hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

১৬৬
নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা সংগঠন
মুসলিম বিশ্বের জন্য জরুরী হলো, শিক্ষা ব্যবস্থা এভাবে নতুন করে ঢেলে সাজানো যা হবে তার রূহ ও তার পয়গামের সঙ্গে সঙ্গতিশীল। মুসলিম বিশ্ব প্রাচীন পৃথিবীর (ইসলামের প্রথম কয়েক শতাব্দীর) ওপর তার জ্ঞানগত নেতৃত্ব কায়েম করেছিল এবং দুনিয়ার বুদ্ধিবৃত্তি ও সভ্যতা-সংস্কৃতি (কালচার)-র অস্থি-মজ্জায় মিশে গিয়েছিল। সে দুনিয়ার সাহিত্য ও দর্শনের হৃৎপিণ্ডে তার বাসা বানিয়েছিল। শতাব্দীর পর শতাব্দী সভ্য দুনিয়া তার বুদ্ধি দিয়ে চিন্তা করেছে, তার কলম দিয়ে লিখেছে এবং তারই ভাষায় লেখালেখি করেছে, গ্রন্থ প্রণয়ন করেছে। অনন্তর ইরান, তুর্কিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতবর্ষের জ্ঞানী-গুণী লেখক যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ বই-পুস্তক লিখতে চাইতেন তাহলে তা আরবী ভাষাতেই। লিখতেন। কোন কোন লেখক মূল কিতাব আরবীতে লিখতেন এবং এর সংক্ষিপ্তসার ফারসী ভাষাতে লিখতেন। ইমাম গাযালী (র.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “কিমিয়াই-সা'আদত”-এর ক্ষেত্রে এটাই করেছেন। যদিও জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই আন্দোলন যা আব্বাসী শাসনামলের সূচনায় শুরু হয়েছিল, গ্রীস ও অনারব এলাকার জ্ঞান-বিজ্ঞান দ্বারা প্রভাবিত ছিল এবং তা ইসলামী স্পিরিট ও ইসলামী চিন্তা-চেতনার ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল না এবং এর মধ্যে জ্ঞানগত ও ধর্মীয় দিক দিয়ে কতিপয় ত্রুটি ও দুর্বলতা ছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও আপন শক্তি ও সজীবতার কারণে গোটা দুনিয়ার ওপর বানের পানির মত তা ছেয়ে যায় এবং প্রাচীন শিক্ষা ব্যবস্থা এর সামনে অবশ ও বিবশ হয়ে থেকে যায়।

এরপর য়ুরোপের উন্নতি ও উত্থানের যুগ এল। সে তার প্রাচীন ব্যবস্থাকে আপন অভিজ্ঞতা ও তাত্ত্বিক সমালোচনা দ্বারা পুরাতন বর্ষপঞ্জী বানিয়ে দিল এবং সে স্থানে শিক্ষা ও পাঠ দানের নতুন ব্যবস্থা প্রণয়ন করল যা তার রূহ তথা প্রাণসত্তা, বুদ্ধিবৃত্তি ও মনস্তত্ত্বের ছিল সার্থক নমুনা। যেই শিক্ষার্থী এই শিক্ষার ও জ্ঞানগত পরিবেশ থেকে শিক্ষা সমাপনের পর বেরিয়ে আসত তার প্রতিটি শিরায় শিরায় এই স্পিরিট কাজ করত। দুনিয়া দ্বিতীয়বার এই শিক্ষা ব্যবস্থার সামনে আত্মসমর্পণ করল এবং মুসলিম বিশ্বকেও স্বাভাবিকভাবেই এর সামনে মস্তক অবনত করতে হলো যারা দীর্ঘকাল থেকে জ্ঞানগত অধঃপতন ও চিন্তার জগতে জড়তা ও স্থবিরতার শিকার ছিল এবং হীনমন্যতাবোধের কারণে নিজেদের মুক্তি কেবল য়ুরোপের অন্ধ অনুকরণের মধ্যেই নিহিত বলে মনে করত। সে এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে তার যাবতীয় দুর্বলতা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও কবুল করে নেয় এবং সেই শিক্ষা ব্যবস্থাই আজ মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে জেঁকে বসে আছে।

এই ব্যবস্থার স্বাভাবিক পরিণতি হলো, ইসলামী মনস্তত্ত্ব ও আধুনিক মনস্তত্ত্বের মধ্যে সংঘাত দেখা দিল। ইসলামী নীতি ও নৈতিকতাবোধ এবং পাশ্চাত্য নীতি-নৈতিকতাবোধের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হলো। বস্তুসামগ্রী ও এর মূল্য ও মান নিরূপণের নতুন-পুরাতন নিক্তির মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। এই ব্যবস্থার একটি ফল বের হলো, শিক্ষিত ও সভ্য শ্রেণীর মধ্যে সন্দেহ-সংশয় ও কপটতা, ধৈর্যহীনতা, জীবনের প্রতি ভালবাসা ও লোভ, বাকীর তুলনায় নগদকে, অগ্রাধিকার প্রদানের মানসিকতা সৃষ্টি হয়ে গেল, আর এভাবেই অপরাপর দোষ-ত্রুটিও সৃষ্টি হয়ে যায় যা পাশ্চাত্য সভ্যতার আবশ্যকীয় উপাদান।

যদি মুসলিম বিশ্বের খাহেশ থাকে, সে নতুনভাবে আবার গোড়া থেকে তার জীবন শুরু করবে এবং অন্যদের গোলামী থেকে মুক্তি লাভ করবে, যদি সে বিশ্বের নেতৃত্ব লাভ করতে চায় তাহলে কেবল শিক্ষার ক্ষেত্রে স্বশাসিত ও স্বায়ত্তশাসিত হলেই চলবে না, তাকে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও নেতৃত্ব। নিতে হবে এবং এটা খুবই জরুর আর এ খুব সহজও নয়। এ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভেবে দেখার ও চিন্তা করার প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য প্রয়োজন ব্যাপকভাবে বই-পুস্তক রচনা করা এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ময়দানে নতুনভাবে কাজ শুরু করা। এ কাজে যারা নেতৃত্ব দেবেন তারা সমকালীন জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে এতটাই ওয়াকিফহাল ও গভীর অন্তদৃষ্টির অধিকারী হবেন যা গবেষণা ও সমালোচনার স্তরে গিয়ে পৌঁছে এবং এরই সাথে সাথে ইসলামের মূল উৎস থেকে পরিপূর্ণ প্লাবিত ও ইসলামী রূহ তথা প্রাণসত্তা দ্বারা তার দিল্ ও দৃষ্টি পূর্ণ ও সমৃদ্ধ হবে। এটা সেই অভিযান যার পরিপূর্ণতা কোন দল কিংবা সংগঠনের জন্য কঠিন হবে। এ কাজ ইসলামী হুকুমতের, মুসলমানদের সরকারের। এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তাকে সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল দল ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান কায়েম করতে হবে এবং এমন সব বিশেষজ্ঞ বাছাই করতে হবে যারা প্রতিটি বিষয়ে অভিজ্ঞ এবং এমন শিক্ষাক্রম ও সিলেবাস তৈরি করতে হবে যা একদিকে যেমন কুরআন-সুন্নাহর অটুট বিধান (sus) ও ধর্মের অপরিবর্তনীয় হাকীকতসম্বলিত হবে, অপর দিকে কল্যাণকর সমকালীন জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, এসবের বিশ্লেষণ, পৃথক পৃথকভাবে বিভিন্ন অংশের পর্যবেক্ষণের ব্যাপারে হবে পরিবেষ্টনকারী। তারা মুসলিম তরুণ ও যুবকদের নিমিত্ত আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে একেবারে গোড়া থেকে বিন্যস্ত করবেন যা হবে ইসলামের মূলনীতি ও ইসলামী প্রাণসত্তার বুনিয়াদের ওপর। প্রতিষ্ঠিত। এতে এমন সব জিনিস থাকবে যা হবে যুবক শ্রেণীর জন্য জরুরী, যা দিয়ে তারা নিজেদের জীবনকে সংগঠিত করতে পারে এবং নিজেদের নিরাপত্তার হেফাজত করতে পারে। তারা পাশ্চাত্যের মুখাপেক্ষী হবে না, বরং তারা হবে আত্মনির্ভরশীল। তারা বস্তুগত ও মেধার যুদ্ধে পাশ্চাত্যের মুকাবিলায় যেন দাঁড়াতে পারে। তারা নিজেদের মাটির তলে লুক্কায়িত খনিজ সম্পদ থেকে যেন উপকৃত হতে পারে এবং নিজেদের দেশের সম্পদ কাজে লাগাতে পারে, ব্যবহারে আনতে পারে। তারা মুসলিম দেশগুলোর অর্থনীতি নতুনভাবে ঢেলে সাজাবেন এবং একে ইসলামী শিক্ষামালার আওতায় এভাবে পরিচালনা করবেন যে, সরকার পদ্ধতি ও অর্থনৈতিক বিষয়াদির সংগঠনে য়ুরোপের ওপর ইসলামী ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্ব যেন পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে এবং এর দ্বারা সেই সব অর্থনৈতিক সমস্যা ও সংকটের যেন সমাধান ঘটে যা সমাধান করতে না পেরে য়ুরোপ হাল ছেড়ে দিয়ে তার ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছে।

এই আধ্যাত্মিক, শিল্প-প্রযুক্তিগত, সামরিক প্রস্তুতি ও শিক্ষার স্বাধীনতার সাথেই মুসলিম বিশ্বের উত্থান ঘটতে পারে, নিজেদের পয়গাম পৌঁছাতে পারে এবং পৃথিবীকে সেই ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে পারে, মুক্তি দিতে পারে যা তার মাথার ওপর ঘুরে বেড়াচ্ছে। নেতৃত্ব হাসি ও খেল-তামাশার বস্তু নয়। এ খুবই গুরু-গম্ভীর বিষয়। এর জন্য প্রয়োজন সুশৃঙ্খল চেষ্টা-সাধনা, পরিপূর্ণ প্রস্তুতি, বিরাট কুরবানী এবং কঠোর কঠিন ও প্রাণান্তকর সাধনা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন