hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নারীদের যে বিষয়গুলো না জানলেই নয়

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

২৭৯
মূলনীতি ছয়
ইসলামের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মুসলিমদের মাঝে উদ্ভব ঘটে নানা ধরনের মুনাফিকীর। যে মুসলিমদের মনে অসুস্থতা আছে, ঈমানে দুর্বলতা আছে, তাদের সে অসুস্থতা ও দুর্বলতা উম্মুক্ত হয়ে পড়ে। বেড়ে যায় ইসলামবিরোধী চিন্তা ও বক্তব্যের অনুগত মুসলিম শ্ৰোতা ও পাঠক। এই মুনাফিক মুসলিম শ্রেণীও ইসলামের শত্ৰ। আল্লাহ তা'আলা বলেন :

“তারাই শত্রু। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক হও। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। বিভ্রান্ত হয়ে তারা কোথায় যাচ্ছে”! (সূরা মুনাফিকূন : ৪) এই মুনাফিকরা অধিকাংশ সময় বিভ্রান্তিকর ও প্রতারক ভাষা ব্যবহার করে। তারা বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে এবং তার মূল লক্ষ্য সম্পর্কে সংশয় তৈরি করে ইসলামী শরীয়তের উদ্ধৃতি দিয়ে আলোচনা করে থাকে। ফলে তাদের ভাষা মুসলিমদের বিভ্রান্ত করে। সুতরাং এই সম্পর্কে মুসলিমদেরকে সতর্ক করা মুসলিম চিন্তাবিদদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। এবং মুসলিমদের মধ্যে বস্তুগত ও চিন্তাগত পরাজয়ের প্রভাবে ইসলাম ও তার শরীয়ত ও বিধানের প্রতি যাদের আস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে ইসলাম বিরোধী চিন্তা ও ডিসকোর্সের প্রতি মনযোগ বেড়ে যায় এবং ফলে তাদের মনে নানা সংশয় বিকশিত হয়, তাদেরকে বন্ধুত্বপূর্ণ ভাষায় নসিহত করাও সমান গুরুত্বের দাবি রাখে।

সমস্যার মূল ও সমাধান

সবসময় সমস্যার মূলে আঘাত হানতে হয়। আমার মেয়ে বা বোন পর্দা করে না, এটা মেনে চলে না, ওটা করে না ইত্যাদি অনেক অভিযোগ। ঠান্ডা মাথায় ভাবতে হবে। সমস্যার মূল কোনটা। একজন ঈমানদার হিসেবে আমি নিঃসন্দেহে চাই যে আমার মেয়ে বা বোন ন্যূনতম পর্দা মেনে চলুক। কিন্তু তিনি কিছুতেই তা করবে না। এখন যদি আমি আমার ক্ষমতার দাপট দিয়ে তাদের উপর পর্দা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি তাহলে তাহলে বুঝতে হবে আমি সমস্যার মূলে না গিয়ে এর শাখা প্রশাখায় আঘাত হেনে ক্ষণস্থায়ী ও ভঙ্গুর তৃপ্তি খুঁজছি। মূল সমস্যা কিন্তু রয়েই গেল। অথবা আমি লক্ষ্য করছি তারা সলাত আদায়ের ব্যাপারে মনযোগী নয়। এ অবস্থায় তাকে জোর করে সলাতে মনযোগী করা কোন বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এ ক্ষেত্রেও আমাকে সমস্যার মূলে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এভাবে সকল সমস্যার মূলে সমাধান না করে যদি কেবল আগা আর শাখা প্রশাখা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাই তাহলে একদিকে সমস্যার অস্থায়ী সমাধান হয়তো হবে অপর দিকে আরো নিত্য নতুন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মনে রাখতে হবে যদি আমি ইসলামী পরিবার গঠন করতে চাই তাহলে সকল সমস্যার গোড়া হলো ঈমানের বুঝ ও আল্লাহ ভীতির অভাব। যার ভেতর ঈমানের আলো যত বেশী, যিনি আল্লাহকে যত বেশী ভয় পান তিনি তত পরিপূর্ণ মানব বা মানবী। সুতরাং পর্দা বা সলাত ইত্যাদি মূল কোন বিষয় নয়। একজন ব্যক্তি যদি আল্লাহকে ভয় করে তাহলে আল্লাহর হুকুমগুলি সে শোনা মাত্রই মানার চেষ্টা করবে। তাকে খুব বেশী চাপ দেয়ার প্রয়োজন নেই। এভাবে আস্তে আস্তে সকল সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।

রসূল (ﷺ) -এর জীবনী ও সাহাবীদের জীবনী নিজে পড়তে হবে। এর জ্ঞান পরিবারের সবার সাথে শেয়ার করতে হবে। এ থেকে শিক্ষা কী তা তাদেরকে বুঝিয়ে বলতে হবে। এভাবে কোন কাহিনীর মাধ্যমে, আল্লাহর ভয় জাগরুক রাখার মাধ্যমে দ্বীনের অনেক মৌলিক বিষয় জানা হবে। দ্বীনের প্রতি ভালবাসা বাড়বে। রসূল (ﷺ) -এর প্রতি মহব্বত জাগ্রত হবে। দ্বীনের হুকুম আহকাম শুনলে কেউ নাক সিটকাবে না।

আমাদের সিংহভাগ নারীরা শবেবরাত, ঈদের সেমাই তৈরী ইত্যাদিতে আনন্দ পায় ও পালন করতে বেশী উদ্বুদ্ধ। কিন্তু যদি কোন বেপর্দা নারীকে পর্দার নসিহত করা হয় তাহলে তিনি নেগেটিভ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন অথবা উল্টো ওয়াজ নসিহত করে দেবেন। অথবা যদি তাকে বলা হয় যে এত গহনা পড়া ঠিক নয় এটা দৃষ্টি কটু এবং এতে অহঙ্কারের ভাব আসে। অথবা যদি কল্যাণময়ী হয়ে জিজ্ঞেস করা হয় গহনার যাকাত আদায় করা হয় কি না? এতে অনাকাংক্ষিত একটা পরিস্থিতির অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। এগুলো জাতীয় রোগ। তবে আল্লাহর বিশেষ রহমতে আমাদের শিক্ষিতা বোনেরা এখন আগের যে। কোন সময়ের তুলনায় দ্বীনের প্রতি বেশী সংবেদনশীল ও জ্ঞানী। তারা অনেকেই এখন কুরআন ও সহীহ হাদীস চর্চা করেন। দ্বীনের প্রতি তারা যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল।

আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা

সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার যিনি কানাডার মতো একটি অমুসলিম দেশে বসে আমাদেরকে দ্বীন ইসলামের অন্যতম ফরয হুকুম “পর্দা বা হিজাব” সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জনের মন-মানসিকতা দান করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, পর্দার উপর দিন দিন মানুষের সচেতনতা এবং আগ্রহ বাড়ছে, সবদেশেই এর উল্যেখযোগ্য ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। যেমন ২০০৭ সালে আমরা লন্ডন ইসলামিক সেন্টার ভিজিট করতে যাই এবং লন্ডনের রাস্তায় যে পরিমাণ হিজাব পরিহিতা তরুণীদেরকে দেখি তা নিজেদের মুসলিম দেশেও দেখিনি। তবে মাশা-আল্লাহ্ অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে, ঢাকার রাস্তায়ও এখন চোখে পরার মতো অনেক হিজাব পরিহিতা তরুণীদেরকে দেখা যায়।

পর্দার আসল উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা খুব কম সংখ্যক মুসলিম। মেয়েরাই জানি, মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদের উপর সলাতের মতো কেন এই পর্দাকেও ফরয করলেন তা আমরা না জেনেই অনেকে পর্দা করি যার কারণে পর্দার আসল উদ্দেশ্য সফল হয় না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশের মতো একটি মুসলিম প্রধান দেশে থেকেও আমরা পর্দার আসল রূপ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে পারিনি অথচ এটা আমরা জানতে পেরেছি। অমুসলিম দেশ কানাডাতে এসে। বাজারে পর্দার উপর অনেক বই পাওয়া যায়, কিন্তু এতোসব বই যোগাড় করে সবার সবসময় পড়া হয়ে উঠে না। তাই আমরা কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে এবং বর্তমান যুগের জন্য প্রযোজ্য পর্দা সংক্রান্ত সকল বিধান সংক্ষেপে এই বইতে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করেছি। এই বইয়ে মূলতঃ সূরা নূর এবং সূরা আহযাবের উপর এনালাইসিস করা হয়েছে।

শেষ কথা

“হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবর্তীণ করেছি সাজসজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাক। এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা গবেষণা করে।” (সূরা আ'রাফ : ২৬) জোর করে কারো উপর কিছু চাপিয়ে দেয়া ঠিক না, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। সবকিছুর মূলে হলো তাকওয়া বা আল্লাহভীতি, তাই প্রতিদিন এই তাকওয়া অর্জন করতে হবে এবং সেই সাথে ঈমানকে মজবুত করতে হবে। আমরা বেশীর ভাগ মুসলিমরাই আংশিক বা ভুল ঈমান নিয়ে নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবি করছি, ঈমান সম্পর্কে আমাদের স্বচ্ছ ধারণা থাকা উচিত। আমাদের ঈমান যখন মজবুত হয়ে যাবে তখন দেখা যাবে এই দুনিয়ার সকল কঠিন কাজই আমাদের নিকট অতি সহজ হয়ে গেছে। আর সামান্য পর্দা করা তো কোন ব্যাপারই না।

প্রকৃত ঈমানদারের জীবনে কোন দুঃখ থাকে না, থাকে না কোন হতাশা। তারা সবসময়ই সুখী। কুরআনের আলোকে নিজের পারিবারিক জীবনকে গড়ে তুললে দেখা যাবে সেই সবচেয়ে বেশী সুখী। পরিবারে কোন দুঃখ নেই, নেই কোন অশান্তি, চারিদিকে সুখ আর সুখ। আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই সবচেয়ে ভাল জানেন আমাদের প্রকৃত সুখ কিসে। কিন্তু আমরা আল্লাহর দেয়া শান্তির পথকে বাদ দিয়ে যখন নিজেদের মনগড়া স্টাইলে শান্তি খুঁজতে থাকি তখনই নেমে আসে অশান্তি। আসুন আমরা কুরআনকে বোঝার চেষ্টা করি, নিয়মিত কুরআনের তাফসীর (ব্যাখ্যা) অধ্যয়ন করি এবং সেই অনুযায়ী আমাদের জীবনকে গড়ে তুলি।

একজন নারী যতক্ষণ পর্যন্ত দ্বীন ইসলামকে আঁকড়ে ধরে রাখবে, আল্লাহর দেয়া বিধান মেনে চলবে, নবীর অনুকরণ করবে, ইসলাম ও শরীয়তের বিধানের উপর অটল বিশ্বাস রাখবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে আত্মমর্যাদাশীল, উন্নত চরিত্রের অধিকারী ও উত্তম জাতি হিসেবেই পরিগণিত হবে। এতে সে দুনিয়াতে সফলতা ও প্রশান্তি লাভ করবে আর কিয়ামতের দিন মহান সওয়াব ও বিনিময়ের অধিকারী হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কুরআন-সুন্নাহ অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন