hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নারীদের যে বিষয়গুলো না জানলেই নয়

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

২৮১
উম্মুল মু'মিনীন সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা)
নাম সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা)। কুরাইশের আমের বিন লুব্বী গোত্রের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিলেন। বংশ পরিচয় হলো : সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) বিনতে যামা’আ বিন কায়েস বিন আবদি শামস বিন আবদি উদ্দ বিন নাসার বিন মালিক বিন হাছাল বিন আমের বিন লুব্বী। মাতার নাম ছিল সামুস বিনতে কায়েস। আনসারের বনু নাজ্জার বংশের সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিলেন। সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা)-র প্রথম বিয়ে হয়েছিল চাচাতো ভাই সাকরান (রাদিআল্লাহু আনহু) বিন আমরের সঙ্গে।

আল্লাহ সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা)-কে অত্যন্ত পূত-পবিত্র স্বভাব দান করেছিলেন। রসূলে কারীম (ﷺ) যখন হকের দাওয়াত প্রদান শুরু করলেন তখন তিনি কালবিলম্ব না করে তাতে সাড়া দিলেন। তাঁর নেক প্রকৃতির স্বামীও তাঁর সঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করেন। হাবশার দ্বিতীয় হিজরতে সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) এবং সাকরান (রাদিআল্লাহু আনহু)-ও অন্যান্য মুসলিমদের সহগামী হয়ে হাবশায় হিজরত করেন। কয়েক বছর সেখানে অবস্থানের পর মক্কা ফিরে আসেন। কিছুদিন পর সাকরান (রাদিআল্লাহু আনহু) ইন্তিকাল করেন এবং সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) বিধবা হয়ে যান। এ সময় খাদিজা (রাদিআল্লাহু আনহা) ইন্তিকাল করেছিলেন। মাতাহীন শিশুদেরকে দেখে দেখে প্রিয় নবী (ﷺ) মন মরা প্রকৃতির হয়ে গিয়েছিলেন। রসুল (ﷺ) -এর একজন জীবন উৎসর্গকারী নারী সাহাবী খাওলাহ (রাদিআল্লাহু আনহা) বিনতে হাকিম একদিন নবী (ﷺ) -এর সেবা করার প্রস্তাব করলেন

“হে আল্লাহর রসূল! খাদিজা (রাদিআল্লাহু আনহা)-র ইন্তিকালের পর সব সময়ই আপনাকে বিষপ্ন দেখতে পাচ্ছি।” নবী (ﷺ) বললেন, “হাঁ, সাংসারিক কাজ এবং শিশুদের লালনপালন খাজিদা (রাদিআল্লাহু আনহা)-র উপরই ন্যস্ত ছিল।” খাওলা (রাদিআল্লাহু আনহা) আরজ করলেন, তাহলে তো আপনার একজন সাথী ও দুঃখের অংশীদার প্রয়োজন। অনুমতি পেলে আপনার দ্বিতীয় বিয়ের জন্য চেষ্টা করতে পারি।”

নবী (ﷺ) এই আরজ মঞ্জুর করলেন। খাওলা (রাদিআল্লাহু আনহা) তৎক্ষণাৎ সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা)-র নিকট গমন করলেন এবং তাঁর নিকট রসূল (ﷺ)-র ইচ্ছার কথা বর্ণনা করলেন। সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) সন্তুষ্ট চিত্তে নবী (ﷺ) এর স্ত্রী হওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দান করলেন। তাঁর পিতা যামা’আও রসূল (ﷺ) পয়গাম কবুল করলেন এবং নিজের আদরের মেয়ের বিয়ে বিশ্ব নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর সঙ্গে চারশ’ দিরহাম মোহরানার বিনিময়ে নিজেই পড়ালেন। বিয়ের পর তাঁর পুত্র আব্দুল্লাহ বাড়ী এলেন। তিনি তখন পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণ করেননি। এই বিয়ের কথা শুনে তিনি খুব বিরক্ত হলেন এবং মাথায় মাটি মাখলেন। ইসলাম গ্রহণের পর সারাজীবন তিনি এই জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। নবুয়ত প্রাপ্তির দশম বছরে এই শুভ বিবাহ সুসস্পন্ন হয়েছিল। যারকানী (রাদিআল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেছেন, প্রথম স্বামী সাকরান (রাদিআল্লাহু আনহু)-র জীবদ্দশায় একবার সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) স্বপ্নে দেখলেন যে, তিনি বালিশে ঠেস দিয়ে শুয়ে আছেন। এমন সময় আসমান ফেটে গেল এবং চাঁদ তাঁর উপর এসে পড়লো। তিনি এই স্বপ্নের কথা সাকরান (রাদিআল্লাহু আনহু)-র নিকট বর্ণনা করলেন। সাকরান (রাদিআল্লাহু আনহু) বললেন, “এই স্বপ্নের তাবির তো এই মনে হয় যে, শিগগিরই আমি মারা যাবো এবং আরবের চাঁদ মুহাম্মাদ (ﷺ) তোমাকে বিয়ে করবেন।” বাস্তবিকই এই স্বপ্নের তাবির কিছুদিন পরই পূর্ণ হলো। কতিপয় রাওয়ায়েত অনুযায়ী খাদিজা (রাদিআল্লাহু আনহা)-র মৃত্যুর পর নবী (ﷺ) সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা)-কে বিয়ে করেন। কিন্তু অন্যদের মতে আয়িশা (রাদিআল্লাহু আনহা)-র সঙ্গে রসূল (ﷺ)-এর দ্বিতীয় বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নবুয়ত প্রাপ্তির ১৩ বছর পর নবী (ﷺ) হিজরত করে মদীনা যান। সেখান থেকে তিনি আবু রাফে (রাদিআল্লাহু আনহু) এবং যায়েদ (রাদিআল্লাহু আনহু) বিন। হারেছাকে ফাতিমা, উম্মে কুলছুম ও সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহুমা) প্রমুখকে সঙ্গে করে নিয়ে আসার জন্য মক্কা প্রেরণ করেছিলেন। সুতরাং তাঁরা সকলেই যায়েদ (রাদিআল্লাহু আনহু) বিন হারেছা এবং আবু রাফের (রাদিআল্লাহু আনহু) সঙ্গে মদীনা চলে আসেন। পর্দার আয়াত নাযিলের পূর্বে সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) প্রাকৃতিক কাজ প্রভৃতি সম্পাদনের জন্য বাইরে যেতেন। ওমর (রাদিআল্লাহু আনহা)-র মত ছিল যে, নবী (ﷺ) -এর স্ত্রীদের বাইরে বেরুনো উচিত নয়।

প্রসঙ্গটি তিনি একবার নবী কারীম (ﷺ) -এর নিকট উত্থাপনও করেছিলেন। কিন্তু প্রিয় নবী (ﷺ) তখন চুপ ছিলেন। একদিন সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) প্রকৃতির ডাকে সাড়া দানের জন্য জঙ্গলের দিকে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় ওমর (রাদিআল্লাহু আনহু)-র সঙ্গে দেখা। সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) দীর্ঘাকৃতির ছিলেন। ওমর (রাদিআল্লাহু আনহু) তাঁকে চিনে ফেললেন এবং বললেন, “সাওদা! আমি তোমাকে চিনে ফেলেছি।” ওমর (রাদিআল্লাহু আনহু)-র এই বাক্য সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা)-র নিকট অত্যন্ত অসহনীয় মনে হল এবং তিনি রসূল (ﷺ) -এর কাছে ওমর (রাদিআল্লাহু আনহু)-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন। সহীহ বুখারীতে আছে যে, এই ঘটনার পর পর্দার আয়াত নাযিল হলো এবং তারপর থেকে নারীদের জন্য পর্দা ফরয হয়ে গেল। সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) কিছুটা কড়া মেজাজের ছিলেন। অবশ্য তিনি সাধারণত হাসি-খুশি ছিলেন। এক রাতে রসূল (ﷺ) -এর সঙ্গে সলাত আদায় করলেন। নবী (ﷺ) দীর্ঘক্ষণ রুকুতে রইলেন। সকাল হলে তিনি বলতে লাগলেন, “ইয়া রসূলুল্লাহ! রাতে সলাতের সময় আপনি এত দীর্ঘক্ষণ রুকতে ছিলেন যে, আমার নাকশিরা ফেটে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছিল। সুতরাং আমি অনেকক্ষণ যাবত নাক চেপে রেখেছিলাম।” নবী (ﷺ) তাঁর কথা শুনে মুচকি হেসে দিয়েছেন। সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) অত্যন্ত রহম দিল এবং দানশীলা ছিলেন। যা কিছু তাঁর নিকট আসতো তা তিনি অত্যন্ত উদার হস্তে অভাবগ্রস্তদের মধ্যে বন্টন করে দিতেন। হাফিজ ইবনে হাজার (রাদিআল্লাহু আনহু) “ইছাবাহ” গ্রন্থে লিখেছেন, সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) হাতের কাজে পারদর্শিনী ছিলেন এবং তায়েফের চামড়া প্রস্তুত করতেন। এই কাজে যা আয় হতো তা সব আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে ফেলতেন।

ওমর ফারুক (রাদিআল্লাহু আনহু) তাঁকে উপহারস্বরূপ দিরহামের একটি থলে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এতে কি আছে? লোকজন বললো, “দিরহাম” তিনি বললেন, “থলেটি দেখতে তো খেজুরের থলের মতো।” এ কথা বলে তিনি খেজুর বন্টনের মত সকল দিরহাম অভাবগ্রস্তদের মধ্যে বন্টন করে দিলেন।

সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা)-র বয়স বেশী হয়ে গিয়েছিল। এদিকে আয়িশা (রাদিআল্লাহু আনহা)-র বয়স ছিল কম। এজন্য তিনি তাঁর পালা আয়িশা (রাদিআল্লাহু আনহা)-কে দিয়ে দিয়েছিলেন। আয়িশা সিদ্দিক (রাদিআল্লাহু আনহা) হৃষ্টচিত্তে তা গ্রহণ করেছিলেন। আয়িশা সিদ্দিকাহ (রাদিআল্লাহু আনহা)

বলেনঃ “সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) ছাড়া অপর কোন নারীকে আমি হিংসা ও পরশ্রীকাতরতা মুক্ত দেখিনি।”

সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) অত্যন্ত পবিত্র চরিত্রের মানুষ ছিলেন। একবার আয়িশা (রাদিআল্লাহু আনহা) বলেছিলেন : “সাওদা ছাড়া অপর কোন নারী সম্পর্কে আমার মনে আকাংখাও জাগেনি যে, তার দেহে যদি আমার আত্মা হতো।” সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) দশম হিজরীতে রসূলে কারীম (ﷺ)-এর সঙ্গে হাজ্জ করেন। তিনি ছিলেন দীর্ঘদেহী মানুষ। এজন্য দ্রুত চলতে বাধ্য হতেন। মুযদালিফা থেকে রওয়ানার পূর্বেই নবী (ﷺ) তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। যাতে ভিড়ে তাঁর কষ্ট না হয়। বিদায় হজ্জের সময় রসূলে কারীম (ﷺ) সকল স্ত্রীকে সম্বোধন করে বলেছিলেন, “এই হাজ্জের পর নিজেদের বসে থাকতে হবে।”

বস্তুত সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) এবং যায়নাব (রাদিআল্লাহু আনহা) বিনতে জাহাশ কঠোরভাবে এই নির্দেশ পালন করেছিলেন। অন্য স্ত্রীগণ হাজ্জ আদায় প্রশ্নে এই নির্দেশ ছিল না বলে মনে করতেন। কিন্তু সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) এবং যায়নাব (রাদিআল্লাহু আনহা) রসূল (ﷺ) -এর ওফাতের পর সারাজীবন ঘর থেকে বের হননি।

সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) বলতেন : “আমি হাজ্জ এবং ওমরাহ দু’ই আদায় করেছি। এখন নির্দেশ অনুযায়ী ঘর থেকে বাইরে বেরুবো না।”

সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) ওমর (রাদিআল্লাহু আনহু)-র শাসনামলে ২২ হিজরীতে ইন্তিকাল করেন। সাকরান (রাদিআল্লাহু আনহু)-র ঔরসে তাঁর একটি পুত্র ছিল। তাঁর নাম ছিল আব্দুর রহমান (রাদিআল্লাহু আনহু)। তিনি ওমর (রাদিআল্লাহু আনহু)-র খিলাফতকালে জালুলার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে শহীদের মর্যাদায় ভূষিত হন। রসূল (ﷺ) এর ঔরসে সাওদার গর্ভে কোন সন্তান হয়নি। সাওদা (রাদিআল্লাহু আনহা) থেকে পাঁচটি হাদীস বর্ণিত আছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন