমূহ একত্র সংকলন করার কাজ সর্বপ্রথম করেন ইমাম শা’বী। কেননা তাঁহার সম্পর্কে বর্ণিত হইয়াছে যে, তিনি ‘ইহা তালাক সম্পর্কে এক বিরাট অধ্যায়’ বলিয়া উহাতে বহু সংখ্যক হাদীস একত্রে লিখিয়াদিয়াছেন।
ইমাম শা’বী ২২ হিজরী সনে হযরত উমর ইবনুল খাত্তাবের খিলাফত আমলে জন্মগ্রহণ করেন, আর ইন্তেকাল করেন ১০৪ হিজরীতে। ইমাম মকহুলের ইন্তেকাল হয় ১৩৪ সনে। আর ইমাম যুহরীও এই ১২৩, ১২৪ কিংবা ১২৫ হিজরী সনে ইন্তেকাল করেন। এই হিসাবের ভিত্তিতে বলা যায়, হাদীস-গ্রন্হ প্রণয়নের ক্ষেত্রে ইমাম মকহুল প্রথম ব্যক্তি।
কিন্তু বিশেষভাবে বিচার করিলে এই সিদ্ধান্তই গ্রহণ করিতে হয় যে, হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের কাজ সর্বপ্রথম করিয়াছেন মদীনার হাদীসবিদগণ- আবূ বকর ইবনে হাজম, সালেম ও ইমাম যুহরী প্রমুখ। আর অধ্যায় ভিত্তিতে হাদীসের গ্রন্হ প্রণয়নের কাজ করিয়াছেন কূফার মুহাদ্দিসগণ- ইমাম শা’বী ও অন্যান্য।
উমাইয়া বংশের ‘খলীফায়ে রাশেদা’ উমর ইবনে আবদুল আযীয হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের ফরমান জারি করার পর বেশিী দিন জীবিত ছিলেন না। কিন্তু তাঁহার এই ফরমানের ফলে হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের যে প্রবাহ তরংগায়িত হইয়িা উঠিয়াছিল, তাহা অতঃপর কয়েক শতাব্দীকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ইমাম যুহরীরর পরবর্তী মনীষী ও হাদীসবিদগণ হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের কাজে পূর্ণমাত্রায় আত্মনিয়োগ করিয়াছিলেন। অতঃপর এই কাজ পূর্ণোদ্যমে চলিতে থাকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/363/91
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।