hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাদীস সংকলনের ইতিহাস

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম (রহ)

৫১
হাদীস মুখস্থকরণ
সাহাবায়ে কিরামের ন্যায় তাবেয়িগণও হাদীসের শিক্ষা গ্রহণ ও মুখস্থকরণের ব্যাপারে পূর্ণ উদ্যম, উৎসাহ, অপরিসীম আগ্রহ এবং নিষ্ঠা প্রদর্শন করিয়াছেন। তাঁহাদের নিকট কুরআন মজীদের পরে পরেই দ্বিতীয় জ্ঞন-উৎস ছিল এই হাদীস। কুরআনে তারা যেখানে ইসলামের মূল নীতি ও বিধানের পাঠ গ্রহণ করিতেন, হাদীসের মাধ্যমে তারা লাভ করিতেন ইসলাম সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান ও তথ্য।

তাবেয়ী যুগের মুসলমানগণ প্রথম পর্যায়ে হাদীস মুখস্থ করার প্রতিই সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করিয়াছেন। যে হাদীসেই শুনিতে পাইতেন, তাহাই তারা মুখস্থ করিয়া ফেলিতেন। এই সময় পর্যন্ত আরব জাতির স্বাভাবিক স্মৃতিশক্তির উপর পূর্ণমাত্রায় নির্ভরতা ছিল, কোন কিছু আয়ত্ত করিতে হইলে প্রথমত উহাকে মুখস্থ করাই ছিল তাঁহাদের চিরন্তন অভ্যাসগন রীতি। বিশেষত তখন পর্যন্ত লিখন-শিল্প তাহাদের মধ্যে বিশেষ বিস্তার, প্রসার ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করিতে পারে নাই।

কিন্তু এতদসত্ত্বেও হাদীস যে একেবারেই লিখিত হইত না, কেবল মুখস্থ করার উপরই সকলে নির্ভর করিতেন এমন কথাও নহে। বরং প্রকৃত অবস্থা এই ছিল যে, অধিকাংশ লোকই তখন মুখস্থ করিতেই অভ্যস্ত ছিলেন।যদি কেহ লিখিতেনও, তবুও তাহা লিখিতেন মুখস্থ করারই উদ্দেশ্যে, মুখস্থ না করিয়া কেবল লিখিয়া রাখার কোন রীতিই সেখানে ছিল না একথা বলা চলে। ইমাম মালিকের নিম্নোদ্ধৃত উক্তি হইতে এই সংক্রান্ত কাজের প্রকৃত অবস্থা জানা যায়। তিনি বলেনঃ

তখনকার লোক সাধারণত লিখিতে অভ্যস্ত ছিলেন না, তারা সাধারণত মুখস্থ করিতেই অভ্যস্থ ছিলেন। তাঁহাদের কেহ কোন জিনিস লিখিয়া লইলেও কেবল মুখস্থ করার উদ্দেশ্যেই লিখিতেন, আর মুখস্থ হইয়া গেলে পর উহাকে মুছিয়া ফেলিতেন।

মুহাম্মদ ইবনে সিরীন তাবেয়ী সম্পর্কে বলা হইয়াছে যে, প্রথমে হাদীস লিখিয়া লইয়া উহা মুখস্থ করা এবং মুখস্থ হওয়ার পর লিখিত জিনিস বিনষ্ট করাই ছিল তাঁহাদের হাদীস শিক্ষা গ্রহণের পদ্ধতি।

ঐতিহাসিক ইবনে আসাকির মুহাদ্দিস ইসমাঈল ইবনে উবায়দার একটি উক্তি উদ্ধৃত করিয়া এই যুগের হাদীস মুখস্থ করার গুরুত্ব সুস্পষ্ট করিয়া তুলিয়াছেন। মুহাদ্দিস ইসমাঈল বলিতেনঃ

আমারা যেভাবে কুরআন মুখস্থ করি, হাদসকেও ঠিক সেইভাবে মুখস্থ করা আমাদের কর্তব্য।

ঐতিহাসিক যাহবী প্রখ্যাত হাফেজে হাদীস ইবনে খুজায়মা সম্পর্কে লিখিয়াছেনঃ

একজন কুরআন পাঠক যেমন করিয়া কুরআনের সূরাসমূহ মুখস্থ করেন, ইবনে খুজায়মাও ঠিক তেমনিভাবে ফিকাহ সম্পর্কিত হাদীসসমূহ মুখস্থ করিতেন।

খালিদ-আল-হাযযা তাবেয়ী বলিয়াছেনঃ আমি প্রথমে বড় বড় হাদীস লিখিয়া লইতাম এবং যখন উহা মুখস্থ করিয়া লইতাম, তখন উহা মুছিয়া ফেলিতাম।

তাবেয়ী ইসমাঈল ইবনে ইউনুসের জীবনী বর্ণনা প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক যাহবী লিখিয়াছেন যে, তিনি বলিতেনঃ

আমি কুরআনের সূরা যেভাবে মুখস্থ করিতাম ঠিক সেইভাবেই আবূ ইসহাক বর্ণিত হাদীসসমূহ মুখস্থ করিতাম।

তাবেয়ী শহর ইবনে হাউসাবের জীবনী আলাচনা প্রসঙ্গে লিখিত হইয়াছে যে, আহমাদ আবদুল হামীদ ইবনে রহমানের নিকট তাঁহার (শহর) বর্ণিত সমস্ত হাদীস সংগৃহীত ছিল এবং

তিনি হাদীস এমনভাবে মুখস্থ করিতেন যে, মনে হইত তিনি কুরআনের কোন সুরা পাঠ করিতেছেন।

প্রখ্যাত মুসনাদ গ্রন্হ সংকলনকারী মুহাদ্দিস আবূ দায়ূদ তায়ালিসি দাবি করিয়া বলিতেনঃ

আমি ত্রিশ সহস্র হাদীস ‘ফর ফর’ করিয়া মুখস্থ পড়িতে পারি; অবশ্য ইহা আমার অহংকারের কথা নয়।

প্রসিদ্ধ তাবেয়ী কাতাদাহ মুহাদ্দিস সায়ীদ ইবনে আরারাহকে সূরা বাকারার প্রথম হইতে শেষ পর্যন্ত মুখস্থ পড়িয়া শোনাইলেন, তাহাতে একটিও ভূল হইল না। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ

হযরত জাবির সংকলিত হাদীস গ্রন্হ (সংকলন) সুরা বাকারা অপেক্ষাও অধিক মাত্রায় আমার মুখস্থ রহিয়াছে।

এই যুগে হাদীস শিক্ষাদান কার্য কিভাবে সম্পাদিত হইত, তাহা নিম্নলিখিত বিবরণ হইতে বুঝিতে পারা যায়।

উরাওয়া ইবনে জুবাইর হযরত আয়েশা (রা)-এর বোনপো এবং ছাত্র ছিলেন। তাঁহার পুত্র হিশাম ইবনে উরওয়া বলেন যে, আমার পিতা আমাকে ও আমর অন্যান্য ভাইদের হাদীস শিক্ষা দিতেন। আবার আমাদের কাছে তাহা শুনিতে চাহিতেন এবং বলিতেনঃ

তোমরা যাহা পড়িয়াছ, তাহা আমাকে বারবার পড়িয়া শোনাও।

ইহার পর তিনি বলেনঃ

আমার পিতা আমার মুখস্থ করার শক্তির পরিচয় পাইয়া অত্যন্ত বিস্মিত এবং খুশী হইতেন।

ইবরাহীম নাখারী তাবেয়ী তাঁহার হাদীসের ছাত্রদিগকে উপদেশ স্বরূপ বলিতেনঃ

তুমি যখন কোন হাদীস শ্রবণ করিবে, তখন উহা অপরের নিকট বর্ণনা করিবে।

তাবেয়ী যুগের প্রসিদ্ধ হাদীস সংগ্রহক ইমাম ইবনে শিহাব জুহরী সম্পর্কে বর্ণিত হইয়াছে, তিন এশার নামাযের পর অযু করিয়া হাদীস মুখস্থকরণ ও হাদীস আলোচনায় বসিয়া যাইতেন এবং ফযরের নামায পর্যন্ত একই বৈঠকে আসীন থাকিয়া হাদীস চর্চা করিতেন।

[সুনানে দারেমী, পৃষ্ঠা ৭৯।]]

এই ইমাম জুহীর বলিয়াছেনঃ

উবায়দুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহকে যখন আমি কোন হাদীস জিজ্ঞাসা করিতাম, তখন তিনি এমনভাবে হাদীস বর্ণনা শুরু করিতেন যে, তখন মনে হইত যেন একটি সমুদ্র ফুটিয়া বাহির হইয়াছে।

[সুনানে দারেমী, পৃষ্ঠা ৮০।]

বস্তুত প্রথম হিজরী শতকের প্রায় শেষ পর্যন্তই আবর জাহানের মুসলিম আলিমগণ সাধারণত কোন কিছু লিখিয়া রাখার প্রতি মনোযোগী ছিলেন না, লিখিয়া রাখার পরিবর্তে মুখস্থ করিয়া রাখাই ছিল তাঁহারদের নিকট সহজতর কাজ।

এইরূপ পরিবেশ একালের সকল হাদীসবিদ তাবেয়ী কর্তৃক যে ব্যাপকভা হাদীস লিখিত হইবে, তাহা ধারণা করা যায় না। এই কারণে প্রথম হিজরী শতকে হাদীস লেখকদের তুলনায় হাদীস মুখস্থকারীদের সংখ্যা অনেক বেশী। এই যুগের এমন অসংখ্য মনীষীর নাম জীবনী গ্রন্হসমূহে উল্লিখিত হইয়াছে, যাহারা বিপুল সংখ্যক হাদীস- হাদীসের বিরাট বিরাট সংকলন- সম্পূর্ণ মুখস্থ করিয়া রাখিয়াছিলেন এবং তারা তাহা এমনভাবেই মুখস্থ পড়িয়া শোনাইতে পারিতেন যে, কোথাও একটি ভূলও পরিলক্ষিত হইত না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন