hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হাদীস সংকলনের ইতিহাস

লেখকঃ মওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম (রহ)

৭৬
ইমাম মালিক ইবনে আনাস (র)
ইমাম মালিক মদীনাতুর-রাসূলের সর্বাপেক্ষা বড় মুহাদ্দিস ছিলেন। তিনি ৯৩ হিজরী সনে মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন।

[ কিন্তু ঐতিহাসিক ইয়াফিয়ী ‘তোবকাতুল ফুকাহা’ গ্রন্হে জন্ম সন ৯৪ হিজরী বলা হইয়াছে।] এই সময় মদীনার সমগ্র শহরটি হাদীস চর্চা ও হাদীস শিক্ষার সুমিষ্ট আওয়াজে মুখরিত ছিল। নবী করীম (ﷺ)-এর ইন্তেকালের পর সাহাবায়ে কিরাম যদিও দূর দূরান্তরে অবস্থিত স্থানে ছড়াইয়া পড়িয়াছিলেন; কিন্তু স্বর্ণের খনি হইতে স্বর্ণ উত্তোলনের পরও তাহা স্বর্ণের খনিই থাকিয়া যায় এবং তখনো সেখানে যাহা অবশিষ্ট থাকিয়া যায়, তাহার পরিমাণ কিছুমাত্র নগণ্য হইতে পারে না। সমস্ত বড় বড় সাহাবী এই শহরেই বসবাস করিতেন। নবী করীমের জীবদ্দশায় এবং তাহার পরে ২৪/২৫ বৎসর পর্যন্ত এই শহরেই ছিল ইসলামী হুকুমতের কেন্দ্র। এইখানেই ইসলামের যাবতীয় আইন-কানুন চর্চা, প্রচার ও কার্যকর হইত এবং তাহার পরই তাহা মুসলিম জাহানের অপরাপর কেন্দ্রে প্রচারিত হইত। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক, উমর ফারূক, হযরত আয়েশা, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর, হযরত ইবনে আব্বাস, হযরত আবূ হুরায়রা, হযতর যায়দ ইবনে সাবিত প্রমুখ মহান সাহাবীর হাদীদ শিক্ষাদানের কেন্দ্র এই শহরেই প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। ফলে এই শহরের শত সহস্র ব্যক্তি ওহী ও সুন্নাতের ইলমে বিশেষ পারদর্শিতা লাভ করিতে সমর্থ হন এবং উত্তরকালে তারাই উহার প্রকৃত উত্তরাধিকারী হন।

ইমাম মালিক যখন হাদীস শিক্ষার প্রতি মনোযোগী হন, তখন ইলমে হাদীসের বড় বড় ‘বাদশাহ’ মদীনায় অবস্থান করিতেছিলেন। হযরত আয়েশার বড় বড় ছাত্রগণ, তাঁহার ভ্রাতস্পুত্র কাসেম ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আবূ বকর, তাঁহার বোনপুত্র উরওয়া ইবনে যুবায়র, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমারের ছাত্র নাফে ও আবদুল্লাহ ইবিনে দীনার, তাঁহার দুই গোলাম ও সালেম ইবনে আবদুল্লাহ প্রমুখ তাবেয়ী তখনো সেখানে বর্তমান ছিলেন। হযরত যায়দ ইবনে সাবিত মদীনার বাহিরে চলিয়া গেলেও তাঁহার পুত্র খারেজাহ ইবনে যায়দ তাহার ইলমে হাদীসের ওয়ারিশ হইয়াছিলেন এবং তিনি মদীনাতেই বসবাস করিতেন। হযরত আবূ হুরায়ারার বিরাট হাদীস জ্ঞানের মহাসমুদ্র আকণ্ঠ পান করিয়াছিলেন তাঁহার জামাতা সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়্যিব। তিনিও এই মদীনাতেই বাস করিতেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস যদিও তাহার হাদীস জ্ঞান প্রধানত মদীনার বাহিরে মক্কা কূফা ও বসরায় প্রচার করিয়াছিলেন, কিন্তু মদীনায় অবস্থানকারী তাবেয়ী সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়্যিব তাঁহার নিকট হইতে বিপুল সংখ্যক হাদীস আয়ত্ত করিয়া লইয়াছিলেন।

এতদ্ব্যতীত আরো উল্লেখযোগ্য কয়েকজন তাবেয়ী এই সময় মদীনায় অবস্থান করিতেন। তারা হইতেছেন হিশাম ইবনে উরউয়া, মুহাম্মদ ইবনুল মুনকাদির, উবায়দুল্লাহ ইবনে উতবা ইবনে মাসউদ, মুহাম্মদ ইবনে শিহাব যুহহরী, আমের ইবনে আবদুল্লাহ জাফর সাদিক, রবীয়া রায়ী, আবূ সুহাইল ও সুলায়মান ইবনে ইয়াসার। তারা এমন তাবেয়ী ছিলেন, যাঁহাদের ক্রোড়ে হাদীস ও তাফসীরের জ্ঞান লালিত-পালিত ও ক্রমবিকশিত হইয়াছিল।

ইমাম মালিকের পিতামহ, চাচা পিতা সকলেই বড় বড় মুহাদ্দিস ছিলেন। ইহা হইতে বলা যায়, ইমাম নিজস্ব ঘর ও পরিবারে গোটা পরিবেশই ইলমে হাদীসের গুঞ্জনে মুখরিত ছিল। এই কারণে তিনি বাল্য জীবনেই হাদীস শিক্ষা লাভ করিতে শুরু করেন। তিনি সম্ভবত সর্বপ্রথম তাঁহার চাচা আবূ সুহাইলের নিকট হাদীস শিক্ষা করিতে শুরু করেন। পরে নাফে’র নিকট হাদীস শিক্ষা করিতে যান। নাফে যতদিন পর্যন্ত জীবিত ছিলেন ইমাম মালিক তাঁহার নিকটই হাদীস শিক্ষার জন্য যাইতেন। অতঃপর তিনি মদীনার উপরোল্লিখিত প্রায় সকল হাদীসবিদ তাবেয়ীর নিকট হইতেই হাদীস শিক্ষা করিয়াছেন। তাঁহার উস্তাদের মোট সংখ্যা শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভীর মতে ৭৫ জন। অপর এক বর্ণনায় ৯৪ জন উল্লেখ করা হইয়াছে।

কিন্তু আল্লামা জালালুদ্দীন সয়ূতী লিখিয়াছেনঃ

ইমাম মালিক নয়শত মুহাদ্দিসের নিকটি হইতে হাদীস গ্রহণ করিয়াছেন। তন্মধ্যে তিনশত হইতেছে তাবেয়ী ও ছয়শ হইতেছেন তাবে-তাবেয়ী।

এই সকল উস্তাদকেই তিনি মদীনা শরীফে পাইয়াছিলেন। এই কারণে হাদীস শিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি মদীনার বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন নাই।

ইমাম মালিক সকল প্রকারের হাদীস বর্ণনাকারীর নিকট হইতেই হাদীস গ্রহণ করিতেন না। তিনি হাদীসের উস্তাদ হিসাবে কাহাকে গ্রহন করিবেন, তাহা তিনি গভীর সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে চিন্তা করিয়া ছাঁটাই-বাছাই করিয়া লইতেন। এই সম্পর্কে তাহার প্রিয় ছাত্র হাবীবের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি নিজেই বলিয়াছিলেনঃ

হে হাবীব ! এই মসজিদেই (মসজিদে নববী) আমি সত্তর জন এমন মুহাদ্দিস পাইয়াছি, যাঁহারা রাসূলে করীম (ﷺ)-এর সাহাবীরে সাক্ষাত ও সংস্পর্শ লাভ করিয়াছিলেন এবং তাবেয়ীদের হইতেও হাদীস বর্ণনা করিতেন। (আমি তাঁহাদের নিকট হইতেই হাদীস শিক্ষা ও গ্রগণ করিয়াছি।) এবং হাদীসকে উহার উপযুক্ত লোকদের নিকট হইতেই গ্রহণ করিয়াছি, অনুপযুক্ত ব্যক্তির নিকট হইতে কখনো গ্রহণ করি নাই।

তাঁহার উস্তাদ কোন ধরনের লোক ছিলেন এবং কাহাদের নিকট হইতে তিনি হাদীস গ্রহণ করেন নাই, তাহা নিম্নোক্ত বর্ণনা হইতে স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায়। বলা হইয়াছেঃ

তাঁহার হাদীস শিক্ষার উস্তাদ যাঁহারা ছিলেন, তাঁহাদের সকলকেই ইমাম মালিক ছাঁটাই-বাছাই করিয়া লইয়াছিলেন, তাঁহাদের দ্বীনদারী, বুঝশক্তি ও ফিকাহ-জ্ঞান এবং হাদীস বর্ণনার হক ও শর্ত আদায় করার দিক দিয়া তাঁহাদিগকে তিনি পছন্দ করিয়াছিলেন। তাঁহাদের সম্পর্কে তাঁহার অন্তরে ঐকান্তিক বিশ্বাস ও নিশ্চিন্ততা বিরাজমান ছিল। এতদ্ব্যতীত তিনি বহু দ্বীনদার ও কল্যাণময় ব্যক্তির নিকট হইতে হাদীস গ্রহণ করেন নাই। কেননা তারা হাদীস বর্ণনার সুষ্ঠু নিয়ম সঠিক ভাবে জানিতেন না।

ইমাম মালিক (র) যে কত বড় মুহাদ্দিস ছিলেন, তাহা তাঁহার সম্পর্কে কথিত অপরাপর শ্রেষ্ঠ হাদীসবিদের নিম্নোল্লিখিত উক্তিসমূহ হইতে স্পষ্টরূপে বুঝিতে পারা যায়।

ইমাম শাফিয়ী (র) তাঁহার সম্পর্কে বলিয়াছেনঃ

ইমাম মালিক তাবেয়ীদের পরবর্তী যুগের লোকদের জন্য আল্লাহর এক অকাট্য দলীল বিশেষ।

মুহাদ্দিস নাসায়ী বলিয়াছেনঃ

আমার দৃষ্টিতে তাবেয়ীনের পরবর্তী যুগে মালিক অপেক্ষা বড় বিজ্ঞ ব্যক্তি আর কেহ নাই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন