hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

৫৬
প্রথম দিককার মুসলমান
কুরায়শরা এই দাওয়াত ও আহ্বানের মুকাবিলায় হাঁটু গেড়ে বসে এবং জাহেলিয়াতের পতাকাতলে সমবেত হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। তারা তার বিরুদ্ধে সমগ্র দেশে আগুন জ্বালিয়ে দেয় এবং ইসলামের রাস্তা আটকে দিয়ে। দাড়িয়ে যায়। এ সময় তার ওপর ঈমান আনয়ন তথা বিশ্বাস স্থাপন সেইসব সিংহদিল পুরুষ সিংহেরই কাজ ছিল যারা মৃত্যু ভয়ে ভীত নন, যারা আপন ঈমান ও আকীদার নিমিত্ত অগ্নিকুণ্ডের মাঝে ঝাপিয়ে পড়তে এবং জ্বলন্ত অঙ্গারের ওপর শুয়ে পড়তে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। যারা দুনিয়ার সর্বপ্রকার লোভ-লালসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং সারা দুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। কুরায়শদের কতিপয় যুবক সামনে অগ্রসর হলো। এ তড়িঘড়ির ফয়সালা ছিল না এবং যুবকসুলভ ঝোঁকের মাথায় গৃহীত পদক্ষেপও ছিল না। তারা মনে করতেন যে, তাঁরা তাঁদের জীবনকে বিপদের মুখে নিক্ষেপ করেছেন এবং জীবনের দরজা নিজেদের জন্য বন্ধ করে দিচ্ছেন। পার্থিব কোন প্রলোভন এর পেছনে ক্রিয়াশীল ছিল না, বরং এই ফয়সালা ছিল কেবল বিপদের দরজা খোলার সমার্থক এবং এর ফলে সর্বপ্রকার পার্থিব স্বার্থ ও আরাম-আয়েশের দরজা বন্ধ হতো। এখানে ছিল কেবল ইয়াকীন ও প্রত্যয়ের এক শক্তি এবং পরকালীন জীবনের লোভ। তাঁরা। ঈমানের দিকে আহ্বানকারীদের এই বলে আহ্বান করতে শুনতে পেয়েছিলেন। তোমরা তোমাদের প্রভু প্রতিপালকের ওপর ঈমান আন। এই আহ্বান শুনতেই বিশাল পৃথিবী তাঁদের জন্য সংকীর্ণ ও সংকুচিত হয়ে গেল। স্বভাব-তবিয়ত পিষ্ট হতে থাকল। রাতের ঘুম গেল উবে। নরম-কোমল বিছানা কণ্টক শয্যার ন্যায় খচখচ করে বিধতে লাগল। তাঁরা দেখল যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান আনা এবং নিজের ঈমানের সাথী হওয়া তাদের জন্য অপরিহার্য হয়ে গেছে। তারা তাঁদের দিল ও দিমাগের তথা মন-মস্তিষ্কের ফয়সালা এবং আপন বিশ্বাসের বিরোধিতা করে সন্তুষ্ট থাকতে পারত না। প্রকৃত সত্য কোনটি তা তাদের সামনে দিবালোকের ন্যায় প্রকাশিত ও উদ্ভাসিত হয়ে গিয়েছিল। এখন আর তারা সেই সত্য এড়িয়ে যেতে পারত না। পশু জীবন থেকে তাঁদের মন উঠে গিয়েছিল, বিতৃষ্ণায় ভরে গিয়েছিল তাদের মন। তাঁরা আর তাতে নিজেদের মনকে ফাসাতে পারত না। একটি কাঁটা যা তাদের মনে খচখচ করে বিধছিল। তারা সেটাকে আর পুষতে পারত না। শেষ পর্যন্ত তাঁরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছুতে এবং ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। রসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদেরই মহল্লায় ছিলেন। মাত্র কয়েক গজ দূরে। কিন্তু কুরায়শরা তাঁকে এতটা দূরে ঠেলে দিয়েছিল এবং রাস্তা এতটা বিপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ বানিয়ে দিয়েছিল যে, তার পর্যন্ত পৌঁছা দূরদরাজ ও অত্যন্ত বিপজ্জনক সফরেরই নামান্তর ছিল। সিরিয়া ও ইয়ামনে বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে যাওয়া এবং আরবের ডাকাতদের হাত থেকে গা বাঁচিয়ে বেরিয়ে যাওয়া এতটা কঠিন ও কষ্টসাধ্য ছিল না যতটা মক্কার ভেতর মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছা এবং তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করা ছিল কষ্টকর। কিন্তু তারা তার কাছে গেল, তার হাতে হাত মেলাল এবং নিজেদের জীবন তাঁর হাতে তুলে দিল, তাঁকে সোপর্দ করল। তাঁদের জীবনের ভয় ছিল, ভয় ছিল পরীক্ষার সম্মুখীন ও কষ্টের মুখোমুখী হবার। কিন্তু তারা কুরআন শরীফের এই আয়াত শুনেছিল।

( أَحَسِبَ ٱلنَّاسُ أَن یُتۡرَكُوۤا۟ أَن یَقُولُوۤا۟ ءَامَنَّا وَهُمۡ لَا یُفۡتَنُونَ ۝ وَلَقَدۡ فَتَنَّا ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِهِمۡۖ فَلَیَعۡلَمَنَّ ٱللَّهُ ٱلَّذِینَ صَدَقُوا۟ وَلَیَعۡلَمَنَّ ٱلۡكَـٰذِبِینَ )

[Surah Al-Ankabut 2 - 3]

“মানুষ কি মনে করে যে, আমরা ঈমান এনেছি, এই কথা বললেই ওদেরকে পরীক্ষা না করেই অব্যাহতি দেওয়া হবে? আমি তো এদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম; আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন কারা সত্যবাদী ও কারা মিথ্যাবাদী। (আল-কুরআন, ২৯:২-৩}

তারা আল্লাহ্ তা'আলার এই নির্দেশ শুনেছিলঃ

( أَمۡ حَسِبۡتُمۡ أَن تَدۡخُلُوا۟ ٱلۡجَنَّةَ وَلَمَّا یَأۡتِكُم مَّثَلُ ٱلَّذِینَ خَلَوۡا۟ مِن قَبۡلِكُمۖ مَّسَّتۡهُمُ ٱلۡبَأۡسَاۤءُ وَٱلضَّرَّاۤءُ وَزُلۡزِلُوا۟ حَتَّىٰ یَقُولَ ٱلرَّسُولُ وَٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ مَعَهُۥ مَتَىٰ نَصۡرُ ٱللَّهِۗ أَلَاۤ إِنَّ نَصۡرَ ٱللَّهِ قَرِیب ࣱ)

[Surah Al-Baqarah 214]

“তোমরা কি ধারণা কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, যদিও এখনও তোমাদের কাছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের অবস্থা আসে নি? অর্থ সংকট ও দুঃখ-ক্লেশ তাদেরকে স্পর্শ করেছিল এবং তারা ভীত ও কম্পিত হয়েছিল, এমন কি রসূল ও তাঁর সঙ্গে ঈমানদাররা বলে উঠেছিল, আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে’? হ্যা, হ্যা,আল্লাহর সাহায্য নিকটেই।” (আল-কুরআন, ২:২১৪)

শেষ পর্যন্ত কুরায়শদের কাছ থেকে যা আশংকা করা গিয়েছিল তাই সামনে এসে দেখা দিল। কুরায়শরা তাদের তূণীরের সব তীরই ঐ অসহায়দের প্রতি নিক্ষেপ করেছিল এবং সে সবগুলোর পরীক্ষাই তাঁদের ওপর চালায়। কিন্তু তাঁদের ঈমানী দৃঢ়তা ও প্রত্যয়ের মজবুতী এতে আরও বৃদ্ধিই পায়। আর তারা বলতে থাকে, এই ওয়াদাই তো আল্লাহ এবং তাঁর রসূল আমাদের সঙ্গে করেছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্যিই বলেছিলেন--আর এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্য বৃদ্ধিই পেল।” এসব পরীক্ষার ফলে তাঁদের বিশ্বাস অধিকতর দৃঢ়, তাদের প্রত্যয় আরও মজবুত, তাঁদের ধর্মীয় চেতনা ও অনুভূতি আরও উন্নত হয় এবং তাঁদের ঈমানে অধিকতর স্বাদ ও মিষ্টতা সৃষ্টি হয়। তাঁদের স্বভাব-চরিত্রে আরও পরিচ্ছন্নতা ও ঔজ্জ্বল্য সৃষ্টি হয় এবং তাঁরা এই অগ্নিকুণ্ড থেকে খাঁটি সোনা হয়ে বেরিয়ে আসেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন