hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সুখী ও সুন্দর পরিবার গঠন

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

১৭০
Appendix - 3 : উন্নত দেশ থেকে কিছু শিক্ষণীয় কিছু শিক্ষণীয় বিষয়
কানাডার মোট লোক সংখ্যা হচ্ছে প্রায় ৩৪,৪৮২,৭৭৯ এবং আয়তন হচ্ছে ৯.৯ মিলিয়ন স্কয়ার কিলোমিটার। ক্যানাডা পৃথিবীর মধ্যে প্রথম শান্তিপ্রিয় দেশ এবং তথ্য প্রযুক্তি (Information Technology) ব্যবহারের দিক থেকে দ্বিতীয়। দীর্ঘদিন ক্যানাডায় থেকে আমরা যে বিষয়গুলো এখানে দেখেছি এবং আমাদের কাছে শিক্ষণীয় হিসেবে মনে হয়েছে তার কিছু অংশ আমাদের বাংলাদেশে বসবাসকৃত মানুষের জন্য শিক্ষণীয় হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এখানে আমাদের যেন কেউ ভুল না বুঝেন যে আমরা একটি উন্নত দেশের প্রশংসা করছি আর নিজ দেশের বদনাম করছি। আসলে বিষয়টা মোটেও তা নয়। এখানে পৃথিবীর একটি উন্নতদেশের কিছু ভাল ভাল নিয়ম কানুন তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে যার উদ্দেশ্য আমাদের দেশেও যেন আমরা এরচেয়েও আরো উন্নতমানের সিস্টেম ডেভেলপ করতে পারি এবং বাংলাদেশকেও পৃথিবীর বুকে একটি শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি ও নিজের শান্তিতে বসবাস করতে পারি।

আমরা জানি বাংলাদেশ একটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ, আর স্বাভাবিকভাবেই সে দেশে ইসলামী নীতি পালিত হওয়ার কথা বেশী। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে যে আমাদের দেশে আমরা মুসলিম হিসেবে যতটা না ইসলামী নিয়ম-কানুন পালন করি কানাডা একটি অমুসলিম দেশ হওয়া সত্ত্বেও সেদেশের মানুষ আমাদের চেয়ে অনেক বেশী ইসলামী নিয়ম-কানুন পালন করে যাচ্ছে। আমরা মুসলিম হয়ে ইসলামী নিয়ম-কানুন ত্যাগ করেছি আর অমুসলিমরা তা গ্রহণ করে উপকৃত হচ্ছে। আসুন আমরা ক্যানাডার কিছু নিয়ম-কানুন দেখি।

১) মৌলিক চাহিদাঃ

এ দেশের সরকার প্রতিটি নাগরিকের জন্য তাদের basic needs-এর পাঁচটি বিষয় (খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা ও চিকিৎসা) নিশ্চিত করেছে। যাতে এই কয়টি বিষয়ে কেউ কোন প্রকার কষ্ট ভোগ না করে। আর আমরা জানি এটা মূলতঃ ইসলামী রাষ্ট্রের সরকারের দায়িত্ব যা আমীরুল মু'মিনীন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর (রা.) সর্বপ্রথম চালু করেছিলেন। যেমন :

ক. কেউ খাদ্যের অভাবে কষ্ট করে না বা কেউ না খেয়ে মারা যায় না।

খ. কেউ বস্ত্রে অর্থাৎ কাপড়ের অভাবে শীতে কষ্ট পায় না।

গ. কেউ চিকিৎসা বা ঔষুধের অভাবে কষ্ট পায় না বা মারা যায় না। চিকিৎসা করাতে কোন টাকা লাগে না। দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের চিকিৎসা সরকারের দায়িত্ব।

ঘ. যদি কারো থাকার জায়গা না থাকে সরকার তার ব্যবস্থা করে থাকে।

ঙ. শিক্ষার বিষয়ে সরকার খুবই সচেতন, প্রতিটি শিশুকে অবশ্যই স্কুলে যেতে হবে এবং তাদের ১২ গ্রেড অর্থাৎ আমাদের দেশের এইচ.এস.সি পর্যন্ত সমস্ত পড়াশোনার সকল খরচ সরকার বহন করে।

২) স্কুল:

প্রতিটি এলাকাতে হাঁটার দূরত্বের মধ্যে একটি করে প্রাইমারী বা এলিমেন্টারী স্কুল রয়েছে। যাতে ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে মা বা বাবা হেঁটেই স্কুলে যেতে পারেন। প্রতিটি ছেলেমেয়ের জন্য ১২ গ্রেড হাইস্কুল পর্যন্ত পড়ালেখা করা বাধ্যতামুলক। হাইস্কুল শেষ করে ছেলেমেয়েরা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়।

৩) স্কুলে পড়া-লেখা :

প্রতিটি স্কুলে স্কুল পিরিয়ডের মধ্যেই লেখাপড়া শিখিয়ে দেয়া হয় যাতে বাসায় গিয়ে আর পড়তে না হয়। এখানে প্রাইভেট পড়ার কোন কালচার নেই বা কোচিং সেন্টারের কোন কালচার নেই। যদিও এশিয়ান কমিউনিটির লোকেরা এদেশে আসার পর কোথাও কোথাও এই কালচার কিছুটা শুরু করেছে তবে সেটা ওদের সমাজেই সীমাবদ্ধ। তবে মূলতঃ ক্যানডিয়ানরা প্রাইভেট পড়া বা কোচিং কি বস্তু তা চিনেই না। বন্ধের দিনে সাধারণতঃ বাসায় কোন হোমওয়ার্ক দেয়া হয় না যাতে বাচ্চারা বন্ধের দিনগুলো আনন্দের সাথে কাটাতে পারে।

৪) সেশন, পরীক্ষা ও স্কুল ছুটি:

কানাডার সমগ্র দেশে যতো স্কুল আছে (গ্রেড ১ থেকে ১২) সবার সেশন এবং পরীক্ষা একই দিনে শুরু হয় একই দিনে শেষ হয়। এবং দেশের যতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, (যেমনঃ স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি) ওদের ভেকেশন একই দিনে শুরু হয় এবং শেষ হয়। ইউনিভার্সিটিগুলোতে কোন সেশনজট নেই।

৫) স্কুলের উপস্থিতি :

কোন বাচ্চা যদি স্কুলে পনের মিনিট দেরীতে যায় তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বাসায় বাবা-মাকে ফোন দিয়ে জানায়। আর যদি কোন বাচ্চা স্কুলে একদিন না যায় তাহলে তো অবশ্যই কর্তৃপক্ষ বাসায় বাবা-মাকে ফোন দিয়ে জানায় এবং অনুপস্থিতির কারণ জানতে চায়। এতে কোন বাচ্চার স্কুলে ফাঁকি দিয়ে অন্য কোথাও যাওয়া উপায় নেই। স্কুলে পি.এ.ডে, এই দিনে স্কুলে বাচ্চার প্রতিটি অভিভাবককে আমন্ত্রণ করা হয় এবং তার বাচ্চার বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে এক এক করে আলোচনা করা হয়। (বাচ্চার উন্নতি ও অবনতি ইত্যাদি)

৬) স্কুল বাস এবং বাচ্চাদের নিরাপত্তা:

বাচ্চাদের জন্য রয়েছে হলুদ রংঙের স্কুল বাস। এই বাস যেকোন রাস্তায় সিগনাল দিয়ে যদি দাঁড়ায় তাহলে অন্য কোন গাড়ি তাকে অতিক্রম করে যেতে পারে না যতক্ষণ পযর্ন্ত না সকল বাচ্চারা নিরাপদে গাড়িতে উঠবে অথবা নামবে, তারপর ড্রাইভার সিগনাল বন্ধ করলে অন্যান্য গাড়ি যেতে পারবে। অন্যথায় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী হলেও তার গাড়ি থামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন।

৭) ছাত্র-ছাত্রীদের ভলান্টারি :

প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে কোন নন-প্রফিট সোল অর্গানাইজেশনে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সময় ভলান্টারি কাজ করতে হয় এবং এই ভলান্টারি ঘন্টাগুলো তার পরীক্ষার সাথে ক্রেডিট হিসেবে যোগ হয়। এতে দিন দিন প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রী ছোট বয়স থেকেই স্বয়ং কাজ করতে স্বাবলম্বি হয়। আবার যাদের বয়স ৬৫ হয়ে যায় এবং রিটায়ার করেন তারা শুধু গল্পগুজব আর পেপার পরে দিন কাটান না। তারাও প্রতি সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট ঘন্টা ভলান্টারী করেন, এতে তার শরীরও ভাল থাকে এবং মনও ভাল থাকে।

৮) সিকিউরিটি :

দেশের প্রতিটি নাগরিকের ২৪ ঘন্টা সিকিউরিটি দেয়া সরকারের দায়িত্ব। রাত দু'টার সময়ও কোন একটি সুন্দরী যুবতী মেয়ে সোনার অলংকার পরে একটি নিরিবিলি রাস্তা দিয়ে নির্দ্বিধায় হেঁটে যেতে পারে। তাকে কেউ কিছু বলবে না। আবার ব্যাংক থেকে যে কেউ বড় অংকের টাকা উত্তোলন করে হেঁটে বাসায় চলে আসতে পারে, কেউ রাস্তায় বোমা ফাটিয়ে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় না।

৯) শীত নিবারণ :

ক্যানাডা একটি শীত প্রধান দেশ। শীতকালে স্থান বিশেষে এদেশে তাপমাত্রা minus 50/minus 60 degree centigrade-এ নেমে যায়। তবে যে সকল বাড়ির মালিক তাদের বাড়ি ভাড়া দেন তারা কোনভাবেই তার ভাড়াটিয়াকে শীতে কষ্ট দিতে পারবেন না। অর্থাৎ বাড়িতে হিটিং সিস্টেম ভালভাবে কার্যকরী থাকতে হবে। এখানে প্রতিটি বাড়ি বা এপার্টমেন্টে হিটিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।

১০) পানির সুবিধা :

এ দেশের প্রতিটি বাড়ি, এপার্টমেন্ট, দোকান, শপিং মল, মসজিদ, চার্চ, স্কুল, কলেজ, অফিস সব জায়গায় সারা বছর গরম এবং ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা আছে। অর্থাৎ রান্নাঘরে বা বাথরুমের কল দিয়ে গরম এবং ঠান্ডা পানি উভয় বের হয়, এর জন্য দুটি আলাদা tap বা faucet থাকে, ঠান্ডা এবং গরম। আবার সরকার সেইফটির জন্য আইন করে দিয়েছে যে, পানি এতোটা গরম হতে পারবে না যাতে কারো হাত বা শরীর পুড়ে যেতে পারে।

১১) ইনকাম ট্যাক্স :

দেশের ধনী বা গরীব প্রতিটি নাগরিক বছরের শুরুতে গত বছরের ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করেন। এতে সরকার জানতে পারেন কার সরকার যাদের আয় কম তাদেরকে দিয়ে থাকেন, এতে সমাজে একটা ব্যালেন্স আসে।

১২) বেকার ভাতা :

কারো চাকুরী চলে গেলে এদেশে employment insurance করা থাকে। ঐ চাকুরীহারা ব্যক্তি তার gross ইনকামের ৮০% দশ মাস পর্যন্ত বেতন পাবেন। এই দশ মাসে তিনি আরেকটি নতুন চাকুরীর সন্ধান করবেন। এই দশ মাসে তিনি কানাডার বাইরে খুব জরুরী কারণ ছাড়া বেড়াতে যেতে পারবেন না, গেলে ভাতা পাবেন না। এই দশ মাস সময়ে সরকার ঐ ব্যক্তির ক্যারিয়ার ডেভেলমেন্টের জন্য শর্ট কোর্স, লংকোর্স, কলেজ ডিগ্রি বা ইউনিভার্সিটি কোর্স করার জন্য ভাল অংকের টাকা দিয়ে উদ্বুদ্ধ (encourage) করে থাকে।

১৩) সময়মতো বিল পরিশোধ :

কেউ কোন বিল বাকি রাখেন না। বিল সময় মতো পরিশোধ করার জন্য সবাই ব্যাকুল থাকে। কারণ সময় মতো বিল পরিশোধ না করলে তার ক্রেডিট হিস্ট্রি খারাপ হয়ে যাবে, তাতে অনেক জায়গাতেই বিপাকে পড়তে হবে।

১৪) শৃংখলা :

কোথায় কোন লাইনে দাঁড়াতে হলে কেউ কাউকে ডিংগিয়ে আগে যাওয়ার চেষ্টা করেন না। আর কাউকেতো ধাক্কা দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। সবাই সুশৃংখলভাবে ধৈর্য ধরে এগুতে থাকেন।

১৫) সমাজ কল্যাণ :

কারো যদি E... (Employment Insurance) শেষ হয়ে গিয়ে থাকে এবং তিনি কোন চাকুরী না পেয়ে থাকেন তাহলে তিনি ওয়েলফেয়ার-এর জন্য আবেদন করতে পারেন। কোন চাকুরী না পাওয়া পর্যন্ত পরিবার চালানোর জন্য তিনি একটি নির্দিষ্ট অংকের ভাতা পেতে থাকেন। এই অংকও নির্ধারিত হবে তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী। এই সময় সরকার ঐ ব্যক্তির ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টের জন্য সর্ট কোর্স, লংকোর্স, কলেজ ডিগ্রি বা ইউনিভার্সিটি কোর্স করার জন্য ভাল। অংকের টাকা দিয়ে উদ্বুদ্ধ করে থাকে।

১৬) নৈতিক চরিত্র :

লোকেরা সহজে মিথ্যা কথা বলেন না, চুরি করেন না, ডাকাতি করেন না, ছিনতাই করেন না, রাহাজানি করেন না, ধর্ষণ করেন, রাস্তাঘাটে যুবতী মেয়েদেরকে কেউ উত্যক্ত করে না। এখানে কোন মলম পার্টি নেই। কোন ধোকাবাজ নেই।

১৭) পুলিশ হচ্ছে জনগণের বন্ধু :

পুলিশ হচ্ছে জনগণের সবচেয়ে বড় বন্ধু। যে কোন বিপদে যে কেউ দিনে-রাতে যে কোন সময়ে ফোনে ৯১১ টিপে ডাকলেই মুহুর্তের মধ্যে পুলিশ চলে আসবে। আর কোন মহিলা সাহায্য চাইলে তো কোন কথায়ই নেই, মিনিটের মধ্যে এসে হাজির। পুলিশরা কারো থেকে কোন ঘুষ নেন না বরং কেউ দিতে চাইলে তাকে এরেষ্ট করেন।

১৮) অসুস্থ সেবা :

কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে কোন রকম যদি সে তার ফোন থেকে ৯১১ টিপতে পারে, তাহলে সাথে সাথে পুলিশ, এম্বুলেন্স এবং ফায়ার সার্ভিস এসে তার বাসায় হাজির হয়। এমনকি অজানা কোন রাস্তার মোড় থেকেও কল করলে সেখানেই চলে আসবে। তিনটি সার্ভিস একসাথে আসার কারণ হচ্ছে যে, এম্বুলেন্স আসে রোগীর সেবা করতে, ফায়ার সার্ভিস আসে প্রয়োজনে বাড়ির দরজা ভেংগে ভেতরে ঢুকতে, পুলিশ আসার কারণ হচ্ছে যদি দুর্ঘটনায় অসুস্থ বা ইনজুরি হয়ে থাকে বা কেউ আঘাত করে থাকে তাহলে কেইস লিখতে হবে। যারা খুবই বৃদ্ধ তাদের জন্য রয়েছে এক ধরণের ঘড়ি, যদি তিনি অসুস্থ বোধ করেন তাহলে তিনি শুধু ঐ ঘড়ির বোতামে চাপ দিলেই তার বাসায় কয়েক মিনিটের মধ্যেই এম্বুলেন্স চলে আসবে, বাসার ঠিকানাও বলতে হবে না।

১৯) হেলিকপ্টার এম্বুলেন্স :

এদেশে হেলিকপ্টার এম্বুলেন্সও রয়েছে। রোগীর যদি এমন অবস্থা হয় যে তাকে অতি দ্রুত হসপিটালে নিতে হবে তখন হেলিকপ্টার এম্বুলেন্স চলে আসে। যেমন হাইওয়েতে কোন এক্সিডেন্ট হলে। অনেক হসপিটালের ছাদেই হেলিকপ্টার ল্যান্ড করার জন্য হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা থাকে।

২০) পোষ্ট অফিস :

পোষ্ট অফিস সার্ভিস হচ্ছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত। প্রতিদিন প্রতিটি বাসায় প্রচুর চিঠিপত্র এসে থাকে। চিঠিপত্র সাধারণতঃ মিসিং হয় না। পাসপোর্ট অফিস ডাকযোগে বাসায় পাসপোর্ট পর্যন্ত পাঠিয়ে থাকে যা আমাদের দেশে কল্পনাও করা যায় না।

২১) পাসপোর্ট অফিস :

পাসপোর্ট অফিসে কোন দালাল নেই, কোন ঘুষ নেই, অতিরিক্ত কোন পয়সা দিতে হয় না। পুলিশ ভেরিফিকেশন নেই, ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানী নেই। তারা মনে করে এটা সরকারের একটা সার্ভিস আর জনগণের জন্য সেবা। পাসপোর্টর জন্য আবেদন করলে এক সপ্তাহের মধ্যে বাসায় বাইপোষ্টে পাসপোর্ট চলে আসে।

২২) হরতাল ও মিছিল :

সরকারের বিরুদ্ধে কোন হরতাল হয় না, মিছিল হয়। গাড়ি ভাংচুর হয় না, গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয় না, গাড়ির মধ্যে রেখে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা হয় না। দেশের সরকারের এবং জনগণের কোন প্রকার ক্ষতি করা হয় না। গাড়ির চাকার টায়ারের পাম্প ছেড়ে দেয়া তো দূরের কথা রাস্তার পাশ থেকে একটা ছোট গাছের ডালও কেউ ভাঙে

২৩) রাজনীতি :

নোংরা রাজনীতি নেই। রাজনৈতিক দলে দলে দলাদলি নেই। কোন দল কোন দলের বিরুদ্ধে বা কোন নেতা আরেক নেতার বিরুদ্ধে কোন কটুক্তি করে না, মিথ্যা কথা বলে না, কোন অপবাদ দেয় না। জনগণের ভিতর থেকে কেউ রাজনৈতিক দলে সাধারণতঃ ভীড়ে না। রাজনৈতিক নেতাদের কেউ এখানে ঠিক মতো চিনেও না।

২৪) মিনিস্টার ও এম.পি. :

প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকল মন্ত্রী এবং এম.পি-রা সরকার থেকে কোন প্রকার অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নেন না। তারা যখন কোথাও যায় তখন তাদের পিছনে শতশত লোক হাঁটে না। প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কোন মন্ত্রী কোথাও গেলে রাস্তাঘাট বন্ধ করে জনগণের অসুবিধা সৃষ্টি করা হয় না।

২৫) ড্রাইভিং :

গাড়ি চালানোর জন্য কোন ড্রাইভার রাখা হয় না। সবাই নিজ নিজ গাড়ি নিজে চালায় যদি সে মন্ত্রীও হয়। সবাই ট্রাফিক সিগনাল ১০০% মেনে চলে। যেমন রাত দুটার সময় একটি ফাঁকা রাস্তা দিয়ে কেউ আইন মান্য করে দাঁড়িয়ে গেল।

২৬) এক্সিডেন্ট :

দুটি গাড়িতে এক্সিডেন্ট হলে দুই গাড়ির মালিক গাড়ি থেকে নেমে একে অপরের সাথে ঝগড়া শুরু করে না। বরং দু’জনই পুলিশকে খবর দেয়, মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ স্পটে চলে আসে, তারপর ইনভেস্টিগেশন করে আসল রিপোর্ট দেয় যে কার ভুলের জন্য দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষই সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়ে দুজন দুজনের ইনসিওরেন্স কোম্পনীকে ক্ষতিপূরণের জন্য জানায় এবং সময়তো ক্ষতিপূরণ পেয়ে যায়।

২৭) ফায়ার সার্ভিস :

আগুন লাগাতো দূরের কথা কোথাও কোন ধূয়া উঠছে খবর পেলেই ফায়ার সার্ভিসের অত্যাধুনিক গাড়ি কয়েক মিনিটের মধ্যে চলে আসে। প্রতিটি বাড়িতে বা বিল্ডিংয়ে দুইটি Exit থাকে, অর্থাৎ বাহির হওয়ার রাস্তা দু'টি থাকে। একদিকে আগুন লাগলে অন্যদিক দিয়ে লোক বের হয়ে যেতে পারে। এছাড়া প্রতিটি বাড়িতে উন্নত মানের পানি ছিটানোর sprinkler ও ফায়ার হোজের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি বাড়ির সামনে দিয়ে যে রাস্তা রয়েছে সেই রাস্তার দুই পাশ দিয়ে কিছু দূর পরপর ফায়ার ডিপার্টমেন্টের জন্য হাই ভলিউমের পানির কানেকশন রয়েছে। সাইরেন বাজাতে বাজাতে ফায়ার সাভির্সের গাড়ি বা পুলিশের গাড়ি বা এম্বুলেন্স যখন কোন রাস্তা দিয়ে যায় তখন রাস্তা দিয়ে চলন্ত অন্যান্য সাধারণ গাড়ি রাস্তার পাশে সাইড করে দাঁড়িয়ে যায় অর্থাৎ তাদেরকে যাওয়ার জন্য রাস্তা ক্লিয়ার করে দেয়। কোন গাড়ি যদি না থামে তাহলে তাকে ফাইন করা হয়।

২৮) হিউম্যান রাইটস:

এই বিষয়টা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ মানুষের জীবনের মূল্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য সকল ব্যবস্থা করা হয়। যেমন কাউকে মানসিকভাব কষ্ট দেয়া যাবে। না, বিনা কারণে দোষারোপ করা যাবে না, গ্রেফতার করা যাবে না, কাউকে নাজেহাল করা যাবে না, কারো দিকে কু-দৃষ্টিতে তাকানো যাবে না, কারো পোশাক নিয়ে বা চেহারা নিয়ে বা গায়ের বর্ণ নিয়ে কোন প্রকার মন্তব্য করা যাবে না। ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র, মহিলা-পুরুষ সকলের সমান অধিকার। একজন এম.পির যে অধিকার একজন লেবারেরও সেই অধিকার। চাইল্ড পর্নগ্ৰাফী সম্পূর্ণরূপে আইনত নিষিদ্ধ।

২৯) এ্যানিম্যাল রাইটস:

মানুষের মতো এদেশে পশু-পাখিরও অধিকার রয়েছে। কোন পশু-পাখি মারা যাবে না, তাদেরকে কোন প্রকার কষ্ট দেয়া যাবে না। কোন পশু-পাখি যদি কোন বিপদে পড়ে তাহলে Animal control department-কে জানালে তারা এসে তাকে সাহায্য করবে। পশু-পাখি শিকার করতে হলে নির্দিষ্ট এরিয়া আছে সেখানে গিয়ে শিকার করতে হয় তবে অবশ্যই শিকারের লাইসেন্স নিয়ে নিতে হবে, তা না হলে ফাইন করা হবে। নদী-খাল-বিল থেকে মাছ শিকার করতে হলেও আগেই লাইসেন্স করে নিতে হয়। এই ধরণের লাইসেন্স বাৎসরিক দেয়া হয়। একটি ঘটনার মাধ্যমে এ্যানিম্যাল রাইটস এর গুরুত্ব দেখা যাক। একবার ট্রেন লাইনের দুই ফাঁকের মাঝে একটি বিড়ালের বাচ্চা আটকা পড়েছিল। সেই বিড়ালের বাচ্চাকে উদ্ধার করার জন্য হাজার হাজার ডলার ব্যয় করা হয়েছিল। যেমন ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, ইঞ্জিনিয়ার এবং ফায়ার সার্ভিস সাহায্য করেছিল, উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত টিভি চ্যানেলগুলো নিউজ প্রচার করেছিল।

৩০) রিলিজিয়াস রাইটস :

প্রত্যেক ধর্মের লোকদের সমান অধিকার। কেউ কারো ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করতে পারবে না বা হেয় করতে পারবে না। যে যার ধর্ম অন্য ধর্মের লোকের নিকট প্রচার করতে পারবে। অর্থাৎ যার যার ধর্ম ঠিক মতো পালন করতে পারবে। যেমন : অফিসে সলাতের সময় হলে সলাতের জন্য সময় দিতে হবে বা রমাদানে ইফতারের জন্য সময় দিতে হবে। আবার কেউ চাইলে যে কারো বাসার দরজায় গিয়ে নক করে তার ধর্মের দাওয়াত দিতে পারে, ধর্মীয় বইপত্র দিতে পারে। অথবা কোন শপিং মলে বা ব্যস্ততম রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে যে কেউ যে কোন ধর্মগ্রন্থ বিলি ও প্রচার করতে পারেন।

৩১) ড্রেসের স্বাধীনতা :

যে যার ইচ্ছে মতো যে কোন প্রকারের ড্রেস পড়তে পারবে। হতে পারে সেটা এক হাতা আছে অন্য হাতা নেই বা দুই পায়ের দুই মোজা বা দুই ধরণের জুতা পরতে পারে এতে কেউ কিছু মন্তব্য করে এবং আইনতঃ কোন মন্তব্যও করতে পারবে না। মুসলিম মহিলারা নিকাবসহ বোরকা পড়ে সব যায়গায় যেতে পারেন।

৩২) শিক্ষকের মর্যাদা :

শিক্ষকের মর্যাদা দেয়া হয় সবচেয়ে বেশী। সেজন্য অন্যান্য প্রফেশনের চেয়ে তাদের বেতনও বেশী। কোন ছাত্র শিক্ষকের গায়ে হাত তুলে না। স্কুল কমিটিও অবৈধভাবে শিক্ষকের চাকুরী খান না।

৩৩) সরকারী চাকুরী :

এদেশে সরকারী অফিস আমাদের দেশের পুরো বিপরীত। তারা কাস্টমার সার্ভিস দেয়ার জন্য এক পায়ে দাঁড়ানো, কোন অবহেলা নেই। তাদের সার্ভিস প্রাইভেট কোম্পানীর চেয়েও উন্নত। এছাড়া সরকারী অফিসে কোন ঘুষ দিতে হয় না বা কোন কাজের জন্য মামা-খালু ধরতে হয় না, কোন তদবির করতে হয় না। টেলিফোনের মাধ্যমে বহু কাজই সমাধা করা যায়, সেই অফিসে যেতে হয় না। যেমন তাদের সার্ভিস তেমন তাদের কাজের কোয়ালিটি। সরকারী অফিস থেকে যে কোন কাজ নিশ্চিন্তে সমাধা করে বাসায় ফেরা যায়। এখানে পাবলিকের চলাচলের জন্য বাস, ট্রেন, লন্স ইত্যাদিও সরকারী। তাহলে বুঝাই যাচ্ছে তাদের সার্ভিস কতো উন্নত মানের। যেমন, একদিন একটি বাস ড্রাইভার বাস চালানোর সময় তার মোবাইলে এস.এম.এস পাঠাচ্ছিলেন এবং কোন যাত্রী সেই দৃশ্য ভিডিও করে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে এবং বাস ড্রাইভারের চাকরী চলে গেছে।

৩৪) পুলিশদের বেতন এবং পদবি :

আইন শৃংখলা রক্ষার্থে পুলিশরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পুলিশরা সবাই উচ্চ শিক্ষিত। এখানে পুলিশের চাকুরী শুরুই হয় অফিসার লেভেল দিয়ে, অর্থাৎ কোন সিপাই নেই। সব পুলিশ অফিসারদেরকে একটি করে গাড়ি দেয়া হয় ডিউটি পালন করার জন্য। পুলিশরা খুবই হাই স্কেলে বেতন পেয়ে থাকে। যেমন একজন নতুন পুলিশ অফিসারের বেতন বাংলাদেশী টাকায় আট লাখ টাকা। পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সবগুলো গাড়ির দুপাশে লেখা থাকে To SERVE AND PROTECT.

৩৫) কোথাও পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগে না :

কোথাও কোন কাজে গেলে আমাদের দেশের মতো কোন পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগে না। যদি কোথাও লাগে তাহলে তারাই ঐ ব্যক্তির ছবি তুলে প্রিন্ট করে নেয়।

৩৬) অরিজিনাল সার্টিফিকেট দেখাতে হয় না :

চাকুরী নিতে গেলে কোথাও অরিজিনাল সার্টিফিকেট দেখাতে হয় না আর ফটোকপির সত্যায়নও লাগে। বায়োডাটাতে যা লিখা হয় তাই বিশ্বাস করা হয়। তবে চাকুরী পাওয়ার পর কাজ দিয়ে তা প্রমাণ করতে হয়।

৩৭) চারিত্রিক সার্টিফিকেট লাগে না :

কোন চাকুরীর পদে আবেদনের জন্য কোন প্রকার চারিত্রিক সার্টিফিকেট লাগে না, চেয়ারম্যানের সার্টিফিকেট লাগে না। চারিত্রিক সার্টিফিকেট বলতে এখানে কেউ কিছু বুঝেই না।

৩৮) চাকুরীর জন্য বায়োডাটা :

বায়োডাটাতে কোন ব্যক্তিগত তথ্য থাকে না, যেমন : বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখ, দেশের বাড়ি কোথায়, পুরুষ না মহিলা, উচ্চতা, ওজন ইত্যাদি। ইন্টারভিউ বোর্ডে যারা ইন্টারভিউ নেবেন তারাও প্রার্থীকে কোন প্রকার ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে পারবেন না। যেমন বয়স কত? কোন দেশী? বা আপনিতো মহিলা বা পুরুষ ইত্যাদি। চাকুরীর বিজ্ঞাপনের সময়ও লেখতে পারবেন না যে শুধু মহিলা বা শুধু পুরুষ প্রার্থী। এর কারণ হচ্ছে যে চাকুরীতে নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে এই সকল বিষয় নিয়ে যেন কোন প্রকার ডিসক্রিমিনেশন করা না হয়।

৩৯) এয়ারপোর্টের সার্ভিস :

এয়ারপোর্টে প্লেন থেকে নেমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে লাগেজ নিয়ে বের হয়ে আসা যায়। কোন প্রকার জটিলতা নেই, নেই কোন প্রকার নাজেহাল আর দুর্নীতি নেই।

৪০) কেউ কারো দিকে তাকিয়ে থাকে না :

রাস্তা-ঘাটে, শপিংমলে বা কোন স্টেশনে কেউ কারো দিকে সাধারণতঃ তাকায় না। কোন পুরুষ কোন সুন্দরী মহিলার দিকে তাকিয়ে থাকে না। আর কোন মেয়ে যদি কোন পুরুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে তার দিকে কু-দৃষ্টিতে তাকিয়েছে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হয়।

৪১) বাসে বা ট্রেনে কেউ ধাক্কাধাক্কি করে উঠে না :

বাসে বা ট্রেনে কেউ ধাক্কা ধাক্কি করে উঠে না, যতোই ভিড় হোক সবাই এক এক করে শৃঙ্গলাবদ্ধভাবে এগুতে থাকে, কেউ কারো গায়ের সাথে টাচ করে না। বাস ড্রাইভার একা এতোগুলো যাত্রী স্টপে স্টাপে উঠায় এবং নামায়, কোন হেলপার নেই। এছাড়া ভাড়া নেয়ার জন্য কোন কন্ডাক্টরও নেই। যাত্রীরা বাসের সামনের দরজা দিয়ে উঠার সময় ড্রাইভারের পাশে একটি sealed box/machine এ ভাড়া ফেলে সিটে বসে যায়। নামার সময় পিছনের দরজা দিয়ে নেমে যায়। বাস, ট্রেন বা স্টিমারের ছাদের উঠার কথাও কল্পনাও করে না।

৪২) হসপিটাল সার্ভিস :

একটি উদাহরণ দিলেই হসপিটালের সার্ভিস সম্পর্কে বুঝা যাবে। আমার (আমির জামানের) চোখে একবার কিছু পাউডার গিয়েছিল। তখন আমি হসপিটালে গেলাম, তারা আমার হিস্ট্রি নিয়ে চোখ নানাভাবে পরীক্ষা করলো যে চোখের কোন ক্ষতি হয়েছে কিনা। তারপর একজন নার্স ঘন্টাখানেক আমার চোখে আই ওয়াশ ওয়াটার ঢাললো। আমার চোখে যে পাউডার গিয়েছে হসপিটালের ডাক্তার সেই পাউডার কোম্পানীর কাছে ফোন করেছে যে এই পাউডারের মধ্যে কী কী রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। ঐ পাউডার কোম্পানী আমেরিকার আরেক কোম্পানী থেকে র-মেটারিয়ালস ইম্পোর্ট করে তারা শুধু এসেম্বল করে, তাই তারা সঠিক উত্তর জানে না। এবার ডাক্তার ইন্টারনেট থেকে ঐ আমেরিকান কোম্পানীর ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে তাদেরকে ফোন দিয়েছে রাসায়নিক উপাদানগুলো জানার জন্য। ডাক্তার নিশ্চিত হয়ে তারপর আমার চোখের সঠিক চিকিৎসা শুরু করেছেন। আমার মনে হয় না আমাদের বাংলাদেশে কোন হসপিটাল বা কোন ডাক্তার এই কাজ করবেন।

৪৩) সব কর্মক্ষেত্র কম্পিউটারাইজড :

এদেশের প্রত্যেকটা কর্মক্ষেত্র কম্পিউটারাইজড। যে কোন কাজ কম্পিউটারাইজড। তাই যারা কম্পিউটার ব্যবহার করতে জানেন না তারাও একসময় ব্যবহার জেনে যায়। কারণ। উপায় নেই। একটা সাধারণ ফর্ম পূরণ করতে হলেও সফট কপি কম্পিউটারে বসে করতে হয়। কোথাও আবেদন করতে হলেও কম্পিউটারে করতে হয়।

৪৪) ময়লা ফেলা :

কেউ কোন বিস্কিট বা চকলেট বা আইসক্রিম খেলে রাস্তা ঘাটে, পার্কে ময়লা-আবর্জনা ফেলে না। প্রয়োজনে হাতে বা ব্যাগে করে নিয়ে ঘুরে। তবে রাস্তা-ঘাটে, পার্কে কিছু দূর পরপরই ময়লা ফেলার জন্য বিন (bin) রয়েছে। প্রতি রাতে এক ধরণের বিশেষ গাড়ি ব্রাশ এবং শ্যাম্পু দিয়ে রাস্তা ওয়াশ করে থাকে। রাস্তা-ঘাটে কোথাও ময়লা-আবর্জনার দূর্গন্ধ পাওয়া যায় না। অনেকেই কুকুর পালেন, যখন কুকুর নিয়ে বাইরে বের হন তখন সথে পলিথিনের ব্যাগ রাখেন এবং কুকুর মল ত্যাগ করলে তা নিজ হাতে পলিথিন ব্যাগে তুলে নিকটস্থ কোন ডাস্টবিনে ফেলে দেন।

৪৫) কেউ মিথ্যা কথা বলে না :

আশ্চর্যের বিষয় এরা মুসলিম নয় কিন্তু তারা সাধারণতঃ মিথ্যা কথা বলে না। এই দেশের শিশুরা জন্মের পর থেকেই মিথ্যা কথা শিখে না। তারা জানেই না মিথ্যা কী? ছল-চাতুরী কী? চিটিং কী? দুই-নাম্বারী কী?

৪৬) যার যার কাজ নিজে করা :

এখানে যার যার কাজ সে নিজে করে। দেশে সে যতো বড় অফিসারই হোক না কেন। এখানে নিজের ঘর নিজে মুছতে হয়, নিজের থালা-বাটি-হাঁড়ি-পাতিল নিজে ধুতে হয়। নিজের রান্না নিজে করতে হয়। নিজের কাপড় নিজে ধুতে হয়। বাড়ীতে মালি নেই, কাজের বুয়া নেই, দারোয়ান নেই, গাড়ীর ড্রাইভার নেই। অফিসে পিয়ন নেই। পেট্রল পাম্পে নিজের গাড়িতে নিজে তেল ভরে নিতে হয়।

৪৭) বাকির সিস্টেম নেই :

কোন দোকানে বাকির খাতা নেই। বাকিতে যে কিছু কেনা যায় এটা তারা জানেই না। তবে ক্রেডিট কার্ডের বিষয় ভিন্ন, ক্রেডিট কার্ড থেকে দোকানদার ঐ মুহুর্তেই টাকা পেয়ে যায়।

৪৮) WSIB:

Workplace Safety & Insurance Board' কেউ যদি তার অফিসে বা কাজের জায়গায় কোন প্রকার দুর্ঘটনায় পতিত হয় এবং এর জন্য অফিসে বা কাজে যেতে না পারে তাহলে এই বোর্ড তাকে তার gross salary-র ৯০% প্রতি মাসে দিয়ে থাকে যতদিন সে কাজে যেতে না পারে। অর্থাৎ তার সুস্থ হতে যতো দিন সময় লাগে। এমনও হতে পারে এক দুই মাস নয় পাঁচ-দশ বছরও লাগতে পারে, কিন্তু সে ঘরে বসে বেতন পাবে।

৪৯) ধনী-গরীব সবাই সমান :

একজন লেবার যে দোকান থেকে কফি কিনে বা যে মার্কেট থেকে বাজার করে একজন ব্যাংকের এমডিও সেই দোকান থেকে কফি কিনে, সেই মার্কেট থেকেই বাজার করে। দুই শ্ৰেণাই কাজ শেষে বিকেলে রিক্রিয়েশনের জন্য একই জায়গায় যায়। এখানে ধনী গরীবের কোন ভেদাভেদ নেই। কোন মালিকও তার কর্মচারীর প্রতি যুলুম করেন না, তাকে সবসময় তার কাজের জন্য appreciation করেন।

৫০) Human Resource Centre :

রাস্তার মোড়ে মোড়ে হিউম্যান রিসোর্স সেন্টার রয়েছে জনগণের জন্য। এই রিসোর্স সেন্টারে রয়েছে নানারকম সুযোগ-সুবিধা যা সবই ফ্রী। যেমন : উন্নত কম্পিউটার, লেজার প্রিন্টার, স্ক্যানার, ফ্যাক্স, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ফটোকপি মেশিন এবং চাকুরী সন্ধানের জন্য নানারকম গাইড বুক, ডাইরেক্টরী, অনলাইন জব সার্চ সফটওয়ার, ট্রেইনার ইত্যাদি। এই সকল সেন্টারে বসে যে কেউ বিনা পয়সায় তার ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টের জন্য চেষ্টা করতে পারে। চাকুরীর ইন্টারভিউতে অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থীকে নানারকম ট্রেনিং দেয়া হয়। যারা কম্পিউটার ব্যবহার জানেন না তাদেরকে কম্পিউটার ট্রেনিং দেয়া হয়। যে কেউ এখানে বসে প্রতিদিন কম্পিউটার প্র্যাকটিস করতে পারেন।

৫১) পাবলিক লাইব্রেরী :

প্রতিটি এলাকায় একটি করে উন্নতমানের রেফারেন্স লাইব্রেরী রয়েছে। যে কেউ বিনা পয়সায় মেম্বার হতে পারেন এবং লাইব্রেরীতে বসে পড়া-লেখা এবং রিসার্চ করতে পারেন এবং প্রয়োজনে বই, ডিভিডি বাসায় নিয়ে যেতে পারেন। প্রতিটি লাইব্রেরীতেও কম্পিউটার, প্রিন্টার এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। সব সার্ভিসই ফ্রী।

৫২) সবার জন্য চাকুরী :

এই দেশে ছোট-বড়, পুরুষ-মহিলা সবাই সাধারণতঃ চাকুরী করেন। অর্থাৎ যে কেউ চাইলেই কিছু অর্থ আয় করতে পারেন। স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা বেশীরভাগই পার্ট-টাইম চাকুরী করে থাকে। এতে অল্প বয়স থেকেই ছেলেমেয়েরা কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়ে যায়। তাই যখন একটি ছেলে বা মেয়ে ১২ গ্রেড বা হাইস্কুল পাশ করে তখন সে অনেক অফিসেই চাকুরী করতে পারে। এমনকি হাইস্কুল পাশ করার পর ব্যাংকিং এর উপর একটি শর্ট কোর্স করেই ব্যাংকে চাকুরী করতে পারে, যে চাকুরী করতে আমাদের দেশে মিনিমাম মাস্টার্স পাশ হতে হয়।

৫৩) নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দিন দিন কম :

এই বিষয়টা আমাদের দেশের ঠিক উল্টো। আমাদের দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম দিন দিন বাড়ে। এখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম সারা বছর প্রায় একই ধরনের থাকে। যাতে সব শ্রেণীর লোকেরা কিনতে পারে। সেটা খাবার-দাবার থেকে শুরু করে ঘরের ফার্ণিচার এবং ইলেকট্রনিক্স জিনিষ। যে কেউ চাইলেই অতিসহজে একটা LCD TV কিনতে পারে, যে কেউ চাইলেই একটা কম্পিউটার কিনতে পারে। আবার কোন প্রকার দুর্যোগ হলে সাপ্লাই কম বলে জিনিষপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয় না।

৫৪) ঈদে দাম বাড়ে না :

এই বিষয়টাও আমাদের দেশের ঠিক উল্টো। বিভিন্ন পালাপার্বনে আমাদের দেশে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, আর এখানে কমে যায়। যেমন : রমাদানে, ঈদে, কুরবানীর সময় আমাদের দেশে সব কিছুর দাম বেড়ে যায়। এখানে খ্রীষ্টমাস বা অন্যান্য পর্বে একেকটা দোকানের সাথে অন্য দোকান কম্পিটিশান দিয়ে দাম কমিয়ে দেয়। মুসলিমদের রামাদানে-ঈদে এবং হিন্দু ও পাঞ্জাবী শিখদের দিওয়ালী উৎসবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র (groceries) discounted price-এ বিক্রি হয়। ম্যানেজমেন্ট থিউরি হচ্ছে বিক্রি বেশী হলে লাভ বেশী, আর দাম কমিয়ে বিক্রয় যতো বাড়ানো যাবে লাভও ততো বেশী হবে এবং দেশের জনগণ ও উপকৃত হবে। কিন্তু আমাদের দেশে উল্টো! বিক্রয়ও বেশী চাই আবার লাভও বেশী চাই আর জনগণকে যতো বেশী কষ্ট দেয়া যায়! প্রয়োজনে মাল স্টক করে বাজারে আর্টিফিসিয়াল ক্রাইসিস তৈরী করে দাম বাড়াতে হবে!

৫৫) Exchange or Refund :

বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটা এক আশ্চর্যের বিষয়। কেউ কোন জিনিস কিনলে এক মাসের মধ্যে exchange or refund করতে পারে। যেমন কেউ একজন একটি টিভি বা একটি কম্পিউটার কিনলো এবং একমাস ধরে ব্যবহারও করল, কিন্তু এক মাস পরে সে ভাবলো যে জিনিটা তার প্রয়োজন নেই, তখন সে দোকানে গিয়ে ফেরত দিয়ে দিতে পারবে এবং ১০০% টাকা সাথে সাথে ফেরত পেয়ে যাবে। বড় বড় দোকান তিন মাসের মধ্যেও ফেরত নেয়।

৫৬) পিছে লোকে কিছু বলে :

আমাদের চরিত্রের মধ্যে আছে যে “লোকে কী বলবে?” এই ভয়ে অনেক সময় কোন একটা ভাল কাজ করতেও আমরা লজ্জাবোধ করি। আবার ভাল কাজ কিন্তু ছোট কাজ তা করতে ও লজ্জাবোধ করি যে, কেউ কিছু মনে করবে কিনা! কিন্তু এই দেশের লোকেরা যেকোন। কাজ করতে কোন লজ্জাবোধ করে না সেটা বড় কাজ হোক আর ছোট কাজ হোক। অপ্রিয় সত্যি কথা বলতেও লজ্জাবোধ করে না।

৫৭) রিটায়ারমেন্ট ও পেনশন :

দেশের প্রতিটি নাগরিকের বয়স ৬৫ হলেই রিটায়ার করেন এবং অবসর ভাতা পান। এছাড়া বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত আরো ভাতা পান যাকে বলে old age benefit। তবে কেউ চাইলে বয়স ৫৫ বছর বয়সে early retirement নিতে পারে, এতে পেনশন একটু কম পাবে। আমাদের দেশে যারা সরকারী চাকুরী করেন বা যারা পাবলিক লিমিটেড কম্পানীতে চাকুরী করেন তারাই শুধু রিটায়ার করেন। কিন্তু এখানে সকল ধরনের চাকুরী, ব্যবসা, বেকার, কৃষক, সুইপার, দাড়োয়ান, গৃহিনী সবাই ৬৫ বয়সে রিটায়ার করেন। আবার কেউ চাকুরী না করলেও বয়স ৬৫ হলেই রিটায়ার করেন এবং ভাতা পান।

৫৮) সিনিয়রদের সম্মান সবচেয়ে বেশী :

যাদের বয়স ৬৫-র উপরে তাদেরকে এদেশে সিনিয়র বলে এবং সব-জায়গায় তাদেরকে খুবই সম্মান করা হয়। এবং সরকার সিনিয়রদেরকে সকল ধরণের ফ্যাসিলিটি দিয়ে থাকে। রাস্তা ঘাটে, ট্রেনে-বাসে সকল জায়গায় ছোট-বড় সবাই সিনিয়রদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ায়। যেমন, বাসে সবাই বসে আছে এবং সব সিট ফুল, পথিমধ্যে একজন বা দু’জন সিনিয়র বাসে উঠলো, দেখা যাবে তাদের সম্মানে কয়েকজন সিট ছেড়ে দিয়েছে।

৫৯) মানসিক প্রতিবন্ধি :

কেউ যদি মানসিক প্রতিবন্ধি হয় তাহলে তার জন্যও রয়েছে নানারকম সুযোগ-সুবিধা। মানসিক প্রতিবন্ধির পিতা-মাতা বা পরিবার প্রতিমাসে স্পেশাল ভাতা পেয়ে থাকে। তাদের জন্য রয়েছে স্পেশাল স্কুল, স্পেশাল গাড়ি, স্পেশাল ডাক্তার ও হসপিটাল।

৬০) Longterm Disability :

কেউ যদি অসুস্থতার জন্য কোন চাকুরী বা ব্যবসা করতে না পারেন তাহলে সে লংটার্ম ডিজাবিলিটি পেনশনে যেতে পারেন। এবং সারাজীবন বসে বসে ভাতা পাবেন, বাড়ি পাবেন, চিকিৎসা পাবেন এবং স্পেশাল ট্রান্সপোর্ট পাবেন।

৬১) ছাত্র রাজনীতি :

কলেজ-ইউনিভার্সিটিগুলোতে কোন রাজনীতি নেই। শিক্ষক-শিক্ষীকা এবং ছাত্র-ছাত্রীরা কোন প্রকার রাজনীতি করেন না। তারা পড়া-লিখা নিয়ে এতোই ব্যস্ত থাকেন যে এগুলো করার সময় কোথায়? এছাড়া কলেজ এবং ইউনিভার্সিটির কোর্সগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা যে কেউ নিয়মিত পড়া-লিখা না করলে এবং ক্লাশে উপস্থিত না হলে পরীক্ষায় কোনভাবেই পাশ করতে পারবে না। কেউ কোন অস্ত্র বহন করতে পারে না আর রাজনৈতিক দলগুলোও কাউকে কোন অস্ত্র সাপ্লাই দেয় না।

৬২) কেউ প্রভাবশালীদের জোর খাটায় নাঃ

ওমুক মন্ত্রী বা আর্মি অফিসার বা পুলিশ অফিসার বা এম.পি বা জয়েন্ট সেক্রেটারী আমার আত্মীয় এই ধরণের কোন কালচার এখানে নেই। কারো আত্মীয় থাকলেও কেউ এই পরিচয় দেয় না বা বড়াই করে না এবং তার দ্বারা কোন প্রকার প্রভাবও খাটাতে পারে না।

৬৩) কোন লোড শেডিং নেই :

আমরা আমাদের জীবনে গত পনের বছরে একবার দেখেছি যে কারেন্ট বা ইলেকট্রিসিটি চলে গিয়েছিল। এই ধরণের ঘটনা কি আমাদের বাংলাদেশে চিন্তাও করা যায়। যেদিন ইলেকট্রিসিটি চলে গিয়েছিল সেদিন মনে হচ্ছিল যে একটা উৎসবে পরিণত হয়েছে। সবাই মোমবাতি কিনছে, পানি কিনছে, শুকনো খাবার কিনছে। সবার কাছেই একটা আশ্চর্যের বিষয়, বিশেষ করে ছোট-ছোট ছেলেমেয়েদের কাছে, তাদেরকে স্পেশালি বুঝতে দিতে হচ্ছে যে কী হয়েছে।

৬৪) একটি কুকুরকেও কেউ কষ্ট দিতে পারে না :

একদিন টেলিভিশনের খবরে দেখছি যে, কোন একটি পরিবার তাদের কুকুরটিকে গাড়ির মধ্যে রেখে গাড়ি মলের সামনে পার্ক করে ভেতরে গিয়েছে শপিং করতে। এটা ছিল গরম কালে। পথচারী কেউ দেখে পুলিশকে ফোন করে দিয়েছে যে গরমে কুকুরটি কষ্ট পাচেছ। সাথে সাথেই পুলিশ চলে এসেছে এবং কুকুরের মালিককে খুঁজছে। গাড়ির গ্লাস একটু ফাঁক করাও ছিল। পুলিশের লোকেরা ফিডারে করে ঐ কুকুরকে পানি খাওয়াচ্ছে। পরবর্তীতে কুকুরের মালিককে ফাইনসহ চরম মাশুল দিতে হয়েছে।

৬৫) পথচারী পারাপার :

সিগনাল ছাড়া সাধারণতঃ কেউ হুট করে যেখান-সেখান দিয়ে রাস্তা পারাপার হয় না। পথচারী পারাপারের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট সাদা সিগনাল।

৬৬) পুলিশরা কারো প্রতি অবিচার করেন না :

পুলিশ কাউকে হয়রানী করেন না। যদি কোন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তাকে কোর্টে যেতে হয় এবং বিচারে তার উপযুক্ত শাস্তি হয়। পুলিশ ঘুষ ছাড়াই সকল কাজ করেন। পুলিশ জনগণের কল্যাণের জন্য যা যা প্রয়োজন তা সবই করেন, জনগণের সেবায় তারা নিয়োজিত। কোন পুলিশ অফিসার যদি কোন গাড়িকে থামায় তখন পুলিশ অফিসার তার গাড়ি থেকে নেমে পাবলিকের গাড়ির নিকটে যান এবং ড্রাইভারকে স্যার বলে সম্মোধন করেন এবং তারপর যা প্রশ্ন করার তা করেন।

৬৭) শ্লীলতাহানি :

কোন পুরুষের বিরুদ্ধে যদি কোন নারী অভিযোগ করেন আর তা যদি সত্যি হয় তাহলে তার লাইফ শেষ। এ দেশে এটা একটি কঠিন আইন। কোন নারীকে কোন প্রকার উত্যক্ত, শ্লীলতাহানি, কমেন্টপাশ, শীষ দেয়া, তার দিকে কুনজরে তাকানো, তার শরীরে ডাইরেক্ট বা ইনডাইরেক্ট স্পর্শ করা, ইভটিজিং, এস.এম.এস, ইমেইল, ফেইসবুকে কমেন্ট ইত্যাদি কোনভাবেই allow না। কেউ যদি করে তাহলে তাকে জেলের ভাত খেতে হবে দীর্ঘ দিন।

৬৮) অনুমতি ছাড়া কেউ কারো ছবি তুলতে পারে না :

অনুমতি ছাড়া কেউ কারো ছবি তুলতে পারে না, কারো কথা রেকর্ড করতে পারে না। যদি কেউ গোপনে এধরনের কাজ করে তাহলে তার জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। অনুমতি ছাড়া কেউ কারো দেহ তল্লাশী এবং বাড়ি তল্লাশী করতে পারেন না। গোয়েন্দা বা সিকিউরিটি অফিসার তল্লাশীর নামে কাউকে হয়রানী করেন না।

৬৯) নিজ সন্তানদের নিরাপত্তা :

কোন বাবা-মা তার ১২ বছর বয়সের নিচের ছেলেমেয়েদেরকে একা খালি বাসায় রেখে বাইরে যেতে পারেন না। যদি কোন বাবা-মা এ কাজ করেন তাহলে তাকে কঠিন শাস্তি দেয়া হয়। কারণ ছোট ছোট বাচ্চারা বাসায় যে কোন ধরণের দূর্ঘটনা ঘটাতে পারে। যদি বাচ্চা রেখে যেতেই হয় তাহলে সাথে বড় কাউকে রেখে যেতে হবে।

৭০) চাইল্ড বেনিফিট :

প্রতিটি বাচ্চাকে তার ১৮ বয়স পর্যন্ত সরকার প্রতি মাসে একটি ভাল অংকের ভাতা দিয়ে থাকে। বাচ্চার বয়স যতো কম সে ততো বেশী অংক পেয়ে থাকে। যে পরিবারের সন্তান বেশী তারা ভাল এমাউন্টের টাকা পেয়ে থাকেন। এই টাকা দিয়ে বাবা-মা সন্তানের সঠিক মতো পরিচর্যা করতে পারেন। এর বাইরেও প্রতিটি বাচ্চা জন্মের দিন থেকে ছয় বছর পর্যন্ত অতিরিক্ত ডলার পেয়ে থাকেন। কারণ New born সন্তানের অতিরিক্ত অনেক কিছু প্রয়োজন হয়, যেমন দুধ, ডায়াপার, পুষ্টিকর খাবার, কার সিট, স্ট্রলার, খেলনা, নানারকম পোশাক ইত্যাদি।

৭১) ফুটপাতের অবস্থা :

এখানকার ফুটপাতে দোকান পেতে বসে না, ম্যানহলের ঢাকনাও চুরি হয় না। পথচারী ঢাকনা বিহীন ম্যানহলে পরে হাত-পাও ভাঙ্গেন না। কেউ কলা খেয়ে কলার ছিলকাও ফুটপাতে ফেলেন। অনেকে ফুটপাত ধরে হাটেন এবং বই পড়েন যা আমাদের দেশে চিন্তাও করা যায় না।

৭২) রাস্তা-কাটাকাটি :

বাংলাদেশ ওয়াসা একবার রাস্তা কাটেন, আবার সিটি কপোরেশন কাটেন, আবার গ্যাসের লাইনওয়ালারা কাটেন, আবার টিএন্ডটি কাটেন আর সেই কাটা গর্তে বর্ষায় পানি ভরে জনগণের দূর্ভোগ বেড়েই চলে। এই ধরণের ঘটনা ক্যানাডায় কল্পনাও করা যায় না।

৭৩) মসজিদ ফ্যাসিলিটি :

এখন প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই মুসলিমদের জন্য রয়েছে মসজিদ। এই মসজিদগুলো আমাদের দেশের মসজিদের মতো পাঁচ ওয়াক্ত সলাতের পর তালা দিয়ে রাখা হয় না। এই মসজিদগুলোতে শুধু পাঁচ ওয়াক্ত সলাতই হয় না এছাড়া রয়েছে নানারকম কমিউনিটি সার্ভিসেস। একেকটা মসজিদ একেকটা কমিউনিটি সেন্টার। প্রতিটি মসজিদে রয়েছে মহিলাদের জন্য সলাতের খুব ভাল ব্যবস্থা।

৭৪) মসজিদে জামাতে সলাত :

পিতা-মাতার সন্তানদের সাথে নিয়ে পুরো পরিবারসহ মসজিদে গিয়ে সলাত আদায় করেন। অনেক মহিলারাই ওয়াক্তের সলাত, জুমুআর সলাত, তারাবীর সলাত এবং তাহাজ্জুদের সলাত মসজিদে গিয়ে আদায় করেন। জামাতে সলাতের সময় বড়রা শিশু কিশোরদেরকে একই লাইনে তাদের সাথে দাঁড় করান, পিছনে ঠেলে দেন না। অনেক মসজিদ থেকেই তারাবীহ এবং তাহাজ্জুদ সলাত ভিডিও টেলিকাস্ট করা হয়ে থাকে কারণ যে সকল মা-বোনরা এবং বয়স্করা মসজিদে আসতে পারেননি তারা যেন বাসায় বসে তা উপভোগ করতে পারেন। সবচেয়ে শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে যে, কোন কোন মসজিদে তারাবীর চেয়ে তাহাজ্জুদে মুসল্লি বেশী হয়।

৭৫) শিরক ও বিদআত মুক্ত :

বাংলাদেশের তুলনায় এখানে ধর্মীয় ক্ষেত্রে অনেকটা শিরক ও বিদ’আতমুক্ত। যেমন, এখানে মিলাদ হয় না, কুলখানি হয় না, চল্লিশা হয় না, শবেবরাত পালন হয় না, মিলাদুন্নবী পালন হয় না। কোন পীর-দরবেশ নেই, পীরের দরগা নেই, কোন মাজার নেই আর মাজারকে ঘিরে কোন শিরকও নেই। তাবীজের কোন ব্যবহার নেই, ভন্ড কবিরাজ নেই।

৭৬) কমিশনার, এম.পি. :

কমিশনার, এম.পি. কেউ জনগণের সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করেন না। তারা ব্যস্ত থাকেন যে কীভাবে জনগণের জন্য কাজ করা যায়, কীভাবে তাদের অসুবিধা দূর করা যায়। এখানে কোন দোকান, মল, ইন্ডাস্ট্রি, পার্ক ইত্যাদি উদ্ভোধনের জন্য কোন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে দিয়ে লাল ফিতা কাটানো হয় না।

৭৭) ফরমালিন মুক্ত খাবার :

এখানে মাছে, ফলে কেউ ফরমালিন দেয় না, ইউরিয়া সার দিয়ে মুড়ি ভাঁজে না, ক্যামিকাল স্প্রে করে ফলমূল পাকায় না, শাক-সজিতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ দেয় না, মসল্লাতে ইটের গুড়া মেশায় না, চালের মধ্যে পাথর মিশায় না। প্রতিটি খাবারের গায়ে expire date থাকে, ঐ ডেটের পরে আর কেউ সেটা বিক্রি করতে পারে না। ক্ষতিকারক জিনিষ বিক্রয় নিষিদ্ধ যেমন, জর্দা, খয়ার, চুন, সাদার পাতা ইত্যাদি।

৭৮) সিগারেট :

উনিশ বছরের নিচে কেউ সিগারেট কিনতে পারে না। যদি কোন দোকানদার উনিশ বছরের কম কারো নিকট সিগারেট বিক্রি করেন তাহলে সেই দোকানের লাইসেন্স সরকার বাজেয়াপ্ত করে দেয়। কোন দোকানে উন্মুক্ত দেখিয়ে সিগারেট বিক্রয়ও করতে পারে না অর্থাৎ কোন প্রকার প্রচার যেন না হয়, প্রতিটি দোকানে সিগারেটের সেলফ কাভার দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। প্রতিটি সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে ভয়ঙ্কর ক্ষতিকারক ছবি দেয়া থাকে যা সিগারেট পানে মানুষের হয়। এখানে বাড়ি-ঘর, এপার্টমেন্ট, দোকান, শপিংমল, বাস, ট্রেন ইত্যাদির ভিতরে কেউ সিগারেট খেতে পারে না, খেতে হলে কোন খোলা জায়গায় গিয়ে খেতে হয়।

৭৯) রেস্টুরেন্টের অবস্থা :

রেষ্টুরেন্টগুলোতে বাসি খাবার বিক্রয় হয় না, মরা মুরগি রান্না করে খাওয়ানো হয় না। নিয়মিত সরকারী ইন্সপেক্টর এসে কিচেন চেক করে থাকে। খাবার তৈরী করার সময় অবশ্যই হ্যান্ড গ্লোভস পরে নিতে হয়। রেষ্টুরেন্টে খাবার পরিবেশনের সময় মাথায় নেটের ক্যাপ পরে নিতে হয় যেন খাবারের মধ্যে কোন চুল না পরে। রেষ্টুরেন্টে কোন প্রকার ইদুর এবং তেলাপোকা থাকতে পারবে না। যদি পাওয়া যায় তাহলে রেষ্টুরেন্ট-এর লাইসেন্স বাদ হয়ে যাবে।

৮০) মাস্তানদের দৌড়াত্ম :

কোথাও কোন মাস্তান নেই, কেউ বাড়ি করতে গেলে মাস্তানদেরকে টাকা দিতে হয় না। কোন মাস্তান কোন মেয়েকে জোর করে বিয়ের প্রস্তাব দেয় না, বিয়ে করতে না পারলে কোন ক্ষতি করে না।

৮১) গাড়ির হর্ন এবং কালো ধোয়া:

সাধারণতঃ রাস্তায় কেউ গাড়ির হর্ন বাজায় না। বাংলাদেশের জন্য এটা একটা আশ্চর্য বিষয়। যদি কারো ভুলে স্টিয়ারিংয়ের হর্নে চাপ পরে হর্ন বেজে উঠে তাহলে সে অনুতপ্ত বোধ করে। কোন গাড়ি থেকে কালো বিষাক্ত ধোয়া বের হয় না। এখানকার বাতাসও বিষাক্ত নয়। কোন গাড়ি অন্য গাড়িকে অভারটেক করে না। ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে পরে রাস্তায় আটকে থাকতে হয় না।

৮২) পানি জমে থাকা :

বৃষ্টি হলে কোথাও পানি ওভারফ্লো হয় না, ময়লা, ড্রেনের পানি রাস্তায় চলে আসে না। কোথাও পানি জমে থাকে না।

৮৩) মশা ফ্রী দেশ :

এটা একটা আশ্চর্যের বিষয়, পুরো দেশটাই মশা ফ্রী, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় কারো মশারী টানানোর ঝামেলা নেই।

৮৪) ডাইরিয়া :

কারো ফুড পয়জনিংয়ে ডাইরিয়া হয়েছে এমন দৃশ্য দুর্লভ, সাধারণতঃ লাখেও একটা ঘটে না।

৮৫) রাষ্ট্র প্রধান নির্বাচন :

যে দল ভোটে নির্বাচিত হয় এবং যিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তাকে এবং তার দলকে বিরোধী দল অভিনন্দন জানায়। বিরোধী দল তাদের সকল ক্ষমতা নিয়ে সরকারকে সাহায্যের হাত বাড়ায়। যারা ভোটে হেরে যায় তারা কখনো অভিযোগ করে না যে আমরাই জয়ী হতাম আসলে ভোটে কারচুপি হয়েছে। এই নির্বাচন মানি না!

৮৬) পরহেজগারী :

কেউ ভোটের আগে আর্টিফিসিয়াল পরহেজগার হন না, যেমন, মাথায় হিজার পরা, ভোটের আগে হাজ্জে যাওয়া, নিয়মিত মসজিদে গিয়ে সলাত আদায় করা, সবসময় টুপি ও পাঞ্জাবী-পায়জামা পড়ে থাকা, দান-খয়রাত করা, রমাদানে ঘনঘন ইফতার পার্টি দেয়া ইত্যাদি।

৮৭) পার্ক :

জনগণের রিক্রিয়েশনের জন্য প্রত্যেক এলাকাতে রয়েছে একটি করে পার্ক। এই পার্কগুলো সবুজ গাছে শ্যামল ছায়ায় ভরপুর। পার্কে রয়েছে বসার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ বেধ, ময়লা ফেলার জন্য ডাস্টবিন, পানি খাওয়ার জন্য ওয়াটার ফাউন্টেন, বাচ্চাদের খেলা-ধুলার জন্য দোলনা, স্লাইড ইত্যাদি। এছাড়া কোন কোন পার্কে রয়েছে বারবিকিউ করার জন্য ওভেন। এই পার্কগুলো যার যার বাড়ি থেকে হাঁটার দূরত্বে।

৮৮) ব্যবহার :

কথায় কথায় একজন আরেকজনকে ধন্যবাদ দেয়। সামান্য উপকার পেলেই খুবই কৃতজ্ঞ হয় এবং অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকে। অল্পে তুষ্ট থাকে। সবসময় হাসি মুখে একে অপরের সাথে কথা বলে। অফিসের বসও তার নিম্ন কর্মচারী থেকে কিছু চাইলে অনুরোধ করে চেয়ে থাকেন। বড়রা সবসময় ছোটদের সম্মান করে থাকে। কেউ রং নাম্বারে ফোন করলে সরি বলেই রেখে দেন, অপরপক্ষ মিষ্টি গলা হলে গল্প করার চেষ্টা করেন না।

৮৯) হিংসা :

পরিচিত একজন একটি সুন্দর বাড়ি কিনলো বা দশ তলা বিল্ডিং করলো বা কোন বন্ধু একটা ভাল গাড়ি কিনলো বা কোন আত্মীয়ের ভাল চাকুরী হলো এতে কেউ কোন মনে কষ্ট পায় না বা হিংসাবোধ করে না।

৯০) ইয়াতিম স্পন্সরশিপ :

আল্লাহ তা'আলা আল-কুরআনে ইয়াতিমদের প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং যারা করবে তাদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা মুসলিমরা প্রতি বছর কতজন ইয়াতিমকে স্পনসর করে থাকি? পৃথিবীর গরীব দেশগুলোতে যতো ইয়াতিমখানা আছে তাদের বেশীরভাগই আমেরিকা-ক্যানাডার-ইউরোপের মতো উন্নত দেশের অমুসলিমরা স্পনসর করে থাকে। আমাদের দেশেও এরকম অনেক এন.জিও রয়েছে।

৯১) নামের বিকৃতি করা :

কেউ কারো নামের বিকৃতি করে না। যেমন আমাদের দেশে জলিলকে বিকৃত করে ডাকা হয় এই জইল্লা বা কুদ্দসকে এই কুইস্সা’। আমরা জানি নামের বিকৃতি করা কুরআনে নিষেধ।

৯২) বাক স্বাধীনতা :

এটিও একটি আশ্চর্যের বিষয়। যে কেউ চাইলেই সরকার সম্পর্কে সত্য কথা বলতে পারেন। পত্রিকায় তুলে ধরতে পারেন। পত্রিকাওয়ালাদের লিখার স্বাধীনতা আছে। টিভি চ্যনেলগুলোর স্বাধীনতা আছে সত্য প্রচার করার।

৯৩) ফার্মাসী এবং ডাক্তার :

পরিবারের প্রতিটি ব্যক্তিরই একজন করে ফ্যামিলি ডাক্তার রয়েছে। কারো কোন প্রয়োজন হলেই সে যে কোন সময় তার ফ্যামিলি ডাক্তারের কাছে চলে যায়। ডাক্তার তাকে দেখে যতো পরীক্ষা করেন তার রিপোর্ট এবং যা যা ঔষুধ-পত্রের প্রেসক্রিপশন দেন তার সমস্ত রেকর্ড রোগীর কাছে থাকে না, থাকে ডাক্তারের ফাইলে। যে কোন রোগীর ৫০ বছর আগের সমস্ত হিস্ট্রি যেমন, ল্যাব টেস্ট রিপোর্ট, প্রেসক্রিপশন ইত্যাদি সবই তার ফ্যামিলি ডাক্তারের অফিসে পাওয়া যাবে। রোগীর সমস্ত দায়-দায়িত্ব তার ফ্যামিলি ডাক্তারের। রোগীকে যদি কোন স্পেশালিস্টের নিকট পাঠাতে হয় তাহলেও তা ফ্যামিলি ডাক্তার পাঠাবেন। প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোন রোগী ফার্মাসী থেকে কোন ঔষুধ কিনতে পারেন না।

৯৪) Toys lending Centre :

বাচ্চারা অনেক সময় বাসায় তার নিজস্ব খেলনা দিয়ে সবসময় খেলতে খেলতে বড়িং হয়ে যায়। তখন সে এই সেন্টার থেকে অন্যান্য রকমের নানা খেলনা লাইব্রেরীর বইয়ের মতো নিয়ে আসতে পারে এবং একটা নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত দিয়ে নতুন নতুন আরো খেলনা আনতে পারে। আবার যে সকল বাচ্চারা দামী খেলনা কিনতে পারে না তারাও এখান থেকে খেলনা এনে খেলতে পারে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন