hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

১১৪
বৈরাগ্যবাদের খেপামি ও পাগলামী
বৈরাগ্যবাদের মধ্যে এতটা বাড়াবাড়ি ও সীমাতিরিক্ততা সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল যে, এ যুগে তা কল্পনায় আনাও কষ্টকর। ড্রেপার তাঁর গ্রন্থে এর যে ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন তার থেকে আমরা এখানে নমুনাস্বরূপ কিছুটা বিবরণ তুলে ধরছি।

সংসারবিরাগী পণ্ডিত ও সাধু-সন্ন্যাসীদের মোটামুটি সংখ্যা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছিল তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মতানৈক্যের কারণে অকাট্যভাবে তা বলা না গেলেও তাদের আধিক্য ও বৈরাগ্যবাদী আন্দোলনের প্রচার ও জনপ্রিয়তার পরিমাপ নিম্নেদ্ধৃত পরিসংখ্যান থেকে করা যেতে পারে। সেন্ট জারূমের আমলে ইস্টার উৎসব অনুষ্ঠানে আনুমানিক পঞ্চাশ হাজার সাধু-সন্ন্যাসীর সমাবেশ ঘটত। চতুর্থ শতাব্দীতে কেবল একজন মোহন্তের অধীনে পাচ হাজার সন্ন্যাসী ছিল। সেন্ট সেরাপীনের অধীনে ছিল দশ হাজার সাধু-সন্ন্যাসী এবং ৪র্থ শতাব্দীর সমাপ্তিতে তো এই হালত হয়ে গিয়েছিল যে, যেই পরিমাণ জনবসতি স্বয়ং মিসরের শহরগুলোতে ছিল প্রায় ততটা পরিমাণই ছিল ঐসব সংসারবিরাগী ও সাধু-সন্ন্যাসীদের সংখ্যা। দু’চার বছরের নয়, পুরো দু’শ বছর পর্যন্ত দৈহিক ও শারীরিক নিগ্রহকে চূড়ান্ত নৈতিকতা মনে করা হতে থাকে। ঐতিহাসিকগণ এসবের লোমহর্ষক বিবরণ লিপিবদ্ধ করে গেছেন। আলেকজান্দ্রিয়ার সেন্ট ম্যাকারিয়স সম্পর্কে প্রসিদ্ধ জনশ্রুতি এ রকম, তিনি ছ'মাস যাবত পুঁতিগন্ধময় নোংরা স্থানে ঘুমুতেন যাতে বিষাক্ত মশা-মাছি তার নগ্নদেহকে কামড়ায়। অধিকন্তু তিনি এক মণ ওজনের লোহা সব সময় বহন করতেন। তারই অনুরক্ত শিষ্য সেন্ট ইউসিস প্রায় দু মণ ওজনের লোহা বয়ে বেড়াতেন এবং তিন বছর যাবত একটি শুকিয়ে যাওয়া কুয়ার মধ্যে অবস্থান করেন। বিখ্যাত সাধু যোহন। সম্পর্কে কথিত আছে, তিনি লাগাতার তিন বছর দাঁড়িয়ে ইবাদত-বন্দেগী করেন। একটা মুদ্দত পর্যন্ত তিনি মুহূর্তের তরেও না বসেছেন, আর না শুয়েছেন। যখন খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়তেন তখন প্রস্তর খণ্ডে হেলান দিয়ে একটু জিড়িয়ে নিতেন। কোন কোন সাধু-সন্ন্যাসী সম্পর্কে তো এ পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে যে, তারা শরীরে কোন রকম কাপড় ব্যবহার করত না। লম্বা চুল দিয়ে সতর ঢাকত এবং চতুস্পদ জন্তুর মত হামাগুড়ি দিয়ে পথ চলত। সাধারণত তারা সে সময় ঘরবাড়িতে বসবাস করত না, বরং হিংস্র বন্য প্রাণীর গুহা, কুয়া কিংবা নির্জন কবরস্থানে তারা বাস করত। সংসারবিরাগী সাধু-সন্ন্যাসীদের একটি দল কেবল ঘাস-পাতা খেয়ে জীবন ধারণ করত। শারীরিক পবিত্রতাকে আধ্যাত্মিক পবিত্রতার পরিপন্থী ধারণা করা হতো এবং যেই সাধু সংসারনির্লিপ্ততা ও বৈরাগ্যবাদের ক্ষেত্রে যত দ্রুত উন্নতি করত ঠিক সেই পরিমাণ দুর্গন্ধ ও ময়লা আবর্জনার আধার হতো। সেন্ট এনথানাসিয়াস অত্যন্ত গর্বের সাথে বর্ণনা করেছেন, সেন্ট এন্টনী বয়োবৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘকাল পর্যন্ত পা ধোয়ার মত পাপে লিপ্ত হননি। সেন্ট আবরাহাম পঞ্চাশ বছরের খ্রিস্টীয় সাধনার যিন্দেগীতে নিজের চেহারায় কিংবা পায়ের পাতার ওপর পানির ছিটাটুকুও পড়তে দেননি। সাধু আলেকজান্ডার অত্যন্ত আফসোস ও বিস্ময়ের সঙ্গে বলেন, এমন একটা যমানা ছিল যখন আমাদের পূর্বসূরিগণ মুখ ধোয়াকে হারাম মনে করতেন, পক্ষান্তরে এখন আমরা হাম্মামে যাই।

সাধু-সন্ন্যাসীরা (রাহেবগণ) শিক্ষকের বেশ ধারণ করে ইতস্তত ঘোরাফিরা করত এবং ছোট ছোট বাচ্চাকে ফুসলিয়ে নিজেদের দলে ঢোকাত। পিতা-মাতার তাদের সন্তানদের ওপর কোন অধিকার ছিল না। যেসব সন্তান আপন পিতা-মাতাকে ছেড়ে সংসার-বিরাগী হয়ে যেত তাদের নামে চতুর্দিকে জনসাধারণ বাহবা দিত। প্রথমে যে আছর ও প্রভাব-প্রতিপত্তি সম্মানিত খান্দান ও পিতামাতা লাভ করত তা এখন পাদরী ও সাধু-সন্ন্যাসীদের দিকে স্থানান্তরিত হতো। পাদ্রীরা বৈরাগ্য ও সন্ন্যাসবাদের নিমিত্ত বালকদের অপহরণ করত। সেন্ট এ্যামব্রোসে এ ধরনের অপহরণের ঘটনা এত বৃদ্ধি পেয়েছিল যে, তা লক্ষ্য করে মায়েরা আপন আপন শিশু-সন্তানদের ঘরে আটকে রাখত।

বৈরাগ্যবাদের আন্দোলনের নৈতিক পরিণত হলো এই, পুরুষোচিত ও বীরোচিত গুণাবলী দূষণীয় হিসেবে অভিহিত হলো। আধ্যাত্মিক সাধনায় লিপ্ত সাধক প্রসন্নতা, স্পষ্টবাদিতা, বদান্যতা, বীরত্ব, সাহসিকতা প্রভৃতি গুণাবলীর কখনো ধারে কাছেও ঘেষে নি। সন্ন্যাসমূলক জীবন যাপন পদ্ধতির দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পরিণতি হলো এই, পারিবারিক জীবনের ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে গেল এবং মানুষের দিল থেকে আত্মীয়-স্বজনের প্রতি সমবোধ উঠে গেল। এই যুগে মা-বাপের প্রতি অকৃতজ্ঞতা ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে হৃদয়হীনতার নজীর এত অধিক পরিমাণে দৃষ্টিগোচর হয় যার পরিমাপ করাটাও কঠিন। মঠবাসী এই সব সাধু-সন্ন্যাসী ও আধ্যাত্মিক সাধনায় লিপ্ত সাধকরা নিজেদের মায়েদের অন্তরেও ব্যথা দিত, স্ত্রীর হক নষ্ট করত, নিজ সন্তানদেরকে অভিভাবকহীনভাবেও ওয়ারিশ অবস্থায় অন্যের ওপর ছেড়ে দিত। তাদের জীবনের চরম লক্ষ্যটাই হতো এই, স্বয়ং তাদের যেন পারলৌকিক মোক্ষ লাভ ঘটে। তাদের এ ব্যাপারে আদৌ কোন মাথা ব্যথা ছিল না, তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত ও তাদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের লোজন বাঁচল নাকি মরল। এ ব্যাপারে লেকী যেসব ঘটনার উল্লেখ করেছেন তা পাঠে আজও মানুষের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে। মেয়েদের ছায়া দেখলেও তারা পালাত। কখনো দৈবক্রমে মেয়েদের ছায়াপাত ঘটলে অথবা রাস্তায় কিংবা গলিপথে কোন মহিলার আকস্মিক মুখোমুখি হয়ে গেলে তারা ভাবত, তাদের সারা জীবনের আরাধনা-উপাসনা ও সাধনা সব মাটি হয়ে গেল, এমন কি নিজের মা ও সহোদর বোনের সাথে কথা বলাকেও তারা মহাপাপ মনে করত। লেকী এ প্রসঙ্গে যেসব ঘটনা, লিপিবদ্ধ করেছেন তা পড়লে কখনো হাসি পায়, আবার কখনো কান্নাও আসে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন