hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো?

লেখকঃ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী (র.)

৭৪
নতুন মানুষ নতুন উম্মাহ
এই বিস্তৃত ও গভীর ঈমান, এই শক্ত সুদৃঢ় পয়গম্বরসুলভ শিক্ষা, এই সূক্ষ্ম ও বিজ্ঞ দার্শনিকসুলভ প্রশিক্ষণ, অনন্য ও অত্যাশ্চর্য শক্তি ও ব্যক্তিত্ব এবং এই বিস্ময় উদ্রেককারী আসমানী কিতাবের সাথে যার অনন্য ও বিরল বস্তুসমূহ। নিঃশেষ হবার নয় এবং যার সজীবতায় কখনো ঘাটতি পড়ে না। রসূলুল্লাহ (ﷺ) মৃতপ্রায় মানবতার মাঝে এক নতুন জীবনের জন্ম দেন। মানবতার সেই সম্পদভাণ্ডার যা কাঁচামাল আকারে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছিল, যে সবের উপকারিতা, কল্যাণ ও ব্যয় খাত কারোরই জানা ছিল না, যেগুলোকে মূর্খতা, অজ্ঞতা, কুফর ও কম হিম্মতি বরবাদ করে রেখেছিল, তিনি তাদের জীবনের গতিই পাল্টে দিলেন। আল্লাহর অপার সাহায্যে তিনি তার মধ্যে ঈমান ও আকীদা সৃষ্টি করে দিলেন। জীবনের নতুন প্রাণ সঞ্চার করলেন। চাপাপড়া যোগ্যতা তুলে ধরলেন এবং অভ্যন্তরীণ সামর্থ্যকে উদ্ভাসিত করলেন। এরপর এসবের প্রতিটিকে সঠিক মর্যাদায় স্থাপন করলেন যেন এর জন্যই তার জন্ম হয়েছিল। যেন জায়গা শূন্য ছিল এবং যেন এরই সে অপেক্ষা করছিল। সে ছিল এক নিষ্প্রাণ পাথর। এখন সে জীবন্ত, প্রাণবন্ত ও জাগ্রত মানুষে পরিণত হলো। সে ছিল অনুভূতিশূন্য, নিশ্চল ও মৃত। এখন সে প্রাণ ফিরে পেয়ে বিশ্বের ওপর রাজদণ্ড পরিচালনা করছে। প্রথমে ছিল অন্ধ যে নিজেই রাস্তা চিনত না আর এখন সে সারা দুনিয়ার রাহবার ও পথপ্রদর্শক হিসেবে মানুষকে পথ দেখাচ্ছে।

( أَوَمَن كَانَ مَیۡت ا فَأَحۡیَیۡنَـٰهُ وَجَعَلۡنَا لَهُۥ نُور ا یَمۡشِی بِهِۦ فِی ٱلنَّاسِ كَمَن مَّثَلُهُۥ فِی ٱلظُّلُمَـٰتِ لَیۡسَ بِخَارِج مِّنۡهَاۚ كَذَ  ٰ⁠ لِكَ زُیِّنَ لِلۡكَـٰفِرِینَ مَا كَانُوا۟ یَعۡمَلُونَ )

[Surah Al-An'am 122]

“যে ব্যক্তি মৃত ছিল যাকে আমি পরে জীবিত করেছি এবং যাকে মানুষের মধ্যে চলবার জন্য আলোক দিয়েছি সেই ব্যক্তি কি ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে অন্ধকারে রয়েছে এবং সেই স্থান থেকে বের হবার নয়?”(সূরা আনআম, ১২২ আয়াত)

নবী করীম (ﷺ) -এর মনোযোগ ও শিক্ষার বদৌলতে আরবের ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে এমন বিপ্লব দেখা দিল যে, গোটা দুনিয়া অতি অল্প দিনের মধ্যেই তাদের ভেতর সেই সব আজীমুশশান ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটতে দেখল যারা ছিলেন যেমন বিস্ময়কর, তেমনি ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। সেই ওমর (রা) যিনি এক সময় তাঁর পিতা খাত্তাবের বকরী চরাতেন আর তার পিতা তাঁকে নানা কারণে বকাঝকা করতেন, শক্তি ও সংকল্পে তিনি কুরায়শদের মধ্যম সারির লোকদের অন্তর্গত ছিলেন, অস্বাভাবিক কোন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী তিনি ছিলেন এবং তাঁর সমসাময়িক লোকজন তাকে অস্বাভাবিক কোন গুরুতুও দিত না, সেই ওমর (রা) এক নিমিষে তঙ্কালীন বিশ্বকে নিজের মাহাত্ম্য ও যোগ্যতা দ্বারা বিস্ময়াবিষ্ট করে তোলেন এবং রোম সম্রাট কায়সার ও পারস্য সম্রাট কিসরার রাজমুকুট ও রাজসিংহাসন ছিনিয়ে নেন এবং এমন এক ইসলামী রাষ্ট্রের বুনিয়াদ কায়েম করেন যা একই সঙ্গে উল্লিখিত দুই হুকুমতের ওপর পরিবেষ্টনকারী এবং প্রশাসনিক ও সর্বোত্তম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার রাখে। আর তাকওয়া, পরহেযগারী ও ন্যায় বিচারের দিক দিয়ে যিনি ছিলেন তুলনাহীন-প্রবাদবাক্যের মত।

এই যে ওলীদের পুত্র খালিদের কথাই ধরুন। তিনি ছিলেন উৎসাহদীপ্ত কুরায়শ যুবকদের অন্যতম। স্থানীয় যুদ্ধগুলোতে সুনাম অর্জন করেছিলেন। কুরায়শ সর্দাররা গোত্রীয় যুদ্ধগুলোতে তাঁর সাহায্য গ্রহণ করত। আরব উপদ্বীপ এলাকাগুলোতেও বড় কোন খ্যাতি অর্জন করেন নি। অকস্মাৎ খোদায়ী তলোয়ার হিসেবে তিনি ঝলসে ওঠেন। যা কিছুই সামনে আসে তিনি কেটেকুটে পরিষ্কার করে চলেন। আল্লাহ্র এই অবিনাশী তলোয়ার বিজলিবৎ রোম সাম্রাজ্যের মাথায় গিয়ে পড়ে এবং ইতিহাসের বুকে অক্ষয় কীর্তি রেখে যায়।

ইনি আবু উবায়দা যার আমানতদারী ও তার প্রশংসা করা হতো। মুসলমানদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সেনাদলের পরিচালনা করতেন তিনি। তাকে দেখুন। মুসলমানদের সবচে' বড় নেতৃত্বের বোঝা বইছেন এবং রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াসকে সিরিয়ার উর্বর ও শস্য-শ্যামল ভূখণ্ড থেকে চিরতরে বহিষ্কৃত করছেন। বেচারা সম্রাট দেশটার ওপর বিদায়ী দৃষ্টি নিক্ষেপ করছেন এবং বলছেনঃ হে সিরিয়া! তোমাকে বিদায়ী সালাম, এমন সালাম যার পর তোমার সাথে আর কখনো দেখা হবে না।

ইনি আমর ইবনুল-আস যাকে কুরায়শদের বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান লোকদের মধ্যে গণ্য করা হতো। কুরায়শ নেতৃবৃন্দ তাঁকে আবিসিনিয়ায় পাঠায় যাতে মুসলিম মুহাজিরদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারেন। কিন্তু ব্যর্থ হন তিনি। ভঁকে দেখুন, মিসর জয় করছেন এবং বিরাট শক্তির অধিকারী হচ্ছেন।

এই যে, ইনি সা'দ ইবন আবী ওয়াক্কাস! ইসলাম গ্রহণের আগে তাঁর সম্পর্কে বড় কোন সামরিক অভিযানের নেতৃত্বের কথা জানা যায় না কিংবা যুদ্ধবিদ্যা সম্পর্কে তিনি বিশেষজ্ঞ এ রকম কোন খ্যাতির পরিচয়ও পাওয়া যায় না। তাঁকে দেখুন, মাদায়েনের চাবিগুচ্ছ সামলাচ্ছেন এবং ইরাক ও ইরানকে মুসলিম সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করে চিরদিনের জন্য ফাতিহ-এ আজম' তথা শ্রেষ্ঠ বিজেতা বলে অভিহিত হচ্ছেন।

ইনি সালমান ফারসী, একজন ধর্মযাজকের পুত্র। পারস্যের এক অজ। পাড়া-গাঁয়ে তাঁর জন্ম। এক গোলামি থেকে আরেক গোলামি, এক বিপদ থেকে আরেক বিপদের মাঝে নিক্ষিপ্ত হতে হতে মদীনায় এসে উপনীত হচ্ছেন এবং ইসলাম কবুল করছেন। তাঁকে দেখুন! তাঁরই স্বজাতির বিশাল রাজধানীর (মাদায়েন) প্রশাসক হয়ে আসেন। গতকাল যিনি ছিলেন একজন নগণ্য প্রজামাত্র, আজ তিনি তার প্রশাসক। তার চাইতেও অধিক বিস্ময়ের ব্যাপার হলো এতদসত্ত্বেও তার নিজের ভোগবিমুখ জীবনধারায় কোনরূপ পরির্বতন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। লোকে দেখতে পাচ্ছে, তাদের প্রশাসক একটি সাধারণ ঝুপড়িতে অবস্থান করেন এবং নিজের মাথায় বোঝা বহন করেন।

ইনি কাফ্রী-গোলাম বেলাল। সম্মান ও মর্যাদার এমন উঁচু স্তরে গিয়ে উপনীত যে, স্বয়ং আমীরুল মু'মিনীনও তাকে আমাদের নেতা' আমাদের সর্দার বলেন। ইনি আবু হুযায়ফার আযাদকৃত গোলাম (সালেম) যার মধ্যে হযরত ওমর (রা) খেলাফত লাভের যোগ্যতা ও সামর্থ্য দেখতে পান। তিনি বলেনঃ আজ যদি তিনি (সালেম) বেঁচে থাকতেন তবে আমি তাকেই খলীফা নিযুক্ত করে যেতাম। ; ইনি যায়দ ইবন হারিছা, মূতার যুদ্ধে মুসলিম সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দেন অথচ সেই বাহিনীতেই জাফর ইবন আবু তালিব, খালিদ ইব্ন ওলীদের মত বিশিষ্ট লোকেরা বর্তমান এবং তাঁর পুত্র উসামা এমন এক বাহিনীর নেতৃত্ব দেন।

যে বাহিনীতে আবু বকর (রা), ওমর (রা)-এর মত লোকেরা বর্তমান। - আর এই যে, এঁরা হলেন আবু যর, মিকদাদ, আবুদ-দারদা, আম্মার ইবন ইয়াসির, মুআয ইবন জাবাল ও উবাই ইবন কাব (রা)। ইসলামের বসন্ত

১৩১ সমীরণের একটা ঝটকা তাঁদের ওপর দিয়ে বয়ে যেতেই দেখতে দেখতে তারা দুনিয়ার খ্যাতনামা সাধক ও জ্ঞানী-গুণী বলে গণ্য হতে থাকেন। এঁরা হলেন আলী ইবন আবু তালিব (রা), আয়েশা (রা), আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা), যায়দ ইবন ছাবিত (রা) ও আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা)- যারা নিরক্ষর নবী (ﷺ) -এর কোলে লালিত-পালিত হয়ে দুনিয়ার মহান ও শ্রেষ্ঠতম আলিমদের কাতারে পরিগণিত হচ্ছেন, যাঁদের থেকে জ্ঞানের নহর ও প্রজ্ঞার করুধারা প্রবাহিত হয়। স্বচ্ছ জ্ঞানের অধিকারী, অশুভ লৌকিকতা থেকে দূরে তাদের অবস্থান। যখন কথা বলেন, তখন মহাকাল নিঃশব্দে নীরবে তাদের কথা শুনতে থাকে। যখন সম্বোধন করেন তখন দুনিয়ার বড় বড় ঐতিহাসিকের কলম তা লিপিবব্ধ করবার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে যাতে করে একটি শব্দও হারিয়ে না যায়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন