hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

১১১
রোমক সভ্যতা
রোমকরা গ্রীকদের স্থলাভিষিক্ত হল এবং শক্তিতে, রাজ্যের ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা বিধানে, সাম্রাজ্যের বিস্তৃতিতে ও সামরিক গুণাবলীর ক্ষেত্রে তারা। গ্রীকদের ছাড়িয়ে গেল। কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দর্শন, সাহিত্য ও কাব্য, সভ্যতা ও সংস্কৃতির ময়দানে তারা গ্রীকদের পর্যায়ে পৌঁছুেতে পারেনি। এসব ক্ষেত্রে গ্রীকদের নেতৃত্ব ও প্রাধান্য দুনিয়াব্যাপী স্বীকৃত ছিল, এমন কি স্বয়ং বিজেতা 'রোমকদের অন্তর মানসের ওপরও এ ছাপ স্থায়ীভাবে বসে গিয়েছিল। রোমকরা তখনও তাদের সামরিক যুগের অবস্থান করছিল। এজন্য তারা স্বভাবতই মানসিক পরিপূর্ণতা, সূক্ষ্ম ও পরিশীলিত বিষয়গুলোতে গ্রীকদেরকেই তাদের নেতা মেনে নেয় এবং তাদেরই দর্শণ শাস্ত্র ও ধ্যান-ধারণা চর্বন করে। লেকী বলেনঃ

"It is also evident that the Greeks having had for several centuries a splendid literature, at a time when the Romans had none, and when the Latin language was still too crude for literary purposes, the period in which the Romans first emerged from a purely military condition would bring with it an ascendancy of Greek ideas. Fabius Pictor and Cincius Alimentus, the earliest native historians, both wrote in Greek......... After the conquest of Greece, the political ascendency of the Romans and the intellectual ascendancy of Greece were alike universal. The conquered people, whose patriotic feelings had been greatly enfeebled by the influences I have noticed, acquiesced readily in their new condition, and notwithstanding the vehement exertions of the conservative party, Greek manners, sentiments, and ideas soon penetrate all classes and moulded all forms of Roman life."

গ্রীকরা তাদের মূল্যবান জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাহিত্য শত শত বছর ধরে লালন করে চলেছিল। বস্তুত রোমকরা সামরিক যুগেই অবস্থান করছিল যারা সাহিত্যের নামটুকুর সাথেও পরিচিত ছিল না, বরং তাদের ভাষা পর্যন্ত মর্ম প্রকাশে ও উচ্চতর ধ্যান-ধারণার প্রতিনিধিত্ব করতে অক্ষম ছিল। জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে রোমকদের এই দৈন্যের অনিবার্য পরিণতি ছিল এই যে, তারা গ্রীক সভ্যতা-সংস্কৃতি দ্বারা পরাভূত হয়ে যাবে এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় তাদের দ্বারা প্রভাবিত থাকবে। অনন্তর আমরা জানি, প্রাচীনকালের রোমক ঐতিহাসিকরা গ্রীক ভাষাতেই পুস্তকাদি লিখতেন এবং এই নিয়ম দীর্ঘকাল পর্যন্ত কায়েম ছিল। কেবল লেখালেখির কথাই বা বলি কেন, আচার-ব্যবহার, জীবন যাপন পদ্ধতি, আবেগ-অনুভূতি, মোটের ওপর জীবনের প্রতিটি শাখায় গ্রীক সভ্যতা-সংস্কৃতি রোমক সংস্কৃতির ওপর জেঁকে বসেছিল। রোমকরা অবলীলায় ও নির্দ্বিধায় গ্রীকদের অনুকরণ করত এবং এজন্য তারা গর্ব করত।

আর এভাবেই জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য, আচার-আচরণ ও অভ্যাসের মাধ্যমে গ্রীক জাতির দর্শন ও সংস্কৃতি নয়, বরং গ্রীক মন-মানস ও চিন্তা-চেতনা রোমকদের মধ্যে স্থানান্তরিত হয় এবং তাদের শিরা-উপশিরার মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট হয়। এমনিতেও রোমকরা তাদের পশ্চিমা প্রকৃতি ও মেযাজের দরুন প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে এমন কিছু বেশি ভিন্ন ছিল না। জীবনের বহু দিকেই উভয়ের মধ্যে অনেকখানি সাদৃশ্য ছিল। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়ের ওপর বিশ্বাস করতে রোমকরাও অভ্যস্ত ছিল। জীবনের মান ও মূল্যের ব্যাপারে এখানেও ততটাই অতিরিক্ততা ও বাড়াবাড়ি ছিল। আকীদা-বিশ্বাস ও বাস্তবতা সম্পর্কে এরাও দুর্বল ঈমানের, উদার ও মুক্ত বুদ্ধির অধিকারী ছিল। ধর্মীয় আইন-শৃঙ্খলা, আমল ও প্রথা-পদ্ধতির প্রতি বিশেষ কোন শ্রদ্ধা ও মর্যাদাবোধ ছিল না। জাতীয়তা ও স্বাদেশিকতাবোধের আতিশয্য রোমকদের মধ্যেও পাওয়া যেত এবং অধিকন্তু শক্তির প্রতি সম্মানবোধ ইবাদত ও পবিত্রতার পর্যায়ে পৌঁছে ছিল।

রোমক ইতিহাস থেকে জানা যায়, রোমকরা তাদের ধর্ম ও আকীদা-বিশ্বাসের ক্ষেত্রে দৃঢ় বিশ্বাসী ছিল না। আর এ ব্যাপারে তাদের করারও কিছু ছিল না। কেননা যে সমস্ত শেরেকী ও কুসংস্কারপূর্ণ ধর্ম রোমে প্রচলিত ছিল তার দাবি ছিল এই যে, রোমকরা জ্ঞানের জগতে যে পরিমাণ উন্নতি করবে, তাদের মস্তিষ্ক যে পরিমাণ আলোকোজ্জ্বল হবে ঠিক ততটাই সেই ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধে ঘাটতি দেখা দেবে। তারা যেন প্রথম থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিল যে, দেবতাদের রাজনৈতিক ও পার্থিব বিষয়াদির সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। সিসেরো বলেন, থিয়েটারে যখন এ ধরনের বিষয়বস্তুর ওপর কবিতা পাঠ করা হতো, দেবতাদের জাগতিক বিষয়াদিতে কোন ভুমিকা নেই, করার কিছু নেই তখন লোকে অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে শুনত।১ সেন্ট অগাস্টিন (Augustine) প্রমুখ বিস্ময়ের সঙ্গে বলেন, এই সব রোমান মূর্তিপূজক মন্দিরে তো দেবতাদের পূজা করত, আবার নাট্যমঞ্চে তাদের নিয়েই ঠাট্টা-মস্করা করত।২ রোমান ধর্মের নিয়ন্ত্রণ তাদের অনুসারীদের ওপর এতটা শিথিল হয়ে গিয়েছিল এবং ধর্মীয় আবেগ-উদ্দীপনা এতটা শীতল হয়ে গিয়েছিল যে, লোকেরা কোন কোন সময় দেবতাদের সাথে বেয়াদবী ও উত্তেজিত হয়ে গোস্তাখী করতে এতটুকু ইতস্তত বা পরওয়া করত না। লেকী বলেন, ধর্মের নৈতিক প্রভাব প্রায় নিঃশেষই হয়ে গিয়েছিল, পবিত্রতার প্রেরণা প্রায় নিশ্চিহ্নই হয়ে যায় এবং এর দৃশ্য সবারই দৃষ্টিগোচর হতে থাকে। অনন্তর অগাস্টাস-এর নৌবহর যখন নিমজ্জিত হয়ে যায়। তখন সে ক্রোধান্বিত হয়ে সমুদ্র দেবতা নেপচুনের মূর্তি ভেঙে চুরে চুরমার করে দেয়। যখন জার্মানিকাসের মৃত্যু হলো তখন লোকে দেবতাদের পূজামণ্ডপে গিয়ে অবাধে প্রস্তর বর্ষণ করে।

[1. Lecky: History of European Morals. London 1869.1. vol. P. 178 ]

[2. Lecky: History of European Morals, p. 179. ]

রোমকদের নৈতিক চরিত্র, আচার-আচরণ, রাজনীতি ও সমাজে ধর্মের কোন প্রভাব, তাদের অনুভূতি ও প্রবণতার ওপর এর কোন প্রকার কর্তৃত্ব অবশিষ্ট ছিল। ধর্মের মধ্যেও কোন গভীরতা ছিল না, ছিল না কোন শক্তি-সামর্থ্য যে, তা দিলের গভীরে প্রবেশ করবে এবং আত্মার ওপর, রূহের ওপর রাজত্ব করবে। এ কেবলই এক অনুষ্ঠান সর্ব প্রথায় পরিণত হয়ে গিয়েছিল। রাজনীতি ও সামাজিক কল্যাণ উপযোগিতার দাবি ছিল এই, নামসর্বস্ব হলেও ধর্মের অস্তিত্ব কোন না কোনরূপে হলেও অবশিষ্ট থাকুক। লেকী আরও বলেন,

The Roman religion was purely selfish. It was simply a method of obtaining prosperity, averting calamity and reading the future. Ancient Rome prooduced many heroes but no saints. Its self-sacrifice was patriotic, not religious. Its religion was neither an independent teacher nor a source of inspiration.

“রোমক ধর্ম ছিল স্বার্থপরতাসর্বস্ব ও আত্মকেন্দ্রিক। এর লক্ষ্য এর অধিক ছিল না যে, কী করে প্রাচুর্য লাভ করা যায়, দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-আপদের হাত থেকে নিরাপদ থাকা যায় এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে জানা যায়। অনন্তর এরই প্রতিক্রিয়া ছিল যে, রোম বহু বীর পুরুষের জন্ম দিয়েছে বটে, কিন্তু আত্মত্যাগী সাধক পুরুষ একজনও জন্ম দিতে সক্ষম হয়নি। এখানে আত্মত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের সর্বোচ্চ যেই নজীর পাওয়া যায় তাও ধর্মের প্রভাব ও প্রেরণায় নয়, বরং স্বদেশপ্রেমের প্রেরণায়। ওদের ধর্ম স্বাধীন নয়, নয় প্রেরণার উৎস।”

রোমকদের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো তাদের রাজতন্ত্রপ্রীতি, সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতা, জীবন সম্পর্কে নির্ভেজাল বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গি। এটাই সেই উত্তরাধিকার যা বর্তমান য়ুরোপ তার রোমক পূর্বসূরীদের থেকে পেয়েছে। প্রখ্যাত জার্মান নওমুসলিম আল্লামা মুহাম্মদ আসাদ Islam at the Crossroad (সংঘাতের মুখে ইসলাম) নামক গ্রন্থে বলেন।

".......the underlying idea of the Roman Empire was the conquest of power and the exploitation of other nations for the benefit of the mother country alone. To promote better living for a previleged group, no violence was for the Romans too bad, no injustice too base. The famous 'Roman Justice' was justice for the Romans alone. It is clear that such an attitude was possible only on the basis of an entirely materialistic conception of life and civilization-a materialism certainly refined by an intellectual taste, but none the less foreign to all spiritual values. The Romans never in reality knew religion. Their traditional gods were a pale imitation of the Greek mythology, colourless ghosts silently accepted for the benefit of social convention. In no way were the gods allowed to interfere with real life. They had to give oracle through the medium of their priests if they were asked; but they were never supposed to confer moral laws upon men."

“রোম সাম্রাজ্যের ওপর যেই বিশেষ ধারণা আসন গেড়ে বসেছিল তা ছিল শুধুই ক্ষমতা লাভের দুর্নিবার বাসনা, কেবলই রাজ্য ও রাজত্ব লাভ, অপরাপর দেশ ও জাতিগোষ্ঠীকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে শোষণ করে নিজ দেশের শ্রীবৃদ্ধি সাধন, ওলট পালটের মাধ্যমে স্বজাতির সম্পদ স্ফীতকরণ। রোমক নেতৃবর্গ, আমীর-উমারা ও উচ্চ শ্রেণীর লোকেরা নিজেদের প্রাচুর্য ঘেরা ও বিলাসী জীবন যাত্রার প্রয়োজনীয় উপায়-উপকরণ সংগ্রহের জন্য কোন প্রকার জুলুম ও নিষ্ঠুর আচরণকেই দূষণীয় মনে করত না। রোমকদের ন্যায়-বিচার ও ইনসাফের যে বিশ্বজোড়া খ্যাতি তা ছিল কেবল রোমকদের জন্যই নির্দিষ্ট। এই নির্দিষ্ট জীবনাচার ও চরিত্র জীবন ও কৃষ্টির কেবল বস্তুবাদী ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-চেতনার ওপরই কায়েম হতে পারত। যদিও তাদের বস্তুবাদী চেতনা ও ধ্যান-ধারণার মধ্যে কিছুটা সাজ-সজ্জা ও রুচির সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল-কিন্তু তা সব রকমের আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ থেকে একেবারেই সম্পর্কহীন ছিল, অপরিচিত ছিল। রোমকরা কখনোই গভীরভাবে ভেবে-চিন্তে ও নিষ্ঠা সহকারে ধর্ম-জীবন এখতিয়ার করেনি। তাদের অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় দেবতা ছিল শুধুই গ্রীক গল্প-উপাখ্যান ও নানান কল্প-কাহিনীর ফিকে অনুকরণ। তারা শুধুই নিজেদের সামাজিক সংহতি ও জাতীয় ঐক্যের ধারণায় সেসব আরওয়াহ মেনে নিয়েছিল। তারা সেসব দেবতাকে নিজেদের বাস্তব জীবনে ও কর্মের ময়দানে নাক গলাবার অনুমতি দিত না। তাদের কাজ কেবল এতটুকু ছিল যে, যখন তাদের কাছে চাওয়া হবে তখন তারা তাদের মন্দিরের পূজারী-পাণ্ডাদের মৌখিক ভবিষ্যদ্বাণী করে দেবে। কিন্তু তাদেরকে তারা এই অধিকার কখনো দেয়নি যে, তারা জনগণের ওপর নৈতিক বিধি-নিষেধ আরোপ করবে।”১

[১. Muhammad Asad: Islam at the Crossroad, P. 38-39 ]

গণতান্ত্রিক যুগের শেষ দিকে রোমে নৈতিক ও চারিত্রিক অধঃপতন, পাশবিক কামনা-বাসনার অবাধ রাজত্ব এবং বিত্ত-বৈভবের এমন এক প্লাবন এসে দেখা দিল যে, রোমকরা তার মধ্যে একেবারে ডুবে গেল এবং সেই নেতিক শৃঙ্খলা ও বিধানসমূহ যেগুলো রোমক জাতির প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য ছিল, খড়কুটোর মত ভেসে গেল এবং সংহতির প্রাসাদে এমন কাঁপন সৃষ্টি করল, মনে হল এই বুঝি তা ভূমিতে ধ্বসে পড়বে। ড, ড্রেপার তাঁর History of the conflict between Religion and Science নামক গ্রন্থে এর যে ছবি এঁকেছেন তা নিম্নরূপঃ

"When the Empire in a military and political sense had reached its culmination, in a religious and social aspect it had attained its height of immorality. It had become thoroughly epicurean; its maxim was that life should be made a feast, that virtue is only the seasoning of pleasure, and temperance the means of prolonging it. Dining-rooms glittering with gold and incrusted with gems, slaves and superb apparel, the fascinations of feminine society where all the women were dissolute, magnificent baths, theatres, gladiators—such were the objects of Roman desire. The conquerors of the world had discovered that the only thing worth worshipping is Force. By it all things might be secured, all that tool and trade had laboriously obtained. The confiscation of goods and lands, taxation of provinces, were the reward of successful warfare; and the emperor was a symbol of Force. There was a social splendour, but it was the phosphorescent corruption of the Ancient Mediterranean world."

“সামরিক শক্তি ও রাজনৈতিক প্রভাবের দিক দিয়ে রোম সাম্রাজ্য যখন উন্নতির শীর্ষে গিয়ে উপনীত হল তখন ধর্মীয় ও সামাজিক দিক থেকে তার আরাম-আয়েশ ও নৈতিক ও চারিত্রিক অবস্থা অবনতির শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে। রোমকদের বিলাসপ্রীতির কোন সীমা-পরিসীমা ছিল না। তাদের নীতি ছিল এই যে, মানুষ তার জীবনকে একটি বিরতিহীন ভোগ-বিলাস বানিয়ে দেবে। পাক-পবিত্রতা ও নীতি-নৈতিকতা দস্তরখানের ওপর নিমকদান বিশেষ এবং এক আধটু ভারসাম্য রক্ষা ও ভোগকে প্রলম্বিত করার জন্যেই। নানা প্রকার জওয়াহেরাত খচিত স্বর্ণ-রৌপ্যের পাত্রে তাদের দস্তরখান ঝলমল করতে দেখা যেত। তাদের কর্মচারী জরিখচিত দামী পোশাক পরিহিত অবস্থায় তাদের খেদমতের নিমিত্ত সদা প্রস্তুত থাকত। সাধারণভাবে সতীত্ব ও পবিত্রতার রৌপ্য জিঞ্জীরের বন্ধনমুক্ত রোমের সুন্দরীরা তাদের পানোন্মত্ত সাহচর্যের আনন্দ ও ফুর্তিকে চাঙ্গা করার নেশায় মত্ত থাকত। আলীশান হাম্মাম, চিত্তাকর্ষক বিনোদন কেন্দ্র, উৎসাহমুখর ও আবেগ-উদ্বেলিত মল্লভূমি, যেখানে মল্লবীরেরা কখনো একে অন্যের সঙ্গে, আবার কখনো বন্য ও হিংস্র পশুর সঙ্গে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতো এবং ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের শক্তি পরীক্ষা অব্যাহত থাকত যতক্ষণ না প্রতিপক্ষদ্বয়ের কোন এক পক্ষ রক্ত ও কাদামাটির মধ্যে হারিয়ে যেত, রোমকদের বিত্ত-বৈভবের উপকরণের আরও বৃদ্ধি ঘটাত। এসব বিশ্ববিজেতাদের অভিজ্ঞতার পর এটা জানা গিয়েছিল যে, পূজা-অর্চনার যোগ্য কোন বস্তু যদি থেকে থাকে তাহলে তা একমাত্র শক্তি। এজন্য যে, এই শক্তির বদৌলতেই ঐ সমস্ত পুঁজি ও সম্পদ অর্জন করা সম্ভব যা কায়িক পরিশ্রম ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অব্যাহত ও প্রাণান্তকর প্রয়াস ও ঘাম ঝরানোর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে। বিত্ত-সম্পদের অধিকার ও রাজস্বপ্রাপ্তি বাহুশক্তির বদৌলতে যুদ্ধে বিজয়ী হবারই অনিবার্য ফল-ফসল এবং রোমক সাম্রাজ্যের শাসকবৃন্দ এই অসীম শক্তিমত্তারই প্রতীক। মোটকথা, রোমকদের সাংস্কৃতিক নীতি-রীতির মধ্যে শান-শওকতের একটি ঝলক তো দেখতে পাওয়া যেত। কিন্তু এটা ছিল সেই চোখ ধাঁধানো ঝলক সদৃশ যা গ্রীসের পতন যুগের সভ্যতার ওপর চড়ে বসেছিল।১

[১. Draper, History of the Conflict between Religion and Science p. 31-32. ]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন