hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

৬১
ঈমান ও এর প্রভাব
আরব-অনারব নির্বিশেষে সকলেই অত্যন্ত বিকৃত জীবন যাপন করছিল। এমন প্রতিটি সত্তা যা তার সেবার জন্য পয়দা করা হয়েছিল, অস্তিত্ব লাভ করেছিল কেবল তার জন্য এবং যা ছিল তারই অধীন, যেভাবে চাইবে ব্যবহার করবে, আদেশ-নিষেধ, শাস্তি দান কিংবা পুরস্কার প্রদানের একবিন্দু ক্ষমতা নেই যার- সে সবের তারা পূজা-অর্চনা করতে শুরু করেছিল। তারা একেবারেই ভাসাভাসা ও বিক্ষিপ্ত একটি ধর্মে বিশ্বাসী ছিল, জীবন-যিন্দেগীতে যার কোন প্রভাব বিংবা তাদের স্বভাব-চরিত্রে, হৃদয়-মনে ও আত্মার ওপর যার কোন ক্ষমতা ছিল না।

চরিত্র ও সমাজ এই ধর্ম দ্বারা আদৌ প্রভাবিত ছিল না। আল্লাহ তাআলার অস্তিত্ব তাদের দৃষ্টিতে এমন ছিল যেমন একজন শিল্পী কিংবা কারিগর তার কাজ শেষ করে সরে পড়েছে এবং নির্জনতা বেছে নিয়েছে। তাদের ধারণায়, আল্লাহ তা'আলা তাঁর সাম্রাজ্য সেই সব লোকের হাতে তুলে দিয়েছিলেন যাদেরকে তিনি। রবুবিয়তের খেলাত দ্বারা ধন্য করেছিলেন। এখন তারাই ক্ষমতাসীন এবং সাম্রাজ্যের সর্বময় ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের মালিক। জীবিকা বণ্টন, রাজ্যের আইন-শৃংখলা রক্ষা ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা পরিচালনা তাদের এখতিয়ারাধীনে। মোটর ওপর একটি সুসংহত ও সুশৃংখল হুকুমতের যতগুলো শাখা ও বিভাগ হয়ে থাকে তার সবই তাদের ব্যবস্থাপনাধীন।

আল্লাহ তাআলার ওপর তাদের ঈমান এক ঐতিহাসিক অবহিতির চেয়ে বেশি কিছু ছিল না। আল্লাহকে প্রভু-প্রতিপালক মনে করা, তাঁকে আসমান-যমীনের স্রষ্টা মানা তেমনই ছিল যেমন ইতিহাসের কোন ছাত্রকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, এই প্রাচীন ইমারতটি কে নির্মাণ করেছিলেন? ছাত্রটি উত্তরে কোন বাদশাহর নাম বলল। বাদশাহর নাম বলার দ্বারা তার দিলের ওপর কোনরূপ ভয়-ভীতি যেমন দেখা দেবে না, তেমনি তার মস্তিষ্কের ওপর এর কোন প্রভাব পড়বে না। এসব লোকের হৃদয় আল্লাহ তা'আলার ভয়, বিনয়মিশ্রিত ভক্তি-শ্রদ্ধা ও দো'আ থেকে শূন্য ছিল। আল্লাহর গুণাবলী সম্পর্কে তারা একেবারেই অজ্ঞ-বেখবর ছিল। এজন্য তাদের দিলে তার প্রতি অনুরাগ, তাঁর আজমত ও বড়ত্বের কোন চিত্র ছিল না। আল্লাহ তা'আলা সম্পর্কে তাদের খুবই অস্পষ্ট, ভাসা ভাসা ধারণা ছিল যার ভেতর কোন গভীরতা ও শক্তি ছিল না।

গ্রীক দর্শন আল্লাহ তাআলার সত্তার পরিচিতির ধারাবাহিকতায় বেশির ভাগ নেতিবাচক পন্থার আশ্রয় নিয়েছে। সে তার গুণাবলীকে অস্বীকার করেছে এবং এর দীর্ঘ ফিরিস্তি কায়েম করেছে যার মধ্যে আল্লাহ তাআলার কোন হা’বাচক প্রশংসা এবং কোন ইতিবাচক গুণ নেই। তাঁর কুদরতের উল্লেখও এতে নেই, নেই এতে তাঁর রবুবিয়তের কথা কিংবা আলোচনা। তার সীমাহীন অনুদান, তাঁর অপরিমেয় প্রেম-ভালবাসা ও দয়া-দাক্ষিণ্যের কথাও এতে নেই। এই দর্শন প্রথম সৃষ্টি তো প্রমাণ করেছে। কিন্তু তার জ্ঞান ও এখতিয়ার এবং ইচ্ছা ও গুণাবলীকে অস্বীকার করেছে এবং নিজের পক্ষ থেকে এমন সব মূলনীতি তৈরি করেছে যা সেই মহান সত্তাকে খাটোকরণ ও তাঁর সৃষ্টিজগতের ওপর অনুমান নির্ভর করে প্রণীত। আর একথা তো পষ্ট যে, শত শত নেতিবাচক মিলেও একটি ইতিবাচকের সমান হতে পারে না।

আমাদের জানা মতে, আজ পর্যন্ত এমন কোন সুশৃংখল নীতি কিংবা বিধান, এমন কোন সভ্যতা-সংস্কৃতি এবং এমন কোন সমাজ জন্ম নেয়নি যা কেবল নেতিবাচক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। গ্রীক দর্শনের প্রভাবাধীন মহলে ধর্ম ও মতাদর্শ ভয়-ভীতি মিশ্রিত বিনয় ও শ্রদ্ধা, আকস্মিক দুর্ঘটনা ও বিপদ-আপদ মুহূর্তে আল্লাহ রাব্বল-আলামীনের দিকে মনোেনিবেশ, প্রেম ও ভালবাসার রূহ থেকে একদম শূন্য ছিল। ঠিক তদ্রুপ সেই যুগের বিভিন্ন ধর্মও প্রাণ হারিয়ে ফেলেছিল এবং কতকগুলো নিষ্প্রাণ আচার-অনুষ্ঠান ও প্রাণহীন অনুকরণসর্বস্ব প্রথা-পার্বণেই পর্যবসিত হয়ে গিয়েছিল।

মুসলিম উম্মাহ ও আরব জাতিগোষ্ঠী এই অসুস্থ, অস্পষ্ট ও নিষ্প্রাণ পরিচিতির আবহ থেকে বেরিয়ে এমন এক সুস্পষ্ট ও গভীর আকীদা-বিশ্বাস অবধি গিয়ে পৌঁছে যায় যার নিয়ন্ত্রণ ছিল হৃদয়-মন ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর, যা সমাজকে প্রভাবিত করার মত জীবন-যিন্দেগী ও জীবনের নানা অনুষঙ্গের ওপর জেঁকে বসা। ঐ সব লোক এমন এক পবিত্র সত্তার ওপর ঈমান এনেছিলেন যার রয়েছে সর্বোত্তম নাম, সর্বোচ্চ শান। তাঁরা এমন রাব্বল আলামীনের ওপর ঈমান এনেছিলেন যিনি অত্যন্ত মেহেরবান ও দয়ালু, কিয়ামত দিবসের নিরংকুশ মালিক-মুখতার ও রাজাধিরাজ।

( هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِی لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَـٰلِمُ ٱلۡغَیۡبِ وَٱلشَّهَـٰدَةِۖ هُوَ ٱلرَّحۡمَـٰنُ ٱلرَّحِیمُ ۝ هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِی لَاۤ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡقُدُّوسُ ٱلسَّلَـٰمُ ٱلۡمُؤۡمِنُ ٱلۡمُهَیۡمِنُ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡجَبَّارُ ٱلۡمُتَكَبِّرُۚ سُبۡحَـٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا یُشۡرِكُونَ ۝ هُوَ ٱللَّهُ ٱلۡخَـٰلِقُ ٱلۡبَارِئُ ٱلۡمُصَوِّرُۖ لَهُ ٱلۡأَسۡمَاۤءُ ٱلۡحُسۡنَىٰۚ یُسَبِّحُ لَهُۥ مَا فِی ٱلسَّمَـٰوَ  ٰ⁠ تِ وَٱلۡأَرۡضِۖ وَهُوَ ٱلۡعَزِیزُ ٱلۡحَكِیمُ )

[Surah Al-Hashr 22 - 24]

“তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা; তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু। তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অতীব মহিমান্বিত; ওরা যাকে শরীক স্থির করে আল্লাহ তা থেকে পবিত্র, মহান। তিনিই আল্লাহ সৃজনকর্তা, উদ্ভাবন কর্তা, রূপদাতা, সকল উত্তম নাম তারই। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সমস্তই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” (আল-কুরআন, ৫৯:২২-২৪)

যিনি এই বিশাল জগত ও বিশ্ব কারখানার স্রষ্টা ও মালিক এবং পরিচালনাকারী, যাঁর কুদরতী কবজায় তামাম বিশ্বজাহানের বাগডোের। যিনি আশ্রয় দেন, আর তার মুকাবিলায় কেউ কাউকে আশ্রয় দিতে পারে না। জান্নাত তার পুরস্কার এবং জাহান্নাম তার শাস্তি। তিনি যাকে ইচ্ছা রিযিকে প্রশস্ততা দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা তার রিযিক সংকুচিত করেন। আসমান-যমীনের সকল গুপ্ত বিষয় তিনি জানেন। চোখের গোপন চাউনি ও দিলের নিভৃত কন্দরে লুকায়িত রহস্য তিনিই সম্যক অবগত। তিনি সৌন্দর্য, পূর্ণতা, ভালবাসা ও দয়ামায়ার আধার।

এই গভীর, বিশাল-বিস্তৃত ও সুস্পষ্ট ঈমানের দ্বারা ঐ সমস্ত লোকের মন-মানসিকতার আশ্চর্য রকমের পরিবর্তন ঘটে। কেউ যখন আল্লাহর ওপর ঈমান আনত এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্য দিত অমনি তার জীবনে এক বিরাট বিপ্লব সংঘটিত হতো। তার ভেতর ঈমান অনুপ্রবিষ্ট হতো, য়াকীন তার শিরা-উপশিরায় সঞ্চারিত হতো এবং তার শরীরে রক্ত ও প্রাণ-সঞ্জীবনীর ন্যায় দ্রুত সঞ্চালিত হতো। জাহেলিয়াতের বীজাণুগুলোকে খতম করে দিত এবং জড়ে মূলে উৎখাত করে ছাড়ত। মন-মস্তিষ্ক এর ফয়েয দ্বারা মণ্ডিত হতো এবং সেই লোকটি আর পূর্বের ন্যায় থাকত না। এই লোকের দ্বারা ধৈর্য, শৌর্যবীর্য ও ঈমান-য়াকীমের এমন সব বিস্ময়কর ঘটনা সংঘটিত হতো যে, আক্কেল গুড়ুম হবার মত এবং দর্শন ও নৈতিকতার ইতিহাস বিস্ময়ে যোবা বনে যাবে। ঈমানী কুওত ছাড়া এর আর কোন হেতু বা ব্যাখ্যা হতে পারে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন