hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

১০৩
মুসলিম বিশ্বের সাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক ও জ্ঞানগত অধঃগতি
জ্ঞানগত জড়তা ও স্থবিরতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক পশ্চাদপদতা সে সময় কেবল তুর্কীদের শিক্ষিত, বুদ্ধিজীবী ও ধর্মীয় মহলেরই বৈশিষ্ট্য ছিল না, বরং পূর্ব প্রাপ্ত থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম বিশ্বই এক জ্ঞানগত বিপর্যয়ের শিকার ছিল। তাদের মস্তিষ্ক ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত এবং তাদের স্বভাব-প্রকৃতি নিভু নিভু প্রায় দৃষ্টিগোচর হতো। জড়তা ও বিষন্নতা সমগ্র মুসলিম বিশ্বের আকাশকে ছেয়ে রেখেছিল। আমরা যদি সতর্কতার সাথে অষ্টম শতাব্দী থেকে এই বুদ্ধিবৃত্তিক পশ্চাদপদতার সূচনা না ধরি, তবুও এতে কোনই সন্দেহ নেই যে, হিজরী ৯ম শতাব্দীই ছিল শেষ শতাব্দী যখন চিন্তার ক্ষেত্রে নতুনত্ব, ইজতিহাদী তথা উদ্ভাবনী শক্তি এবং সুহিত্যে, কাব্যে, দর্শনে ও শিল্পকলায় শ্রেষ্ঠত্ব ও সৃষ্টিশীলতার চিহ্ন চোখে পড়ে। এটাই ছিল সেই শতাব্দী যেই শতাব্দীতে ইবনে খালদূনের মুকাদ্দিমার ন্যায় গ্রন্থ মুসলিম জাহান লাভ করে। হি. ১০ম শতাব্দীতে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে উদাসীনতা ও নির্জীবতা, অন্ধ আনুগত্য তথা তাকলীদ ও অনুকরণের চিহ্ন দৃষ্টিগোচর হয়। এই উদাসীনতা ও পশ্চাৎপদতা কোন বিশেষ শাখা বা কোন বিশেষ শাস্ত্রের সঙ্গে নির্দিষ্ট ছিল না। ধর্মীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান, কাব্য, সাহিত্য, রচনা, ইতিহাস, শিক্ষা পাঠক্রম ও শিক্ষা ব্যবস্থা সব কিছুই কমবেশি এর দ্বারা প্রভাবিত দৃষ্টিগোচর হয়। বিগত শতাব্দীগুলোর আলিম-উলামার আলোলাচনা ও জীবনী গ্রন্থসমূহ পাঠ করুন, শত শত নামের মধ্যে এমন একজনের নাম মেলা ভার হবে যাকে ক্ষণজন্মা প্রতিভা হিসাবে আখ্যায়িত করা চলে কিংবা যিনি কোন বিষয়ে নতুন কিছু পেশ করেছেন অথবা জ্ঞান-বিজ্ঞানের কোন বিশেষ শাখায় কোন মূল্যবান সংযোজন ঘটিয়েছেন। বিগত শতাব্দীগুলোতে আমরা কয়েকজনকে এর বাইরে রাখতে পারি যারা নিজেদের • যুগে সাধারণ শিক্ষাগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক মানের দিক দিয়ে বহু ঊর্ধ্বে অবস্থান করতেন, যারা ধর্মীয় ক্ষেত্রে কিংবা শিক্ষার ময়দানে বিরাট কোন বিপ্লবাত্মক অবদান রেখেছেন অথবা জ্ঞানের জগতে যুগান্তকারী কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। সৌভাগ্যের বিষয়, ব্যতিক্রমী এই মনীষিগণের সকলেই ভারতীয় উপমহাদেশের। এঁদের অন্যতম হযরত শায়খ আহমদ সরহিন্দী মুজাদ্দিদ আলফেছানী মৃ. ১০৩৪ হি.) যাঁর লিখিত মকতুবাত (পত্র সংকলন) ইসলামের ইলমী ও ধর্মীয় পুঁজির ভাণ্ডারে এক মূল্যবান সংযোজন ঘটিয়েছে এবং যিনি সমগ্র মুসলিম জাহানের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছেন। দ্বিতীয় জন হলেন হযরত শাহ ওলীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী (মৃ. ১১৭৬ হি.) যার লিখিত হুজ্জাতুল্লাহিল-বালিগা, ইলাতুল খিফা, আল-ফাওযুল-কাবীর ও রিসালাতুল-ইনসাফ নামক গ্রন্থ স্ব স্ব ক্ষেত্রে একক ও অনন্য। তৃতীয়জন তাঁরই পুত্র শাহ রফীউদ্দীন দেহলভী (মৃ. ১২৩৩ হি.) যার তাকমীলুল আযহান’ ও ‘রিসালা আরুল মুহব্বত’ নামক গ্রন্থ কতক বিষয়ে নতুন চিন্তা ও ধ্যান-ধারণা পেশ করেছে। চতুর্থ জন হযরত শাহ ইসমাঈল শহীদ দেহলভী (মৃ. ১২৪৬ হি.) যাঁর মানসাবে ইমামত’ ও ‘আবাকাত’ নামক দুটি গ্রন্থ ইজতিহাদী গ্রন্থের মর্যাদা দাবি করতে পারে এবং স্ব-স্ব বিষয়বস্তুর ওপর অতুলনীয় গ্রন্থ। তেমন ফিরিঙ্গী মহলের খান্দান ও য়ুরোপের কোন কোন শিক্ষাক্রমের ধারা আপন মেধা ও সৃষ্টিকুশলতার ক্ষেত্রে খুবই বিশিষ্ট দেখতে পাওয়া যায় এবং তারা তাদের সমকালীন শিক্ষিত মহলের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছেন। কিন্তু তাদের মেধা ও পাণ্ডিত্য পাঠ্যসূচীর সীমা খুব কমই অতিক্রম কেবল ধর্মীয় জ্ঞানের ক্ষেত্রেই নয়, কাব্য ও সাহিত্যও তার পেলবতা ও সজীবতা হারিয়ে ফেলেছিল এবং এসবের ওপরও তাকলীদ তথা অন্ধ অনুকরণপ্রিয়তা জেঁকে বসেছিল। রচনা ও গদ্য সাহিত্যকেও কৃত্রিমতা, লৌকিকতা, ছন্দের তাবেদারী, শব্দের কচকচানি ও অলংকার বাহুল্য নিষ্প্রাণ ও নিষ্প্রভ করে দিয়েছিল। বন্ধুদের কাছে লিখিত পত্র, ইতিহাস গ্রন্থ ও দাফতরিক লেখালেখি ও ফরমানগুলোও এই সব দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত ছিল না। কোথাও কোথাও সাহিত্য ও রচনার এমন কোন নমুনা পাওয়া যেত যা সে যুগের সাধারণ রুচি থেকে স্বতন্ত্র ও নীচু মানের চেয়ে কিছুটা উন্নত দৃষ্টিগোচর হয়।

মাদরাসাগুলো ও অন্যান্য বিদ্যালয়গুলোও কঠিন জড়তা ও অন্ধ আনুগত্যের শিকার এবং এক ধরনের জ্ঞানগত ও চিন্তাগত পতনের হাতে বন্দী দেখতে পাওয়া যায়। প্রাচীন যুগের আলিমগণের জ্ঞান-বিদ্যামণ্ডিত ও রুচি-সম্বলিত কিতাবগুলো পাঠ্যসূচী থেকে ক্রমান্বয়ে বাদ দেওয়া হয়। সেগুলোর স্থলে পরবর্তী যুগের আলিমগণের লিখিত ইজতিহাদী মর্যাদায় অনুত্তীর্ণ কিতাবাদি পাঠ্যসূচী ভুক্ত হয়। এসব গ্রন্থের লেখকরা ছিলেন পূর্ববর্তী যুগের আলিমগণের নিছক অন্ধ অনুকরণকারী, পাদটীকা রচয়িতা ও ভাষ্যকার। ফলে মতন তথা মূলপাঠের স্থান দখল করে টীকা-ভাষ্য যে সবের রচনায় ঐ সব লেখক গ্রন্থকার কাগজ সম্পর্কে অত্যন্ত মিতব্যয়িতার আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন এবং সাধারণের পক্ষে বোধগম্য ও প্রাঞ্জল সুস্পষ্ট ভাষা ব্যবহারের পরিবর্তে ইশারা-ইঙ্গিত ও সূক্ষ্ম রহস্যপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করেছিলেন। এ সবের থেকে সেই জ্ঞানগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক পতনের পরিমাপ করা যাবে যা সমগ্র মুসলিম জাহানের ওপর ছেয়ে ছিল এবং যা থেকে তার কোন দিক ও জীবনের কোন শাখাই মুক্ত থাকে নি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন