hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাদীস সংকলনের ইতিহাস

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম (রহ)

৮৫
ইমাম সুফিয়ান সওরী (র) (জন্ম ৯৭ হিজরী, মৃত্যু ১৬১ হিজরী)
সুফিয়ান সওরী ছিলেন তাবে-তাবেয়ী যুগের হাদীস-জ্ঞানের একজন শ্রেষ্ঠ মনীষী। প্রাথমিক শিক্ষা পিতার নিকট লাভ করেন। অতঃপর কূফা নগরের সকল মুহাদ্দিসের নিকট হইতে হাদীস শ্রবণ করেন। এই সময় কূফা নগরে আ’মাশ ও আবূ ইসহাক প্রমুখ মুহাদ্দিস হাদীসের রীতিমত দারস দেওয়ার একটা প্রতিষ্ঠান কায়েম করিয়াছিলেন।

ইয়াহইয়া ইবনে মুয়ীন বলিয়াছেনঃ

সুফিয়ান আ’মাশ বর্ণিত হাদীসসমূহ অন্যান্য সকল লোক অপেক্ষা অধিক জানেন।

এই সময় হাদীস যেহেতু সাধারণের জন্য গ্রন্হবদ্ধ হয় নাই, হাদীস সমূহের বিরাট অংশ ছিল মুহাদ্দিসদের স্মৃতিপটে মুদ্রিত এবং নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রক্ষিত। এইজন্য হাদীস শিক্ষার উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীকে দূরদূর দেশে সফর করিতে হইত। সুফিয়ানকেও হাদীস শিক্ষার জন্য দূরদেশে পরিভ্রমণ করিতে হইয়াছে ও এইজন্য শত-সহস্র মাইল পথ অতিক্রম করিতে হইয়াছে।

কূফায় উস্তাদদের নিকট হাদীস শিক্ষা সমাপ্ত করিয়া তিনি বসরা ও হিজাজ গমন করেন। এই দুই শহরে বিপুল সংখ্যক মুহাদ্দিসের নিকট হইতে তিনি হাদীস শ্রবণ ও সংগ্রহ করেন। তাঁহার কূফা, বসরা ও হিজাজের প্রখ্যাত উস্তাদের নাম উল্লেখের পর হাফেয ইবনে হাজার লিখিয়াছেনঃ

কূফার বহুসংখ্যক উস্তাদের নিকট হইতে তিনি হাদীস শিক্ষা করেন। এইভাবে বসরারও বহু সংখ্যক উস্তদের নিকট হইতে হাদীস শ্রবণ করেন এবং হিজাজের বিভিন্ন হাদীস শিক্ষার বৈঠক হইতেও তিনি যথেষ্ট ফায়দা গ্রহণ করেন।

আবদুর রহমান ইবনে মাহদী ইমামে হাদীস। তিনি বলিয়াছেনঃ

আমি সুফিয়ান সওরী অপেক্ষা অধিক হাদীস মুখস্থকারী আর এক জন লোকও দেখি নাই।

হিজরী দ্বিতীয় শতকে হাদীসের বিক্ষিপ্ত সম্পদ যখন গ্রন্হাকারে সুসংবদ্ধ হইয়াছিল, তখন লক্ষ লক্ষ সনদসহ মুখস্থ করা খুবই সহজ ছিল, কিন্তু পূর্বে ইহা যখন বিক্ষিপ্ত ছিল, তখন দুই চার হাজার হাদীস স্বীয় বক্ষে ধারণ করা ও উহাকে সুরক্ষিত করিয়া রাখা বড়ই কঠিন ব্যাপার ছিল। এই কারণে তাবে-তাবেয়ীন যুগের কোন হাদীসের ইমামের পক্ষে দশ সহস্রের অধিক হাদীস মুখস্থ করিয়া রাখার দৃষ্টান্ত কুত্রাপি পরিদৃষ্ট হয় না। এইদিক দিয়াও সুফিয়ান সওরীর কৃতিত্ব বিশেষত্ব উল্লেখযোগ্য। তাঁহার বর্ণিত যেসব হাদীস তাঁহার স্মৃতিপটে রক্ষিত ছিল তাহার সংখ্যা ছিল ত্রিশ হাজার।

আবূ আসেম বলিয়াছেনঃ

ইমাম সওরী ইলমে হাদীসের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা।

মোটকথা, এই যুগে ইলমে হাদীস সুসংবদ্ধ ছিল না। বরং উহা মুসলিম জাহানের প্রায় সর্বত্রই বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়িয়াছিল। ইহার কারণ- যেমন পূর্বে বলা হইয়াছে- এই ছিল যে, সাহাবায়ে কিরামই ছিলেন হাদীসের প্রাথমিক ধারক ও বাহক। তারা মসজিদ বা খানকার নিভৃত কোণে জীবন অতিবাহিত করেন নাই। বরং তারা প্রকৃত মুজাহিদের ন্যায় জীবন যাপন করিয়াছেন। জিহাদ, ইসলামী দাওয়াতের জন্য ও অন্যান্য দ্বীনি দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে তারা মুসলিম অধ্যুষিত দুনিয়ার প্রায় সকল দেশে ও ক্ষেত্রেই ছড়াইয়া পড়িয়াছিলেন। তারা যেখানেই পৌঁছিতেন, সেখানকার অধিবাসিগণ তাঁহাদের নিকট হইতে ইসলামী জ্ঞান তথা ইলমে হাদীস শিক্ষা করিতেন। নবী করীম (ﷺ)-এর কথা, কাজ ও চরিত্র সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করিয়া তাহা তারা নিজেদের স্মৃতিপটে সুরক্ষিত করিয়া রাখিতেন। এক্ষণে কেবল ইসলামী যিন্দিগী যাপন করাই যাহাদের উদ্দেশ্যে হইত তাহাদের পক্ষে ইসলাম সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান লাভ এবং কোন একটন সাহাবীর বাস্তব জীনব অনুসরণ করাই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু সাহাবীদের পরে যেসব মহান ব্যক্তি রাসূল-জ্ঞানের বিক্ষিপ্ত মণিমুক্তা সংগ্রহ ও সংকলন করার কঠিন ব্রত অবলম্বন করিয়াছিলেন এবং যাঁহারা ইসলামী ইলমের এই মহামূল্য সম্পদকে ধ্বংসের হাত হইতে রক্ষা করার দায়িত্ব লইয়াছিলেন, তাঁহাদের পক্ষে দেশের পর দেশ, বিরাট বিরাট উপমহাদেশ, বিশাল সমুদ্র, সীমাহীন উত্তপ্ত মরু প্রান্তর, নিবিড় দুর্গম অরণ্য পর্বত সমাকীর্ণ পথ অতিক্রম করা ছাড়া গত্যন্তর ছিল না। উপরন্তু এ যুগের হাদীস সংগ্রহকারী সাধকদের নিকট ইহা ছিল অত্যন্ত প্রিয় কাজ।

বলখ শহরের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস খালফ ইবন আইয়ূবকে এক ব্যক্তি একটি জরুরী বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। তিনি বলিলেনঃ ইহা আমার অজ্ঞাত, তবে কূফা নগরের বাসিন্দা হাসান ইবনে জিয়াদের নিকট হইতে ইহার সঠিক জওয়াব জানা যাইতে পারে। প্রশ্নকারী কূফা শহরের নাম শুনিয়া বলিলঃ…………….. কূফা! সে তো বহু দূরে ! ইহা শুনিয়া খালফ ইবনে আউয়ুব বলিলেনঃ

দ্বীনের চিন্তা যাহাকে পাইয়া বসিয়াছে, কূফার ন্যায় বহু দূরবর্তী শহরও তাহার নিকট অতি নিকটবর্তী বিবেচিত হইবে।

এই কারণেই সেকালের কোন লোক যদি জ্ঞানার্জনের জন্য প্রয়োজনীয় দীর্ঘ পথ সফর করিতে অক্ষমতা প্রকাল করিত তবে সমাজক্ষেত্রে সে নিদারুণ লাঞ্ছনা ও ভৎসনার সম্মুখীন হইতে বাধ্য হইত। হাদীস বিশেষজ্ঞ ও হাদীস শাস্ত্রের প্রখ্যাত সমালোচক ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মুয়ীন বলেনঃ

যে মুহাদ্দিস কেবল নিট শহরে বসিয়াই হাদীস শিক্ষা ও সংগ্রহ করিবেন, সেজন্য বিদেশ সফরের কষ্ট স্বীকার করিতে প্রস্তুত হইবেন না, তোমরা তাঁহার নিকট হইতে কোন কল্যাণের আশা করিতে পার না।

হাদীস শিক্ষা ও সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিদেশ সফরের যে কল্যাণ নিহিত রহিয়াছে, উহার বৈষয়িক মূল্য ও উপেক্ষা করা যায় না। ইবরাহিম ইবনে আদহামের নিম্নোক্ত উক্তি হইতে উহার গুরুত্ব অনুধাবণ করা যায়। তিন বলিয়াছেনঃ

হাদীস শিক্ষার্থী ও সংগ্রহকারীদের এই উদ্দেশ্যে দেশ-বিদেশে সফরের বরকতে আল্লাহ এই জাতিকে অনেক বিপদ-মুসিবত হইতে রক্ষা করেন।

বস্তুত সাহাবীদের যুগ হইতে তাবে-তাবেয়ীন ও তৎপরবর্তী মুহাদ্দিসদের যুগ পর্যন্ত আমরা হাদীস সংগ্রহ অভিযানের যে ব্যাপকতা ও তীব্রতা দেখিতে পাই তাহাতে এই বিদেশ সফরের গুরুত্ব সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত হইয়া পড়ে এবং যেসব মহান ব্যক্তি এই অভিযান বাস্তব ক্ষেত্রে চালাইয়াছেন, তাঁহাদের প্রতি আমাদের মনে জাগে অপরিসীম শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। তারা যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও দ্বীনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বুনিয়াদ হাদীস সংরক্ষণে এইরূপ প্রাণপণ সংকল্প লইয়া ময়দানে ঝাঁপাইয়া রা পড়িতেন তাহা হইলে আজ মুসলিম জাতি রাসূলে করীম (ﷺ)-এর সুন্নাতের বিরাট অংশ হইতে চিরদিনের তরে বঞ্চিত হইয়া যাইত, তাহাতে কোনই সন্দেহ থাকিতে পারে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন